আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যাকাণ্ডে জাপা নেতার নির্বাসন জীবন।

লিখেছেন লিখেছেন পাগলাপানি ০৮ মে, ২০১৪, ০৫:৫৯:১৬ সকাল

জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পার্টির আন্তর্জাতিক বিষয়ক যুগ্ম সম্পাদক নূরুল ইসলাম দিপু, আহসান উল্লাহ মাস্টার খুনের মিথ্যা অপবাদে আজ ১০ টি বছর ফেরারী হয়ে প্রবাসে মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমরা চাই অভিলম্বে নুরুল ইসলাম দিপু বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হোক।

আহসানউল্লাহ মাস্টার এর ১০ম শাহাদাত দিবসে নুরুল ইসলাম দিপুর সংবাদ সম্মেলনে তার লিখিত বক্তব্য নিন্মে তুলে ধরা হল।

আমার ব্যাক্তি জীবনের আদর্শ ছিলেন আহসানউল্লাহ মাস্টার ! দিপু

প্রকৃত খুনিদের মুখোশ একদিন উন্মেচিত হবে এই আশায় আজ ও বেঁচে আছি । নেতৃতের আঘাতে আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যাকাণ্ডে আমার নির্বাসিত জীবন ও কিছু প্রশ্ন ।

আজ রক্তাত্ত সেই ৭ ই মে । যে ৭ই মে আমি হারিয়েছি আমার ব্যাক্তি জীবনের আদর্শ প্রিয় স্যার আহসানউল্লাহ মাস্টার কে । তিনি শুধু আমার স্কুল জীবনের শিক্ষক ই ছিলেন না বরং আমার সমাজ জীবনের অভিভাবক ও ছিলেন । ২০০৪ সালে ৭ই মে আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগ কাউন্সিলে নেতৃতের সংঘাতে প্রান দিতে হলো টঙ্গী গাজীপুর বাসীর প্রান প্রিয় নেতা আহসানউল্লাহ মাস্টার কে । কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস যাকে আমি আমার ব্যাক্তি জীবনের আদর্শ মনে করি , যিনি সুশিক্ষায় শিক্ষা দিয়ে আমার শিক্ষা জীবন ও বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে আমার কর্ম জীবন রাজনৈতিক জীবন আলোকিত করেছিলেন । খুনি ও চক্রান্ত কারীরা আমার সেই স্যার কে হত্যা করে আমার জীবন প্রদীপ যেমন নিভিয়ে দিলো , ঠিক তেমনি সেই খুনের মামলায় আমাকে ও আমার দুই ভাইকে চক্রান্ত করে ফাসিয়ে অত্তান্ত সুকৌশলে আমাদের পরিবারটিকে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিলো । আজ ১০ টি বছর অতিক্রম হতে চলল পিতৃহারা আমরা তিন ভাই বঞ্চিত মায়ের আদর স্নেহ থেকে । একিই ভাবে আমাদের সন্তানরা বঞ্চিত আমাদের আদর সোহাগ থেকে । কি অন্যায় করেছিলাম আমি ??? কি অন্যায় করেছিলো আমার দুই ভাই ? স্যার আমাকে যে সন্তানের মত আদর স্নেহ করতেন স্যার এর সেই আদর স্নেহ ই কি আমার ও পরিবারের সদস্যদের জন্য কাল হলো ? খুনের মিথ্যা অপবাদ নিয়ে আজ আমার একটি ভাই বিনা দোষে কারাগারে অন্ধকার প্রকোস্টে দিনাতিপাত করছে , আমি ও আমার অপর এক ভাই ফেরারী হয়ে প্রবাসে মানবেতর জীবন যাপন করছি । আজকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য , গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য , বিচারিত কার্যক্রম পরিচালনা কারী বিচারপতি সহ দেশবাসীর কাছে আমার কিছু প্রশ্ন । যে প্রশ্নে সমূহের উত্তর খুজে পেলে বা বের করতে পারলে প্রকৃত খুনিদের মুখোশ যেমন উন্মোচিত হবে আমি ও আমার ছোট দুই ভাই মুক্তি পাবো শিক্ষক হত্যার অপবাদ থেকে ।

প্রশ্ন গুলো হলো

১ । মামলা সাজানো সাক্ষীকে বলা হয়েছে মরকুনে দুই দিন আগে বি এন পি নে নুরুল আমিনের বাড়িতে আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যার পরিকল্পনা করা হয় , আমার প্রশ্ন যদি তাই হয় তাহলে এ ব্যাপারে থানায় সাধারন ডায়েরী সহ কোন ধরনের বেবস্থা গ্রহন করা হলোনা কেনো ?এবং পুলিশের সহযোগিতা ছাড়া স্যারএর পূর্ব নির্ধারিত স্বেচ্ছাসেবক লিগের মিটিং হলো কেনো ।

২। অনুষ্ঠান স্থলে অনেকের কাছে অত্যাধুনিক মোবাইল ছিলো এবং অনুষ্ঠান ধারন করার জন্য ভিডিও ক্যামেরা ও ছিলো , প্রমাণ হিসেবে এই ফুলো আলোকচিত্র গুলো উপস্থাপন করা হলো না কেন ? বরং ঘটনার দুই দিন পর নোয়াগাও স্কুলে মিটিং ডেকে সেদিন ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন এমন সবার মোবাইল ফোন দলীয় ভাবে জব্দ করা হলোনা কেন? এবং অনুষ্ঠান ধারণকারী সেই ভিডিও ক্যামেরা কোথায় ?

৩ । মামলার এজাহারে বলা হয়েছে আমার নেতৃতে সন্ত্রাসীরা পূর্ব দিক থেকে রেল লাইন পার হয়ে গুলী করতে করতে সামনের দিকে অগ্রসর হয় । অথচ মঞ্চের পিছনে বা পূর্ব পাশে সুরক্ষিত স্কুল ঘর । গুলি করতে করতে আসলে সেই গুলি স্কুল ঘরে লাগার কথা , কিন্তু তা না হয়ে তা মঞ্চে উপবিষ্ট বেক্তিদের হতাহত করলো কি করে ?

বাহির বা পূর্ব দিক থেকে আক্রমন হলে সেটি স্কুল ঘর টপকে সম্ভব নয় । এমনটি হলে অবশ্যই অনুষ্ঠানস্থলের উত্তর পাশের গলিপথ দিয়ে ঘুরে এসে আক্রমন করার কথা , কিন্তু এভাবে ঘুরে এসে চারিদিকে স্কুল ঘর ও বাউন্ডারি বেষ্টিত অনুষ্ঠান স্থলে ডুকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে সবাই নিরাপদ স্থানে চলে গেলো কিভাবে ? অনুষ্ঠান স্থলে এত গুলি নেতা কর্মী থাকতে একজন ও ধরা পড়লোনা কেন ? আসলে কি ঘটনাটি এভাবেই ঘটেছিলো নাকি অনুষ্ঠানে আগে থেকেই উপস্থিত থেকে সন্ত্রাসীরা আক্রমন করে ছিলো ? আর অনুষ্ঠান স্থলে আমি উপস্থিত ছিলাম বা আমার নেতৃতে এই জঘন্যতম ঘটনা ঘটেছে তার প্রমাণ থাকতো দুরের কথা তা কেউ বিশ্বাসই করবেনা ।

৪। আহসানউল্লাহ মাস্টার সর্বজন শ্রদ্দেয় একজন শিক্ষক ছিলেন । অন্যদলে বা কোন রাজনৈতিক শত্রু তার ছিলোনা । অতএব স্যার এর সুযোগ্য সন্তান এম পি জাহিদ আহসান রাসেল কে অনুরোধ করবো নিজ দলের খুনিদের বের করার জন্য ।

৫। মাহবুবকে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি মূলক কাল্পনিক জবানবন্দি তৈরি করা হয়েছে । যেখানে বলা হয়েছে মোহাম্মদ আলীর কাছ থেকে অস্ত্র এনে ঘটনার পর আবার তার কাছে অস্ত্র ফেরত দেওয়া হয়েছে । তাহলে অত্তান্ত গুরুত্ব পূর্ণ সেই আলামত অস্ত্র গুলো উদ্ধার করা হলোনা কেন ?

৬ । মুমূর্ষু অবস্থায় মহল কে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সময় তিনি বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের ক্যামেরায় বলেছিলেন , আমির জাহাঙ্গীর , মজনুর নেতৃতে সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করেছে । কিন্তু মহলের এই জবানবন্দী কে গুরুত্ব না দিয়ে আমাকে ফাসানো হলো কেন ?

৭ ই মে হয়তো কারো কারো জীবনে বছরে একবার আসে , আয়রন করা জামা কাপড় পড়ে শোক সভাতে ভাষণ দেবার জন্য । পক্ষান্তরে আমাদের জীবনে সেই ৭ ই মে আসে প্রতি মুহূর্তে । প্রকৃত খুনিদের মুখোশ একদিন উন্মেচিত হবে এই আশায় আজ ও বেঁচে আছি ।

আমি নুরুল ইসলাম দিপু ,

আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক , জাতীয় পার্টি ।

সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক , জাতীয় ছাত্র সমাজ ।

বিষয়: বিবিধ

১১৫৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

218908
০৮ মে ২০১৪ সকাল ০৯:২৬
হতভাগা লিখেছেন : ঐ সময়ে ভয়ানক জটিল পরিস্থিতি দেখেছিল বাংলাদেশের মানুষ ।

৩০ এপ্রিল জলিলের ট্রাম্প কার্ড , ৭ই মে আহসান উল্লাহ মাস্টারের হত্যাকান্ড এবং এর পরপরই আনোয়ার চৌধুরীর উপর বোমা হামলা , জননেত্রীর উপর গ্রেনেড হামলা .....

219063
০৮ মে ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৪
নীল জোছনা লিখেছেন : সুন্দর হয়েছে অনেক ধন্যবাদ
১১ মে ২০১৪ সকাল ০৬:০৯
167742
পাগলাপানি লিখেছেন : আপনাকে ও ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File