সরকারের ফাঁদে পা দিচ্ছে জামায়াতঃ প্রমান এবং করণীয়

লিখেছেন লিখেছেন জাতির চাচা ১৬ জুলাই, ২০১৩, ০৯:১৪:৪২ রাত

যুগে যুগে ইসলামী আন্দোলনের নেতারা জুলুম নির্যাতনের পারাকাষ্ঠা সহ্য করে ইসলামী আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে এসেছে । এই আন্দোলনের পথ কখনো সহজ সোজা ছিল না । দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে এ আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে গিয়ে হয়েছে হাজারো কর্মী শহীদ গাজী । কিন্তু এ আন্দোলন থামে নি কিংবা থামার নয় । যদিও উপমহাদেশ এবং মুসলিম বিশ্বে ইসলামী আন্দোলনের দল গুলো ৭০ ভাগ জনপ্রিয়তা অর্জনে এখন পযন্ত সক্ষম হয়নি কিন্তু অচিরেই আন্দোলনের দলগুলো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পাবে বলে বুঝা যাচ্ছে । ইসলামী আন্দোলনের দলগুলো চেয়ে কিছু কিছু নেতা অনেক জনপ্রিয় । যদিও ব্রাদারহুডকে দেখতে পারে না কিন্তু হাসান আল বান্না কিংবা সাইয়্যেদ কুতুবকে খুবই সম্মান করে । যদিও জামায়াতে ইসলামীকে দুচোখে দেখতে পারে নি কিন্তু সাঈদীর কিছু হলে সইতে পারে না । এরকম লোকের সংখ্যা অনেক ।

আন্দোলনের রুপরেখা ঘোষিত হওয়ার পর থেকে দূর্গম পরিবেশে দলগুলো বহুবার সিদ্ধান্তহীনতাই ভুগেছে । যার ফলস্বরুপ অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে । অনেকবার ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে । পস্তাতে হয়েছে । যদিও সর্বোচ্চ নির্যাতন সইতে হয়েছে কিন্তু কাংখিত সমর্থন আদায় হয় নি । এক্ষেত্রে দায়ী মূলত নেতৃত্ব ।হেলপার দিয়ে যেমন বাস চালাতে গেলে বারে বারে এক্সিডেন্ট হয় ঠিক তেমনি অবস্থা আন্দোলনের ।

আমার কথা মূলত বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের সার্বিক দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় দল জামায়াতে ইসলামীর সরকারের ফাঁদে পা দেওয়া প্রসঙ্গে ।

সরকারের ফাঁদঃ আওমীলীগ মুসলিম অংশ বাদ দেওয়া এবং বামপন্থিদের গ্রহন করার পর থেকে কূটের রাজনীতি করে । বাংলাদেশের সবচেয়ে শয়তানী মার্কা কৌশল জানে আওমীলীগ । বলতে গেলে আওমীর কৌশলের আমল নামার শেষ হবে না । সর্বশেষ কৌশল জামায়াতের জনসমর্থনে ভাটা দেওয়া ।

প্রমানঃ জামায়াত আগেই ঘোষনা দিয়েছে যেদিন রায় সেদিনই হরতাল । রায় নেগেটিভে গেলে সেদিনও হরতাল । অর্থাত্‍ প্রত্যেকটা রায়ে সর্বনিম্ন দুদিন হরতাল । [এখানে বলে নেওয়া ভালো জামায়াতের ভোট সর্বশেষ নির্বাচনে ১২ ভাগ । এখন না হয় ২০ ভাগই ধরি । তাহলে জামায়াত ছাড়া আরও ৮০ ভাগ ভোটার আছে । এদের কেউ কট্টর জামায়াত বিরোধী । অর্থাত্‍ জামায়াতের কোন হরতাল দেশের প্রায় ৫০ ভাগ মানুষ দ্বিমত পোষন করে । বিরক্ত হয় । একটা কথা চিরন্তন সত্যি রাজনৈতিক হোক আর অরাজনৈতিক হোক বেশির ভাগ হরতালে প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ বিরক্ত হয় ।]

একে তো রোজার মাস । এমাসে জনগনের উপর ঝামেলা পড়লে জনগন স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষেপে যায় ।

আওমীলীগ একৌশলটিই হাতে নিয়েছে । জামায়াত যেহেতু ঘোষনা দিয়েছে হরতাল দিবে তাই জনগনকে ক্ষেপাতে সিদ্ধহস্ত আওমীলীগ রায় দেওয়ার সময়টা বেছে নিয়েছে রোজার সময় । কেনো ? সব তো কমপ্লিটই ছিল রোজার আগে রায় দিলে কি হতো ? অথবা ঈদের পরে ?

আওমীলীগ এক ঢিলে কয়েকটা পাখি মারলো , এক. জামায়াতের হরতালে জনগন কিছু খেপলো ।হয়তোবা সমর্থনও কিছুটা কমলো ।

দুই. কোটা বিরোধী আন্দোলন স্তিমিত করে দিলো ।

তিন. শাহবাগীদের সাথে নাটকের সূচনা করলো ।

আওমী কৌশল প্রায় সফলের দ্বারপ্রান্তে ।

জামায়াতের করণীয়ঃ আর যে রায়ই হোক না কেন হরতালের তারিখ রোজার পরে ঘোষনা করুন । আন্দোলন বিক্ষোভ পযন্ত সীমিত রাখুন । মনে রাখতে হবে মিডিয়া রাতকে দিন আর দিনকে রাত বানাতে পারে । যেহেতু জামায়াতের এই মূহুর্তে কোন স্যাটালাইট চ্যানেল নেই তাই মিডিয়ার সামনে আত্নহুতি দেওয়া ঠিক হবে না । এই মুহুর্তে জামায়াতের জনসমর্থন অনেক এগিয়ে এসেছে । এখন এমন কোন কাজ করা ঠিক হবে না যাতে সমর্থনে ভাটা পড়ে । রায়ের জন্য ঘোষনা দিয়ে দেশ অচল করতে হবে না জনগন স্বর্তস্ফুত হয়েই দেশ অচল করবে । যেমনটি দেখা গিয়েছিল সাঈদির রায়ের দিন ।সবচেয়ে বড় কথা এমন কোন কাজ করা যাবে না যাতে জনসমর্থন হারাতে হয় কিংবা নীতি বিসর্জন দিতে হয় ।অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে হরতালের দিন আওমীলীগের সাথে জামায়াতের পার্থক্য কমে আসছে যেটা আন্দোলনের জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর । কে বলেছিল যেমন করেই হউক হরতাল সফল করতে হবে ? লক্ষ্য রাখতে হবে জনগনের মাঝে যেন ছাত্রলীগের মতো জামায়াত শিবির নামে আতংক সৃষ্ঠি না হয় । সার্বিক দিক থেকে জনগনের ক্ষতি হয় এমন কর্মসূচি না দিয়ে জনগনের মন জয় করতে হবে । এটা আন্দোলনের স্বার্থেই । যেমন এইচএসসি পরীক্ষার আগের দিন শিবির সভাপতিকে গ্রেফতার করে শিবিরকে ইমেজ সংকটে ফেলতে চেয়েছিল কিন্তু শিবির কৌশলে বেরিয়ে গেছে । এরকমই কৌশল গ্রহন করতে হবে ।

সর্বশেষ ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নীতি বিসর্জন না দিয়ে আন্দোলন করার আহবান জানাচ্ছি ।

বিষয়: বিবিধ

১৩৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File