মিথ্যার রাজ্যে মিথ্যুক রাণী
লিখেছেন লিখেছেন বটতলার বাউল ১২ মে, ২০১৩, ০৩:১১:৩৩ দুপুর
একদা একজন যুবক ছিল।দেশের সবাই তাকে ভালবাসত,বিশ্বাস করত।তখন রাজ্যে ছিল অত্যাচারি শাসক।যুবকটি ওই শাসকের বিরুদ্ধে চলা আন্দোলনে যোগ দিল।আস্তে আস্তে বড় বড় নেতাদের সহচর্যে থেকে যুবকটি রাজনিতীতে পাক্কা খেলোয়ারে পরিনত হল।ধীরে ধীরে যুবক আন্দোলন নিজের নিয়ন্ত্রনে নিতে লাগল।এমনকি তার একসময়কার গুরুদের কাছ থেকেও নিয়ন্ত্রন কেড়ে নেওয়া শুরু করে দিল।অবশেষে যুবকের মিথ্যার উপর ভিত্তি করে রাজ্য অত্যচারি শাসক মুক্ত হল।রাজ্য মুক্তির সমস্ত অবদান একমাত্র নিজের করে নিল যুবক।যুবকটি রাজ্যের শাসনভার গ্রহন করে রাজা বনে গেল।তখন তার চারপাশে সমস্ত চোর,চামুন্ডা আর মিথ্যুকরা ভিড় করতে লাগল।রাজা তাদের তোষামোদে খুশি হতেন এবং তাদেরকে রাজ্যের হর্তাকর্তা বানালেন।ওই চ্যালাচামুন্ডারা রাজ্যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করল।তারা শাসকের বিরোধীদের হত্যা করা শুরু করল,আশেপাশের রাজ্যে থেকে আসা উপঢৌকন লুটকরতে শুরু করল,রাজ্যের বৈধ সৈন্যবাহিনীর প্যারালালি তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রিত আরেকটি বাহিনী করল যাদের মাধ্যমে তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা,নির্যাতন,চুরি,ডাকাতি,রাহাজানি চালাতে লাগল।এই লুটপাটে রাজার রাজপুত্ররাও জড়িত ছিল।তখনকার সময়ে ঘটে যাওয়া দুর্ভিক্ষে হাজার হাজার মানুষ মারা গেলেও রাজা নির্বিকার ছিলেন।বরং তিনি মারা যাওয়ার ঘটনা আর তার বাহিনীর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বেমালুম অস্বীকার করলেন বাইরের রাজ্য প্রতিনিধিদের কাছে।একসময় রাজ্যের সাধারন জনগন প্রতিবাদ করা শুরু করলে রাজা একে একে সব প্রতিবাদি কন্ঠ রোধ করা শুরু করলেন।রাজ্যে অন্যসব সংঘঠন নিষিদ্ধ করলেন।রাজ্য অনুমদিত মুখপত্র ছাড়া বাকি সব বন্ধ করে দেওয়া হল।জনসাধারনের কন্ঠরোধ,চ্যালাচামুন্ডাদের মাত্রাতিরিক্ত প্রশ্রয়দান আর রাজপুত্রদের বেপরোয়া অরাজকতায় অতিষ্ট হয়ে একদল রাজসৈন্য রাজাকে সপরিবারে হত্যা করল।রাজ্য ও রাজ্যের জনগন অত্যাচারের হাত থেকে মুক্ত হল।কিন্তু ভাগ্যক্রমে রাজার দুই রাজকন্যা বেঁচে যায়।তাদের মধ্যে এক রাজকন্যা রাজ্যে ফিরে এসে রাজ্যে সক্রিয় হল।তিনি পরবর্তিতে রাজ্যের ক্ষমতায় আসতে চাইলেও দেশের জনগন আসতে দেয় নাই।দীর্ঘ ২১ বছর পর অনেক কাকুতি মিনিতি করে নিজের ভোল পালটিয়ে রাজকন্যা রাজ্যের জনগনের কাছে ক্ষমা চেয়ে রাজ্যের শাসনভার ভিক্ষা চায়।দেশের জনগন এবার তার প্রতি একটু নমনীয় হল।তাকে রাজ্যের রানী বানানো হল।কিন্তু বিধিবাম!তিনি তার সমস্ত ওয়াদা,প্রতিশ্রুতি ভংগ করে তার পিতার মতই অত্যাচারির ভুমিকায় অবর্তিন হলেন।রাজ্যে আবার হত্যা,রাহাজানি,চুরি,ডাকাতি,সন্ত্রাস শুরু হল।মিথ্যার অহরহ ব্যবহার আবার শুরু হল।তিনি এতই মিথ্যাবলা শুরু করলেন যে তার শাসনামলের ৫ম বছরে গিয়ে রাজ্য সারাবিশ্বে মিথ্যা,দুর্নিতী আর অরাজকতায় বিশ্বচ্যম্পিয়ন হল।জনগন আবার ওই রানী্র কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে ছুরে ফেলে দিল।পরবর্তি শাসকের শাসনামলে উনি ষড়যন্ত্র শুরু করলেন।তিনি ঘোষনা দিয়ে রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করালেন।যানবাহনে আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষ হত্যা করালেন।পার্শ্ববর্তি কুচক্রী শাসকদের সহায়তায় রাজ্যে রাজসৈন্যের শাসন শুরু হল।তাদের প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় তিনি আবার ক্ষমতায় অধিষ্টিত হলেন।তবে এবার তিনি মিথ্যা বলার অতিতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং তিনি সফলও হন।আগের তুলনায় শতগুন স্পিরিট নিয়ে উনি মিথ্যা বলা শুরু করলেন।তার চারপাশে মহামিথ্যুকদের রেখে তিনি তার দলের সব স্পষ্টভাষিদের বিতাড়িত করলেন।এমনকি সবাইকে মিথ্যা বলার জন্যে উনি চাপ সৃষ্টি করলেন।মিথ্যাবলায় অভ্যস্ত এরকম মিডিয়া রেখে বাকি সব মিডিয়া বন্ধ করে দিলেন।সত্যবাদী মানুষদের ধরে ধরে জেলে পুড়লেন।সত্যের পক্ষোবলম্বনকারীদের উপর নামাই দিলেন অত্যাচারের স্টিমরোলার। পাখিরমত তাদের হত্যা করতেও তিনি পিছপা হননি।আর দিনের শেষে তার সরল অস্বীকারোক্তি,কোন মানুষ ই মারা যায় নি।আপাত দৃষ্টিতে দেখলেই মনে হবে রাজ্যটা একটা মিথ্যার রাজ্য।উনার কাছের এক লোকের অবৈধ দালান ভেঙ্গে হাজারো শ্রমিক মারাগেল,আর এটা নিয়ে তিনি নির্লজ্জের মত মিথ্যা বলে গেলেন।শত প্রমান সাক্ষি থাকার পরেও উনি দায়টা অন্যের ঊপর চাপাতে চেয়েছেন,তারপর মালিক যে তার কাছের কেউ ওটা উনি বেমালুম অস্বীকার করে বসলেন।মৃতের সংখ্যা নিয়েও উনি মিথ্যাচার করেছেন।উনার মিথ্যার পরিমান এতই এতই বেড়ে গেলো যে রাজ্যের জনগন আর তার কথায় কোন প্রতিক্রিয়া দেয় না।তবে তিনি যে মিথ্যা বলে ধরা না খেয়ে পার পেয়ে যান,বেপারটা কিন্তূ ওরকম না।ঊনার প্রতিটা মিথ্যা রাজ্যের জনগন কিন্তু ঠিকই ধরে ফেলেন।এই যেমন ১০ টাকার চাল খাওইয়াবে বলে মিথ্যাচার করল আর ধরা খাইল।ঠিক তেমনি পার্শ্ববর্তী রাজ্যকে দেশের সবকিছু বিলিয়ে দেওয়া,একটা সেতু খেয়ে ফেলা,শাসকের কাছের লোকদেকে রাজ্যের কোষাগার বিলিয়ে দেওয়া,সাধারন জনগনের বিনিয়োগকৃত টাকা মেরে দেওয়া,গনহত্যা এসব উনি মিথ্যা বলে চেপে যেতে চেয়েছিলেন,কিন্তু জনগন ঠিকিই ধরে ফেলল।
আমরা মিথ্যুক রাখাল আর তার পরিনতির কথা অনেকেই জানি।আমাদের এই মিথ্যুক রানীর তুলনায়তো রাখাল কিছুই না।সুতরাং এই রানীর যে কি পরিনতি হবে একমাত্র আল্লাহ মালুম ।।
বিষয়: রাজনীতি
১৩৫৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন