ইসলাম ও গণতন্ত্র – কিছু মৌলিক পার্থক্য

লিখেছেন লিখেছেন ইসলামী িখলাফত ১৬ মে, ২০১৩, ০৭:৪৫:২২ সকাল



গণতন্ত্রঃ

১) গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি ‘জনমত’ তথা জনগণের ইচ্ছা।

২) সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছার প্রতি আত্মসমর্পণের নাম ‘গণতন্ত্র’।

৩) সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ।

৪) সার্বভৌমত্বের মালিক জনগণ।

৫) মানব রচিত সংবিধানেই রয়েছে মানবতার মুক্তি।

৬) মত প্রকাশে, ভোট দানে ও নির্বাচনে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সৎ-অসৎ নির্বিশেষে মূর্খ-জ্ঞানী, যোগ্য-অযোগ্য সকলের সমান অধিকার স্বীকৃত।

৭) উত্তরাধিকার ও নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়ই সমান বিবেচিত।

৮) নারী ও সংখ্যালঘুরা সাধারণ সম অধিকার ভোগ করবে।

৯) পরমত সহিষ্ণুতা গণতন্ত্রের এক বিশেষ আদর্শ। নৈতিকতার কোন বালাই নেই গণতন্ত্রে। যেমন: জরায়ুর স্বাধীনতা, মায়ের গর্ভে শিশু হত্যা বা সমকামিতা, পতিতাবৃত্তি, মদ, পরকীয়া, সুদ ইত্যাদি কোন মতামতকেই বর্জন করতে বাধ্য নয় গণতন্ত্র।

১০) সংখ্যা গরিষ্ঠের সমর্থন সকল বৈধতার মানদন্ড।

১১) জাগতিক ও দুনিয়ার উন্নয়নেই সকল চেতনা সীমিত; এই অর্থে প্রগতি।

১২) কাগজে কলমে জবাবদিহিমূলক সরকার পদ্ধতি; বাস্তবে নির্বাচিত ও নিয়মতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র, সরকার নিজের স্বার্থ সাধনের জন্যে যেকোন সময়ে যেকোন আইন প্রণয়ন ও পরিবর্তন করতে পারে। ফলে সমাজে অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতা আসে।

১৩) মানব রচিত আইন দ্বারা বিচার কার্য নিয়ন্ত্রিত।

১৪) মানব রচিত সংবিধান কর্তৃক মৌলিক অধিকার সংরক্ষিত।

১৫) জীবনের সর্বস্তরে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিচায়ক।

১৬) গণতান্ত্রিক বিশ্বাসে ধর্ম অবশ্যই রাজনীতি বিবর্জিত। মানব রচিত সংবিধান ত্রুটিপূর্ণ ও অসম্পূর্ণ কাজেই অনেক কিছুই এর আওতার বাইরে থেকে যায়। ফলে নিত্য নতুন আইন প্রণয়নের কোন শেষ নেই।

১৭) গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকারীদল ও বিরোধীদল নামে একাধিক দলের জন্ম দিয়ে একটি রাষ্ট্রের জনগণকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে দেয় এবং তারা যথাক্রমে ক্ষমতা ধরে রাখা ও ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্যে বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য ও উন্নয়ন বিনষ্ট করে।

১৮) গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধীদল ও অপরাপর দল তাদের দাবী-দাওয়া আদায়ের জন্য হরতাল, মিছিল, রাজপথ অবরোধ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের কর্মকান্ড যা একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নের অন্যতম অন্তরায় তার অনুমোদন দেয়।

ইসলামঃ

১) ইসলামের মূল ভিত্তি আল্লাহর ইচ্ছা।

২) আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি আত্মসমর্পণের নাম ইসলাম।

৩) সকল ক্ষমতার উৎস আল্লাহ।

৪) সার্বভৌমত্বের মালিক আল্লাহ।

৫) আল্লাহ প্রদত্ত সংবিধানেই রয়েছে মানবতার মুক্তি।

৬) মানুষ হিসেবে সকলেই সাধারণভাবে এসব অধিকার ভোগ করবে। কিন্তু যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, ও তাকওয়ার ভিত্তিতে গুণীজনেরা বিশেষভাবে মুল্যায়িত হবেন।

৭) উত্তরাধিকার ও নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরষে ন্যায্য বন্টC বিদ্যমান।

৮) শক্তি ও মেধায় তারতম্যের কারণে নারী ও সংখ্যালঘুরা সংরক্ষণ নীতির অধীনে ভোগ করবে বিশেষ অধিকার।

৯) শাশ্বত আদর্শ ও নৈতিক মানসম্পন্ন কার্যক্রম সমাদৃত। অনৈতিক সবকিছু ইসলামে বর্জণীয়।

১০) শাশ্বত বা ওহীর বিধান সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন ছাড়াই বৈধ।

১১) জাগতিক ও আধ্যাত্মিক উভয় ক্ষেত্রে চেতনা পরিব্যপ্ত, এই অর্থে প্রগতি।

১২) চরম জবাবদিহিমূলক সরকার পদ্ধতি, আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত ও অপরিবর্তনীয় আইন বলে কেউ নিজের স্বার্থে এক চুল পরিমাণ কিছু পরিবর্তন করতে পারে না।

১৩) আল্লাহ প্রদত্ত আইন দ্বারা বিচারকার্য নিয়ন্ত্রিত (“যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের”-মায়িদা ৪৪)

১৪) ওহীর বিধান কর্তৃক মৌলিক অধিকার সংরক্ষিত।

১৫) জীবনের সর্বস্তরে আল্লাহর ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোই ইসলামী মূল্যবোধের পরিচায়ক।

১৬) ইসলামী বিশ্বাসে মানুষের প্রথম উপাধি খলীফা প্রতিনিধি, কাজেই ইসলাম ও রাজনীতি অবিচ্ছেদ্য। ইসলাম জীবনের পূর্ণাংগ বিধান, তাই সবকিছুই এর অন্তর্গত।

১৭) ইসলামী রাষ্ট্রের সকল মুসলিমের উপর ফরয দায়িত্ব হচ্ছে এই যে কোন অবস্থাতেই মুসলিম ঐক্য ব্যাহত করা যাবে না। মুসলিম ঐক্য ব্যাহত করা হারাম এবং শাস্তিদায়ক।

১৮) ইসলামী রাষ্ট্রের সকল বৈধ দাবী ও অধিকার আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ আলোচনা এবং সবর ও ধৈর্য্যের নির্দেশ দান করে। কোন অবস্থায় ইসলামী রাষ্ট্রের উন্নয়ন বাধাপ্রদান ও ক্ষতিকর কর্মকান্ডের অনুমোদন দেয় না।

বিষয়: বিবিধ

১০২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File