/ধর্মদ্রোহী / নাস্তিকদের ঈমান বিধ্বংসী মিথ্যা প্রচার
লিখেছেন লিখেছেন এ,এস,ওসমান ০৪ মে, ২০১৩, ০১:০৯:০৯ রাত
একদিন আমি একটা পেইজের স্ট্যাটাসের একটি কমেন্টে দেখ ই Tanvir Islam Sunny নামে এক ব্যাক্তি ইসলাম সম্নন্ধে মিথ্যাচার করছে.তার কমেন্ট লেখা ছিল,
"আমাদের মহানবী (সাঃ) কাবা শরিফের ৩৬০ টি মূর্তি অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।দেয়ালের সব ফ্রেসকো নষ্ট করার কথাওতিনি বললেন। হঠাৎ তাঁর দৃষ্টি পড়ল কাবারমাঝখানের একটা স্তম্ভে।যেখানে বাইজেন্টাইন যুগের মাদার মেরিরএকটি অপূর্ব ছবি আঁকা। নবীজী (সাঃ)সেখানে হাত রাখলেন এবং বললেন, এইছবিটা তোমরা নষ্ট করো না।তিনি কাজটি করলেন সৌন্দর্যের প্রতি তাঁরঅসীম মমতা থেকে। মহানবী (সাঃ)ইন্তেকালের পরেও ৬৮৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্তধর্মপ্রাণ খলিফাদের যুগে কাবা শরিফের মতপবিত্র স্থানে এই ছবি ছিল।এতে কাবা শরিফের পবিত্রতা ওশালীনতা ক্ষুণ্ণ হয় নি।সুত্রঃ মহানবী (সাঃ) এর ১ম জীবনীকারইবনে ইসহাকের (আরব ইতিহাসবিদ,জন্মঃ ৭০৪ খ্রিস্টাব্দ, মদিনা।ম্রিত্যুঃ ৭৬৭খ্রিস্টাব্দ, বাগদাদ) লেখা "দি লাইফ অবমুহাম্মদ" গ্রন্থ থেকে ঘটনাটি বললাম।অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসথেকে বইটি অনুবাদ করেছেন আলফেডগিয়োম (প্রকাশকাল ২০০৬,পৃষ্ঠা সংখ্যা ৫৫২)----বসন্ত বিলাপ (হুমায়ুন আহমেদ)মন্তব্যঃ আজকে আমার দেশের কিছুঅতি ধার্মিক মানুষ সকল ভাস্কর্যভেংগে ফেলতে চায়। অথচ তারা এইসম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টি ভঙ্গি কেমন তা-ইজানে না। আমাদের দেশেরইসলামি চিন্তাবিদরা কি করে?তারা কি এইসব ব্রেইন ওয়াসডমানুষগুলোকে বুঝাতে পারে না?"----------------------------------------------------
প্রথমে আমি এই কমেন্ট দেখ এ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়.এই বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি ইসলামিক পেইজের সাহায্য নিই .ওই পেইজের এডমিন এর উত্তর দেন এই ভাবে,
আমার ধারণা ঘটনাটা ডাহা মিথ্যে, অথবা বিকৃত অনুবাদ, এরকমটা হতেই পারেনা। আর আমরা কোরআন বা সহিহ হাদিসের প্রমান ব্যতিত কোন কথাকে অকাট্য দলিল হিসেবে গ্রহন করতে পারি না, এরকম ঘটনা যদি সত্যিই ঘটে থাকে তবে কেয়ামত পর্যন্ত সময় দিলাম একটা সহিহ হাদিস দেখান।রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিবলেছেন, “নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকেআল্লাহ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০)(ছবি মূর্তি বিশিষ্ট ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না) যা প্রাণীর ছবি যার মাথা কাটা হয়নি যা লাঞ্ছনার জন্য তৈরি করা হয়নি। প্রাণীর ছবি নিষেধের কারণ হলো- এটা নাফরমানীও অশ্লীলতা বিস্তারক। আর এতে আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য দাবি করা হয়। (ইরশাদুসসারি লিশরহি ছহীহিল বুখারী অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: প্রাণীর ছবি-মূর্তির হুকুম ৮ম খ- ৪৮০ পৃষ্ঠা প্রকাশনা: দারুল ফিকর)(৫৫৪)(তিনি বলেন, আল্লাহ পাক উনার নিকট ওই সমস্ত লোকদের কঠিন শাস্তি হবে) অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার হুকুমে (যারা প্রাণীর ছবি তোলে আঁকে) যারা প্রাণবিশিষ্ট প্রাণীর ছবি বা মূর্তি তৈরি করে। (অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি-মূর্তি তৈরিকারীদের উপর শাস্তি প্রসঙ্গে ৮ম খ- ৪৮১ পৃষ্ঠা)(যারা এই ছবি-মূর্তি তৈরি করে) প্রাণীর ছবি বা মূর্তি। যার উদ্দেশ্যই হলো আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্যতা দাবি করা (তাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে আর বলা হবে এতে প্রাণ দাও) অর্থাৎ শাস্তি দেয়া হবে এবং বলা হবে এতে প্রাণ দাও তোমরা যা তৈরি করেছ) অর্থাৎ উক্ত ছবি বা মূর্তির মধ্যে প্রাণ দিতে তাকিদ করা হবে কিন্তু তারা প্রাণ দিতে পারবে না। অতএব তাদেরকে অনবরত শাস্তি দেয়াই হবে। (অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি-মূর্তি তৈরিকারীদের উপর শাস্তি প্রসঙ্গে ৮ম খ- ৪৮১ পৃষ্ঠা)(উনাকে তিনি বললেন) হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম (নিশ্চয়ই আমরা) ফেরেশতাগণ (ওই সমস্ত ঘরে প্রবেশ করি না যে ঘরে প্রাণীর ছবি ও কুকুর থাকে) হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এটাই ফতওয়াগ্রাহ্য ফায়সালা যে,প্রাণীর ছবি-মূর্তির নিষেধাজ্ঞা আমভাবে সকলপ্রাণীর ছবি বা মূর্তির ব্যাপারে। উলামাগণ আমভাবে হাদীছ শরীফসমূহ থেকে এভাবে নিষেধাজ্ঞা তথা হারামের কথা বলেছেন। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: ওই সমস্ত ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না যেখানে প্রাণীর ছবি-মূর্তি থাকে ৮ম খ- ৪৮৪ পৃষ্ঠা)সবগুলো সহিহ হাদিসের রেফারেন্স দিলাম, এবার আপনিই বলুন ক্বাবার মত পবিত্র জায়গায় কি করেছবি বা মূর্তি থাকতে পারে? এসব মিথ্যা রেফারেন্স আর চক্রান্ত থেকে সতর্ক থাকুন।
বিষয়: বিবিধ
১৮৮০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন