কোন পথে বাংলাদেশ!!!!!!!

লিখেছেন লিখেছেন চিরল পাতা ২০ মে, ২০১৩, ০৫:০৮:৪০ বিকাল

বাংলাদেশের ৭৮ % রফতানি আয় হয় পোশাক শিল্প থেকে। এই শিল্পে বর্তমানে ২৫ হাজারের বেশী বিদেশী কর্মকর্তা কাজ করছে, যার মধ্যে ২০ হাজারই ভারতীয় কর্মকর্তা।

৩০ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে তোলা এই শিল্প, যেটায় দেশিও হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা আছে, সেটি আজ মুলত ভারতীয়দের হাতে জিম্মি।

ভারতীয়রাই মুলত কাজ আনছে, এলসি খুলছে, মালামাল কিনছে, কোয়ালিটি কন্ট্রোল করছে, কাজগুলো শেষ হবার পর বিদেশে পাঠাচ্ছে, মালিকের সাথে ঝামেলা হলে পুরো প্রতিষ্ঠান এর ১২ টা বাজিয়ে দিচ্ছে, শ্রমিকদের মধ্যে ঝামেলা পাকাচ্ছে এবং কারখানা সর্বশেষে বিক্রি করে দেয়া ছাড়া আর কোন গতি রাখছেনা মালিকদের । এর পর তাদেরই কেউ কারখানাগুলো কিনেও নিচ্ছে।

অনুসন্ধান করে জানা যায় যে, গত দু বছরে ৫০ টিরও বেশী কারখানা এভাবে মালিকানা বদল হয়েছে। বিক্রির কথা চলছে আরও শতাধিক কাঁরখানার।

এগুলো কিনছে মুলত ভারতীয়দের মধ্যেই যারা ব্রিটিশ, কানাডিয়ান অথবা আমেরিকার নাগরিক। বিক্রি হবার পর সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে, অভান্তরীণ ঊর্ধ্বতন ভারতীয় কর্মকর্তাদের হাত কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ,হামলা বা ভাংচুরের ঘটনা ঘটাবার পেছনে ছিলো।

এই পরিস্থিতির কথা শিকার করে বিজিএম এর সাবেক সভাপতি বলেন, "হাজার হাজার বেকার থাকলেও আমাদের দেশে যোগ্য লোকের যথেষ্ট অভাব রয়েছে, দেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও, পোশাক শিল্পে দক্ষতার সাথে কাজ করবার মতো লোক বেরিয়ে আসছে খুবই কম। আন্তর্জাতিক ব্যাবসায় উদ্যোক্তাদের যে মান থাকা দরকার, এদেশের বেশীরভাগ উদ্যোক্তাই সেই মানের নয়। এজন্যই সব ক্ষেত্রে ভারতীয়রা দাপটের সাথে বিরাজ করছে। আর মালিক পক্ষ চাইলেও দেশীয় কাউকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল করতে পারছেন না।"

এই দেশে ভারতীয়দের চেয়ে ২০% সস্তায় পোশাক উৎপাদন করা যায়। বাংলাদেশের শ্রমমূল্য ভারতের শ্রমমূল্যের চেয়ে তিন গুণ কম। দেশীয় উদ্যোক্তাদের তিব্র আপত্তি থাকা শর্তেও, সরকার ভারতীয়দের অহরহ এই দেশে বিনিয়োগ করবার সুযোগ করে দিচ্ছেন।

সুযোগ পেয়ে ভারতীয়রা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ অথবা কাজ করবার উছিলায় প্রবেশ করে থাকে, তারপর বিভিন্ন ভাবে কারখানায় ধীরে ধীরে ঝামেলা পাকানো শুরু করে। সমস্যাগুলোকে তুঙ্গে তুলে মালিকপক্ষকে বুঝায় যে, এটি তাঁর জন্য একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান। তাঁর পর নাম বা বেনামে এই কারখানাগুল পানির দরে তাঁদের কাছ থেকে কিনে নেয়। দেশীয় কারখানাগুল আবার চালু হয় ভারতীয়দের মালিকানায়।

সরকার সব জেনে বুঝেও নির্বাক একজন দর্শকের ভূমিকায় অভিনয় করে যাচ্ছে এই দুই বছর ধরে। এবং অনেক ক্ষেত্রে ভারতীয়দের নানাভাবে মদদও করে চলছে।

এর পূর্বে আমরা সবাই দেখেছি পাট শিল্পকে কিভাবে তিলে তিলে ধ্বংস করা হল। এবার কি তৈরি পোশাক শিল্পেরও সেই একই হাল হতে চলেছে ? দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিয়ে কোন ধরনের উন্নতি করতে চলেছে দেশের এই সরকার। নাকি প্রশ্নটা হওয়া উচিত কার উন্নতি ?

এই সরকার আজ অবধি নানা ভাবে দেশ ধ্বংসের নানান পঁয়তারা করছে, এবং করে চলছে এখনো । আমরা কি ভেবে নেব যে, দেশীয় তৈরি পোশাক শিল্পকে ধ্বংসের চেষ্টার মাধ্যমে, দেশের অর্থনীতিতে ধস আনবার এবং এর মাধ্যমে দেশ এর ২৪ টা বাজাবার প্ল্যানের এটা আর একটি অংশ ???

নাকি যেই পদ্ধতিতে পরিকল্পনার মাফিক উনারা দেশীয় কারখানাগুলোকে এবং এই শিল্পটিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিলেন । তেমনই একদিন পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশ ধ্বংস করে মানুষগুলোকে বলা হবে যে, "এটি একটি লোকসান মূলক দেশ", তাঁর পর কি ভারতীয় দালালদের কাছে বিক্রি করে দেয়া হবে এই দেশটি ?

তখন কি আবারো একবার দেশের মালিকানা পরিবর্তন হবে? আমরা কি পরিণত হব স্বাধীন বাংলাদেশের পরিবর্তে, ভারতের একটি অঙ্গ রাজ্যে ? অবশ্যই চাইলেই হাসিনা এটা করতে পারে, হাজার হলেও দেশতো হাসিনার বাপের তাই না?

বিষয়: বিবিধ

১৫৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File