নজরুল সমাচার
লিখেছেন লিখেছেন চক্রবাক ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১১:৪৫:২৯ রাত
পাপ ও নজরুল
নজরুল তুমি করিয়াছ ভুল, দাড়ি না রাখিয়া রাখিয়ছ লম্বা চুল
উক্তিটি শোনেনি এমন মহাশয় বোধয় কমই আছেন। কিন্তু আমি তার চুল ধরে টানাটানি করতে চাই না এতে সভ্যসমাজ উকুনে ভাসবে তবে ইথিক্স বলতে একটা ইজম যেহেতু দাড়িয়ে আছে সেহেতু আমার মত খুতখুতে স্বভাবের লোকের সামনে পড়ে তার হাড় নিয়ে দাড়িয়ে থাকার জো আছে বলে আমার মনে হয় না গঙ্গাস্নানে গেলে পরিশুদ্ধতা আসবে কিনা তা বলা দ্বায়।
ভূমিকা শেষ করি ইদানিং পাঠক সমাজের বিরক্তির অন্ত নেই তার উপর ঘা বসাতে চাই না।
আজ নজরুলের সাম্যবাদী পাঠ করছিলাম পুরো কাব্যগ্রন্থটাই সিনামিন কোম্পানির সুবিধার্থে লিখা। যাদের ধর্মের প্রতি বিন্দুমাত্র আবেগ আছে তাদের বোধয় ১ পাতা সিনামিনে সারবে না পুরো ১বক্স লাগবে। যাই হোক যারা এতদিন নজরুল প্রীতিতে যারা হাবুডুবু খাচ্ছিলেন তাদের জন্যই আমার লেখার প্রয়াস নজরুলকে ইসলামিক কবি ভেবে যাদের নিজের অজান্তেই নিজের রন্দ্রে গর্ব অনুভূত হয়েছিল তাদের কপালে দুঃখ আছে। আপনাদের পড়ার সুবিধার্থে নিন্মে একখানা কবিতা উৎসর্গ করিলাম যাহার নাম পাপ এই কবিতার রাজ্যে হাবুডুবু খেলেও পাপ হয়ার সম্ভাবনা আছে পড়ার আগে ভেবে দেখবেন.।। এই পোস্ট টাকে দর্শকদের জন্য উৎসর্গ করলাম পড়ার পর আপনার মূল্যবান কমেন্ট করতে ভুলবেন না, কারণ আপনাদের কমেন্ট পর্যালোচনাতেই পরবর্তী পোস্ট রচিত হবে। সাথে আমার গ্যাঁজগ্যাঁজানি তো ফ্রি
পাপ
সাম্যের গান গাই!-
যত পাপী তাপী সব মোর বোন, সব হয় মোর ভাই।
এ পাপ-মুলুকে পাপ করেনি করেনিক’ কে আছে পুরুষ-নারী?
আমরা ত ছার; পাপে পঙ্কিল পাপীদের কাণ্ডারী!
তেত্রিশ কোটি দেবতার পাপে স্বর্গ সে টলমল,
দেবতার পাপ-পথ দিয়া পশে স্বর্গে অসুর দল!
আদম হইতে শুরু ক’রে এই নজরুল তক্ সবে
কম-বেশী ক’রে পাপের ছুরিতে পুণ্য করেছে জবেহ্ !
বিশ্ব পাপস্থান
অর্ধেক এর ভগবান, আর অর্ধেক শয়তান্!
থর্মান্ধরা শোনো,
অন্যের পাপ গনিবার আগে নিজেদের পাপ গোনো!
পাপের পঙ্কে পুণ্য-পদ্ম, ফুলে ফুলে হেথা পাপ!
সুন্দর এই ধরা-ভরা শুধু বঞ্চনা অভিশাপ।
এদের এড়াতে না পারিয়া যত অবতার আদি কেহ
পুণ্যে দিলেন আত্মা ও প্রাণ, পাপেরে দিলেন দেহ।
বন্ধু, কহিনি মিছে,
ব্রহ্মা বিষ্ণু শিব হ’তে ধ’রে ক্রমে নেমে এস নীচে-
মানুষের কথা ছেড়ে দাও, যত ধ্যানী মুনি ঋষি যোগী
আত্মা তাঁদের ত্যাগী তপস্বী, দেহ তাঁহাদের ভোগী!
এ-দুনিয়া পাপশালা,
ধর্ম-গাধার পৃষ্ঠে এখানে শূণ্য-ছালা!
হেথা সবে সম পাপী,
আপন পাপের বাট্খারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি!
জবাবদিহির কেন এত ঘটা যদি দেবতাই হও,
টুপি প’রে টিকি রেখে সদা বল যেন তুমি পাপী নও।
পাপী নও যদি কেন এ ভড়ং, ট্রেডমার্কার ধুম?
পুলিশী পোশাক পরিয়া হ’য়েছ পাপের আসামী গুম।
বন্ধু, একটা মজার গল্প শোনো,
একদা অপাপ ফেরেশতা সব স্বর্গ-সভায় কোনো
এই আলোচনা করিতে আছিল বিধির নিয়মে দুষি,’
দিন রাত নাই এত পূজা করি, এত ক’রে তাঁরে তুষি,
তবু তিনি যেন খুশি নন্-তাঁর যত স্নেহ দয়া ঝরে
পাপ-আসক্ত কাদা ও মাটির মানুষ জাতির’ পরে!
শুনিলেন সব অন্তর্যামী, হাসিয়া সবারে ক’ন,-
মলিন ধুলার সন-ান ওরা বড় দুর্বল মন,
ফুলে ফুলে সেথা ভুলের বেদনা-নয়নে , অধরে শাপ,
চন্দনে সেথা কামনার জ্বালা, চাঁদে চুম্বন-তাপ!
সেথা কামিনীর নয়নে কাজল, শ্রেনীতে চন্দ্রহার,
চরণে লাক্ষা, ঠোটে তাম্বুল, দেখে ম’রে আছে মার!
প্রহরী সেখানে চোখা চোখ নিয়ে সুন্দর শয়তান,
বুকে বুকে সেথা বাঁকা ফুল-ধনু, চোখে চোখে ফুল-বাণ।
দেবদুত সব বলে, ‘প্রভু, মোরা দেখিব কেমন ধরা,
কেমনে সেখানে ফুল ফোটে যার শিয়রে মৃত্যু-জরা!’
কহিলেন বিভু-‘তোমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ যে দুইজন
যাক্ পৃথিবীতে, দেখুক কি ঘোর ধরণীর প্রলোভন!’
‘হারুত’ ‘মারুত’ ফেরেশতাদের গৌরব রবি-শশী
ধরার ধুলার অংশী হইল মানবের গৃহে পশি’।
কায়ায় কায়ায় মায়া বুলে হেথা ছায়ায় ছায়ায় ফাঁদ,
কমল-দীঘিতে সাতশ’ হয়েছে এই আকাশের চাঁদ!
শব্দ গন্ধ বর্ণ হেথায় পেতেছে অরূপ-ফাঁসী,
ঘাটে ঘাটে হেথা ঘট-ভরা হাসি, মাঠে মাঠে কাঁদে বাঁশী!
দুদিনে আতশী ফেরেশতা প্রাণ- ভিজিল মাটির রসে,
শফরী-চোখের চটুল চাতুরী বুকে দাগ কেটে বসে।
ঘাঘরী ঝলকি’ গাগরী ছলকি’ নাগরী ‘জোহরা’ যায়-
স্বর্গের দূত মজিল সে-রূপে, বিকাইল রাঙা পা’য়!
অধর-আনার-রসে ডুবে গেল দোজখের নার-ভীতি,
মাটির সোরাহী মস-ানা হ’ল আঙ্গুরী খুনে তিতি’!
কোথা ভেসে গেল-সংযম-বাঁধ, বারণের বেড়া টুটে,
প্রাণ ভ’রে পিয়ে মাটির মদিরা ওষ্ঠ-পুষ্প-পুটে।
বেহেশ্তে সব ফেরেশ্তাদের বিধাতা কহেন হাসি’-
‘ হার”ত মার”তে কি ক’রেছে দেখ ধরণী সর্বনাশী!’
নয়না এখানে যাদু জানে সখা এক আঁখি-ইশারায়
লক্ষ যুগের মহা-তপস্যা কোথায় উবিয়া যায়।
সুন্দরী বসুমতী
চিরযৌবনা, দেবতা ইহার শিব নয়-কাম রতি
এই কবিতা পড়ে নজরুলকে কি ধরণের লেখক ভাবতে আপনার ভাল লাগছে জানাবেন কিন্তু ;
সাম্যবাদীর কাব্যগুলো পড়তে ক্লিক করুন সাম্যবাদী
বিষয়: বিবিধ
১৯৩৯ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শেষ ভালো যার-সব ভালো তার এই নিয়মে নজরুলের ব্যাপারে সুধারণা পোষণ করাই শ্রেয়।
আপনি তার সময় এবং তার সমাজ কে বিবেচনা না করেই ফতোওয়া দিয়ে দেওয়ার মত করছেন। কবি হিসেবে নজরুল সময়কে উপস্থাপন করেছেন। এতে ভুলের কিছুই তো দেখছিনা।নজরুল জিবিত থাকতেই তার বিরুদ্ধে কাফের ফতোওয়া দেয়া হয়েছিল। এখনও অনেকে খন্ডিত নজরুল কে তাই ভাবছেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন