বাঙ্গাল-পুলিশ পল্লী VS বিহারি পল্লী---ফটকা বাজির খেলা
লিখেছেন লিখেছেন চক্রবাক ১৪ জুন, ২০১৪, ০১:৪১:২৯ দুপুর
নিউজ ক্যপচারঃ আতশবাজী ফোটানোকে কেন্দ্র করে রাজধানীর কালশীর বিহারী পল্লীর সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, এক পর্যায়ে স্থানীয়রাও জড়িয়ে পড়েন। এতে মারা যান প্রায় ১০ জন এবং আহত হন ৩০ জনের ওপরে। নিহতদের মধ্যে একাধিক শিশু ও মহিলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
নিউজের পতিক্রিয়াঃ কালসিতে অবস্থানরত ভুক্তভোগীরা তা অস্বীকার করেন তারা বলেন, লাল মাঠের ছোটছোট বাচ্চারা সকাল বেলায় এই বাজি ফোটায় কিন্তু পল্লবী থানার পুলিশ উল্টো অভিযোগ এনে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং কয়েকটি ঘরবাড়ি পুড়েফেলে। এবং তারা ইলিয়াস মোল্লাকে ঘটনার জন্য দায়ী করে।
***বিহারি পল্লী এবং বাঙ্গাল/পুলিশ পল্লীর মধ্যে যে সংঘর্ষ ঘটেছে তার কিছু পোস্টমটেম দেখাচ্ছি ...
আইনঃ ডিএমপি কমিশনার থেকে আতশবাজি বা পটকা ফোটানো নিষেধ থাকা সর্তেও বিহারীরা আতশবাজি ফুটিয়েছে বিধায় পুলিশ গুলি করেছে এবং স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
• পোস্টমটেমঃ পুরো মিরপুর এলাকা জুড়ে আতশবাজির প্রত্যক্ষদর্শী আমি। কালসি, বেনারসিপল্লী, মিরপুর ১২ (আওয়ামী সাংসদ ইলিয়াস মোল্লার বাসা), পল্লবী থানার আশেপাশে গত কাল আমি ঘুরে দেখেছি পুরো এলাকায় ছিল পটকা ফোটার উৎসব। কিন্তু এলাকাজুড়ে পুলিশ নামক জন্তুটির কোন চেহারাও দেখতে পাই নি। কিন্তু হটাৎ করে কেনইবা বিহারীদের আতশবাজি পুলিশ নামক জন্তুটির চোখে পড়ল ? পুলিশের এই এক পাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গী কি প্রমাণ করে ?
• পুলিশের গুলিঃ পুলিশ যেখানে নিরপেক্ষ থাকার কথা সেখানে সেখানে তাদের গুলি কেন বিহারীদের উপরই আঘাত হানে, বিহারীদের অনেকেই সে গুলিতে আহত এবং নিহত হয়, কিন্তু অন্য জনগনদের কাউকে আঘাত করতে দেখি না। আমিও চাই না যে সাধারণ মানুষ পুলিশের গুলিতে আঘাত পাক কিন্তু পুলিশের পক্ষপাতিত্ত দেখানোর জন্য বলতে হল।
• ইলিয়াস মোল্লা এবং আতশবাজিঃ আওয়ামী এই সাংসদের (পল্লবী এলাকার) বাড়িতে সবসময়ই উৎসবের আমেজ লেগেই থাকে আর আতশবাজি, ককটেল, ফটকা এসব তো মামুলি বিষয় কিন্তু তাদের এই বাজির আওয়াজে রীতিমত আমাদের ঘুম হারাম হলেও পুলিশ নামক জন্তুরা কেবল মিউজিকই মনে করেন হয়তবা। আর ডিএমপিরা তো তাদের কেনা দালাল।
• পল্লীতে আগুনঃ ঘটনার তথাকথিত সুত্রপাতের সাথে আগুনের সামঞ্জস্যতা খুঁজে পেতে বেঘ পেতে হয়, কারন সাধারণ মানুষ যেখানে সারাজীবন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে সেখানে তারা কেন শুধু শুধু নিজেদের উপর ঝামেলা বাড়াবে। বিহারী পল্লীতে আগুন দেবে ? আমরা একটু চিন্তা করলেই দেখতে পাবো এদের পেছনে কাজ করছে অনেক গুলো রুই কাতলারা, এবং বিশেষ কিছু আইডিওলজির ভিত্তিতে।
• ঘটনাগুলোর সম্ভাব্য কারনঃ আমার কাছে মনে হয় দুটি শ্রেণীর মধ্যে কনফ্লিক্ট বাধার মূল কারণ হল আইডিওলজিক্যাল তবে অন্য কারণও থাকতে পারে সেটা অপেক্ষাকৃত কম বিবেচ্য।
১. রাজনৈতিকঃ বিহারী পল্লীগুলো মধ্যে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্ঘিতে লক্ষ করলে আমরা দেখতে পাই প্রথাগত ভাবে ধর্মীও মূল্যবোধ থাকার কারণে তারা ইসলাম বিদ্বেষীদের বিপক্ষে অবস্থান করে। তাছাড়া ৭১ এর পর বাংলাদেশে আসার অন্যতম কারণ ধর্মীয়। তাই তারা কখনো শাপলা চত্বরে মুসলিম গনহত্যা কারিদের পক্ষ নেবে না। যেহেতু মোল্লা সাহেবের ভোট বাক্স এদের দ্বারা ভরে না, সেহেতু বিহারীদের প্রতি সাংসদের বিরুপ মনোভাব পোষণ করা সাধারণ বিষয়।
২. ধর্মীয়ঃ আমাদের তথাকথিত কাঠমোল্লারাও এদের পেছনে লেগেছে খুব ভালো ভাবে। আমরা জানি বিহারীদের মধ্যে সংখ্যা গরিষ্ঠই সিয়া, আর তাই আমাদের কাঠমোল্লারা মসজিদে এদের কাফের বলে ঘোষণা দেন। যদিও তার পেছনে ভালো কোন যুক্তি উপস্থাপনে তারা ব্যর্থ। কাঠমোল্লাদের জিহাদি ঘোষণায়, আমাদের জিহাদি (যদিও তারা জিহাদের জ ও বোঝে না) মুসলিম জনতার জিহাদি জজবা জেগে উঠে এবং কোন খুত পেলেই কাফের উক্তিটি ওদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ফলতই শুরু হয় সিয়া সুন্নি বিরোধ। যেটা বিশ্বব্যপি কম দেখি না।
৩. চেতনা ভিত্তিকঃ এই চেতনা মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক, এদেরকে যারা আটকে পড়া পাকিস্থানি মনে করেন আমি তাদের বলব বিহারীদের নিয়ে আগে ভালোভাবে পাঠ করুন তারপর এদের নিয়ে উক্তি করুন। এবার আসি চেতনায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা উদ্ভুদ্ধ তারা এদের দেখতেই পারে না কেন পারেন না বা তাদের অপরাধ কি সেটা বলার জন্য আসিনি আমি বলব এই ঘটনার সাথে চেতনার সামঞ্জস্য কি। সংবিধান থেকে শুরু করে সর্বসাধারনের মাঝে এই ফোবিয়া কাজ করে যে এরা স্বাধীন বাংলাদেশের ক্যান্সার হিসেবে বেঁচে তাই এদের উচ্ছেদ করা জরুরি। ফলতই মুক্তিযদ্ধের চেতনায় বলীয়ান আওয়ামী একজন সাংসদও নিশ্চয়ই চাইবেন না তার এলাকায় এই ক্যান্সার জেগে থাকুক, আর মানবতাবাদীদের জন্য সরাসরি উচ্ছেদ করারও যো নাই। তাই বিভিন্ন পক্রিয়ায় তাদের মধ্যে সংঘর্ষের বীজ বুনে দিতে তারা কার্পণ্য বোধ করে না। আর সাধারণ চেতনা বাদীরাই তো ওঁত পেতেই থাকেন...
স্থানীয়দের বিবৃতিঃ কালসির বিহারী পল্লীর লোকজন দাবি করেন, স্থানীয় রুই কাতলারা তাদের ট্রান্সমিটার থেকে পাশের বস্তিতে বিদ্যুৎ দিতে বললে তারা ট্রান্সমিটার থেকে বিদ্যুৎ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। কারন এর ফলে ট্রান্সমিটার ওভারলোড নিতে না পেরে ব্লাস্ট করবে, এবং স্থানীয় বিদ্যুৎ কর্মীরাও এ ব্যাপারে তেমন দৃষ্টি দেবে না (তারা বিহারী হওয়ায়)। সংঘর্ষের এটাও একটা কারন। আরেকটা কারন হল কিছু আওয়ামী দালাল বিহারীদের অবস্থানকৃত যায়গা হউজিং কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিয়েছে কিন্তু হাইকোটের আদেশের কারণে তারা তাদের সরাসরি উচ্ছেদ করতে পারছে না বলেই স্থানীয়দের মাঝে বিভিন্ন ভাবে উস্কানি দেন যাতে দুপক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে।
• বিহারী এবং সরকারের অবস্থানঃ কেউ যদি ওদের ঢালাও ভাবে বিহারী বলেন তাহলে আমি বলব জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে পুরপরি অজ্ঞ। এই ধারণা করতে আমি দ্বিধা করবো না এই কারণে যে তথাকথিত বিহারীরা শতকরা ৯০% বেশি বাঙালি কারণ তারা বাংলাদেশে জন্ম গ্রহন করাছে। তাই তাদের সংবিধান মতে সকল অধিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু তারা তাদের পাওনা অধিকারের ৩০ % ও পাচ্ছে না। পানি, শিক্ষা, চিকিৎসা, পাসপোর্ট সুবিধা এখনো তারা পায়নি। সরকারের এই বিরুপ নীতি তাদের বাংলাদেশ নীতির সম্পর্কে কুৎসিত মনোভাব জাগানোর জন্য দায়ী।
**বিহারীদের অধিকার হরনের প্রমাণ স্বরূপ লিঙ্ক গুলো দেখতে পারেন।
১Click this link
২Click this link
৩Click this link
৪Click this link
৫Click this link
৬Click this link
৭ Click this link
৮Click this link
৯Click this link
• সবশেষেঃ আমরা সবশেষে বুঝতে পারি যে আজকের ঘটনাটা পুরোপুরি পরিকল্পনা মাফিক একপাক্ষিক এবং বর্বর। এই দুঃখ জনক ঘটনাকে আমি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। বিহারীদের উপর পুলিশের এই হত্যাজজ্ঞের তিব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এবং এই পুলিশের শাস্তি কামনা করছি (যদিও এর কোন বিচার হবে না জানি)
বি দ্রঃ- আজকের লেখা দেইখা মনে হইতাছে রচনা লেখছি কিছু মনে কইরেন না।
তথ্য সুত্রঃ
১.Click this link
২.Click this link
৩.Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৯২১ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বিহারিদের আচরন অনেক ক্ষেত্রেই অগ্রহনযোগ্য হলেও এর জন্য দায়ি তাদেরকে সমাজের মুল স্রোতে যুক্ত না করা এবং তাদের মধ্যে শিক্ষার অভাব। চট্টগ্রামে বেশ কিছু বিহারি আছেন যাদের প্রধান অংশ বসবাস করে আমবাগান রেলওয়ে কলোনিতে। কিন্তু যারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় আলাদাভাবে আছেন তারা কিন্তু মুল স্রোতে মিশে গেছেন নিজেদের সাত্বন্ত্র রেখেই। ঢাকায় এই সংঘর্ষের পিছনে আছে সম্ভবত জমি দখলের চেষ্টা। যেটা অনেক বছর ধরেই হয়ে আসছে।
সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজে তারা জড়িয়ে গেছে ।
সময় এসেছে এদেরকে সাইজ করার
২য়ত বিহারীদের সম্পর্কে আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট পড়ার অহবান করছি।
৩য়ত তারা যে অপরাধ মূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছে তার কিছু রেফারেন্স চাই।
৪র্থত আপনি মানবতা বিরোধী কথা বলছেন।
৫মত আপনি সংখ্যালুগুদের উপর হামলা চালাতে উস্কানি দিয়েছেন এটা আইনত অপরাধ।
আশা করছি রেফারেন্স দিয়ে কথা বলবেন, অন্তত আপনার কাছ থেকে এটা আশা করা যায়।
কথায় কথায় গুলি আহ কি কষ্ট.........................।
এরশাদের সময় দুটো আইন করা হয়।
১. গাড়ীতে কালো কাঁচ লাগানো নিষিদ্ধ করা হয়।
২. সকল প্রকার আতশবাজী ও তার উপকরণ মজুদ, বাজারজাত, তৈরী, বিপণন নিষিদ্ধ।
আইনদুটো বলবত আছে। কিন্তু সারাদেশে অবাধে আতশবাজী পাওয়া যায়। আর কালো কাঁচ - তার আবার নতুন করে আইন করা হয়েছে, হাইকোর্টে আবার স্থগিতও হয়।
"রাজনৈতিক ও জমি দখলের ব্যাপার।" এটা নিয়ে উপরে স্পষ্ট আলোচনার চেষ্টা করেছি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন