"খাল কেটে কুমির আনা"
লিখেছেন লিখেছেন চিরল পাতা ২০ মে, ২০১৩, ০১:২৯:৩১ দুপুর
শরীয়তপুরের পদ্মার শাখা ও কীর্তিনাশা নদী থেকে দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে, সরকারকে সমর্থন করে এমন এক শ্রেণীর ব্যাবসায়ীগন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
সরকার চোখ বুজে আছে, কারন তারা রাম গরুদের ছানা, এজন্য এই সব দেখা ও শোনা তাঁদের জন্য মানা। এর একটা অংশ তারা যে পাচ্ছেনা এমন তো আর না। আর আমরা হতভাগা দেশবাসী যারা সব দেখছি, কিন্তু দেখেও হাসতে বা কাঁদতে মানা আমাদের।
কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নেও অবৈধ ভাবে চলছে বালি উত্তোলন, এর ফলে রামপ্রসাদের চরসহ আরও কয়েকটি গ্রাম ভেঙ্গে পড়েছে। গ্রামবাসী হারিয়েছে তাঁদের জীবন এর শেষ সম্বল টুকুও, তাঁদের বসতভিটা ও চাষাবাদের জমি ।
মেঘনা নদীর যে স্থানে বালি উত্তোলন এর জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছিল "সেলিনা গ্রুপ" নামক প্রতিষ্ঠানটিকে, সে জায়গা থেকে বালি না তুলে, বালি তুলছে তারা চালিভাঙ্গা ইউনিয়ের রামপ্রসাদ চর বরাবর, ফলে গ্রাম আজ ধ্বংসের মুখে।
সবাই সব জেনেও চুপ, প্রশাসন নির্বিকার। কারন তাঁদের মতো অবলা একটা প্রশাসন কিই বা করতে পারে, বলেন তো?
আপনারা সবাই চোখে আর কানে হাত দিয়ে রাখেন, কারন সত্য জানতে নেই। আর কিছু দিন পর আমরা খবর এর কাগজে পড়বো যে, নদী ভাঙ্গনে মানুষ মরেছে, শত শত পরিবার পথে বসেছে। শুনে আমরাও আআহা উহহু করবো কিছুটা সময়, ভুলে যাব একটু পরই। কারন দেশতো আর আমাদের দায়িত্বনা, তাই না ?
পাঁচবিবি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে যমুনা নদী, বছরের একটা সময় এটি বালুচর আর ধানক্ষেত কিন্তু বর্ষায় সময় এটি হয়ে যায় প্রমত্ত। শুকনো মউসুমে এই চর থেকে হাজার হাজার ট্রাকে ভরে ভরে বালু নিয়ে চলে যায় নিয়মনীতি না মেনে, কিছু ক্ষমতাসম্পন্ন মহলের মানুষ। তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়না নদীর পাড়টিও।
ফলে বর্ষা মৌসুমে নিম্ন এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। বালু উত্তলনের কিছু নিয়মনীতি অবশ্যই আছে, কিন্তু সেটা ক্ষমতা সম্পন্ন এই মহলের উপর লাঘু হতে যাবে কেন ? সরকারকে সমর্থন করে এরা, আর সরকার যেখানে এদের সাথে আছে, সেখানে আর কারো পরোয়া কেনোই বা করবে তারা ? ঐ গরীব লোকগুলোর বাঁচা বা মরায় সরকার এর কিই বা যায় আসে ?
রাঙ্গামাটির পাহাড়গুলো ধ্বংসেরও প্রস্তুতি চলছে সমান তালে। বিভিন্ন স্থানে চলছে পাহাড় কেটে কেটে পাথর উত্তোলনের মহাউৎসব। এই সব পাথরগুলোর মান অতিনিম্ন, নির্মাণ কাজে ব্যাবহার এর জন্য। কিন্তু পাহাড়ের মাটির সাথে মিশে থাকলে পাহাড়ধস রক্ষায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম এগুলো ।
এই সব নিম্নমানের পাথরগুল দিয়েই চলছে দেশের সড়ক নির্মানসহ সরকারের বিভিন্ন কাজ । দিনে দুপুরে প্রশাসনের চোখের সামনে দিয়েই পাহাড় কাটা চলছে, পাথর উত্তোলন চলছে, পাথর উত্তোলন এর পর সেগুলো ভাঙ্গা হচ্ছে এবং নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। ফলে বর্ষায় পাহাড়ধস এর খবর কিছু দিন পর পরই নজরে আসছে।
রাঙ্গামাটির ঘাগরা ঝরনার পাশের পাহাড় ও সিন্দুকছড়ি পাহাড় কেটে, কিছুদিন হল অনেক পাথর উত্তোলন হয়েছে। এর ফলে পাহাড়ের পাদদেশে এলাকাবাসী পূর্বের মতো আর পানি পাচ্ছেনা। ঝরনাটি হুমকির সম্মুখীন। এলাকায় দেখা দিয়েছে পানিসঙ্কট।
বলা হচ্ছে " ফিরোজ" নামক লোক এর নেতৃতে চলছে এই বেপরোয়া পাথর উত্তোলন এবং পাহাড় কাটার কাজগুলো। ফিরোজ এর দোষ দেব না সরকারের ? দেশের সরকারের সব নির্মাণ কাজে এই পাথরগুলোর ব্যাবহার কেন হচ্ছে ? প্রশাসনের সামনে দিয়েইতো পাহাড় কেটে এই পাথর নিয়ে আসছে তারা, তাও সরকার ভাবলেশহীন কেন ? দেশ ধ্বংসের সকল খেলায় সরকারের সহায়তাই সবচে বেশী সবদিকে সবসময়, এর কারন কি ?
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে "খাল কেটে কুমির আনা" আজ এই দেশের দিকে তাকালে আমার খালি মনে হয়, দেশবাসী ভোট দিয়ে কুমিরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ডেকে নিয়ে এসেছে নিজের দেশ ধ্বংসের জন্য।
[
b]এই দেশ ও জাতির ধ্বংস ঠেকায় এমন সাহস আছে আজ কার ?[/b]
বিষয়: বিবিধ
১৩০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন