খেলাফতের আনুগত্যে মুহাম্মদ বিন কাসিম

লিখেছেন লিখেছেন জাতির চাচা ০২ জুলাই, ২০১৪, ০৮:৩৩:১৬ সকাল



৯৪ হিজরীতে খলিফা ওয়ালিদের মৃত্যুর পর তার স্থলে খলিফা সুলাইমানের অভিষেক হলো ।

খলিফা সুলাইমানের অন্তরে খলিফা ওয়ালিদ এবং তার সহকারীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও প্রতিশোধের আগুন জ্বলছিল । মসনদে বসেই হাজ্জাজের সহকারীদের ডেকে পাঠিয়ে কঠিন পীড়নের পর হত্যা করা হলো ।

সিন্ধু বিজেতা বিন কাসিমকে কঠিন নির্যাতন করে হত্যা করা হল । ইউরোপের দ্বার থেকে মুসাকে ডেকে তার পুত্রের মাথা কেটে পেশ করা হলো এবং সর্বস্ব বাজেয়াপ্ত করা হলো । চীন বিজয়ের প্রস্তুতিরত কুতাইবা বিন মুসলিমকে ডেকে পাঠানো হলো ।

কুতায়বা নিজের পরিনিত সর্ম্পকে জেনে খলীফার দরবারে যান নি ।তার ইরাদা ছিল চীন জয়ের পরেই খলীফার দরবারে যাবে । তার আগে বন্দির মৃত্যু নন মুজাহিদের মৃত্যুই তার কামনা ছিল । কিন্তু ইবনে সাদেক (গাদ্দার) তার ফেদায়ী বাহীনি দিয়ে কুতায়বাকে শহীদ করে ।

মুহাম্মদ বিন কাসিম বন্দী থাকা অবস্থায় ইবনে সাদেকের নির্যাতন নিরবে সয়ে যেতো ।তার উপর এতো নির্যাতন দেখে একদিন কতোয়াল তার দরজ খুললেন ।

বললেনঃ উঠুন ।

কাসিমের জবাবঃ কেন ?

:আমি আপনার জান বাচাতে চাই ।

: একে তো আমার বিশ্বাস হচ্ছে না খলীফা আমায় কতলের হুকমু দিবেন ।আর যদি তা হয় তবে কি আমি জান বাঁচাতে তোমায় বিপদের মুখে ঠেলে দিবো ?

: আমার জানের উপর কোন বিপদ আসবে না । আমিও আপনার সাথে যাবো ।দুটি দ্রুতগামী ঘোড়া আছে । আমরা গিয়ে কুফা ও বসরার লোকদের কাছে আশ্রয় নিবো ।তারা আপনার জন্য শেষ রক্ত বিন্দু দিতেও প্রস্তুত । ইসলামী দুনিয়ার সব শহর আপনার ডাকে সাড়া দিবে ।

: তোমার ধারনা আমি বিদ্রোহের আগুন জ্বেলে দিয়ে মুসলমানদের ধ্বংসের দৃশ্য দেখতে থাকবো ? না তা হতে পারে না । এহবে কাপুরুষতা ।বাহাদুর লোকের বাহাদুরের মৃত্যু কামনা করা উচিত । আমি নিজের জান বাঁচাতে গিয়ে হাজারো মুসলমির জীবন বিপদের মুখে ঠেলে দিবো না । তুমি কি চাও দুনিয়া বিন কাসিমকে মুজাহিদ হিসাবে স্মরন না করে বিদ্রোহী বলে আখ্যায়িত করুক ?

: কিন্তু মুসলমানদের তো আপনার মতো বাহাদুর সিপাহীর প্রয়োজন আছে ।

: মুসলমানদের মধ্যে তোমাদের মতো সিপাহীর অভাব হবে না । ইসলামকে যারা কমবেশি বুঝেছে তাদের ভিতরে শ্রেষ্ঠ সিপাহীর গুনরাজি পয়দা করে তোলা কিছু কঠিন কাজ নয় ।

মাফ করবেন ।আপনি আমার কল্পনার চাইতে অনে উর্ধে ।

বিন কাসিম বললেন , দরবারে খেলাফত হচ্ছে মুসলমানদের শক্তিকেন্দ্র । তার সাথে বিশ্বাস ভঙ্গের খেয়াল কখনও মনে এনো না ।

বিষয়: বিবিধ

২৬৬৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

240820
০২ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৯:২৯
দ্য স্লেভ লিখেছেন : দীর্ঘ খিলাফতের পরের দিকের খরিফারা যখন ব্যপক ক্ষমতার অধিকারী হয়,সারা বিশ্ব থেকে আক্রমন আসলেও প্রতিহত করার ব্যবস্থা আছে,এমন বোধদয় যখন হয়, তখনই তাদের চারিত্রিক বেশ কিছু ত্রুটি দেখা গেছে। এছাড়া ইহুদী-নাসারা চক্র পেছন থেকে বার বার চক্রান্ত করে মুসলিমের সাথে মুসলিমকে লেলিয়ে দিয়েছে। বিলাস দ্রব্য,নারী দিয়ে অনেক শাসককে বশিভূত করেছে। তারপরও রাষ্ট্রে ইসলাম জারি ছিল। তাদের ব্যক্তিগত ত্রুটি থাকলেও ইসলামের প্রশ্নে সকলে অাপোষহীন ছিলেন। ব্যাখ্যা সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে বাড়াবাড়ি হয়েছে, অনেক আলেমের ব্যাখ্যা না মানতে চেয়ে অত্যাচার করা হয়েছে,যা ছিল বাড়াবাড়ি। কিন্তু খিলাফত থাকার কারনে মুসলিমরা সামরিক শক্তিতে বলিয়ান ছিল। পরবর্তীতে সেটাকে ভেঙ্গে মুসলিমের শেষ ঐক্যের স্থানটি নষ্ট করা হয়। এখনকার অবস্থা তো আমরা দেখছিই...

কুতায়বা যখন চীন বিজয়ের উদ্দেশ্যে, তখন চীনের রাজা মুসলিম সেনাপতিকে লাল গালিচা সংবর্দনা দেয়,যাতে তিনি সন্তুষ্ট হয়ে চলে যান। কুতায়বা বর্শা দিয়ে লাল গালিচা ছিদ্র করতে করতে চীন রাজার সামনে দাড়ান......শয়তানের কারসাজিতে কেন্দ্র থেকে তাকে থামতে বলা হয়.....
240835
০২ জুলাই ২০১৪ সকাল ১০:৪৮
egypt12 লিখেছেন : জেনে ভালো লাগলো আমাদের মাঝেও এমন আনুগত্য খুবই দরকার Love Struck
240889
০২ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:১৩
চোরাবালি লিখেছেন : পড়লাম; কষ্টদায়ক সত্যকথাগুলি
240902
০২ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০৩:১১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মুহাম্মদ বিন কাসিমের পক্ষে ছিলেন সিন্ধুতে অবস্থান কারি সকল আরব এবং সিন্ধুবাসি সকল নও মুসলিম। তিনি যদি বিদ্রোহ করতেন তাহলে তা পিছনে দাড়াত সবাই। খলিফার পক্ষে তার বিরুদ্ধে দুর্গম পথ অতিক্রম করে অভিযান চালান সম্ভব ছিলনা। কিন্তু তিনি ব্যাক্তিস্বার্থ এর উপর প্রাধান্য দিয়েছিলেন ইসলামের স্বার্থকে।
240954
০২ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৪:২৮
আফরা লিখেছেন : অনেক কিছু জানা হল ।ধন্যবাদ ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File