আমার বই পড়ার ঝোঁক
লিখেছেন লিখেছেন এ,এস,ওসমান ১৬ জুন, ২০১৫, ০১:৩৪:১০ রাত
ছোট হতেই গল্পের বই এর প্রতি দারুণ ঝোঁক ছিল।ছোট কালে ইসলামী সাহিত্য পড়তে পড়তে দেখলাম বাড়িতে বই এর আলমারির সব ইসলামি সাহিত্য পড়া শেষ।
যায় হোক ক্লাস ফোর এ থাকতে হঠাৎ একদিন ভাইয়ার বিছানার গদির নিচে তিন গোয়েন্দার একটা বই পেলাম। তারপর হতে তিন গোয়েন্দার অন্ধ ভক্ত হয়ে গেলাম। শেষ পর্যন্ত দেখি তিন গোয়েন্দার বই এর জন্য আমাকে লাইব্রেরীতে অর্ডার দিতে হচ্ছে।
ক্লাস ফোরের দিকেই তখন স্কুল ছুটি যাচ্ছে কোন এক কারনে। আমি দেখলাম বাড়িতে আমার সংগ্রহে যত গুলো বই আছে আল্লাহর রহমতে প্রায় সবই শেষ।কিন্তু আমাকে তো বই পড়তেই হবে!!!
বই পড়ার চিন্তা নিয়ে আমি বাড়ির বই এর আলমারিটা খুলাম। দেখি আমার পড়ার মত কোন বই নায়।তখন ভাবলাম এত দিন তো অনেক বাচ্চাদের বই পড়লাম
এবার বড়দের বই পড়বো।আমাকে বড় হতে হবে না যে চিন্তা সে কাজ, আমি নসীম হিযাজীর "হেজাজের কাফেলা"(নামটা ভুলও হতে পারে অনেকদিন আগে পড়েছি তো) বইটা নিয়ে বসলাম।
৬০০ কি ৭০০ পৃষ্টার বই ছিল। বইটা আমি ৪-৫ দিনে শেষ করে বঝলাম আমাকে আর একটা বই পড়তে হবে :P আবার আলমারি খুঁজে "আলোর পরশ" নামে একটা বই আনলাম। এই উপন্যাসটাও ২-৩ দিনের মর্ধ্যে শেষ হয়ে গেল। যায় হোক এভাবেই আমার উপন্যাস পড়া এগিয়ে চলতে থাকলো।
ক্লাস সিক্স কি সেভেনে নসীম হিযাজীর "কায়সার ও কিসরা" বইটা নিয়ে ঘরের কোনে পড়ছিলাম তখন দুচোখ দিয়ে কখন যে পানি বের হয়ে গেছিল ঠিক বুঝতেই পারি নি।রক্তাত ভারত উপন্যাসটা পড়ে ভেবেছিল হায় হায় এ কি হল!!!
নসীম হিযাজীর আরবও উপন্যাস অনেক পড়লেও ভারতবর্ষ নিয়ে লেখা উপন্যাস আমি প্রায় খুঁজতাম।এক দিন আব্বুর বুকসেভে শফিউদ্দীন সরদারের "বার পাইকার দূর্গ" বইটা পেলাম।আম্মুকে বললাম বইটা কেমন?
আম্মু মুচকি হেসে বলল, পড়েই দেখ না।
বইটা নিয়ে সকালে বসে ছিলাম ঠিক যখন আছরের আযান দেয় তখন শেষ করে উঠি।
শফীউদ্দিন সরদার তার বই এ এত সুন্দর করে ভারতবর্ষের কাহিনী তুলে ধরেছেন যে, আমি শুধু তার বই এই মুগ্ধ না; আমি এ দেশের ইতিহাসের উপরও মুগ্ধ।
বাড়িতে শফীউদ্দীন সরদারের যত গুলো বই ছিল সব গুলো পড়েছিল।তবে বেশির ভাগ বই ই আমার চোখের পানি আটকিয়ে রাখতে পারে নি।
শফীউদ্দীন সরদারের বই পড়ে আমাকে আলাদা করে কোনদিন ইতিহাসও পড়তে হয় নি।আর ইতিহাসও মনে থাকতো দারুণ।
নসীম হিযাজী আর শফীউদ্দীন সরদারের মাঝে আমার তিন গোয়েন্দা এক সময় থেমে যায়। তবে থেমে যায় নি কখনও সেবা প্রকাশনার বই।তিন গোয়েন্দা আমি প্রায় ৬৫-৭০++ টা সিরিজ পড়েছিলাম। যখন এটা বাদ দিই তখন কেবলে ৯২ কি ৯৩ নং সিরিজ বের হয়।
এর পর ধরি মাসুদ রানা। মাসুদ রানা ২০-২৫ সিরিজ পড়ার পর আর ভাল লাগে নি।তাই মাসুদ রানা বাদ দিয়ে শুরু করলাম ওয়েস্টার্ন বই পড়া। অসাম লাগে এই বই গুলো পড়তে। এখনও মাঝে মাঝে পড়ি।
সেবা প্রকাশনার হরর বা অনুবাদ কোনটায় বাদ দিই নি। আর সেবার সাথে চলেছে জাফর ইকবাল, হূমায়ন আহমেদ, ফেলুদা, কাকাবাবু, শার্কস হোমস সহ আরও অনেক নাম না জানা লেখকের বই।ক্লাস নাইনে বাড়িতে কম্পিউটার আসার পর হতে খুব একটা বই পড়া হয় না। তবে এখনও ফাকা সময় পেলে আর হাতের কাছে মনের মত বই থাকলে না পড়ে কোন কাজ করি না।
বিষয়: বিবিধ
২০৫০ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
আজই মনে হয় প্রথম শুনলাম
এটা পড়া হয় নি আপু।
যদি আব্বুর বুক সেলফের বই এর কথা বলে তবে পরে আব্বু জেনেছিল আমি তার বুক সেলফের পাঠক
@কথার_খই ভাইয়া আপনি যে নকল জায়গায় মন্তব্য করলেন
ভাইয়া আপনাকে তো মানবাধিকার লঙ্গনে ভাসানো হবে
আমাদের বাসায় গল্পের বই পড়ার সুযোগ ছিলনা, পড়তে হতো লুকিয়ে লুকিয়ে। আর তাই বড়দের কাছ কোনো দিকনির্দেশনা পাই নি , পেলে হয়তো নসীম হিজাজীর লিখা বইগুলো পড়া হয়ে যেতো তখন!
তিন গোয়েন্দা, ওয়েষ্টার্ন, ড্রাকুলা,সাইমুম এবং সেবা প্রকাশনীর বইগুলোর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলাম! সেবা রোমান্টিকের মধ্যে খন্দকার মাজহারুল করীম ছিলেন সবাচাইতে প্রিয় লেখক!
চমৎকার পোস্টের জন্য শুকরিয়া! শুভকামনা রইলো!
আপু আমাকেও গল্পের বই পড়তে হত লুকিয়ে লুকিয়ে।পড়ার বই এর মাঝে গল্পের বই নিয়ে আমি পড়তাম কতবার যে এ অবস্থায় ধরা খেয়েছি
আর আম্মুর হাতে মার
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
আমার সেই পুঁথিপোস্ট গায়েব হয়ে গেছে
তবে আপু আপনার মেধা কিন্তু কম না
মন্তব্য করতে লগইন করুন