চরমোনায়ের পাগলামী যুক্তির খন্ডনঃ পর্ব ১ (জাতির চাচা)

লিখেছেন লিখেছেন জাতির চাচা ১৮ জুন, ২০১৩, ০১:৪৪:১০ দুপুর

চরমোনায়ের পাগলামী যুক্তির খন্ডনঃ পর্ব ১ (জাতির চাচা)

যুক্তি ১: চরমোনাইয়ের ভেদে মারফত সহ কিছু বইয়ের ভুল ধরতে গেলে পীরের মুরিদরা যুক্তি দেয় , চরমোনাইয়ের মাহফিলে আল্লামা শফিও যায় । চরমনাই যদি খারাপ হতো তবে আল্লামা শফি সেখানে যেতেন না । যদিও আমি চরমনাইকে কখোনো খারাপ বলিনি ।

খন্ডনঃ একটা বইয়ের কিছু ভুল থাকতেই পারে । যেমন মওদূদীর কিছু বইয়ে ভুল পাওয়া গেছে । চরমনাই এর কিছু বইয়েও ভুল পাওয়া গেছে । এজন্য ভুলের সমালোচনা করা যাবে না ? ভুলকে ভুল না বলে সঠিক বলতে হবে ? চরমনাইয়ের মাহফিলে গেলেই চরমোনাইকে ১০০ সঠিকের সার্টিফিকেট দেওয়া হলো ?

যদি তাই হয় তবে তোমরা সারাদিন মওদূদীর পিছনে লাগো কেন ?

মওদূদী সম্পর্কে আরব স্কলারদের মতামত দেখুনঃ

কাতারের প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার বিশ্ব ওলামা পরিষদের প্রধান আল্লামা ইউসুফ আল কারাদাবী লিখেছেন-

১৩৯৯ হিজরীর যিলকদ মাসের শুরুতে ২৩ শে সেপ্টেম্বর ১৯৭৯ ইং বিশ্ব একজন অসাধারণ ইসলামিক চিন্তাবিদকে হারাল। যার মতলোক মুসলিম জাতির ইতিহাসে খুব কমই আসে। তিনি হচ্ছেন ভারত উপমহাদেশের জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা , পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের জন্য আলোকবর্তিকা, লক্ষ্য লক্ষ্য মুসলিম যুবক ও প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা যার লেখনী থেকে উপকৃত হয়েছে বহু ভাষায় অনুদিত হওয়া প্রচুর গ্রন্থ ও প্রবন্ধ রচয়িতা- উসতাজ আবুল আ’লা মওদুদী।এর বিপরীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কিছু ব্যক্তি কিংবা সমষ্টি যারা সমালোচনায় সিদ্ধহস্ত। ……… বিস্তারিত তথ্যের জন্যঃ qaradawi.ne t/life/86/4906.html

সাইয়্যেদ কুতুব:

সাইয়্যেদ কুতুব সর্বদা তাকে শ্রেষ্ঠ মুসলিম হিসেবে উল্লেখ করতে চাইতেন।

ওমর তিলমেসানী:

ওমর তিলমেসানী মাওলানা মওদুদী ও হাসানুল বান্নার মাঝে তুলনা করতে গিয়ে বলেছেন: তারা উভয়েই ছিলেন এপ্রজন্মের অনন্য ইমাম তথা নেতা বা পথপ্রদর্শক। আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়ারক্ষেত্রে তাদের পদ্ধতি ও সিস্টেম ছিল এমন যে, তারা সর্বদা কুরআন ও হাদীস থেকেই মেটেরিয়াল গ্রহণ করতেন। কোন ফিলোসোফারের কাছ থেকে তা গ্রহণ করতেন না। যারা হাসানুল বান্নার উপর আসা নির্যাতন দেখেছেন ঠিক তেমনি মাওলানা মওদুদীরউপরও একই ধরণের অত্যাচার নির্যাতন এসেছে।

আমি মাওলানা মওদুদীর মত এমন কোন ব্যক্তিকে জানিনা নতুন একটা মুসলিম প্রজন্মের উপর যার রয়েছে চিন্তা ও কর্মের দিক থেকে অত্যন্ত প্রভাব। তার দাওয়াতি কাজের ভিত্তি ছিল ইলমের উপর এবং তা ছিল রাজনৈতিক আহ্বানের চেয়েও অত্যন্ত গভীর ও শক্তিশালী।তার লেখা যুবকদের আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারে অত্যন্ত কার্যকর ভুমিকা রেখেছে। তারা (যুবকেরা) বুঝতে সক্ষম হয়েছে যে, ইসলাম সমস্ত যুগের সাথেই তাল মিলিয়ে চলতে পারে।

শায়খ রজব বায়্যুমী:

মার্কসবাদ সম্বন্ধে উস্তাদ মওদুদীর অবস্থান উল্লেখ করার মত। তার লেখা সমস্ত ইসলামি লেখকের কাছে অস্ত্র হিসেবে ধরা দিয়েছে।কারণ, মওদুদীর জ্ঞান ব্যাপক (বিশ্বকোষের মত) তারবুদ্ধিমত্তাও অত্যন্ত চমৎকার। তার চিন্তাশক্তি অনেক কিছু উদ্ভাবন করতে পারে, তার গভীর দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে প্রাচ্যের প্রতিটি প্রান্তের বৈপ্লবিক আন্দোলনের দিকে।কোন মুসলিম পরিবারের ব্যক্তিগত পাঠাগার তথা লাইব্রেরী তার বই থেকে শূন্য হবে এটা উচিত নয়। কেননা, তার বই মুসলিমকে এমনকিছু উপহার দেবে যা অন্য কোথাও সে পাবে না।

আব্দুল্লাহ আকীল

আর আল্লামা মওদুদী ছিলেন আধুনিক যুগের ইসলামিক স্কলার, চিন্তাবিদ,দায়ীদেরমধ্যে অন্যতম। আল্লাহ তায়ালা তাকে হিকমত, দূরদৃষ্টি, গভীর জ্ঞান, জ্ঞানলাভে ধৈর্যধারণ, বাস্তবতা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা ইত্যাদি যোগ্যতা দানকরেছেন। আর এটাই ছিল হাসানুল বান্নার কাজকর্মের অনুসৃত পদ্ধতি।

এ ছাড়া অনেক আরব আলেম তাদেরআলোচনা ও লেখনীতে মাওলানা আবুল আ’লা মওদুদীর কথার রেফারেন্স টেনে থাকেন। যেমন-

শায়খ মুহাম্মদ হাসসান

খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী আলোচনা করতে গিয়ে এক স্থানে বলেছেন: আল্লাহ তায়ালা আবুল আ’লা মওদুদীর উপর রহম করুন। তিনি বলেছেন:যদি দাম্পত্য জীবনে দয়া ও হৃদ্যতা না থাকে তাহলে দাম্পত্য জীবন মৃত লাশের মত হয়ে যায়, দাফন না করার কারণে তা থেকে সর্বদা দুর্গন্ধ বের হতেই থাকে।

মুহাম্মদ আল হাসান ওয়ালাদ আদ দুদো

ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে প্রয়োজনে বিদেশী ভাষা শিক্ষার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে তিনি বলেছেন:

আবুল আ’লা মওদুদীকে (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল একজন মুসলিম দায়ীর ভিতরে কী মৌলিক যোগ্যতা থাকা লাগবে? তিনি উত্তরে বলেছিলেন: তোমরা কি অনেক শর্ত শুনতে চাও নাকি একটা শর্ত শুনতে চাও? তারা বললেন: একটি শর্ত শুনতে চাই। তিনি বললেন: তাকে অবশ্যই ইংরেজী ভাষায় যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

আরবদের লেখা বিভিন্ন প্রবন্ধও বইতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে মহিলাদের অংশগ্রহণ সম্বন্ধে মাওলানা মওদুদীর বইয়ের রেফারেন্স নেয়া হয়েছে।

এছাড়া আল আযহার সহ বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে মাওলানা মওদুদীর বিভিন্ন বই ও লেখা থেকে রেফারেন্স গ্রহণ করা হয় এবং তাকে অনেকবড় মাপের ইসলামিক স্কলার বলে গণ্য করা হয়। ইসলামের জন্য বিশাল অবদান রাখার জন্য একবার সৌদী সরকার তাকে “বাদশাহ ফয়সাল” পুরস্কারে ভুষিত করে।

আরবীতে অনুদিত মাওলানা মওদুদীর কিছু বইয়ের লিঙ্ক নিম্নে উপস্থাপন করা হল।

3gypt.com /vb/thread82554.html

তথ্যসূত্রঃimbd.blog. com , islamway.co m/?iw_s=Lesson& iw_a=written_lesson& lesson_id=1755, akhawat.islamwa y.com/forum/lofiversion /index.php?t63893.html

এসব কথা থেকে ,মুরিদদের যুক্তি অনুসারে মওদূদীর ভুলের বিরুদ্ধে কোন লেখা যাবে না ।কারন তার পক্ষে অনেক স্কলার কথা বলেছে । কিন্তু তারা কেন সারাদিন মওদূদীকে নিয়ে পড়ে থাকে ? ? ? ?

আরে ভাই , কে সাপোর্ট করেছে এটা বড় ব্যাপার না । মূল ব্যাপার হলো ভুল পাওয়া গেছে ।

বিষয়: বিবিধ

১৫১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File