চট্টগ্রামস্থ সন্দ্বীপ থানার প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব।
লিখেছেন লিখেছেন আইল্যান্ড স্কাই ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০১:৫৪:৫৩ দুপুর
আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের ভাষায় ‘‘চন্দ্রশেখর পর্বত হইতে দক্ষিণে দৃষ্টি ফেরাইলে অনন্ত দিকচক্রবাল সন্দ্বীপকে ব্যাবিলনের শূন্যোদ্দ্যানের মত প্রতীয়মান হইবে’’। হাজার বছরের সভ্যতার লীলাভূমি সন্দ্বীপে বহু ক্ষণজন্মা পুরুষ জন্মগ্রহন করেছেন। এ সন্দ্বীপ জন্ম দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার কমিউনিষ্ট পার্টির জনক কমরেড মুজফফর আহমদের মতো রাজনীতিবিদ, ভাষাসৈনিক রাজকুমার চক্রবর্তীর মতো দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান ও মাওলানা অজিউল্লাহর মতো মেধাবী আলেম, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামী আবু তোরাব চৌধুরীর মতো বীরযোদ্ধা, চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহের সাহসী সৈনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের কৃতি ছাত্র বিপ্লবী লালমোহন সেন, আলীয়া নেছাবের মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা খানবাহাদুর মাওলানা জিয়াউল হক, মৌলভী বসির উদ্দীন এর মতো গর্বিত সন্তান। বাংলা ভাষা চর্চায় ও সন্দ্বীপের রয়েছে অসামান্য ভূমিকা। বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ রচয়িতাদের মাঝে স্থান করে নিয়েছিলো আমাদের মীননাথ, সপ্তদশ শতাব্দীতে মাতৃভাষা বাংলা নিয়ে সাহসী উচ্চারণ করেছিলেন আমাদেরই একজন কবি আবদুল হাকিম। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ফ্রন্ট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম প্রধান সংগঠক বেলাল মোহাম্মদ, বেতারের প্রথম কণ্ঠস্বর আবুল কাশেম সন্দ্বীপ এবং ঐ বেতার কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ১১ জনের মধ্যে ৩ জনই সন্দ্বীপের গর্বিত সন্তান। দেশবরেণ্য শিশুসাহিত্যিক আফলাতুন এবং বর্ষীয়ান চিত্রশিল্পী অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় এ সন্দ্বীপের অহংকার। বর্তমানে প্রজাতন্ত্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যেও রয়েছে উলেস্নখযোগ্য সংখ্যক যোগ্যতাসম্পন্ন, মেধাবী ও দায়িত্বশীল সন্দ্বীপ- সন্তান।
আরো কিছু বিখ্যাত ব্যক্তিদের নাম নিচে দেয়া হলোঃ
জনাব মাষ্টার আবুল খায়ের,জনাব মাষ্টার ফসিউল আলম,জনাব আলহাজ্ব ঈমান উল্যাহ মাষ্টার,মৌলভী মোফাজ্জেল হোসেন,জনাব অাছাদল হক পেস্কার,জনাব ইয়াকুব পেসকার,জনাব খান বাহাদুর,জনাব ওয়াহীদ উল্যাহ প্রেসিডেন্ট,জনাব আবু সুফিয়ান,জনাব কাইউম,জনাব সাহাব মিয়া চেয়ারম্যান,জনাব ওবাইদুর রহমান,জনাব আনোয়ার , জনাব কাজী আব্দুল আউয়াল, জনাব মাষ্টার ফজলুল ওহাব, জনাব মোক্তাদির বিল্লাহ, জনাব ক্যাপ্টেন সেকান্দার হোসেন, জনাব এ,এ, এম ইউসুফ, জনাব অধ্যহ্ম মনির আহাম্মদ।জনাব মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির সহ আরো ব্যাক্তিবর্গ আছেন যারা বিভিন্ন কাজে সন্দ্বীপের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের নির্মাতা তাঁদের আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। বর্তমান প্রজন্ম তাঁদের অবদানের ব্যাপারে খুব সামান্যই জানে। আমরা পর্যায়ক্রমে তাঁদের সবার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি এবং সম্ভবক্ষেত্রে ছবিসহ উপস্থাপনের আশা রাখি। কারণ অতীতকে বাদ দিয়ে বর্তমান হয়না। অতীতের সাথে গভীর যোগসূত্র স্থাপন করতে পারলেই ভবিষ্যতে আলোকিত সন্দ্বীপ নির্মাণ সম্ভব হবে। পাঠকগণ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন, আমাদের উদ্যোগকে আরো সমৃদ্ধ করবেন এ প্রত্যাশা করছি।
বিষয়: বিবিধ
২১৮৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মৌলবী আবুল খায়ের খান সন্দ্বীপের মগধরা গ্রামে বাংলা ১৩১০ সনের আষাঢ় মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মুন্সী আবদুল করিম খান। আবুল খায়ের খান প্রথমে সাতঘরিয়া প্রাইমারী বোর্ড স্কুলে এরপর মুছাপুর এম.ই স্কুলে পড়াশুনা করেন এবং নোয়াখালী জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে এম.ই বৃত্তি লাভ করেন। ১৯২৫ সালে তিনি কার্গিল হাই স্কুল হতে দুই বিষয় ব্যতীত সকল বিষয়েই ডিস্টিংশন সহ শতকরা ৮৮ b¤^i পেয়ে এন্ট্রান্স পাশ করেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজ হতে ১৯২৭ সালে আই.এ, ১৯২৯ সালে বি.এ এবং ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ হতে ১৯৩৮ সালে বি.টি পাস করেন।
খান আবুল খায়ের কলকাতায় Administrator General abd Official Trustee of Bengal অফিসে প্রথমে চাকুরী নেন। তিনি সহকারী শিক্ষক হিসেবে ১৯৩৩ সালে সন্দ্বীপ হাই স্কুলে, ১৯৩৮ কাটগড় গোলাম নবী হাই স্কুলে, ১৯৪১ সালে রাঙ্গুনিয়া হাই স্কুলে, ১৯৩৮-৪১ এর মধ্যে দ্বিতীয়বার সন্দ্বীপ হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে সন্দ্বীপ হাই স্কুলের এবং ১৯৪৭ সালে সাউথ সন্দ্বীপ হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা হেডমাস্টার নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৭০ সালে সাউথ সন্দ্বীপ হাই স্কুল হতে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি হজ্বব্রত পালন করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি মগধরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। কৃতি শিক্ষাবিদ আবুল খায়ের খান সন্দ্বীপ ও সংলগ্ন অঞ্চল সমূহে ‘হেডমাস্টার সাহেব’ নামে খ্যাত ছিলেন। সন্দ্বীপের অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তির জীবন গঠনেও আবুল খায়ের খানের ভূমিকা ছিল অনন্য। ইংরেজী ১৯৩৩ হতে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত এই মহান শিক্ষাবিদ দৃঢ় নৈতিকতা, কঠোর নিয়ামানুবর্তিতা ও তেজোদ্দীপ্ততার সাথে শিক্ষার আলো বিকীরণ করে অগণিত সুযোগ্য ছাত্র-ছাত্রী তৈরী করে গেছেন।
ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন