ভন্ড পীরের মুখোশ উন্মোচনে জাতির চাচাঃ পর্ব ৩ পরিচ্ছেদ ১ (চরমনাই)

লিখেছেন লিখেছেন জাতির চাচা ০৭ জুন, ২০১৩, ০৮:১১:৩৮ রাত

ভন্ড পীরের মুখোশ উন্মোচনে জাতির চাচাঃ পর্ব ৩ পরিচ্ছেদ ১

সম্মানীত দ্বীনি ভাইয়েরা , আমি বাধ্য হয়েছি প্রিয় একটাদলের বিরুদ্ধে লিখতে । কারনএদের বাড়াবাড়ি সীমাহিন পর্যায়ে পৌছে গেছে । এখনই এদের না থামাতে পারলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ইসলামীদলের যে ঐক্যের সম্ভাবনা ছিল তা ধুলিষ্যাত্‍ হয়ে যাবে ।

এ পর্বে মূল ভ্রান্ত আকিদা তুলে ধরলাম । পরিচ্ছেদ দুই এ হবে ডাইরেক্ট একশন ।

"চরমনাই এর পীর"-- তার লেখাকিতাব (আশেক মাশুক এর ৮৮-৮৯page)-এ লিখেছেন,

"মুসা (আঃ) এরদিন পথে চলছিলেন, এমন সময় দেখলেন একরাখাল ধ্যান মগ্ন হয়ে গুন গুন করে বলছেন,'ওগো আল্লাহ,তোমারে যদি পাইতাম তাহলে সাবান দিয়া গোসল করাইতাম,মাথার চুল আচড়াইয়া দিতাম,আতর সুরমা লাগাইয়া দিতাম..."

এইসব কথা শুনে মুসা (আঃ) তাকেধমক দিয়ে বললেন,'কিসব আজেবাজে কথা বলছ!এসব শিরকি কথা!'

রাখাল ভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে গেল। তখন আল্লাহ (নাকি!) মুসা(আঃ) কে ডাক দিয়ে তিরষ্কার করলেন এবং জানালেন রাখালের কথায় তিনি (নাকি!) সন্তুষ্ট ছিলেন!

মুসা (আঃ) নবুয়াত হারানোর ভয়ে সেই রাখালকে খুঁজে বের করে তার কাছে মাফ চাইলেন। তখন রাখাল জানালো সে নাকি সিরাতুল মুন্তাহা পার হয়ে আরশের কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিল। কিন্তু ঐ মুহূর্তেতাকে বাধা দিয়ে আল্লাহর দীদার হতে বঞ্চিত করেছেন।"

এই ঘটনা উল্ল্যেখ করার পরে চরমনাইয়ের পীর সাহেব বলেছে,"হে মুমীন ভাই সকল! এখনবুইঝালন যে, মুর্খ লোক মারেফতের উপরের দরজায় পৌছাতে পারে কিনা এবং ইহাও খেয়াল করুন যে মারেফতের রাস্তা কত গোপন আর কঠিন, যেখানে মুসা (আঃ) এর মতন নবীওসেই রাখালের অবস্থা বুঝতে পারেন নাই!"

দেখুন,কি করে একজন রাখালকে মুসা (আঃ) এর উপরে প্রাধান্য দিলেন চরমনাইয়েরপীর সাহেব!!মারেফতের নামে ভন্ডামির দ্বার উন্মুক্ত করে!

চরমোনাই পীর সাহেব লিখেছেনঃ“হযরত থানবী লিখিয়াছেন, জনৈক দরবেশসাহেবের মৃত্যুর পর এক কাফন চোর কবর খুড়িয়া (দরবেশের) কাফন খুলিতে লাগিল। দরবেশ সাহেব চোরের হাত ধরিয়া বসিলেন । তা দেখেচোর ভয়ের চোটে চিৎকার মারিয়া বেহুঁশ হইয়া মরিয়া গেল ।দরবেশ স্বপ্নযোগে তার এক খলীফাকে আদেশ করিলেন চোরকে তার পার্শ্বে দাফন করিতে । খলীফা এতে আপত্তি করিলে দরবেশ বলিলেনঃ কাফন চোরের হাত আমার হাতের সঙ্গেলাগিয়াছে, এখন কেয়ামত দিবসেওকে ছাড়িয়া আমি কেমনে পুলছেরাত পার হইয়া যাইব?” (ভেদে মারেফতঃ ২৭-২৮ পৃঃ)

তিনি আরো লিখেছেনঃ কেয়ামতেরসেই মহাবিপদের সময়হক্কানী পীর সাহেবগণ আপন মুরীদগণকে হযরত নবী করীম (সঃ) এর কাছে পৌঁছাইয়া দিবেন । এবং হুজুরে আকরাম (সাঃ) তাহাদিগকে হাউজে কাউছারের পানি পান করাইবেন।” (আশেক মাশুক পৃঃ ৬৬)

তিনি আরো লিখেছেনঃ “এরূপভাবে পরকালেও তাঁহাদের(ওলীদের ) ক্ষমতার সীমা থাকিবে না। হাশরের মাঠে একজন আওলিয়ায়ে কেরামের উছিলায় হুজুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া ছাল্লামের হাজারগুনাহগার উম্মতকে আল্লাহ্ পাক মাফ করিয়া দিবেন।” (আশেকমাশুক পৃঃ ৮১)

চরমোনাই পীরের লেখা ‘ভেদে মারেফত’ বইয়ের ১৫ পৃষ্ঠায় মৃতকে জীবিত করার যে গল্পটাআছে তা নিম্নরূপঃ

শামসুদ্দীন তাব্রীজী নামেরএক লোক ছিলেন। লোকেরা তাকে পীর সাহেব কেবলা বলত।

একদা হযরত পীর সাহেব কিবলা রোম শহরের দিকে রওয়ানা হইলেন। পথিমধ্যে ঝুপড়ির ভে...তর এক অন্ধ বৃদ্ধকে লাশ সামনে নিয়া কাদঁতে দেখিলেন।হুজুর বৃদ্ধকে প্রশ্ন করিলেবৃদ্ধ উত্তর করিলেন, “হুজুর এই পৃথিবীতেআমার খোঁজ খবর করিবার আর কেউ নাই, একটি পুত্র ছিল সে আমার যথেষ্ট খেদমত করিত, তাহার ইন্তেকালের পর সে একটি নাতি রাখিয়া যায়। সেই ১২ বছরের নাতি একটা গাভী পালিয়া আমাকে দুগ্ধ খাওয়াইত এবং আমার খেদমত করিত, তার লাশ আমার সম্মুখেদেখিতেছেন। এখন উপায় না দেখিয়া কাঁদিতেছি” । হুজুর বলিলেন এ ঘটনা কি সত্য? বৃদ্ধ উত্তরকরিলেন এতে কোন সন্দেহ নেই। তখন হুজুর বলিলেন"হে ছেলে আমার হুকুমে দাঁড়াও"। তো ছেলে উঠে দাঁড়াল এবং দাদুকে জড়াইয়া ধরিল, বৃদ্ধ তাকে জিজ্ঞেস করিল “তুমি কিরূপে জিন্দা হইলে”। ছেলে জবাব দিল, “আল্লাহর অলি আমাকে জিন্দা করেছেন”। (নাউজুবিল্লাহ) তারপর ঐ অঞ্চলের বাদশাহহুজুরের এই খবর পেয়ে উনাকে তলব করিলেন।উনাকে পরে জিজ্ঞেস করিলেন"আপনি কি বলিয়া ছেলেটিকে জিন্দা করিয়াছেন"। হুজুর বলিলেন আমি বলেছি “হে ছেলে আমার আদেশে জিন্দা হইয়া যাও”। অতঃপর বাদশাহ বলিলেন, “যদি আপনি বলিতেন আল্লাহর আদেশে”। হুজুর বলিলেন"মাবুদ! মাবুদের কাছেআবার কি জিজ্ঞেস করিব। তাহার আন্দাজ নাই (নাউজুবিল্ লাহ)। এই বৃদ্ধেরএকটি মাত্র পুত্র ছিল তাহাও নিয়াছে, বাকী ছিলএই নাতিটি যে গাভী পালন করিয়া কোনরুপ জিন্দেগী গোজরান করিত, তাহাকেও নিয়া গেল। তাই আমি আল্লাহ পাকের দরবার থেকে জোরপূর্বক রুহ নিয়ে আসিয়াছি”। (নাউজুবিল্ লাহ)।

এরপর বাদশাহ বলিলেন আপনি শরীয়াত মানেন কিনা? হুজুর বলিলেন “নিশ্চয়ই! শরীয়াত নামানিলে রাসূল (সাঃ) এর শাফায়াত পাইব না”। বাদশাহ বলিলেন, “আপনি শির্ক করিয়াছেন, সেই অপরাধে আপনারশরীরের সমস্ত চামড়া তুলে নেয়া হবে”। এই কথা শুনিয়া আল্লাহর কুতুব নিজের হাতের অঙ্গুলি দ্বারা নিজের পায়েরতলা থেকে আরম্ভ করে পুরো শরীরের চামড়া ছাড়িয়ে নিলেন, তা বাদশাহর কাছে ফেলিয়া জঙ্গলে চলিয়া গেলেন।

পরদিন ভোরবেলা যখন সূর্য উঠিল তার চর্মহীন গায়ে তাপ লাগিল তাই তিনি সূর্যকে লক্ষ করিয়া বলিলেন “হে সূর্য, আমি শরীয়াত মানিয়াছি, আমাকে কষ্ট দিওনা”। তখন ওই দেশের জন্য সূর্য অন্ধকার হইয়া গেল। দেশের মধ্যে শোরগোল পড়িয়া গেল। এই অবস্থা দেখিয়া বাদশাহ হুজুরকে খুঁজিতে লাগিলেন। জঙ্গলে গিয়া হুজুরের কাছে বলিলেনঃ শরীয়াত জারি করিতে গিয়া আমরা কি অন্যায় করিলাম, যাহার জন্য আমাদের উপর এমন মুসিবত আনিয়া দিলেন। তখন হুজুর সূর্য কে লক্ষ করিয়া বলিলেনঃ আমি তোমাকে বলিয়াছিআমাকে কষ্ট দিওনা, কিন্তু দেশবাসীকে কষ্ট দাও কেন? সূর্যকে বশ করা কি কোনমানুষের পক্ষে সম্ভব? ইহা বলা মাত্র সূর্য্য আলোকিত হইয়া গেল। আল্লাহ্‌ পাক তাহার ওলীর শরীর ভাল করিয়া দিলেন।

প্রিয় পাঠক , বিবেচনার ভার আপনাদের উপরই ছেড়ে দিলাম ।

শীগ্রই আসিতেছে ২য় পরিচ্ছেদ । আরও আসতে পারে মওদূদীবাদ ,আটরশি ,আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ।

প্রাসংগিক কমেন্টের উতর দিবো ।

আল্লাহ তার সত্যপথে কবুল করুন ।আমিন ।

বিষয়: বিবিধ

৩২৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File