ল্যাবটবের ব্যাগ এবং আমি
লিখেছেন লিখেছেন এ,এস,ওসমান ১১ জুলাই, ২০১৫, ০৪:০৮:৩৯ বিকাল
বাড়ি যাবো বলিয়া,হস্তে ল্যাবটবের ব্যাগখানা লইয়া আর পায়ে একজোড়া কালো জুটা পড়িয়া বেশ সাহেব সাহেব ভাবে ঘর হইতে বাস স্টেশনের পথে গমন করিলাম
বহুদিনের খোয়াব আমার,ঈদের আগে বাসে চলিয়া রাতের আকাশের তারা গুলো এক এক করে গুনতে গুনতে বাড়ি যাইবো।
তো যাই হোক,নিজের খোয়াব পূর্ন করিবার আশায় এবার অনেক ঠেলাঠেলি করিয়া ঝকঝকে কালো মার্কেট হতে চুরুট করিয়া একখানা টিকিট ক্রয় করিয়াছি
হেঁটে হেঁটে বাস স্টেশনে যাইয়া দেখিলাম বাস মহাদয় এখনো যথাস্থানে আসিয়া পৌছায় নি নিশ্চয় শালা বাসের ডাইভার কোন জায়গায় একা একা বসিয়া প্রেমালাপ করিতেছে। ভাবলাম বাস আসার সাথে সাথে বাসের ডাইভারের কলার চাপিয়া ধরিয়া বলিবো, কার লগে তার এতো প্রেমালাপ!!! ] ]
কিন্তু ঘণ্টা দুয়েক পর বাস আসিয়া থামিলে,বাসের ডাইভারের সামনে নিজেকে কচি খোকা মনে হইলো তাই ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার ন্যায় লাফালাফি না করিয়ে যথাযথ নিজ আসনে নিজের পশ্চাৎদেশ স্পর্স করিয়া নিজেকে ধন্য করিলাম
আসনে বসিয়া নিজের ভাবের যেন কমতি না হয়,সেদিক নজর রাখিয়া ল্যাবটবের ব্যাগ আমার দু পদখানার উপর রাখিয়া পাশের সহযাত্রীর দিকে তাকিয়া একখানা চোখ টিপ দিলুম। আমার চোখ টিপ মারা দেখিয়া ভ্যবাচ্যকা খায়য়া সে তাহার আইফোন-৬ বের করিয়া লুডু খেলতে লাগলো
ইতিমর্ধ্যে বাস কয়েক ক্রোশ অগ্রগামী হয়েছে আর আমার সহযাত্রী ক্রমশেই আমাকে দেখাইয়া তাহার আইফোন-৬ এ লুডু খেলিতেছে। হঠাৎ কারা যেন আমার কানের কাছে এসে চিৎকার বললো,"বাসে ডাকাত পড়েইয়াছে। যাহার কাছে যা কিছু আছে তা যেন বিনা আওয়াজেই দিয়ে দেওয়া হয় তা না হল একেবারে ওপার...... করে দিবে"
ঘটনা বুঝতে পারিয়া কোন কিছু না ভাবিয়া,আমি ল্যাবটবের ব্যাগটা দুপায়ের মাঝে লুকিয়া রাখিবার চেষ্টা করলাম আর আমার সহযাত্রী তাহার লুডু খেলা ডাকাতের হস্তে হস্তান্তর করিয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়িলো
অতঃপর ডাকাত সর্দার আমার ল্যাবটবের ব্যাগ খুঁজিয়া পাইয়া আর লুকাইয়া রাখার অপরাধে আমাকে কানের নিচে হাই-পাওয়ারের একটা চড় দিয়া অড়িঘড়ি করিয়া বাস ত্যাগ করিল
ল্যাবটবের ব্যাগের শোকে আমি আকাশের তারা গুনার বদলে আমি আমার চোখের জল গুনিতে গুনিতে বাড়ি আসিলাম।বাসার লোকেরা আমার কান্নার কারন জানতে চাইলে আমি আবার নতুন উদ্যমে কান্না শুরু করে দিলাম।বাবা উঠিয়া আসিয়া আমার কানের নিচে একটা মিডিয়াম দিয়ে বললেন কাহিনী কি সেটা খুলে বল আগে?
বাপের হস্তের চুম্মন আমার গালে লাগিবার কারনে কান্না থামিয়া আমি ঘটনা খুলিয়া বলতে লাগলাম।
সমস্ত ঘটনা শুনিয়া মা তাহার দুচোখ ফাটিয়ে জল নিহরন করিবার কালে বলিলেন,তুই তোর শখের ল্যাবটবটাও হারায়লি।
মার কান্দোন দেখিয়া আমি মা-কে সান্তনা দিলুম,না গো মা, ল্যাবটব তো হারায় নি।ওহা চুরি যায়তে পারে বলিয়া আমি সঙ্গেই আনিনি।শুধু ওহার ব্যাগটা লইয়া আইতে ছিলাম।
মা তখন তাহার চোখের হল মুছিতে মুছিতে বলিলো,তাহলে তুই কি কারণে কাদুস?
আমি নতুন উদ্যমে চোখের জল ফিলিয়া বলতে লাগলাম, ঐ ব্যাগে তো আমার দুখানা গেঞ্জি ছিল মাত্র দুমাস আগে কিনিয়াছি।গেঞ্জি দুখানা হারিয়া আজ আমি শোকে পাথর।
ঘটনার মুল কাহিনী বাবা শুনিয়া বলিলেন,দুখানা গেঞ্জি হারাইয়াই তুই যাহা করিলি,ল্যাবটব হারাইলে কি করতি তাহা শুধু মাত্র আল্লাহই ভাল জানেন।
{বিঃ দ্রঃ আজ বাড়ী যামু বলিয়া কিছুদিন ব্লগে আসিতে পারুম না। তাই ভাবিলাম একখানা লেখা ব্লগে জমা দেওয়া যায়। নিজের কল্প- কাহিনীতে লেখাটা লেখিলুম।ভাল হয়েছে কিনা খারাপ হয়েছে তা ঠিক বুঝিবার পারছি না।তাই কোন ভুল আপনাগের চোখে পড়িলে তাহলে আমার চোখে দয়া করিয়া আংগুল দেইয়া দেখিয়া দিবেন। তাহলে নিজেকে পরিশোধনের পন্থা বের করার চেষ্টা করিব।}
বিষয়: বিবিধ
২০০৬ বার পঠিত, ৩১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমিও খালি ল্যাপটপের ব্যাগ বহন করি। সাথে শুধু মোডেমটা থাকে। এই জন্য বাড়ীতে একটা ল্যাপটপ ও কর্মস্থলে আরেকটি ল্যাপটপ স্থায়ী ভাবে রেখে দিয়েছি। কারণ ঐ চুরি/ডাকাতির ভয়। ঈদ শুভেচ্ছা রইল। ধন্যবাদ।
তাহলে কিন্তু চোর হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিবে
আপনার কল্পনার থেইক্কা বাইর হওয়া গল্পখান পড়িতে পড়িতে অনেকক্ষন হাসিলুম। ঈদ সাঈদ ও আওদুন হামীদ। আয়াদাল্লাহু আলাইনা বিল খাইর।
এবার সেলামি দেন
ধন্যবাদ ভাইয়া ভালই হয়েছে ।
ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ভাইয়া ।
ধ্যনবাদ পড়ার জন্য।
এবার ঈদের সেলামি দেন
মানে বোনরে পক্ষ থেকে ভাই হিসেবে
এটা যে আসল তার প্রমান কি
আর @ আফরা আপু আমাকে ডেনমার্কের টাকা দিবে
এবার সেলামি দিন
)
আহহহহাহাহ অপমান অপমান অপমান
সেলামি এখনো দেইনি এতেই এই অবস্থা
এবার ঈদের চুভেচ্চা নিয়ে সেলামি দিন
কিন্তু আপনি কোথায় অশ্লীল শব্দ পেলেন একটু ধরিয়ে দিলে আমি পরবর্তি সময়ে সতর্ক হতাম।
তো ভাইয়া ঈদের চুভেচ্চা রেখেন আর আমার সেলামিটা দিন
ভাইয়া, আপনি তো দিয়েছেন আমি এখনো দেইনি এতেই এই অবস্থা
মন্তব্য করতে লগইন করুন