ইসলামে নির্বাচন

লিখেছেন লিখেছেন হিললোল ০৯ মে, ২০১৩, ০৩:০৭:২৩ দুপুর

রাসুল(সা ) আল্লাহ কর্তৃক নির্বাচিত ছিলেন । তিনিই ছিলেন ইসলামের প্রথম রাষ্ট্রনেতা । আল্লাহ পবিত্র কোরানে পরামর্শের ভিত্তিতে যে কোনো কাজ আনজাম দিতে বলেছেন । আর রাসুল (সা ) বলেছেন, তোমরা যদি তিনজনও থাকো তবে একজন আমির বা নেতা নির্বাচন করে নাও ।

তিনি (সা ) বলেছেন, চেয়ে নেতৃত্ব নিও না । তাহলে তোমার উপর আল্লাহর রহমত থাকবে না । আবার বলেছেন, নেতা হবার যোগ্য সেই যে সব চেয়ে ভালো কোরান জানে, তারপর হাদিস জানে এবং সর্বোপরি চরিত্রবান। যার সমাজ গঠনে ভুমিকা বেশি, সে অগ্রগণ্য। যে প্রবীন সে অগ্রগণ্য ।

এবার আসি ইতিহাসের দিকে । ইসলামের প্রথম চার খলিফা পর্যন্ত আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি আছে । এরপর রাজতন্ত্র শুরু হয় ।

রাসুল (সা ) এর মৃত্যুর পর জনগণ হজরত আবু বকর (রা)কে নির্বাচিত করেন। আবু বকর (রা ) এর মৃত্যুকালে তিনি হজরত ওমর (রা) কে মনোনিত করেন এবং জনগনের কাছে এ সম্পর্কে মতামত নেন । জনগণ তার সাথে একমত হলে তিনি হজরত ওমরকে খিলাফতের দায়িত্ব দেন।

হজরত ওমর(রা) এর মৃত্যুকালে তাকে পরবর্তী খলিফা মনোনিত করতে বলা হয় । তিনি ছয় জনের একটি তালিকা দেন এবং এদের মাঝ থেকে যোগ্য লোককে জনসমর্থনের ভিত্তিতে নির্বাচিত করতে বলেন । তখন একটি নির্বাচন কমিশনের মতো কাজ করেন হজরত আব্দুর রহমান(রা)। তিনি

তিনি অধিকাংশ জনগনের মতামতের ভিত্তিতে হজরত ওসমান(রা)কে খলিফা নির্বাচিত করেন ।

হজরত ওসমান(রা) এর হত্যার পর জনগনের অনুরোধে হজরত আলী(রা ) খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ।

তখনকার দিনে এখনকার মতো পাচ বছর পর পর নির্বাচন হয় নি । একজন খলিফা মৃত্যুর পরই আর একজন দায়িত্ব নিয়েছেন । তবে ইসলামের মূলনীতি হলো, যা আল্লাহ এবং তার রাসুল (সা) নিষেধ করেন নি তা হালাল ;যদি না তা ক্ষতিকর প্রমানিত হয় ।

সে দৃষ্টিকোণ থেকে আজ ইসলামী বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন নেতা নির্বাচনের বর্তমান পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য । তবে কিছু কিছু দিক পরিবর্তন যোগ্য ।

১. নিজ থেকে যারা নেতা হতে চায়, তাদের পরিত্যাগ করা ।

২. জনগণ যাদের চায় তাদের বেছে নেয়া ।

৩. দেশ পরিচালনা একটি আমানত । এটি পরিচালনা করার জন্য লালায়িত হওয়া যাবে না , বরং দায়িত্ব এসে গেলে ভালো ভাবে পালন করতে হবে ।

৪. নিজ দলের মাঝে গোপন ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা যেতে পারে ।

৫. নির্বাচন ব্যয় কমাতে হবে । জনগণ কাকে ভোট দেবে সেটা জানানোর জন্য নির্বাচন কমিশন সকল ব্যয় ভার বহন করবে । কেউ নির্বাচিত হবার জন্য অযাচিত ব্যয় করবে না ।

৬. দীর্ঘ মেয়াদে সরকার থাকতে পারে । কারণ নির্বাচন ব্যয় একটা বড় ব্যয় । সরকার স্বল্প সময়ে সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারে না । এক্ষেত্রে জনগণ তাদের বিশিষ্ট জনদের নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারে কতদিন পর তারা পুন নির্বাচন করবে ।

৭. শক্তিশালী বিচার ব্যবস্থা থাকবে যারা সরকারের যেকোনো অন্যায় পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে এবং সরকারের যেকোনো কর্তা এবং কর্মচারীকে শাস্তি দিতে পারবে ।

৮. নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি নিরপেক্ষ, সৎ নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন ।

৯. সর্বোপরি জনগণকে যখন সৎ এবং যোগ্য লোককে চাইতে হবে

এবং জনগনকেও সততা, ধর্মপরায়নতা এবং নিষ্ঠার মাপকাঠিতে

উত্তীর্ণ হতে হবে । হতে হবে শিক্ষিত -যাতে সে যেমন জানবে ধর্মকে তেমনি জানতে হবে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানকেও ।

বিষয়: বিবিধ

১০৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File