Good Luck জীবন হতে নেওয়া.................. Good Luck শেষ পর্ব

লিখেছেন লিখেছেন এ,এস,ওসমান ০১ জুন, ২০১৫, ০৭:৩৭:৩২ সন্ধ্যা

শুধু মাত্র মোজাহিদই এসেছে।আর কেউ আসে নি।মোজাহিদকে সবাই ঘিরে ধরেছে।ওর পায়ে জখম।রসিদ সাহেবের নির্দেশে ওর পায়ের জখমটায় ঔষধ লাগানো হল।কিছুটা সুস্থ হলে সবাই জানতে চায়লো আসলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কি ঘটছে।

মোজাহিদঃআমরা ভার্সিটিতে নতুন ছাত্রদের নবীন বরনের অনুষ্ঠান করছিলাম।বেলা ১১.৩০ টার সময় ছাত্র লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র - মৈত্ররা আমাদের উপর আচমকা হামলা করে।আচমকা হামলায় আমরা ছন্নভন্ন হয়ে যায়।কিছু ভাইকে ওরা ছুরি দিয়ে আহত করে।

রশিদঃ তোমার পায়ের এ অবস্থা হল কি করে।

মোজাহিদঃ ছাত্র লীগের মারুফ (নামটা আমার মনে নায় ) এর সাথে আমার ধস্তাধস্তি হয়েছিল। ও আমাদের দুই ভাইকে হত্যা করেছে। ও আমাকেও মেরে ফেলতে চেয়ে ছিল। আমার সাথে ধস্তাধস্তি করে আমায়ে পায়ে ওর চাকু দিয়ে জখম করে আমাকে ফেলে দেয়।

লতিফঃ এরপর...

মোজাহিদঃ পরে আমাকে হত্যা করতে আসতে লাগলে কার সাথে বারি খেয়ে ও পড়ে যায় আর ওর হাত হতে ছুরিটা দূরে সরে পড়ে।তখন আমি উঠে একটা লাঠি দিয়ে কষে দুটা মেরে ছেরে দিই।

লতিফ কিছুটা অবাক হয়ে বললেনঃ ও তোমাকে খুন করতে এসে পড়ে গেল আর তুমি কিনা ওকে খুন না করে দুবার মেরে ছেরে দিলে?

মোজাহিদঃ না মানে, আমি যখন সুযোগ পাই তখন তো ওর কাছে কোন অস্ত্র ছিল না।ইসলামের শরীয়াত অনুসারে নিরস্ত্র ব্যাক্তিকে খুন করার জায়েজ নেয়।

লতিফ সাহেব রাগান্বিত ভাবে বললেনঃ তাই বলে তুমি ওকে ছেড়ে দিবে? ও না তোমাদের দুজনকে খুন করেছে? তুমি কি বোকা ছেলে!!!

মোজাহিদঃ কিন্তু...

লতিফঃ চুপ থাকো। একারণের তোমরা কিছু করতে পারবে না।সারা জীবন মার ই খেয়ে যাবে।

বিকালের মর্ধ্যে বাকি সব ছেলেরাই চলে আসলো।আল্লাহর রহমতে কারু ই বড় ধরনের জখম হয় নি।

সামান্য যে সব জখমি হয়েছে রশিদ সাহেব ডাক্তার ডেকে এনে চিকিৎসা করলেন।আল্লাহর রহমতে কিছু দিনের মর্ধ্যেই সকল ছেলে সুস্থ হয়ে উঠলো।

শিবিরের রাজশাহী মহানগর সভাপতি বারবার রশিদ সাহেব সহ তার ফ্যামিলি এবং তার ভাইদের কৃতজ্ঞা জানাতে লাগলেন।

সভাপতিঃ চাচা আপনারা আমাদের জন্য করলে তা ভাষায় বলার মত না।আপনাদের নিকট আমরা কৃতজ্ঞ থেকে গেলাম।

রশিদঃআরে বাবা কি যে বল না!! তোমরা কি আমার ছেলের মত না। তোমাদের কিছু হলে আমরা চুপ করে থাকতে পারি।

সভাপতিঃ তারপরও চাচা আপনার ঋণ আমরা শোধ করতে পারবো না।

রশিদঃআরে বাবা বাদ দেও ওসব।তোমরা আমাদের দূরের কেউ না।

সভাপতিঃ চাচা আপনি যদি কিছু মনে না করেন তবে একটা কথা বলতাম।

রশিদঃ বল বাবা, কি বলবে......

সভাপতিঃ যেহেতু আপনার ফ্যামিলি আমাদের সংগঠনের ভাইদের এত সাহায্য করেছে;একারণে আমরা আপনার ফ্যামিলির সাথে কখনও সম্পর্ক নষ্ট করতে চাচ্ছি না। তাই আমি বলছি আপনাদের ফ্যামিলিতে যদি কোন বিয়ের বয়স্ক মেয়ে থাকে তবে আমাদের কোন ভাইদের সাথে বিয়ে দিতে পারেন।

রশিদঃআলহামদুলিল্লাহ।আমি তোমার প্রস্তাবে রাজি।আমার বড় মেয়ে বাবলি বিয়ের বয়স্ক। তোমাদের মর্ধ্যে যদি কেউ আমার বড় মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি থাকে তবে জানাও।

এরপর সভাপতি শিবিরের ছেলেদের নিয়ে বসে রশিদ সাহেবের মেয়ের বিয়ের বিষয়ে কথা বলতে লাগলেন।প্রথমে তামিম তারপর মাসুদ, এরপর রফিককে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তারা জানায় তাঁদের সকলেই বাড়িতে বিয়ে ঠিক করা আছে।সর্বশেষে মোজাহিদকে বললে মোজাহিদ বলে,ভাই আপনি তো আমার বাসা সম্পর্কে জানেনই তো।বাসা হতে খুব বেশি সমস্যা হবে না। কিন্তু আমাকে তো বাসা হতে কোন খরচ দেয় না। আবার আমি এখনও তো ছাত্র। তারপরও আপনি যদি বলেন তবে নেতার আদেশ মানতে আমি রাজি আছি।

সভাপতি মোজাহিদের বিষয়ে রশিদ সাহেবের সাথে আলোচনা করলো।সব শুনে তারপরও রশিদ সাহেব রাজি হয়ে গেলেন। আর সে রাতেই বিয়ে হয়ে গেল মোজাহিদ এবং বাবলির।

মোজাহিদ আর বাবলির দম্পাতি জীবনে চারটি সন্তান এই পৃথিবীর মুখ দেখে।আর মোজাহাদি এখনও তার শ্বশুর বাড়ি হতে পায় দারুণ সম্মান।

আর আমি!!!

আমি মোজাহিদের সর্বকনিষ্ট সন্তান ওসমান। না না আমি ওসমান না। এ.এস. বিন মোজাহিদ।

পুরা ঘটনা আমি শুনেছি আমার মায়ের কাছ হতে।কোন দিন ভাবি নি এটা নিয়ে লেখবো।যে কারনে আমার লেখায় ভুল ত্রুটি থাকতে পারে। প্রত্যক্ষ সাক্ষীরা কেউ যদি আমার এই পোষ্টে কোন ভুল ত্রুটি দেখে থাকেন তবে দয়া করে ক্ষমা স্বরূপ দেখবেন।

Good Luck জীবন হতে নেওয়া.................. Good Luck পর্ব-২

Good Luck জীবন হতে নেওয়া.................. Good Luck পর্ব-১

বিষয়: বিবিধ

১৩৬৮ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

323923
০১ জুন ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫৩
ছালসাবিল লিখেছেন : কোন ভুল ত্রুটি নাই ভাইয়া। দারুন এক ট্রাজেডি আল্লাহু আকবার! Love Struck
০১ জুন ২০১৫ রাত ১১:১৩
265570
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : মাত্র ২০ বছর আগেও রাজশাহীতে কোন বিবাহযোগ্য মেয়ে থাকলে মেয়ের বাবা প্রথমে চেষ্টা করতেন শিবির কোন ছেলেকে জামাই হিসেবে পাওয়া যায় কিনা।

ভাইয়া আপনাকে ধন্যবাদ।
323928
০১ জুন ২০১৫ রাত ০৮:১০
অবাক মুসাফীর লিখেছেন : লাস্টের টুইস্টের জন্‌য প্রস্তুত ছিলাম না...! প্রথম দুই পর্ব পড়া দরকার...
০১ জুন ২০১৫ রাত ১১:১৪
265571
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : মাত্র ২০ বছর আগেও রাজশাহীতে কোন বিবাহযোগ্য মেয়ে থাকলে মেয়ের বাবা প্রথমে চেষ্টা করতেন শিবির কোন ছেলেকে জামাই হিসেবে পাওয়া যায় কিনা।

ভাইয়া আপনাকে ধন্যবাদ।
323929
০১ জুন ২০১৫ রাত ০৮:১৩
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহামাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! মাশ-আল্লাহ! খুব সুন্দর গাঁথুনী দিয়ে লিখেছেন আপনার লেখা! আল্লাহ আপনার লেখার হাতকে আরো প্রসারিত করে দিন। আমিন।
সময় করে আসবেন আমার ছোট্ট ব্লগবাড়িতে......
০১ জুন ২০১৫ রাত ১১:১৫
265572
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম। আপু আপনি এমনিতেই আমার প্রিয়তে আছেন। আর ছোট ভাই এর প্রশংসা করেছেন বলে দোয়া করি আল্লাহ আপনার প্রশংসা বাড়িয়ে দিন। আমিন।
323949
০১ জুন ২০১৫ রাত ১০:০২
আফরা লিখেছেন : খুব সুন্দর করে লিখেছেন ভাইয়া খুবই আনন্দ লাগছে আপনাদের জীবন কাহীনি শুনে ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
০১ জুন ২০১৫ রাত ১১:১৭
265574
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : আপু আপনাকেও ধন্যবাদ। আমার এই কাহিনী অনেক ভাইকে বলায় তাদের চোখে আমি পানিও দেখেছি।
323975
০১ জুন ২০১৫ রাত ১০:৩৯
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : মা-শা-আল্লাহ্!এতটা সার্প্রাইজ ভাবিনি। আপনিতো আক্ষরিক অর্থেই মোজাহিদের সন্তান।
০১ জুন ২০১৫ রাত ১১:১৮
265575
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : দোয়া করবেন আমিও যেন মোজাহিদ হতে পারি।
324024
০২ জুন ২০১৫ সকাল ০৭:৪৭
শেখের পোলা লিখেছেন : শেষ করলাম৷ ধন্যবাদ৷
০২ জুন ২০১৫ দুপুর ১২:০৪
265666
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম। আপনাকেও আমার পক্ষ হতে ধন্যবাদ।
324049
০২ জুন ২০১৫ সকাল ১০:৪৮
হতভাগা লিখেছেন : বাংলা ছবির ঘটনার মত । শুরুতেই বোঝা গিয়েছিল কাহিনী কোন দিকে মোড় নিবে ।
০২ জুন ২০১৫ দুপুর ১২:০২
265664
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : মাত্র ২০ বছর আগেও রাজশাহীতে কোন বিবাহযোগ্য মেয়ে থাকলে মেয়ের বাবা প্রথমে চেষ্টা করতেন শিবির কোন ছেলেকে জামাই হিসেবে পাওয়ার।



ভাইয়া আপনাকে ধন্যবাদ।
324053
০২ জুন ২০১৫ সকাল ১০:৫৮
ঝিঙেফুল লিখেছেন : তিন পর্বই পড়লাম। চমৎকার জীবন কাহিনী।
০২ জুন ২০১৫ দুপুর ১২:০৩
265665
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : আপু আপনাকে ধন্যবাদ।
324074
০২ জুন ২০১৫ দুপুর ১২:৩১
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : অনেক সুন্দর সমাপ্তি, জীবন থেকে নেয়া’র। ছাত্রশিবিরের মুজাহিদদের প্রাণভরে দোয়া করছি।।
আশাকরি তারা আবার সিংহবিক্রমে রাজপথ কাঁপাবে। ধন্যবাদ।
০২ জুন ২০১৫ দুপুর ১২:৪১
265677
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। আপনি ঠিকই বলেছেন। ইংশাল্লাহ। আমাদের আবার সুদিন আসবে।
০২ জুন ২০১৫ দুপুর ০১:০৬
265688
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
১০
324103
০২ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:৩৩
নজরুলবিনহক লিখেছেন : এখনো সচেতন বাবারা মেয়ে বিয়ে দেয়ার জন্য শিবিরের ছেলেদেরই খোজ করে। আমার পরিচিত এক মহিলাকে তার বিয়ে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করায় সে বলল তার জন্য যেখান থেকে বিয়ের জন্যই আসুক জিজ্ঞেস করত সে রাজি কিনা; কিন্তু এক শিবির ছেলের জন্য প্রস্তাব আসায় তার অনুমতি নেয়ার আগে অভিভাবক বিয়েতে রাজি হয়ে গেছেন।
০২ জুন ২০১৫ রাত ০৮:২১
265800
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : আলহামদুল্লিলাহ।

ভাইয়া আপনি আমার ব্লগে নতুন। প্রথমে আমার সালাম নিয়েন।
১১
324744
০৫ জুন ২০১৫ রাত ০৩:২৩
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম! সুন্দর সমাপ্তি ভালো লাগলো! আপনাদের সবার জন্য দোআ ও শুভকামনা রইলো!

জাযাকাল্লাহ!
০৫ জুন ২০১৫ রাত ০৩:২৬
266627
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম।আপু আপনার জন্যও দোয়া রাখবেন।
১২
324785
০৫ জুন ২০১৫ সকাল ০৮:৩৪
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : ভালো লাগার মত একটি ঘটনা। ধন্যবাদ।
০৫ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:১৩
266752
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম আপু। আপনাকেও ধন্যবাদ।
০৫ জুন ২০১৫ রাত ০৯:১২
266873
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : ওয়া আলাইকুম আসসালাম।
১৩
342005
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৫
nirvik sottobadi লিখেছেন : হুম, আগে এট সিনেমা মনে হলেও আজ এটাই বাস্তব।
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:০৭
283578
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File