দাজ্জালের মহা ফিতনা ও বর্তমান বিশ্বঃ পর্ব-৪
লিখেছেন লিখেছেন কায়সার আহমেদ (কায়েস) ১৪ মে, ২০১৫, ০৫:৫৮:০৯ বিকাল
প্রথম মহাফিতনা- রাষ্ট্রব্যবস্থা
দাজ্জাল মুক্ত হয়ে ছিল রাসূল (সা) এর সময়ে--
তামিম দারী রা এর ভ্রমনে উনার দাজ্জালের সাথে সাক্ষাত হয়েছিল, দাজ্জাল তখন একটা দ্বীপে বন্দী ছিল (মুসলিম-৫২৩৫), কিন্তু পরে রাসূল (সা) ইবনে সাইয়াদকে দাজ্জাল বলে সন্দেহ করেছিলেন (মুসলিম-৭৫৩৮ ও ৭৫৩৪)। এখন প্রশ্ন হলো যদি দাজ্জাল তখন মুক্ত না হয়ে বন্দী থাকতো তবে কেন তিনি (সা) তাকে সন্দেহ করেছিলেন।
তাই আমরা ধরে নিতে পারি রাসূল (সা) এর সময়েই দাজ্জাল মুক্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্ত এখনো তার খুরুজ/প্রকাশ হয় নাই তাই সে আমাদের সম্মুখে আসতে পারছে না। এখন সে আমাদের পিছনে থেকেই শয়তানের সাহায্যে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
দাজ্জালের মুক্তির পর থেকেই সে তার প্রকাশের প্ল্যাটফরম বা ষ্টেজ তৈরি করছে। দাজ্জালের প্রথম মিশন হল সকল মানুষকে পরীক্ষা করা, ঈমানহারা করে দেয়া। এটা সবচেয়ে কঠিন ফিতনা বা পরীক্ষা আর রাসুল (সা) বলেছেন “দাজ্জালের ফিতনা হবে কিয়ামত অবধি সবচেয়ে বড় ফিতনা” (মুসলিম-৭৫৬০)
দাজ্জালের দ্বিতীয় মিশন হলো নিজেকে মাসীহ বলে দাবী করা। আমরা এটা নিয়ে ২ ও ৩ পর্বে আলোচনা করেছি আর দেখিয়েছি তার কাজের অগ্রগতি। এখন আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করবো কিভাবে বেশ কয়েক শতাব্দী ধরে সে আমাদের সকলকে ঈমানহারা করা শুরু করেছে । এটাই হলো আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা আর আমরা একেই প্রধান/১ম দাজ্জালিয়াত নাম দিয়েছি।
প্রতিটি বিশ্বাসী মনে করে যে প্রতিটি কাজের জবাবদীহিতা তাকে তার পালনকর্তার নিকট করতে হবে, সেটা হতে পারে একজন বা শিরকভুক্ত বহুজন। আর তাই তার সকল কর্ম ব্যক্তিগত বা সামাজিক সকল কিছু সে জবাবদিহিতার কথা মাথায় রেখেই করে। যেমনঃ ব্যবাসা-বানিজ্য বা গোত্রপ্রথা, সতীদাহ বা সাধুদের বৈরাগ্যতা ইত্যাদি সকল কিছু।
কিন্তু বর্তমানে ‘আমরা সকলে আল্লাহর গোলাম’ এটা কে পরিবর্তন করে এখন আমরা বলছি আমরা কারও গোলাম নই, আমাদের যা ইচ্ছা আমরা তাই করবো, কোন জবাবদিহিতা আমাদের নেই।
আল্লাহ্ কে অস্বীকার করা হলো সবচেয়ে বড় নাফরমানি ও সীমালংঘন (ফ্যাসাদ) অর্থাৎ মানুষ যখন দাবী করে কোন আল্লাহ্ নেই (নাউযুবিল্লাহ)। ইতিহাসে কখনো কোন জাতি আল্লাহ্ কে অস্বীকার করে নাই তবে হ্যাঁ আল্লাহ্র সাথে শিরক করেছে। সবাই বিশ্বাস করতো আমাদের সৃষ্টিকর্তা আছেন এবং উনার সমকক্ষ কেই নেই কিন্ত অনেক জাতি বা ধর্ম এই বিশ্বাসের পাশাপাশি মনে করত যে আরও ছোট ছোট দেবতা আছে যারা আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে। যেমন ইসলাম পূর্ব আরবে তারা আল্লাহ্ কে বিশ্বাস করতো আর লাত, উজ্জা ইত্যাদি কে সুপারিশ কারী মনে করতো। হিন্দু ধর্মে ও মহাদেবতা একজন কিন্তু সুপারিশকারী দেবতা অসংখ্য। খ্রিষ্টান ও তেমনই God একজন কিন্তু gods বহুজন অর্থাৎ কেউ আল্লাহ্ কে অস্বীকার করে নি। আল্লাহ্ কে অস্বীকার করাকে আমারা ফেরাউনিয়াত বলতে পারি কেননা ফিরাউন আল্লাহ্ কে অস্বীকার করেছিল আর নিজেকেই ঈশ্বর বলে দাবী করেছিল আর বলে ছিল
“ফিরআউন তার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলো। সে বললো, মিশরের সার্বভৌমত্ব কি আমার নয়? তোমরা কি দেখছো না যে, এই নদীগুলো আমার (রাজত্বের) অধীনে বয়ে চলছে” [সূরা যুখরুকঃ ৫১]
“সে সকলকে সমবেত করল এবং সজোরে আহবান করল,আমিই তোমাদের সবচেয়ে বড় রব/পালনকর্তা” [সূরা আন-নাযিয়াতঃ ২৩,২৪]
ইতিহাসে প্রথমবার আমরা দেখি আমাদের রাস্ট্রব্যবস্থা এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যার ফলে প্রায় আমরা সবাই পরোক্ষ ভাবে আল্লাহ্কে অস্বীকার করছি আর সামস্টিক ভাবে ফেরাউন ও নমরুদের মত বলছি “আমরাই সব, আমরাই মহান, আমরাই আল-মালিক, আমরাই আল-হাকাম, আমাদেরই রাজত্ব, আমদেরই সার্বভৌমত্ব’’ (নাউযুবিল্লাহ মিন হাযা)
চলবে.........
----আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ দাজ্জাল (হে আল্লাহ আমাদের দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা করুন)
বিষয়: বিবিধ
১৩৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন