চলো গ্রামে যাই কর্মসূচীঃ উপলক্ষ্য ঈদ
লিখেছেন লিখেছেন রামির ২৩ অক্টোবর, ২০১৩, ০৩:১৩:২২ দুপুর
দীর্ঘ ১৮ মাস এবারের কুরবাণীর ঈদে (অক্টোবর, ২০১৩) গ্রামে যাওয়া। ফলে মনে একটু অন্য রকম আনন্দ অনুভব। কারণ এবারের ঈদে বাড়ী গিয়ে ভিন্ন কিছু কাজ করার পরিকল্পনা ছিল। এতদিন ঈদে বাড়ী গেলে সকল কাজের পরিকল্পনা করতাম স্কুল-মাদ্রাসা-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে। কিন্তু নিজের ছাত্র-জীবনের গন্ধ মোটামুটি পুরোটাই শেষ হওয়ায় এবার কাজের পরিকল্পনার কাজে যুক্ত করলাম নন-ছাত্রদের তথা মুরুব্বীদের। তাই এবারের ঈদ উপলক্ষ্যে চলো গ্রামে যাই কর্মসূচী কে সাজালাম নিজেদের মতো করে। এবার এসে আর কোন রিপোর্ট জমা দিতে হবেনা। এ যেন এক অম্ল-মধুর স্বাদের আস্বাদন যুগপৎভাবে।
তা, ঈদ উপলক্ষ্যে বাড়ী গিয়ে যা করলাম তাই তুলে ধরলাম ফেবু আর ব্লগের কল্যাণে। বড়োই অগোছালোভাবে। আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আমাদের ভুল-ভ্রান্তিকে।
(১). সংসদের বাৎসরিক সম্মেলনঃ দেবীনগর সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ। এর বয়স প্রায় ৪ বছর হতে চলল। সাবেক ইসলামি আন্দোলনের কর্মীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে গড়ে উঠেছে এই সংসদ। আমাদের ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে ইসলামপন্থীদের বসার মত কোন উপযুক্ত জায়গা না থাকায় বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে ঈদ পুনর্মিলনী সভা করতে হতো। অন্য কোন কারণে একসাথে বসার প্রয়োজন হলেও তার জন্য যথাযথ কোন ব্যবস্থা ছিলনা। সেখানে কর্মরত জামায়াত শিবিরের বর্তমান ভাইদের বসার মত কোন ব্যবস্থাপনা না থাকায় তাদেরও খুব সমস্যা হতো। এছাড়াও, দেবীনগরের প্রাণকেন্দ্র ‘ধুলাউড়ি হাটে’র সর্বত্র তরুণদের ভীড়ে মুরুব্বিদের যেন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। একটু খানি বসার জায়গা মেলা ভার। এসব বিষয় মাথায় রেখেই বর্তমানে চাকুরীরত, দেবীনগরের সাবেক ছাত্র, সমাজকল্যানমুখী ভাইদের প্রচেষ্টায় গড়ে উঠে এই সংসদ। এই সংসদ গড়ার পিছনে রয়েছে অনেকের অনেক অবদান। বিশেষ করে আমাদের মিজান মামা, মিনহাজ কবীর মামা, নাসির ভাইদের ভূমিকা অনবদ্য। সংসদের কাজ করতে গিয়ে এদের অনেকেই অনেক ত্যাগ-স্বীকার করেছেন। বিশেষ করে মিজান মামার ত্যাগ না বললেই নয়। তিনি রাজশাহীতে তার নিজস্ব বাড়ীর কাজ বন্ধ রেখে সে টাকা সংসদ কে ধার দিয়ে সংসদের ঘর নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেছেন। আরেকটি ঘটনা- একদিন তিনি সংসদে ১টি প্রোগ্রাম পরিচালনা করছিলেন যেদিন রাজশাহী শহরে তার স্ত্রীর ১ম বাচ্চার জন্ম হয়। বিষয়টি সামনে আনায় তার উত্তর ছিল- মামা, সব আনন্দ সবার জন্য নয়। আরেকজন ভাইয়ের কথা জানি, যিনি সংসদের ঘর উদ্বোধনের দিন তার বাসার একমাত্র টেলিভিশন সেটটি ডিশের সংযোগসহ সংসদ কে স্থায়ী অনুদান হিসেবে দান করেছিলেন। অথচ টিভি সেটটি তিনি মাত্র তিন মাস আগে কিস্তিতে কিনেছিলেন এবং সেটি ছিল তার বাসার প্রথম টিভি সেট। এর এক বছর পরে তিনি আরেকটি টিভি কিনেন। তার ভাষ্য ছিল- আমার বাসায় খবর দেখে প্রতিদিন গড়ে ৩জন। কিন্তু সংসদে খবর দেখবে গড়ে প্রতিদিন ২০জন। কাজেই সামষ্টিক বিচারে সেটাই বেশি লাভজনক। তাছাড়া, দেবীনগরে তখনও দিগন্ত টিভির দর্শক তেমন ছিলনা, কাজেই সংসদের মাধ্যমে এটা চালু করার একটা চেষ্টা করা যেতে পারে। ধন্য শিবির, ধন্য শিবিরের সাবেক এ সদস্য ভায়েরা।
এ সংসদের বার্ষিক সম্মেলন, এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, বৃত্তি পরিক্ষার বিষয় নির্ধারণ, চক্ষু শিবির, ম্যাগাজিন প্রকাশ, লাইব্রেরীর কাজ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ২০১৪ সালের পরিকল্পনা করতেই কেটে গেল পুরো একদিন (সকাল থেকে সন্ধ্যা) ।
(২). উজ্জ্বল টোলা সেবা সংঘ গঠনঃ আমাদের গ্রামের সকল সকল স্কুল/মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গঠন করা হয় এই সঙ্ঘ। এর উদ্দেশ্য সকল শিশুর স্কুল/ মাদ্রাসা গমন নিশ্চিত করার চেষ্টা করা। এর উদ্যোগে আমরা দুইটি সভা করি। একটি এসএসসি উর্ধ্ব ছেলে-মেয়েদের নিয়ে। আরেকটি ক্লাশ থ্রি হতে দশম শ্রেনী পর্যন্ত ছেলে-মেয়েদের নিয়ে। মেলে ব্যাপক সাড়া। ছাত্র-ছাত্রীদের তো বটেই, তাদের অভিভাবকদের সাড়াও ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রোগ্রাম ছিল সকাল ৮.০০ টার সময়। ৮.০০ টার পূর্বেই দেখি মসজিদ ভর্তি। ভিতরে ছেলেমেয়েরা- আর বাইরে অপেক্ষমান তাদের মায়েরা। প্রোগ্রামে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যাদের ক্লাশ রোল এক (১) তাদেরকে নগদ টাকা দ্বারা পুরস্কৃত করা হয়। যদিও পুরস্কারের আর্থিক মূল্য ছিল খুবই কম তবুও গ্রামের ছেলেমেয়েরা সেটা পেয়েই বেজায় খুশি। আর তাদের মায়েদের আনন্দ তো আরো বেশি। আমাদের এই প্রোগ্রামে ২টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ (ক) শুক্রবার জুমা মসজিদে নামাজের খুতবার পর ১০ মিনিট সকলের উদ্দেশ্যে লেখাপড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হবে যাতে তারা তাদের সন্তানদের পড়াশুনায় সহযোগীতা করে। (খ) যেসব পিতামাতারা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠান তাদেরকে চিঠি দেয়া হবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে আর যেসব পিতামাতারা সন্তানদের স্কুলে পাঠান না তাদের চিঠি দেয়া হবে শিক্ষার গুরুত্ব বর্ণনা করে যাতে সকলের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।
আমাদের এই প্রোগ্রামের চিন্তা আসে মূলত দাওয়াতী কাজের চিন্তা মাথায় রেখে। আজ থেকে ১০-১২ বছর আগে গ্রামের ২জন মেয়ে, শামিমা ও জিন্নাতারা, কে (আমার চাচাত ভাই বোনের মেয়ে, যারা ছিল খুবই দরিদ্র পরিবারের) আমরা লেখা-পড়ায় উৎসাহ দিয়েছিলাম এবং যখনই বাড়ী যেতাম তখনই তাদের খোঁজ-খবর নিতাম। পরবর্তীতে মেয়ে ২জন নার্সিং পড়া শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নার্সিং (অফিসার হিসেবে এবং তদের পদবীও সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট, মেজর, কর্ণেল টাইপের) পেশায় কর্মরত। ছাত্রী জীবনে তারা ছাত্রীসংস্থার কর্মী ছিল। গ্রামে গিয়ে এখন তারা আমাদের কোন সাহায্য ছাড়াই দাওয়াতী কাজ করে।
আরেকটি ঘটনা। আমার বাড়ীর নিকটতম প্রতিবেশীর এক ছেলে। নাম মাসুদ। মেধাবী, পড়ালেখায় ভালো। আমি বাড়ি গেলেই পড়াশুনাই তাকে সাহায্য করতাম, পরামর্শ দিতাম, গল্প করতাম। যেহেতু তার পিতামাতা রাজনীতি থেকে তাদের সন্তানকে দূরে রাখতে চাইত, তাই গোপনে গোপনে কিশোর কন্ঠ পড়তে দিতাম, শিবিরের গল্প শুনাতাম। আলহামদুলিল্লাহ। সে এখন রাজশাহীতে থাকে এবং রিপোর্ট রাখে। আমি যেমন বাড়ী গেলে তার খোঁজ নিতাম, সে এখন উলটা আমাকে ফোন দিয়ে আমার খোঁজ রাখে ।
তাই গ্রামে শিক্ষার হার যত বাড়বে, দাওয়াতী কাজের সম্ভাবনাও তত বাড়বে। যেহেতু শিবির ও ছাত্রীসংস্থার জন্য ছাত্র হওয়া আবশ্যক, তাই শিক্ষার হার বাড়াতে আমাদের সর্বোচ্চ উদ্যোগী হওয়া দরকার।
(৩) বিধবা মহিলাদের সহায়তা কর্মসূচীঃ আমরা আমাদের গ্রামের ‘উজ্জ্বল টোলা সেবা সংঘ’ এর উদ্যোগে গ্রামের যারা বিধবা মহিলা রয়েছে তাদের একটি তালিকা তৈরী করেছি। এখানে যে কোন বয়সের বিধবা মহিলা যারা অসহায় তারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। আমাদের গ্রামে মোট ১৭ জন এমন মহিলা পাওয়া গেছে। প্রথমে ভাবছিলাম, এ সংখ্যা ৫-৬ জনের বেশি হবেনা, কিন্তু খুঁজতে খুঁজতে ১৭ জন হয়ে গেল। আমরা আশা করছি, আপাতত এদের কে প্রতি মাসে সম্ভব না হলেও বছরে ২টি পরার শাড়ি এবং ২ ঈদে মিষ্ট খাবারসহ আরো কিছু খাবার সরবরাহ করার চেষ্টা করব। এর বাইরে সম্ভব হলে আরো অতিরিক্ত করার চেষ্টা আমাদের থাকবে ইনশাআল্লাহ।
মজার ব্যাপার হলো, আমাদের এই ছোট উদ্যোগটি গ্রামে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আমারা ঘোষণা করেছি, ঈদে আমাদের বউ-ছেলে- মেয়েদের নতুন জামা-কাপড় হবার আগে আমাদের এ সকল বোন-খালা-চাচীদের নতুন জামা-কাপড় হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের এই ঘোষণা শুনে গ্রামের লোকেরা যার পর নাই খুশি। সব চেয়ে বেশি খুশি তারা যাদের জন্য ছিল আমাদের এ আয়োজন । তাদের খুশি ‘হায়ারোগ্লিফিক্স’ যা সাধারণ ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়।
(বন্ধুরা, আপনারা যে যেখানে আছেন, আপন আপন গ্রামে কিন্তু এ কাজটি শুরু করতে পারেন। কারো এ কাজ শুরু করার সূযোগ না থাকলে আমাদের সাথে শরীক হতে পারেন। আমরা আমাদের তালিকাটি মোবাইল নম্বরসহ একটি সিক্রেট ফেসবুক পেইজ ওপেন করে সেখানে সংরক্ষণ করব। কেউ চাইলে সরাসরি তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।)
(৪) বৃদ্ধ মহিলাদের গল্পের আসরঃ আমরা আমাদের ‘উজ্জ্বল টোলা সেবা সংঘ’ এর উদ্যোগে আরো একটি কাজ আংশিক ভাবে পালন করেছি। কাজটি ভিন্নমাত্রার এবং ভিন্ন স্বাদের। সেটি হলোঃ গ্রামের বৃদ্ধ মহিলাদের গল্পের আসর। এর উদ্দেশ্য হলোঃ গ্রামে অনেক বৃদ্ধ মহিলা রয়েছেন। তাদের অনেকেই কোনো কাজ করতে পারেন না। আবার তাদের পরিবারের যারা বউ বা মেয়ে- অনেক ক্ষেত্রে তাদের গল্প করার মত সময়ও থাকেনা। ফলে এ সকল বৃদ্ধ মহিলারা অনেকটা হীনমন্যতায় ভোগেন। তাদের এ অবসর জীবনের ক্লান্তিকর সময়ে কিছুটা আনন্দ দিতেই নিয়েছিলাম এ উদ্যোগটি। আলহামদুলিল্লাহ –এটিও সফল।
আমাদের পরিকল্পনা ছিল- এ সকল মহিলাদের একত্রিত করে আমরা সম্মান জানাবো । আমাদের বড় হবার পেছনে যে তাদের অবদান রয়েছে তা তদের জানাব। তারা যে তাদের সকল ক্ষমতা দিয়ে এ পৃথিবীকে সুন্দর করার চেষ্টা করেছেন এবং স্বার্থক হয়েছে তা তাদের সামনে তুলে ধরব। এবং এ সকল কাজ যে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ হতে ইবাদাত তুল্য তাও তাদের কে জানাব। পাশাপাশি নবী ও সাহাবী জীবনের আদর্শ তাদের সামনে তুলে ধরব। কিভাবে ইবাদতের মাধ্যমে কার্যকরভাবে সময় কাটানো যায় তা আলোচনা করব। আলহামদুলিল্লাহ, এ গুলো আমরা পরিকল্পনা মত করেতে পেরেছি । তারা আমাদের পক্ষ হতে সম্মান পেয়ে যেন আনন্দে আত্মহারা।
আমাদের পরিকল্পনা মোতাবেক তাদের সবার হাতে একটি করে ফুল এবং কিছু খাবার উপহার দিয়েছি। আমাদের ইচ্ছা ছিল প্রত্যেক কে কিছু নগদ টাকা উপহার দেয়ার। কিন্ত আমাদের আর্থিক অসামর্থ্যতার কারণে আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে পারিনি।
(মহিলাদের বেছে নেয়ার কারণ হলো- গ্রামে বিয়ের সময়ে সাধারণত বরের বয়স থাকে বেশি এবং কণের বয়স কম । ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বামী মারা যাবার পর বয়স্ক মহিলারা সাধারণত একাই থাকেন এবং কিছুটা একাকিত্বে ভোগেন।)
(৫) অসুস্থ ব্যক্তিদের দেখতে যাওয়াঃ আমরা আমাদের গ্রামের যে সকল ব্যক্তি (মহিলা ও পুরুষ সবার) খুব বেশি অসুস্থ হয়ে বিছানায়, তাদের একটি তালিকা তৈরী করেছি। সংখ্যায় মাত্র তিন জন। আমাদের প্ল্যান ছিল, আমরা তাদের কে ফলমুল নিয়ে দেখতে যাবো এবং অন্যান্য বিষয়ে সম্ভব হলে কিছু সহযোগিতা করব। কিন্তু সময়ের অভাবে আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। হঠাৎ করে টিকিট কেটে ফেলায় শেষ মুহুর্তে তড়িঘড়ি করে গ্রাম হতে চলে আসতে হয়েছে। ফলে প্রোগ্রামটি সফল করতে পারিনি। তবে আমরা পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামি দু’ মাস পরে আমরা এটি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
যদিও এবার বাড়ীতে ছিলাম খুব কম সময়, তবুও এবারের স্মৃতি যেন অন্য সকল ঈদের চাইতে একটু ভিন্ন আমেজের। আশা করি, ঈদ এমনিভাবে মানবসেবার বার্তা নিয়ে ভবিষ্যতে ফিরে আসুক বারংবার। ইসলামি আন্দোলনের সকল চাকুরিজীবী ভাইদের কাছেই ঈদ হয়ে উঠুক এমন (কিংবা এর চাইতেও বেশি) মানব সেবার অপূর্ব সূযোগ। আমাদের বসুন্ধরাও হয়ে উঠুক বসবাসের উত্তম জায়গা ধনী-গরীব, তরুণ-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার কাছে; সকলের সহযোগীতায় সকল মানুষ এখানে অনুভব করুক স্বর্গীয় শান্তি ও সুখ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন