দাজ্জালের মহা ফিতনা ও বর্তমান বিশ্বঃ পর্ব-৫

লিখেছেন লিখেছেন কায়সার আহমেদ (কায়েস) ১৮ মে, ২০১৫, ০২:৪৮:১৪ দুপুর

দাজ্জাল এই পৃথিবীতে কিভাবে বসবাস করে তার কার্যক্রম চালাচ্ছে-





শয়তান মানুষের ব্যক্তিগত জীবন ধ্বংস করার কাজ করে আর দাজ্জাল কাজ করছে সামস্টিক জীবনে ধ্বংস আনার জন্য। শয়তান এক জন মানুষ কে প্ররোচিত করে গুমরাহ করে কিন্তু দাজ্জাল পুরো সমাজ পুরো দেশ বা জাতি কে একসাথে গুমরাহ করে। শয়তান মানুষের নফসে ধুঁকে কুকর্মের আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত করে আর দাজ্জাল একটা System তৈরি করে পুরো মানব জাতি কে কুকর্ম করতে বাধ্য করে-এটাই হল শয়তান আর দাজ্জালের পার্থক্য। তবে উভয়ে একটা এমন সেইম ডাইমেনশনে বসবাস করছে যেটা আমাদের থেকে আলাদা, আর তাই আমরা তাদের কে দেখতে পারি না।

উদাহরণ- এই পৃথিবীতে শয়তান, জ্বীন, ফেরেশতা সবাই আছে কিন্তু আমরা মানুষরা তাদের দেখতে পারিনা, আর তারা চাইলেই আমাদের মানুষের সামনে মানুষ রূপে (আমাদের ডাইমেনশনে) আসতে পারে তখন আমরা তাদের দেখি।

ঠিক তেমনি দাজ্জাল এ পৃথিবীতে বসবাস করছে আদম (আঃ) এর সময় থেকে [কারন রাসূল (সা) বলেছেন- প্রত্যেক নবী (আঃ) তার জাতি কে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন (বুখারী-২৮৯২)] কিন্ত আমরা তাকে দেখতে পারি না। আর সে চাইলেও এখন আমাদের ডাইমেনশনে আসতে পারবে না কারন তার আসার (খুরুজের) একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। যখন সেই সময় হবে তখন সে মানুষ রূপে আমাদের সামনে আসবে। আর তার যাবতীয় ফিতনা তখন সে আমাদের সামনে করে নিজেকে পযায়ক্রমে মাসীহ এবং শেষে ঈশ্বর দাবী করবে, আর এই সকল ফিতনা সে শয়তানের প্রত্যক্ষ মদদে করবে।

কিভাবে সে পুরো জাতি কে ধোঁকা দিচ্ছে

দাজ্জাল সর্ব যুগে কিছু System তৈরি করে যাতে আমরা সবাই সে system এ জড়িয়ে প্রযায়ক্রমে কুকর্মে লিপ্ত হয়ে নিজের অজান্ততেই ইমানহারা হয়ে যায়। যেমন এমন একটা অর্থব্যবস্থা তৈরি করেছে যার ফলে আমরা সবাই এক রাতেই দাসে (Slave) পরিনত হয়েছি, বা এমন বিনোদন পদ্ধতি যার ফলে আমরা সবাই বাস্তবতা থেকে দূরে সরে কাল্পনিক জগতে ঘুরে বেড়াচ্ছি, বা এমন রাস্ট্রব্যবস্থা যার ফলে আমরা সবাই আল্লাহ কে অস্বীকার করছি, বা এমন একটা আন্দোলন হতে পারে নারিবাদীতা যার ফলে শাহজাদী হালতে থাকা আমাদের মা, বোন, স্ত্রীরা সবাই আধুনিকতায় গা ভাসিয়ে তাদের লজ্জাশীলতা কে বিসর্জন করছে।

আমরা অবাক হোই যখন দেখি কি একটা অদ্ভুত উপায়ে এই শেষ ২ শতাব্দীতে কিছু system তৈরি হয়েছে যা আমাদের অতীতের সকল system কে (Replace) বদলে দিয়েছে, আমরা এটাকে Mysterious Transformation বলতে পারি। যেমন পুরো দুনিয়ায় একই রাস্ট্রব্যব্স্থা, অর্থব্যবস্থা, নারীবাদীতা, একই শিক্ষা ব্যবস্থা এবং প্রায় একই রকম কাপড়, খাবার ও কাজ করার পদ্ধতি এবং প্রায় একই সংস্কৃতি। এইগুলো কি এমনি এমনি হয়ে গেছে?

আরও অবাক হোই যখন দেখি কি ভাবে একটা দেশ (British Colonialism) প্রায় পুরো বিশ্বকে দখল করে এবং বিশাল সাম্রাজ্য তৈরি করে, আর ঠিক সেই সময়ে তারা পুরো বিশ্বে উপরুক্ত System গুলো বাস্তবায়ন করে।

তারা দখলকৃত দেশে এমন একটি সংস্থা (Organization) কায়েম করে যারা ব্রিটিশদের অনুপস্থিতিতেও তাদের মত করেই সকল কিছু পরিচালনা করে যাবে। এবং যতপর্যন্ত ব্রিটিশরা এটা নিশ্চিত হলো না যে পুরো বিশ্ব কে তাদের কার্বন-কোপি বানানো হয়ে গেছে, ততোপর্যন্ত তারা এই দেশ গুলোকে ছেড়ে (Decolonized) যাই নাই।

বর্তমানে আমরা ঠিক সেই রকমই দেখছি আমরা একবারও ভেবে দেখি না –কেন তারা চলে যাওয়ার পরও তাদের নিয়মেই দেশ চলছে? কেন একজন কোন তীব্র গরম দেশের মানুষ কেও সেইম সুট টাই পরে সভ্য হতে হবে? কেন আমাদের সকল কে একই ভাবে খেতে হবে? কেনই বা এই সকল নিয়মকেই সভ্য (Civilized) হওয়ার মাপকাঠি হিসেবে ধরা হয়েছে? কেন তারা পুরো দুনিয়া কে তাদের কার্বন-কোপি বানিয়েছে? আর এই গুলো সকল কিছু তৈরি করার পিছনে মূলত দাজ্জালই কলকাঠি নাড়ছে।

চলবে...........

------''আল্লাহুম্মা আরেনি আল আশইয়া'আ কামা হিয়া'' (হে আল্লাহ আমাদের প্রত্যেক জিনিসের আসল রূপ দেখাও যাতে বাহিরটা দেখে প্রতারিত না হই)

----আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ দাজ্জাল (হে আল্লাহ আমাদের দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা করুন)

বিষয়: বিবিধ

১২৭৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

320816
১৮ মে ২০১৫ বিকাল ০৫:৩২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৯ মে ২০১৫ দুপুর ১২:৪৩
262092
কায়সার আহমেদ (কায়েস) লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই
320924
১৯ মে ২০১৫ রাত ০১:৪৪
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : ধন্যবাদ, সুন্দর লিখেছেন আরো লিখবেন এটাই প্রত্যাশা।।
১৯ মে ২০১৫ রাত ০৮:৫৭
262194
কায়সার আহমেদ (কায়েস) লিখেছেন : অবশ্যই ভাই আরও লেখার চেষ্টা করবো কিন্ত আপনার কাছ থেকেও যৌক্তিক সমালোচনা আশা করি। আপনাকেও ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File