এই পশুসুলভ অধঃগতির শেষ কোথায়?! ... ... ... ... .
লিখেছেন লিখেছেন মহিবুল ইসলাম ফারুক ১০ মে, ২০১৩, ০৬:২৪:২৮ সকাল
অপরাধী সাব্যস্থ হওয়া আসামির গলায় ফাসীর রশি পড়িয়ে দিয়েও পেশাদার জল্লাদের 'মানুষ্ִ অন্তর নিরবে কাদে। আমরা কি এর চেয়েও অধম হয়ে গেলাম!
যদিও প্রাণহানী সর্বদাই অনভিপ্রেত ও কষ্টদায়ক তথাপি ঘটনাচক্রে কখনো প্রাণহানী অনিবার্য হয়ে ওঠতেই পারে, সেটা ভিন্ন বিষয় কিন্তু প্রাণহানীর পর উল্লাস প্রকাশ কখনোই অনিবার্য নয় এবং মানবাত্মা সুলভও নয়।
১৯৭১ সালে নিরীহ লোকদেরকে হত্যার পর পশ্চিম পাকিস্থানীদের উল্লাসের চিত্র আমরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করেছি। স্বাধীন বাংলাদেশে মধ্যরাতের হামলায় বংগবন্ধু ও তার স্বজনদের রক্তে যখন বাংলার মাটি কলংকিত হয় তখনো কিছু হায়েনার উল্লাস চোখে পড়েছে। বিশ্ববেহায়ার আমলে জনতার উপর ট্রাক ওঠিয়ে দিয়ে পৈশাচিক হত্যা যজ্ঞের পরও কিছু দলান্ধ হায়েনার উল্লাস চোখে পড়েছে।এই তো ক'দিন আগে অনলাইন ব্লগার রাজিব হত্যার পর ফেইস বুকে কিছু লোককে উল্লাসে ফেটে পড়তে দেখাগেছে। বলা বাহুল্য, কোটি কোটি মানুষের প্রানপ্রিয় প্রফেট মুহাম্মদ(স)কে অশালীন-কদর্য ভাষায় কটাক্ষ ও উপস্থাপন করেছেন রাজিব; এতে আমিও ব্যাথিত এবং ক্ষুব্দ।তার এহেন কর্মকে যার পর নাই ঘৃনা করি কিন্তু তাই বলে এইরকম বিচার বহির্ভুত নৃশংস ও গুপ্ত হত্যার সংবাদে উল্লসিত হওয়া ! এতো 'মানুষহীন্ִ অন্তরের পরিচয়। শুনেছি রাসুল(স)'র জীবদ্দশায় এক কাফেরের লাশ দেখে চোখের জলে নিজেকে ভাসিয়েছিলেন এই ভেবে যে 'সেতো অচিরেই আজাবে গ্রেপ্তার হবে'। মানুষের অন্তরের আদর্শ নমুনাতো ইহাই।অতি সম্প্রতি ঢাকার শাপলা চত্তরে গভীর রাতে বাতি নিভিয়ে দিয়ে, মিডিয়ার অন্তরাল ও বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরী করে অগুন্তি মানবসন্তানের উপর যে হামলা ও হত্যাযজ্ঞ হল (সংখা যাই হোক) এর পদ্ধতি তো নিঃসন্দেহে বর্বরোচিত এবং মধ্যগীয় কিন্তু তারপরও ঘটনার পর কিছু সুশীল প্রগতিশীলদের উল্লাসের আওয়াজ ফেইস বুককে মাতিয়ে তুলেছে গত কয়্দিন ধরে। বলা বাহুল্য পল্টনে বিশৃংখলা সৃস্টির সময় গুলিতে মারা যাবার ঘটনার মতো তো এটি নয়; এ হল গভীর রাতের ঠান্ডা মাতার হত্যাকান্ড। কেউ এটাকে অনিবার্যও বলেছেন কিন্তু এহেন হত্যার পর উল্লাস-খুশী প্রকাশও কি অনিবার্য? ফেইস বুকের প্রগতিশীলরা কিন্তু খুশী চেপে রাখতে পারেন নি!! হেফাজতের দাবিনামার সাথে ঘোরতম দ্বিমত থাকতে পারে, কেউ তাদের ক্ষতিও কামনা করতে পারেন কিন্তু এই রকম জঘন্য হত্যার পর খুশী যারা চেপে রাখতে পারেনা বা উল্লাস প্রকাশ করতে যাদের অন্তরাত্মা কেপে ওঠেনা তারা কি আসলেই মানুষ! এই প্রবনতা তো ভয়ংকর পশুসুলভ; মনুষ্যত্ববোধের চরম অবক্ষয়।
আসলে (রানাপ্লাজার মত)যুতসই ফাউন্ডেশন ছাড়াই আমরা জীবনের ইমারত গড়ে তুলেছি; আমরা রাতারাতি আস্তিক-নাস্তিক, দলান্ধ-ধর্মান্ধ, ডান-বাম, সুশীল-প্রগতিশীল বনেগেছি বটে কিন্তু শুরুতেই মানুষ হতে পারিনি। আগে মানুষ হয়ে তারপর যদি আস্তিক-নাস্তিক… ইত্যাদি হতাম তবে নিশ্চই এমনটি হতনা।
রবীন্দ্র-যুগ পার করে আমরা বাংগালীরা অনেকদূর এগিয়েছি, অনেককিছু(!) হয়েছি বটে কিন্তু আদৌ মানুষ কি হতে পেরেছি!? বেচে থাকলে রবীঠাকুর কি বলতেন?
বিষয়: বিবিধ
১১১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন