সিয়াম সাধন
লিখেছেন লিখেছেন আইল্যান্ড স্কাই ৩১ জুলাই, ২০১৩, ০৩:৩১:১৬ দুপুর
রমজান মাসে রোজা পালন করে একজন মুমিন ইমানি চেতনায় পূর্ণতা লাভ করতে পারেন। রোজা পালন আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে বিশেষ এক নেয়ামত। যে কোনো বিষয়ই পালনের জন্য কিছু নিয়মনীতি থাকে। নিয়মনীতি মেনে কাজ করলে সহজে এবং সঠিকভাবে কাজ সমাধা করা যায়, তেমনি রোজা পালন করারও নিয়মনীতি রয়েছে। আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে মূলনীতি ঘোষণা করেছেন, আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। (সুরা আল বাকারা, আয়াত-১৮৭)।
রাসুল মুহাম্মদ (সা.) আমল এবং নির্দেশ দ্বারা রোজা পালনের নিয়মনীতি শিক্ষা দিয়েছেন। রোজাদারদের তিনি নির্দেশ দান করেছেন, 'যখন তোমাদের কারো রোজার দিন আসে সে যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং অনর্থক শোরগোল না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করতে চায় সে যেন বলে আমি এজন রোজাদার ব্যক্তি।' অতএব কার ওপর রোজা ফরজ, অসুস্থ হলে কীভাবে রোজা পালন করবে, কীভাবে রোজার নিয়ত করবে, রোজার দিনে কি কি কাজ নিষেধ ইত্যাদি বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল_
রোজার শর্তাবলি : রোজার শর্তাবলি ৩ ভাগে বিভক্ত-
১. রোজা শুদ্ধ হওয়ার শর্ত, ২. রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত, ৩. রোজা রাখা ওয়াজিব হওয়ার শর্ত।
রোজা শুদ্ধ হওয়ার শর্ত : রোজা শুদ্ধ হওয়ার জন্য রোজা রাখার উপযুক্ত ব্যক্তিকে রোজার নিয়ত করতে হয়। কারণ নিয়ত দ্বারা বুঝা যায় যে, অভ্যাসবশত উপবাস না করে ইবাদতের উদ্দেশ্যে রোজা রাখছে।
রোজা ফরজ হওয়ার শর্তাবলি :
১. মুসলিম হওয়া : মুসলমানদের ওপর রোজা ফরজ। অমুসলিম বা কাফিরদের ওপর রোজা ফরজ নয়।
২. বালেগ হওয়া : প্রাপ্ত বয়স্কদের ওপর রোজা ফরজ। নাবালেগ ছেলে মেয়েদের ওপর রোজা ফরজ নয়। তবে রোজার অভ্যাস সৃষ্টির লক্ষ্যে তাদের রোজা রাখতে উৎসাহ দেওয়া উচিত।
৩. রোজা ফরজ হওয়ার জ্ঞান থাকা : রমজানের রোজা প্রত্যেক বয়স্ক সক্ষম ব্যক্তির ওপর ফরজ হওয়ার কথা জানা থাকা। কারণ জ্ঞানীদের ওপর রোজা ফরজ, সুতরাং রমজান মাসব্যাপী পাগলের ওপর রোজা ফরজ নয়।
রোজা রাখা ওয়াজিব হওয়ার শর্ত দুটি
১. শারীরিক সুস্থতা, ২. মুকিম হওয়া।
অতএব পীড়িত ও মুসাফিরের ওপর সেই অবস্থায় রোজা রাখা ওয়াজিব নয়। কারণ আল্লাহতায়ালা বলেছেন, যদি তোমাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হয় অথবা ভ্রমণরত হয় তা হলে সে অন্য সময় রোজা রাখতে পারে। সুতরাং ওই অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়ার পর তাদের রোজা কাজা রাখতে হবে।
রোজা রাখার উপযুক্ত ব্যক্তি : সজ্ঞান, মুসলমান পুরুষ ও যে স্ত্রী লোক হায়েজ ও নেফাস থেকে পবিত্র। কাজেই হায়েজ ও নেফাস বন্ধ হওয়ার পর পবিত্রতার গোসলের পূর্বেও তার রোজা শুদ্ধ হবে। সাবালকত্ব রোজা শুদ্ধ হওয়ার শর্ত নয়। অতএব সজ্ঞান মুসলমান নাবালক-নাবালিকার রোজাও শুদ্ধ হবে।
যেসব রোজার জন্য নিয়ত করতে হবে
১. রমজানের কাজা রোজা, ২ সাধারণ মান্নতের রোজা, ৩. যে কোনো কাফফারার রোজা, ৪. যেহারের রোজা, ৫. মুসাফির ও রুগ্ণ ব্যক্তি যদি রমজানের রোজা রাখে তার জন্যও নিয়ত নির্দিষ্ট করা জরুরি।
রমজানের রোজার নিয়ত জরুরি
রমজানের রোজার নিয়ত করা জরুরি, নিয়ত ছাড়া রোজা আদায় হবে না। অবশ্য মুকিম ব্যক্তি রমজানের দিনে রোজা রেখে অন্য রোজার নিয়ত করলেও তা হবে না, বরং রমজানের রোজাই আদায় হবে আর সেহেরি খাওয়াটাই নিয়তের শামিল। কারণ রোজা রাখার জন্যই সেহেরি খাওয়া হয়, তবুও মনে মনে অথবা মুখে উচ্চারণ করে রোজার নিয়ত করা জরুরি।
আল্লাহতায়ালা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বান্দার ওপর জটিলতা কামনা করেন না; মূলত তিনি বান্দার আনুগত্যকে পছন্দ করেন। বান্দা সর্বাবস্থায় রবের আনুগত্য করবে, এতেই রব সন্তুষ্ট।
বিষয়: বিবিধ
১৮৪৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন