রেশমা তুমি কার ? শেখ হাসিনার নাকি বলির পাঠা হেফাজত রক্তের ।
লিখেছেন লিখেছেন আইল্যান্ড স্কাই ২৩ জুন, ২০১৩, ০৬:০০:২৬ সন্ধ্যা
সাভারে রানা প্লাজা ধসের ১৭ দিনের মাথায় গার্মেন্ট কর্মী রেশমাকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। এ নিয়ে সারা বিশ্বে হৈ চৈ পড়ে যায়। কিন্তু শুরু থেকেই মিডিয়ার কারো কারো সন্দেহ হতে থাকে রেশমার পরনের কাপড়, আঙ্গুলের ছোট নখ, স্বাভাবিক দৃষ্টি ও তাকে বেশ ফ্রেশ থাকায়। এরপর রেশমাকে সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার পর বিলাসবহুল হোটেল ওয়েস্টিনে চাকরি দেয়া হয়। সেই রেশমা এখন তার গ্রামের বাড়ি গেলেও তার চারপাশে সর্ব্বোচ্চ সতর্কতা রয়েছে যেন কোনো সাংবাদিক তার সঙ্গে কথা বলতে না পারে।
ইতিমধ্যে আমার দেশ অনলাইন সংস্করণে রেশমাকে নিয়ে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে রানা প্লাজা ভবনটি ধসের প্রথম দিনই সে বের হয়ে আসতে পারে। এনামুল নামের এক লাইনম্যানের সঙ্গে সে বের হয়ে আসে। চিকিৎসা নেয়ার পর সে চলে যায় সাভার ক্যান্টনমেন্ট। এরপর সাজানো হয় ১৭ দিন পর রেশমাকে ফের উদ্ধার নাটক। আমার দেশ অনলাইন সংস্করণের প্রতিবেদনটিতে এনামুলসহ রানা প্লাজার বেশ কয়েকজন গার্ড ও কর্মচারীর সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে।
মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেছেন, আমরা সবকিছু করতে পারি না। সত্য ও বাস্তব কথা বলতে পারি না। তিনি বলেন, ‘আজকে বলা হচ্ছে রেশমাকে নিয়ে কোনো সংবাদ প্রচার করা যাবে না। তাকে এখন পাজেরো গাড়িতে করে বাসায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তায়। এটা কেন করা হচ্ছে এগুলো আমরা বলতে পারি না।’ শনিবার মানবাধিকার সংগঠন অধিকার আয়োজিত ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা’ শীর্ষক অ্যাডভোকেসি সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, আট বছর ধরে টকশো করি। আমি কোনো কথা বলি না। বোবার মত বসে থাকি। কেউ মিথ্যা তথ্য দিলেও প্রতিবাদ করি না। কারণ, তাহলে আমাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। অথচ তারপরও বিভিন্ন মহল আমাকে টকশো থেকে সরানোর চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, ‘আমি নিজে জেলে যাওয়ার ভয় করি না। তবে সহকর্মীদের জন্য আমাকে কম্প্রোমাইজ করতে হয়। এভাবে কম্প্রোমাইজ করতে করতে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।
মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, মাহমুদুর রহমানকে বলা হয় হঠাৎ সম্পাদক হয়েছেন। কেন তিনি হঠাৎ সম্পাদক হতে পারবেন না ক’জন সম্পাদক আছেন হঠাৎ সম্পাদক নন অনেক সম্পাদক জীবনে এক কলম লিখেননি, কিংবা দলীয় এমপি নির্বাচন করেছেন। তারাও তো সম্পাদক হয়েছেন। এখন এনজিওর মালিকও সম্পাদক হয়েছেন।
সম্পাদকরা মাহমুদুর রহমানের মুক্তির জন্য বিবৃতি দিয়ে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তবে তিনি এও বলেন, আমি মাহমুদুর রহমানের মত সাহসী নই
এখন রেশমা ওয়েস্টিন কর্তৃপক্ষের নজরবন্দী বলা যায়। গত ৬ জুন ওয়েস্টিন আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে রেশমাকে জিজ্ঞেস করা হয় রানা প্লাজা ধসের পর তিনি লাইনম্যান এনামুলের সঙ্গে বের হয়ে আসার পর তিনি এনাম হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন কী না। এ প্রশ্নে চমকে যেয়ে রেশমা চিৎকার করে বলেন, কী বললেন? আবার তাকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি যে গার্মেন্টে কাজ করতেন, ওই গার্মেন্টের লাইনম্যান এনামুলকে তো আপনি চেনেন, তা-ই না? জবাবে ‘হ্যা’ অথবা ‘না’ কোনো কিছুই না বলে প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে রেশমা বলেন, ‘ আমি যেখানে ছিলাম, সেখানে আপনি ছিলেন না। তাই আমার যে কী কষ্ট হয়েছে, আপনি জানেন না। আপনি ভুল কথা বলছেন।’ এরপর ওয়েস্টিন কর্তৃপকক্ষ রেশমাকে কোনো ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে নিষেধ করে।
রেশমাকে পুরো পরিবারসহ আমেরিকায় নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। তাকে উদ্ধারের পর পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে যান এবং রেশমার চিকিৎসায় যাতে কোনো রকম ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয় সে জন্যে সাংবাদিকদের তার সঙ্গে কথা না বলার অনুরোধ করেন। রেশমা উদ্ধার হবার পরপরই প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে চান। তবে সাংবাদিক মুন্নি সাহা তখন প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘ওকে (রেশমা) এত ফ্রেশ লাগছে কেন?
যদি রেশমাকে উদ্ধারের বিষয়টি সাজানো ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে এর দায়ভার কার? সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি বিষয়টির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া সারাবিশ্বে মিডিয়ায় রেশমাকে নিয়ে যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল এখন তা মিথ্যে হলে এধরনের আয়োজনের জন্যে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হবে নি:সন্দেহে। এধরনের এমন অনেক প্রশ্ন তোলপাড় সৃষ্টি করেছে সাধারণ মানুষের মনে।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন