কত আর সহ্য করা যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?
লিখেছেন লিখেছেন আইল্যান্ড স্কাই ১৩ মে, ২০১৩, ০৮:১২:৩৯ রাত
পৃথিবী একবার তাকিয়েছিল একাত্তরে। জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়েছিল তবু মাথা নোয়াবার ছিল না। ২০১৩ সালের ৫ মে'র অন্ধকার রাতে যেন আরেকবার অবাক বিষ্ময়ে চমকে উঠেছিল সারা বিশ্ব। এ কোন অন্ধকার যুগ এসে ভর করেছে স্বচ্ছলতায় প্রগতিশীল হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের মাটিতে? পৃথিবীর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশগুলোর অন্যতম এই বাংলাদেশ। ধর্মীয় কিছু ইস্যূ নিয়ে দাবী তুলেছিল যুগ যুগ ধরে রাজনীতি থেকে দূরে থাকা বিশাল সংখ্যক আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসার ছাত্ররা। এদেশে এটি নতুন ছিল না।
বিশ্ববাসী দেখেছে তাসলিমা নাসরিনকে কিভাবে এদেশের মুসলমানগণ দেশছাড়া করেছিল স্বীয় লেখালেখিতে মাত্র কিছু উক্তির উল্লেখের কারণে। সে অনুপাতে লক্ষগুণ ভয়াবহ কার্যক্রম দেখিয়েছে শাহবাগের নাস্তিকের দল। প্রকাশ্য রাজপথে অশ্লীলতার, চরিত্রহীনতার চরম নিকৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে।
কবেই তাদেরকে অন্ততঃ দেশ ছাড়া করে ফেলতো এদেশের তৌহিদী জনতা। কিন্তু কিভাবে? প্রতিটি নাস্তিকের জন্য বরাদ্দ ছিল মুসলমানদের টেক্স-এ খেয়ে পরে বেঁচে থাকা নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের জন্য ছিল খাবারের রাজকীয় ব্যবস্থা। থাকার জন্য বহুষ্টার বিশিষ্ট হোটেল। পানের জন্য ছিল দেশী বিদেশী 'গুরুজল'। কোন সাহবে মুসলমানগণ তাদেরকে ধাওয়া করবে যেখানে তাদের অগ্র-পশ্চাতে ঠেঁশে আছে 'লোডেড বন্দুক'!
কত আর সহ্য করা যায়? একদিন ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেল আলেম সমাজের। তারা বেরিয়ে পড়লো রাস্তায়। সারাদেশ তাদেরকে শুধু সমর্থনই নয়; সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এলো। তারা দাবীর কথা জানিয়ে ফিরে গেল।
দাবী আদায়ের আন্দোলন পৃথিবীর প্রতিটি সভ্য দেশে স্বীকৃত। আলেম ওলামারা তাদের অনুসারীদেরকে তাসবীহ ও জায়নামাজ নিয়ে আসার জন্য বললেন। হাঁ, কিছু হুমকিও ছিল জবাবী হুমকীস্বরূপ। তারপরও সরকারপন্থী নেতাকর্মীদের পিস্তল, রিভলবার, বন্দুক, রামদা এবং সরকারী বাহিনীর অত্যাধুনিক অস্ত্রসস্ত্রের তুলনায় তারা খালী হাতেই জড়ো হয়েছিল। তারা অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেয় ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ না তাদের হুজুরের পক্ষ হতে পরবর্তী নির্দেশ না আসে। এই তো, এই ছিল তাদের অপরাধ।
তারপর! রাতের শেষ প্রহর! নিদ্রা যখন অতল গভীরতা নিয়ে জড়ো হয়! সারাদিনের মিছিলে, শ্লোগানে ক্লান্ত-শ্রান্ত আলেম-ওলামা-শিক্ষার্থীরা যখন নিদ্রায় নিমগ্ন। কেউবা যিকিরে, কেউবা ইসলামী সংগীতে নিজেদের উপস্থিতির জানান দিয়ে যাচ্ছিল। তখন! সহসা নিভে গেল শাপলা চত্ত্বরসহ আশপাশের বাতিগুলো! অন্ধকার ঝেঁকে বসলো গোটা এলাকাকে! সাথে সাথে ঝেঁকে বসলো খুনীরা! মিডিয়াকে সরিয়ে দেয়া হলো! কাউকে রাখা হলেও তারা ছিল খুনীদলেরই সদস্য। যারা খুনীদের দলে নিজেদেরকে মানাতে পারেনি, তাদের কন্ট্রোল রুমে গিয়ে সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হলো। তারপর কেবলি ঠা ঠা ঠা.....!
মালাকুল মাউত দারুন ব্যস্ত ছিলেন সেই ভয়াল দশটি মিনিট! অনাগত কোন দিন হয়ত বিশ্ববাসী কোন হরর মুভ্যিতে দেখতে পাবে এ কালো রাতের নৃশংসতা! 'শিকার কর এবং গাড়ীতে তোল'! ভোরের আলো ফোটার আগেই আত্মার মত হারিয়ে গেল দেহগুলোও! কেউ কেউ বলে- 'ওরা ছিল আড়াই থেকে তিন হাজারের মত'!
ওদেরকে নিয়ে আমি খুব একটা চিন্তিত নই, কারণ ওরা পৌঁছে গেছে ওদের সাধনার মঞ্জিলে। চিন্তিত এই যারা বেঁচে আছি, তাদের যন্ত্রণার উপশম নিয়ে। নিউটন ভুল বলে যাননি মোটেই, গাণিতিক সূত্রও পৃথিবীর ইতিহাসে কখনো ভুল পথে চলে না। প্রতিটি ক্রিয়ারই প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কেমন হবে তা? যদি বাদ দেই সে কথাও, তবুও এ কলংক রাখার মত কোন জায়গা খুঁজে পাচ্ছি না চৌষট্টি হাজার বর্গমাইলের কোথাও- "লেডি হিটলার"!!!
বিষয়: বিবিধ
১১৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন