জান্নাতের হুর

লিখেছেন লিখেছেন আইল্যান্ড স্কাই ৩০ জুলাই, ২০১৩, ০৭:৫০:১৬ সন্ধ্যা



অনেকে ধারনা করে আল কুরআনে বিশ্বাসীদের জন্য জান্নাতে যে হুর বা সঙ্গীর কথা বলা হয়েছে তা শুধু পুরুষদের জন্য। আসলে এটা একটি ভুল ধারনা।

আরবী ভাষায় নারী ও পুরুষদের সবগুলো পারসন ভিন্ন শব্দ দিয়ে বুঝানো হয়। বাংলা ভাষায় পারসনগুলোতে নারী ও পুরুষের ভিন্নতা নেই। ইংরেজী ভাষায় কোন কোন ক্ষেত্র্রে আছে।

আল কুরআনে আল্লাহ যখন সম্বোধনের ক্ষেত্র্রে পুরুষবাচক শব্দ ব্যবহার করেছেন তখন এ শব্দ দিয়ে নারী ও পুরুষ উভয়কে বুঝানো হয়, সম্বোধন করা হয়। আল্লাহ যখন পুরুষ বাচক শব্দ ব্যবহার করে বলেন, তোমাদের উভর সিয়াম ফরজ, তখন আমরা কেহ বলি না যে, সিয়াম পুরুষদের জন্য ফরজ, মেয়েদের জন্য নয়। এ রকম শত শত দৃষ্টান্ত আছে আল কুরআন ও হাদীসে।

তাই আল্লাহ যখন পুরুষ বাচক শব্দ ব্যবহার করে বলেছেন, জান্নাতীদের জন্য হুর আছে, তখন জান্নাতী নারী ও পুরুষ সকলকে বুঝাবে।

আল কুরাআনে অসংখ স্থানে বলা হয়েছে অলাহুম ফীহা আযওয়াজুম মুতাহহরাহ, মানে তাদের জন্য জান্নাতে রয়েছে পবিত্র সঙ্গী। (উদাহরণ হিসাবে সূরা বাকারার ২৫ নং আয়াতের শেষটা দেখতে পারেন) কিন্তু আমি আশ্চর্য হই, অধিকাংশ অনুবাদকগণ এর অর্থ করেছেন, স্ত্রী। একেবারে ভুল অনুবাদ। অবশ্য তারা মানুষ। এমনকি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তর্জমাতেও এ শব্দের অর্থ করা হয়েছে সঙ্গীনি। তারাও ভুল করেছে। পরে তারা টীকা লিখে ভুল সংশোধনের চেষ্টা করেছে। তবে বাদশা ফাহদ কুরান কম্পেলেক্সের অনুদিত ভার্সনগুলোতে আমি এ ভুলটা দেখিন। তাদের ধন্যবাদ।

জাওয আরবী শব্দ। বহু বচনে আযওয়াজ। তার অর্থ হল, জোড়া। সঙ্গী-সঙ্গিনী। কিন্তু এ শব্দটির এক চেটিয়া স্ত্রী অর্থ করা হল পুরষতান্ত্রিক মানসিকতার প্রকাশ। এটা কখনো সঠিক নয়। আমার মনে হয় এ ভুল অনুবাদ এ বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য অনেকাংশে দায়ী। জাওয শব্দটি নারী পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। এ শব্দটি দিয় স্বামী স্ত্রী উভয়কে বুঝায়।

স্বামী স্ত্রী উভয়ে যদি ঈমানী আদর্শে আদর্শবান হয় ও একে অপরকে অকৃত্রিমভাবে ভালবাসে তাহলে তারা জান্নাতে একত্রে বসবাস করবে।

দুনিয়ার স্বামী স্ত্রীরা জান্নাতে একত্রে থাকবে এ সম্পর্কে আল কুরআনের বহু স্থানে আল্লাহ তাআলা স্পষ্ট বলেছেন। বিস্তারিত জানতে

http://www.islamhouse.com/p/262011

তা ছাড়া নবী কারীম সা. বলেছেন, যে যাকে ভালবাসে সে তার সাথেই থাকবে।

হুরদের কিছু গুণাবলি আল কুরআন ও হাদীসে বর্ণনা করা হয়েছে। এ গুণাবিলর দুএকটি দেখে অনেকে মনে করেছেন তারা স্ত্রী জাতীয় হবে। আসলে এটা ধারনা করে নেয়া ঠিক নয়। এখানে আরবী ভাষা অলংকারের তাগলীবের নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে। একটি পারসন উল্যেখ করে উভয়টাকে বুঝানো হয়েছে। আমরা কে না জানি, আল্লাহ পুরুষদের চেয়ে নারীদের অনেক বেশী সুন্দর ও আকর্ষনীয় করে সৃষ্টি করেছেন। তাই সুন্দরের বর্ণনায় তাদের প্রসঙ্গটা বার বার আসা অপ্রাসাঙ্গিক নয়।

মনে হয় যা বুঝেছি তা বুঝাতে পারলাম না।

বিষয়: বিবিধ

৩৪৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File