বই পরিচিতি-১ (বুক রিভিউ)

লিখেছেন লিখেছেন রামির ১১ জুন, ২০১৩, ০৪:০৯:১৪ বিকাল

নাম: ম্যা (মা- উপন্যাস)

মূল: ম্যাক্সিম গোর্কি

অনুবাদ: মো. জাকারিয়া কাদের

দাম-১৮০ টাকা (লিখিত) । তবে নীলক্ষেত কিংবা চারুকলার আশেপাশে ৮০-১০০ টাকায় পাওয়া যায়। পুরানো বই এর দোকানে আরো কম টাকায় পাওয়া যেতে পারে।

লেখকপরিচিতি:

ম্যাক্সিম গোর্কি,রাশিয়ান। জম্ম ১৮৬৮ সালে ১৬ ই মার্চ (রাশিয়ার পুরানো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী) । রাশিয়ান ভাষায় গোর্কি নামের অর্থ হলো তিক্ত। সত্য প্রকাশের ভার নিয়েছিলেন বলেই এরুপ নামকরণ করা হয়। ম্যাক্সিম গোর্কি মাত্র ৫ মাস স্কুলে গিয়েছিলেন। এতটুকুই তার আনুষ্ঠানিক শিক্ষা । বাকীটুকু নিজের প্রচেষ্টায়। ৬৮ বছর বয়সে ১৯৩৬ সালে ১৮ ই জুন গোর্কি শাহাদাত বরণ করেন ।

প্রকাশকাল:

১৯০৭ সালে সর্বপ্রথম বই আকারে ”মা” উপন্যাস প্রকাশিত হয়। প্রকাশের পর এটি কমপক্ষে ১০০টিরও বেশী ভাষায় অনুদিত হয়েছে। দুই বাংলার সমাজবাদি আন্দোলনের কর্মীদের নিকট এটি বাইবেলতুল্য।

মূল পাঠ পরিচিতি :

উপন্যাসটির পৃষ্ঠা-২৪০। ২টি খন্ডে বিভক্ত। ১ম খন্ডে ২৯টি অধ্যায় এবং ২য় খন্ডে ২৯টি অধ্যায়। খন্ডভিত্তিক হলে এক্ই ঘটনার ধারাবাহিকতা বিদ্যমান। কোন ছেদ নেই। ১ম খন্ডে উপন্যাসের মুল চরিত্র পাভেল এর জেল জীবন পর্যন্ত। ২য় খন্ডে রয়েছে ঘটনার বাকী অংশ ।

চরিত্র পরিচিতি:

এর মূল চরিত্র – পাভেল ভ্লাসভ (ডাক নাম- পাশা)

মা- পাভেলের মা; নাম- পেলাগোয়া নিলোভনা; শ্রমিক ভাসভের বিধবা স্ত্রী।

গোর্কির মা উপন্যাস যে বাস্তব চরিত্র অবলম্বনে রচিত সেই চরিত্র হচ্ছে পিওতর জালোমভ এবং তার মা আন্না কিরিলোভনা জালোমভা। পিওতর জালোমভ মারা যান ১৯৫৫ সালে আর তার মা আন্না কিরিলোভনা মারা যান ১৯৩৮ সালে। মা উপন্যাসের কাহিনী মূলত ১৯০০ সাল হতে ১৯১৭ সালের মধ্যবর্তী সময়ের। বিশেষ করে ১৯০০-১৯০৫ সাল পর্যন্ত সময়ের ঘটনা প্রবাহই এখানে প্রাধান্য পেয়েছে।

শিক্ষনীয়:

বিগত ২০০ বছরের আধুনিক ইতিহাসে দেশে দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবই একমাত্র সফল বিপ্লব। আর এ সবের প্রাণকেন্দ্র তথা নিউক্লিয়াস হচ্ছে রাশিয়ার ১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লব। তাই যারা সুবিচারপূর্ণ মানবতাবাদী সমাজ-কাঠামো প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের মুক্তির পথের সন্ধান করেন, তাদের জন্য জন্য লুকিয়ে রয়েছে অনেক রসদ। তাই স্বপ্নাচারী এসব তরুনদের এজাতীয় নিকট-অতীতের সফল ইতিহাসের গভীর পাঠ (আমার দৃষ্টিতে) জরুরী। জানা দরকার কী ছিল সেই আন্দোলনের সোর্স অফ ইন্সপাইরেশন, কিভাবে পেয়েছিল সমাজবাদকর্মীরা সেই জীবন উৎস্বর্গকারি প্রেরণা। জানা দরকার এত ডেডিকেইশন, এত উৎস্বর্গীতপ্রাণ হবার পরেও কেন এত স্বল্প সময়ের মধ্যেই ব্যর্থ হলো সেই সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব।

সতর্কতা:

০১. উপন্যাসে বর্ণিত নাস্তিকতাকে উপেক্ষা করতে হবে।

০২. আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে নারী- পুরুষের অবাধ- মেলামেশা ত্যাজ্য।

তাই সময়-সূযোগ করে মুসলিম-পুনর্জাগরনী আন্দোলনের কর্মীরা (যারা পড়েননি কিংবা বাল্যকালে পড়েছেন) বইটি পড়বেন, জানবেন ও আলোকিত হবেন এই প্রত্যাশায়….

বিষয়: বিবিধ

২১৫১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File