কামারুজ্জামানের সম্পর্কে সেসব কথা কোন মিডিয়া প্রকাশ করবে না কোনদিন।
লিখেছেন লিখেছেন সোজা সাপ্টা কথা ০৯ মে, ২০১৩, ১২:০৩:১৯ রাত
স্বল্পভাষী, অমায়িক, মেধাবী এক রাজনীতিবিদ
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বাংলাদেশের সরকার ও রাজনৈতিক ময়দান, গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রাম, গণমাধ্যম তথা সাংবাদিকতা ও কূটনৈতিক মহলসহ দেশের সর্বত্র একটি আলোচিত নাম। এক কথায় বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে এক পরিচিত ব্যক্তিত্ব। শুধু তাই নয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আজ কামারুজ্জামান একটি উল্লেখযোগ্য নাম।
এক সময়ের সফল তুখোর ছাত্র নেতা ও সংগঠক আজকের সফল রাজনীতিবিদ ও ইসলামী চিন্তাবিদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। বাংলাদেশে আদর্শ ও ইসলামী রাজনৈতিক ধারা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বিগত চার দশক ধরে তার মেধা মনন বুদ্ধি দিয়ে নিরলস পরিশ্রম ও আন্দোলন সংগ্রামে আত্মনিবেদিত এক প্রাণ।
১৯৭০-র দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সফল ও মেধাবী ছাত্রনেতা হিসেবে বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতিতে মেধার বিকাশ ও গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে এবং দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিকাশ ও প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
১৯৮০-র দশকে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশে অবাধ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন তিনি।
দুর্নীতিমুক্ত এক স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান যেমন একদিকে সফল রাজনীতিবিদ ও সংগঠক অন্যদিকে একজন সফল সাংবাদিক ও সম্পাদক। তারই সফল সম্পাদনায় প্রকাশিত সাপ্তাহিক সোনার বাংলা আজ বাংলাদেশের শীর্ষে অবস্থানকারী সাপ্তাহিক প্রত্রিকা।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মুহাম্মদ কামারুজ্জামান তাই আজ সরকার ও ইসলাম বিরোধী রাজনৈতিক মহলের মারাত্মক অপপ্রচারের শিকার। সরকারের রোষানলে পড়ে দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান আজ কারাগারের এক দুর্বিষহ জীবন অতিবাহিত করছেন।
রাজনৈতিক ময়দানে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের পাশাপাশি মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বাংলাদেশের রাজনীতি, ইসলামী সংগঠন ও আন্দোলন, গণতন্ত্র ও তার বিকাশ, নির্বাচন, গণমাধ্যম, সমাজ সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রচুর চিন্তা ও গবেষণা করে চলেছেন। তিনি বাংলাদেশে অবাধ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠা ও তার কৌশল নিয়ে বেশ কয়েকটি মৌলিক গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং সেই বইগুলো পাঠকমহলে বেশ সমাদৃত হয়েছে।
জন্ম ও পরিচয়:
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ১৯৫২ সালের ৪ জুলাই শেরপুর জেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের মুদিপাড়া গ্রামে এক ধর্মপ্রাণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
শিক্ষা জীবন :
কুমরী কালিতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনার পর শেরপুর জিকেএম ইন্সটিটিউশনে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন। তুখোর মেধাবী ছাত্র কামারুজ্জামান প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বরাবরই প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। অষ্টম শ্রেণীতে তিনি আবাসিক বৃত্তি পান।
১৯৬৭ সালে জিকেএম ইন্সটিটিউশন থেকে ৪টি বিষয়ে লেটারসহ এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং আবাসিক বৃত্তি লাভ করেন। পুরো শেরপুরে একজন ভাল ছাত্র হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। এছাড়াও তিনি ছাত্রজীবন হতেই একজন বিনয়ী ভদ্র অমায়িক মানুষ হিসেবে সর্বজনবিদিত।
১৯৬৭-৬৯ সেশনে জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে অধ্যয়ন করেন। কিন্তু দেশে ’৬৯ এর গণআন্দোলন শুরু হওয়ায় অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে তিনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। ১৯৭১ (১৯৭২ সালে অনুষ্ঠিত) সালে মোমেনশাহী নাসিরাবাদ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৭৩ (১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত) সালে ঢাকা আইডিয়াল কলেজ থেকে ডিস্ট্রিংশনসহ বিএ পাস করেন
তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবৃত্তি লাভ করেন। ১৯৭৬ সালে কৃতিত্বের সাথে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন।
কর্মজীবন:
ছাত্র জীবন শেষে মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি বাংলা মাসিক ‘ঢাকা ডাইজেস্ট’ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
একজন মাদকমুক্ত হলুদ সাংবাদিকতা মুক্ত সম্পাদক
১৯৮১ সালে তিনি সাপ্তাহিক ‘সোনার বাংলা’ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহন করেন । সোনার বাংলা’ রাজনৈতিক কলাম ও বিশ্লেষণ বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং পত্রিকাটি দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক সাপ্তাহিকের মর্যাদা লাভ করে। সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সোনার বাংলায় ক্ষুরধার লেখনির কারণে এরশাদের শাসনামলে পত্রিকাটির প্রকাশনা নিষিদ্ধ হয়। অনেক বাধা-বিপত্তি ও দফায় দফায় নিউজ প্রিন্টের মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও অদ্যাবধি সোনার বাংলার নিয়মিত প্রকাশনা অব্যাহত রয়েছে। জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এখনও পত্রিকাটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগে কতিপয় ব্যক্তির সহযোগিতায় একটি ব্যতিক্রমধর্মী সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘নতুন পত্র’ প্রকাশ করেন, অবশ্য এ পত্রিকাটির প্রকাশনা বর্তমানে বন্ধ আছে।
জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ১৯৮৩ সাথেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দশ বছর সংগ্রামের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। মুহাম্মদ কামারুজ্জামান জাতীয় প্রেসক্লাবের এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। ১৯৮৫-৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।
রাজনৈতিক জীবন:
পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ১৯৭৯ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। ১৯৮১-৮২ সালে তিনি কিছুদিনের জন্য ঢাকা মহানগরী জামায়াতের জয়েন্ট সেক্রেটারী ছিলেন।
জননেতা কামারুজ্জামান, লাখো মানুষের নেতা
১৯৮২ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯২ সালে তাঁকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেলের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশী সময় দেবার প্রয়োজনেই ১৯৯৩ সালে তিনি দৈনিক সংগ্রামের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন।
১৯৯২ সাল থেকে তিনি জামায়াতের অন্যতম সহকারী সেক্রেটারী জেনারেলের দায়িত্ব পালন করছেন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কমিটি ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসাবে বিগত স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ১৯৮৩-৯০ পর্যন্ত তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৩-৯৫ সাল পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেযোগ্য।
বর্তমানে তিনি জামায়াতের নির্বাহী কমিটি, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও বিভিন্ন কমিটির সদস্য এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সেক্রেটারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসায় রাজনৈতিক অঙ্গনে দুর্যোগের ঘনঘটা দেখা দেয়। এ সময় তিনি ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্য গড়ে তোলায় দু:সাহসিক ভূমিকা পালন করেছেন, যা জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে। চারদলের কেন্দ্রীয় লিয়াজোঁ কমিটির অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসাবে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্য প্রচেষ্টায় তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এজন্য দলীয় রাজনীতি ছাড়াও বিভিন্ন ফোরামে সভা-সমাবেশ, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে তাঁর সক্রিয় উপস্খিতি বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়।
দেশের তরে সরব ছিলেন সব সময়
সামাজ সেবক:
একজন আদর্শ সমাজ সেবক হিসাবেও কামারুজ্জামানের সুনাম সুবিদিত। তিনি শেরপুরে দারুস সালাম ট্রাস্টের চেয়ারম্যান। এ ট্রাস্টের অধীনে অনেকগুলো এতিমখানা, মাদ্রাসা মক্তব, পাঠাগার, ও ক্লিনিক পরিচালনা করা হচ্ছে। তাছাড়া যে কোন দূযোর্গ ও দুর্বিপাকে নিজের সার্মথ অনুযায়ী এলাকার মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন কামারুজ্জামান।
এলাকার মানুষের সুখে দুখে সাথে ছিলেন সর্বদা
তাই মানুষের ভালবাসায় সিক্ত ছিলেন আজীবন
বিদেশ ভ্রমন
কামারুজ্জামান সাংবাদিকতার পেশাগত কাজে ,রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রনে এবং সভা- সেমিনারে যোগ দিতে অনেক দেশ ভ্রমন করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, হংকং, দক্ষিন কোরিয়া, নেপাল, সৌদিআরব, কানাডা, পাকিস্থান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জামার্নী, ইতালি, তুরস্ক, ইয়ামেন, ফ্রান্স, ব্রুনাই, বাহরাইন, কুয়েত প্রভৃতি।
১৯৭৬ সালে তিনি পবিত্র হজ্জ পালন করেন।
বিখ্যাত ব্যক্তিদের সাথে সাক্ষাত:
এ সকল সফর কালে তিনি বিশ্বের খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গের সাথে সাক্ষাত করেন। এ সব সাক্ষাতে বাংলাদেশ ও মুসলিম বিশ্বের স¦ার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিনি তার আর্ন্তজাতিক সফর কালে যাদের সাথে সাক্ষাত করেন তাদের মধ্যে অন্যতম হল, ১৯৯০ সালে রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রনে ইরান গমন করে ইরানি বিপ্লবের নেতা আলি খোমেনী, আয়াতুল্লাহ জান্নাতি, ভারত সফর করে ভারতের প্রখাত আলেম ইমাম বুখারি, লেবাননের মুফতি ফাজলুল্লাহ, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরীফ, মালয়েশিয়ার সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। ১৯৯২ সালে তিনি ভারত পাকিস্তান ও নেপাল সফর করেন । সেসময় তিনি ভারতীয় নেতা অটল বিহারী বাজপেয়ী ও আইকে গুজরালের সাথে সাক্ষাত করেন। পরবর্তীতে তারা দুজনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট গোলাম ইসহাক খান ও পাকিস্তান জামাআতের আমীর কাজী হোসাইন আহমাদের সাথেও সাক্ষাত করেন।
কামারুজ্জামান সভা-সম্মেলনে যোগ দিতে অনেক ইউরোপের দেশ ভ্রমন করেন। তিনি ভ্যাটিকান সিটি তেও গমন করেছেন। জামাআতের তৎকালীন আমীর অধ্যাপক গোলাম আজমের চিঠি পৌছে দেন সাবেক পোপ জন পলের নিকট।
কামারুজ্জামান ১৯৯৬ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টি কনভেনশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র গমন করেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাত করেন। ২০০২ সালে মুসলিম উম্মাহ ইন আমেরিকার আমন্ত্রনে আবার যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমন করেন। তিনি ২০০৫ সালে আবার যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন ও সেখানে বাংলাদেশ ককাশের প্রধান জোসেফ ক্রাউলি সহ আরো অনেক কংগ্রেসম্যানের সাথে সাক্ষাত করেন।
তিনি ২০০৫ সালে কনভেনশন অব ইসলামিক ডেমোক্রেট সম্মেলনে যোগ দিতে তুরস্ক সফর করেন।
তিনি যুক্তরাজ্য সফর কালে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কনজারভেটিভ পার্টি ও লেবার পার্টির সংসদের সদস্যদের সাথে সাক্ষাত করেন। তিনি সেখানে হাউজ অব লর্ডসে প্রবেশ করেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন উত্তর পর্বে অংশগ্রহন করার সুযোগ পান।
প্রকাশনা :
কামারুজ্জামান দেশ বিদেশের চলমান ঘটনাবলী নিয়ে বিশ্লেষানাতœক অনেক প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও কলাম লিখেছেন। বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও জার্নালে তার অসংখ্য লেখা প্রকাশ হয়েছে। তাছাড়া তার লেখা অনেকগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে। তার লেখা জনপ্রিয় বইগুলো হল, আধুনিক যুগে ইসলামী বিপ্লব, বিশ্ব পরিস্থিতি ও ইসলামী আন্দোলন, পাশ্চাত্যের চ্যালেঞ্জ ও ইসলাম, সংগ্রামী জননেতা অধ্যাপক গোলাম আযম, স্থিতিশীল গনতন্ত্র : সমানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন। তার অধিকাংশ লেখাই ইসলামী রাজনীতি, মুসলিম বিশ্বের অবস্থা নিয়ে লেখা। তিনি তার লেখায় ইসলামী গনতন্ত্রের স্বরুপ বিশ্লেষন করেছেন। তাছাড়া পাশ্চাত্য সভ্যতার সাথে ইসলামের যে শূন্যতার তার পূরনের দিকনিদের্শনা দিয়েছেন। তার সর্বশেষ বই ‘সাঈদ বদিউজ্জামান নুরসী’ সাপ্তাহিক সোনার বাংলায় বিগত কয়েকমাস ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।
যুদ্ধাপরাধ মামলা:
সরকার তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে শুরু থেকেই বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় আটক করে রেখেছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী দল জামাআতে ইসলামীকে ধ্বংশ করার অভিপ্রায়ে তথাকথিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল করেছে। আর্ন্তজাতিক ভাবে বিতর্কিত এ ট্রাইবুনালের অধীনে গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে মেধাবী রাজনীতিবিদ কামারুজ্জামানকে। তার বিরুদ্ধে অলীক ও ভিত্তিহীন গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।১৯৭১ সালে অনুষ্ঠিত শেরপুরের কয়েকটি হত্যাকান্ডের সাথে তাকে জড়ানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে। অথচ পুরো ৭১ সালে তিনি ঢাকা ও ময়মনসিংহে কাটিয়েছেন। তার বিরুদ্বে আনীত কোন অভিযোগ সরকার পক্ষ নিরুঙ্কুস ভাবে প্রমান করতে পারেনি। কোন প্রত্যক্ষদর্শী তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয় নি। অথচ রায়ের আগেই সরকারের মন্ত্রীরা বিচার বিভাগের নিয়ম লংঘন করে তার ফাসির কথা প্রচার করে বেরাচেছ। এতে স্পষ্ট হয়ে গেছে এ বিচার সম্পূর্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
কথিত যে অভিযোগে কামারুজ্জামানকে আজ কারাগারে আটক রাখা হয়েছে সে অভিযোগের কোন রকম সত্যতা নেই। ১৯৭১ সালে শেরপুরে যুদ্বাপরাধের বিভিন্ন ঘটনার সাথে কামাজ্জামানকে জড়ানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। অথচ প্রকৃত সত্য হচ্ছে মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান ১৯৭১ সালে শেরপুরে অবস্থান করেননি। তিনি তখন মোমেনশাহী ও ঢাকায় অবস্থান করেছেন। তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে তার মাকে দেখার জন্য মাত্র একবার তিনি শেরপুরে গিয়েছিলেন। শেরপুরসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অভিমত কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আজ যে কথিত অভিযোগ আনার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে তার মূল কারণ হলো তিনি আজ বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামী ও আদর্শিক চেতনার সমন্বয় ঘটিয়ে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনে অনন্য অবদান রেখে চলেছেন। তিনি একজন জাতীয় রাজনীতিবিদ ও ইসলামী চিন্তাবিদ। রাজনৈতিক ময়দানে তার অবদান দেশের ইসলাম বিরোধী শক্তির সহ্য হচ্ছে না। বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতির অন্যতম এই সিপাহশালার মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ইসলাম বিরোধী শক্তির এক মহাআতংক। তাই তার বিরুদ্ধে আজ যুদ্ধাপরাধের কথিত অভিযোগ।
উপসংহার
বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলন তথা মুসলমানরা বর্তমানে একগভীর ষড়যন্ত্রের ঘুণাবর্তে পড়ে গেছে। আর্ন্তজাতিক ইসলাম বিরোধী শক্তির সাথে হাত মিলিয়েছে অভ্যন্তরীণ স্বার্থান্বেষী মহল। প্রতিবেশী উদিয়মান পরাশক্তি ভারতের কব্জায় নিতে শুরু হয়েছে কৌটিল্য ষড়যন্ত্র। তাদের যোগ সাজসে বিশ্বের ৪র্থ বৃহত্তম মুসলমান দেশের ইসলামিক নেতৃবৃন্দকে শেষ করে দিতে পরিকল্পনা করা হয়েছে। মুসলামানদের নেতৃত্বশূন্য করার সূদুরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে কামারুজ্জামানের মত আজীবন সৎ, নীতিবান, দুর্নীতিমুক্ত মেধাবী রাজনীতিবিদের নামে অনেক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। সাজানো ট্রাইবুনালে তথাকথিত বিচারের নামে তাকে ফাসি দেয়ার আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ কখনোই সরকারের আজ্ঞাবহ এই ট্রাইবুনালের অবিচার মানবেনা। এখনই সময় সরকারের বিরোদ্ধে রুখে দাড়াবার।
বিষয়: বিবিধ
১৬১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন