আমার আপন কিছু মুখ...............
লিখেছেন লিখেছেন এ,এস,ওসমান ২৬ মে, ২০১৫, ০৩:৪৪:০১ রাত
যদি আপন মানুষগুলো আমাদের জীবনে না থাকতো তাহলে মনে হয় আমরা জীবনের কোন মূল্যই বোঝতাম না। সবাই সবার কাছে কখনও আপন হয় না কিন্তু কিছু কিছু মানুষ আছে যারা সবার কাছেই আপন হয়।
এস,এ,সির পর যখন বাড়ি ছেড়ে মেসে চলে আসলাম তখন আম্মুর ঐ ভারাক্রান্ত মুখটা এখনও মনে পড়ে।সেদিন আম্মু মুখে কিছু না বললেও আম্মুর কথায় বোঝা যাচ্ছিল,তিনি কত কষ্ট পাচ্ছেন।এর পর যখন ছুটিতে বাড়িতে কিছুদিন কাটিয়ে যখন মেসে আবার ফিরতে চায়তাম তখন আম্মু আমার জন্য সবসময় খাবার বেধে দিত। যদিও আমি কখনই এটা পছন্দ করতাম না বাড়ি হতে খাবার টেনে নিয়ে যেয়ে মেসে খাওয়া,তারপর মেসে আমার ঐ দিন অটোমেটিক মিল চলার কথা। তাই আম্মুকে সবসময় খাবার বেধে দিতে না করতাম।কিন্তু আম্মু কিছুটা জোর করেই দিয়ে দিত। পরে মেসে এসে দেখতাম মেসের ম্যানেজার আমার জন্য মিল চালায় নি।
ছোট বেলা হতেই আমার হাতে চর্মরোগের সমস্যা। এজন্য আব্বু অনেক ডাক্তার আমাকে দেখিয়েছেন। কিন্তু ফলাফল শূন্য।আবার কিছু কিছু ডাক্তার বলেই দিয়েছে এ রোগ কখনও সারবে না।আজ এই ২১-২২ বছর এ রোগটাকে সাথে রাখতে রাখতে এ রোগটাই আমার বন্ধু হয়ে গেছে।যে কারণে এ রোগ বিষয়ে আর ডাক্তার দেখাতে আমারও ভাল লাগে না।কিন্তু আব্বু এখনও অস্থির। আব্বুকে যতই বলি,ডাক্তার বলেছে এ রোগ সারানো সম্ভব না আব্বু তখনই বলে কোন ডাক্তার বলেছে? রোগ দিয়েছেন আল্লাহ আর রোগ সারানোর ঔষধ দেন নি!!! আল্লাহ সব রোগের ঔষধ দিয়েছেন।ঐ ডাক্তার কি জানে।
ছোট বেলা হতেই ভাইয়া লেখা পড়াই কাচা ছিল। মাঝে এস,এ,সি তে ফেল করে আব্বু আম্মু ওর প্রতি অনেকটাই হতাশ হয়। আর আমার ক্লাসের রেজাল্ট দেখে ওকে পড়াশুনা করতে বলতো। যেদিন আমার এস,এ,সির রেজাল্ট দিল সেদিন আমার এ+ এর খবর শুনে সবচেয়ে বেশি খুশী হয়েছিল আমার ভাই।ও সব আত্মীয়-স্বজনকে ফোন করে বলছিল আমি এ+ পেয়েছি।আবার রাতের বেলা আমি যখন জানতে পারলাম আমি গোল্ডেন পাই নি তখন আমি অনেক কষ্ট পাই। তখন ওই আমাকে বলে, তুই মন খারাপ করসিস কেন? কত ভাল ভাল স্টুডেন প্লাসই পায় নি আর তুই তো প্লাস পেয়েসিস।
বড় দুবোনের কথা আর কি বলবো। অনেক আবেগী ওরা।যেদিন আমি ডাব কাটতে গিয়ে আমি আমার বাম হাতের বুড়ো আজ্ঞুলের একটা অংশ কেটে ফেলেছিলাম তখন ঐ কাটা অংশ দেখেই ছোট আপু হুর হুর করে কেঁদে দিয়েছিল।এর পর সারারাত আম্মু আর ছোট আপুই মাথায় পানি ঢেলে আমার ঘুমানোর ব্যবস্থা করেছিল।পরে জেনেছিল ঐ রাতে আম্মু বা ছোট আপু কেউই ঘুমিয়ে ছিল না।
আর বড় আপুর বিয়ে হয়ে ছিল মাত্র কিছু দিন আগে। যখন ও জানতে পারে আমার কথা তখন ও ছোট আপুর মত করেই নাকি কেঁদে দিয়েছিল।
আসলে ফ্যামিলির মানুষের মত আপন কোন মানুষ হয় না। আমরা অনেক সময় ফ্যামিলির মানুষের উপর রাগ করি বা ভুল বুঝি। কিন্তু যদি আমরা তাদেরকে নিয়ে আমাদের কষ্টের সময়ে তাঁদের অবদানের কথা যদি চিন্তা করি তাহলে সমস্ত রাগ নিমেষেই শেষ হয়ে যায়।
বিষয়: বিবিধ
১২৩০ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনাকে।
বিয়ে করেন , মজা চাখবেন প্রতিদিন । ভাই বোন তো কিছুই না , বাবা মাকে নিজে হাতে ধরে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে বাধ্য হবেন ।
তবে আমি ভয় পাই নি। আসলে ভবিষ্যতের যে কোন সমস্যার সমাধানের জন্য আগে হতেই প্রস্তুত থাকা ভাল।
আর নেকদার স্ত্রীই এ সমস্যার সবচেয়ে ভাল সমাধান।
শেষ পর্যন্ত আমি এ চিন্তা করেছি যে, আমার বিয়েতে দুটি শর্ত ওয়ালা মেয়েকে বিয়ে করবো
১। নেকদার মেয়ে হতে হবে।
২।ভারতের চ্যানেলের বিরোধী হতে হবে।
যদিও আমার বিয়ে এখনও অনেক দেরি।
কেবলে তো ভার্সিটিতে
যে কোন আপদ-বিপদে এরাই সবার আগে আসবে ।
অনেক ভাল লেগেছে ভাইয়া ধন্যবাদ ।
আপনি মনে হয় আমার ব্লগে আজই প্রথম। আপনাকে আমার ব্লগে স্বাগতম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন