কেমন বিয়ে করবেন?
লিখেছেন লিখেছেন হিললোল ১০ মে, ২০১৩, ০৩:৩৬:৪১ দুপুর
বিয়ে একটা নিত্যকার অতি প্রয়োজনীয় ঘটনা। কত যে জীবন সুখের সাগর পাড়ি দিচ্ছে বিয়ে নামক নৌকো দিয়ে । আবার কত জীবন যে কুরেকুরে ধ্বংশ হচ্ছে বিয়ে নামক অভিশাপের কারণে । আর বউ বা জামাই তো সহজেই পাল্টানো যায় না, তাই সঠিক সিদ্ধান্ত খুব জরুরি ।
এ বিষয়টা বড়ই জটিল । ভালো গাইড লাইন পাওয়া যায় না । ভালো ঘটক ও পাওয়া যায় না । বিয়ের আগ পর্যন্ত স্বামী স্ত্রীর প্রকৃত পরিচয় ও পাওয়া যায় না । তবু সঠিক স্বামী বা স্ত্রী পাওয়ার চেষ্টা তো করতেই হবে । কিছু গাইড লাইন দেবার চেষ্টা করছি ।
হাদিস বলছে, রাসুল (সা) বলেছেন, বিয়ের ক্ষেত্রে মানুষ চারটি জিনিস দেখে -১. রূপ, ২. সম্পদ, ৩. বংশ বা পারিবারিক পরিচয় ৪. তাকওয়া বা চরিত্র । এর মাঝে চরিত্র হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ।
অবস্যই চরিত্র হচ্ছে ১ নম্বর যোগ্যতা যার অনুপস্থিতি পাত্র বা পাত্রীকে সরাসরি অযোগ্য ঘোষণা করবে ।
আর অন্যান্য বিষয়গুলো এখন আলোকপাত করছি -
ছেলেদের জন্য-
মনে রাখবেন আপনি পরিবার নামক প্রতিষ্ঠানের প্রধান । আপনার স্ত্রী এবং সন্তানের ভরণ পোষণ চালানোর যোগ্যতা না হলে বিয়ে করা উচিত হবে না । এক্ষেত্রে আপনার শারীরিক, অর্থনৈতিক যোগ্যতার পাশাপাশি সময় দেয়ার সুযোগ থাকতে হবে ।
এবার আপনার পাত্রী কেমন হওয়া উচিত
১. অবশ্যই তাকে দেখে আপনার খুবই পছন্দ হতে হবে । অল্প পছন্দ বিয়ের পর পরই না পছন্দে চলে যেতে পারে । তখন পারিবারিক অশান্তি, স্ত্রীর প্রতি অনাগ্রহ চলে আসতে পারে ।
২. স্ত্রী যেহেতু আপনার কথা শুনবে তাই আপনার চেয়ে একটু কম সম্পদশালী পরিবারে বিয়ে করা ভালো । তাহলে সে স্বামীর ঘরে এসে বিপদে পড়েছে বলে মনে করবে না ।
৩. বংশ পরিচয় আজকাল খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়, তবে ভালো পরিবারের সন্তানেরা সাধারনত ভালো হয় । আপনার কাছাকাছি স্টাটাস বা একটু কম স্টাটাস হলে ভালো ।
৪. আপনি যদি খুব ব্যস্ত থাকেন বা আপনাকে খুব বেশি স্থান পরিবর্তন করতে হয় চাকরি বা ব্যবসার জন্য তাহলে স্ত্রীকে কাছে রাখার জন্য আপনাকে হাউস ওয়াইফ বিয়ে করা উচিত । সেক্ষেত্রে ভালো লেখাপড়া জানা মেয়েকে বিয়ে না করাই ভালো। কারণ ভালো লেখাপড়া জানা মেয়ে হাউস ওয়াইফ হলে তার লেখাপড়ার কোনো মূল্য থাকবে না আর তার মনেও কষ্ট থেকে যাবে ।
৫. আপনি যদি সম্পদশালী কিন্তু ব্যস্ত থাকেন তাহলেও হাউস ওয়াইফ আপনার জন্য ভালো । কারণ আপনার স্ত্রীও যদি আপনারই মতো ব্যস্ত থাকে তবে আপনি যে যত্ন তার কাছ থেকে প্রত্যাশা করেন সে অফিস করে আপনাকে অতটা যত্ন করতে পারবে না । বাস্তবিক পক্ষে তারও তো আপনার মতো যত্নের আর সেবার প্রয়োজন
৬. মেয়ের বয়স ২০-২২ হলে ভালো, কারণ ৩০ এর পর বাচ্চা নেয়া বিপজ্জনক । আবার হানিমুন কাটানোর জন্য ৩-৪ বছর রেখে দিতে হবে । আবার ৪৫ এর কাছাকাছি সময় তার মাসিক বন্ধ হয়ে যাবে তখন আর যৌন জীবন তার ভালো লাগবে না। কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিবে। বেশি বয়সের মেয়ে বিয়ে করলে এ সুযোগ পাবেন না ।
৭. বিয়ের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করবেন না, সময় নিন । সব কিছু জেনে নিন । তারপর সিদ্ধান্ত নিন ।
মেয়েদের জন্য -
১. ছেলেটাকে দেখে যেনো আপনার ভালো লাগে ।
২. ছেলের পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ থাকতে হবে । আপনার চেয়ে ধনী হলে ভালো ।
৩. ফামিলি স্টাটাস আপনার চেয়ে উপরে হলে আপনার জন্য ভালো। তবে খুব পার্থক্য হলে আপনার মানাতে কষ্ট হবে ।
৪. আপনি যদি বিদেশী পাত্র বিয়ে করেন তবে ভালো করে খবর যোগাড় করা কঠিন । তাই বেশি সতর্কতা অবলম্বন করুন । আর জেনে নিন আপনাকে দেশে রাখবে না বিদেশে নিয়ে যাবে । যদি দেশে রেখে মাঝে মাঝে বেড়াতে আসে সেটা আপনার জন্য ভালো হবে না ।
৫. আপনার পাত্র যদি আর্মি বা অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য হয় তবে খুব সতর্কতা অবলম্বন করুন। কারণ এদের অনেকই নিজ পরিচয় গোপন করে । সৈনিক হয়তো নিজেকে অফিসার পরিচয় দিবে । ভালোভাবে জানুন । এদের অনেকেই দুর্গম জায়গায় পোস্টিং পায় । আপনাকে হয়তো সেখানে নেয়া যাবে না । তাই একসাথে থাকতে পারবেন না সব সময় ।
৬. শারীরিকভাবে ফিট ছেলেকে বিয়ে করবেন । টাকার লোভে যেনো রোগা ছেলেকে বিয়ে না করেন ।
৭. আপনি যদি পড়তে বা চাকরি করতে চান তবে অবশ্যই আগে ভাগেই শর্ত আরোপ করবেন , প্রয়োজনে লিখিত চুক্তি করতে পারেন ।
৮. আপনি যদি খুব ব্যস্ত সময় কাটান আপনার পড়াশুনা বা চাকরির জন্য তবে একটু কম ব্যস্ত ছেলে বিয়ে করা আপনার জন্য ভালো । যে আপনাকে সময় দিতে পারবে । দুজনই খুব ব্যস্ত হলে পারিবারিক জীবন বলে কিছুই থাকবে না ।
আর সব কিছুর উপর আবারও চরিত্রের প্রাধান্য দিচ্ছি । মনে রাখবেন ঝোকের ভালোবাসা কঠিন বাস্তবতায় অনেক ক্ষেত্রে দাড়াতেই পারে না ।
বিষয়: বিবিধ
২১৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন