রাজপথে অবস্থানের নির্দেশ হেফাজতে ইসলাম।
লিখেছেন লিখেছেন আইল্যান্ড স্কাই ০৬ মে, ২০১৩, ০৯:০৭:৫০ রাত
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সারাদেশে নেতাকর্মীরা যে যেখানে আছে তাদের সেখানেই রাজপথে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
সোমবার রাতে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল ইসলামাবাদী ও যুগ্ম-মহাসচিব মুইনুদ্দিন রূহী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিবৃতিতে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
অবরোধ চলাকালীন রোববার সরকারের পেটোয়া বাহিনী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শাহবাগী নাস্তিকরা সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে পরিকল্পিতভাবে হেফাজতের উপর হামলা চালিয়েছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।
সরকার ইতিহাসের নিকৃষ্টতম গণহত্যা চালিয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে দাবি করা হয়, “বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙ্চুরের সাথে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের কোনও সম্পর্ক নেই। সরকার নজীরবিহীনভাবে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ছাড়াও প্রচুরসংখ্যক বিদেশী সশস্ত্র লোক দিয়ে আচমকা সমাবেশস্থলে ব্রাশ ফায়ার শুরু করে। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা সেই ব্যাপক হত্যাযজ্ঞে কমপক্ষে দুই হাজারের বেশী নেতাকর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন। আহতের সংখ্যা আড়াই হাজারের মতো। অনেক লাশ গুম করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের ময়লা বহনের গাড়িতে করে বিপুলসংখ্যক লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বহু নেতাকর্মীর এখনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। সংগত কারণে আহত ও নিহতের চূড়ান্ত পরিসংখ্যান এই মুহূর্তে জানানো সম্ভব হচ্ছে না।”
বিবৃতিতে আজিজুল ইসলামাবাদী ও যুগ্ম-মহাসচিব মুইনুদ্দিন রূহী বলেন, “হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে ফজরের নামাজের পর থেকেই দুই হাজার র্যাব, পুলিশ, বিজিবি লালবাগ মাদ্রাসায় ঘেরাও করে রাখে। ফলে সোমবার সকাল ১১ টায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জাতিকে দিকনির্দেশনা দেয়াও সম্ভব হয়নি।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সরকারীভাবে অবরোধ কর্মসূচিতে বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ, জ্বালাও-পোড়াও ও ভাঙ্চুরের ঘটনার সাথে হেফজাতে ইসলামের জড়িত থাকার কথা বলা হয়। তবে সত্যি হলো, এসবের সাথে হেফাজতের সামান্যতম সম্পর্কও নেই। এটি অত্যন্ত পরিষ্কার ও বাস্তব বিষয় যে, সারাদেশ থেকে ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা পেট্রোল, করাত ইত্যাদি জ্বালানি বা যন্ত্রাপতি নিয়ে যাননি। তারা প্রত্যেকে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে জায়নামাজ, তাসবীহ, মিসওয়াক নিয়েই গেছেন। তাদের দ্বারা কোনোভাবেই বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ, গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে রাখা সম্ভব নয়। এসব মিথ্যা, উদ্ভট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। প্রকৃতসত্য হলো, হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে নজীরবিহীন এ পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেবার অপচেষ্টা হিসেবেই এসব দুষ্কর্মের দায় হেফাজতের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে।”
বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম অবিলম্বে এই ‘গণহত্যা’র বিচারবিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বলে, “লাখো-কোটি নবীপ্রেমিক জনতার প্রাণের দাবি ১৩ দফা বাস্তবায়িত না হলে শহীদের রক্তে গোটা দেশে ব্যাপক প্রতিরোধের দাবানল জ্বলে উঠবে। আমরা ওআইসি, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই গণহত্যার দায়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “সোমবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় বাংলাদেশের অবিসংবাদিত ধর্মীয়-আধ্যাত্মিক পথনির্দেশক হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে গ্রেপ্তার করে সরকার নিজের পতন ঘণ্টা বাজিয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশের তাওহীদি জনতা ১৩ দফা দাবি আদায়ের পাশাপাশি আল্লামা আহমদ শফীর গ্রেপ্তারের সমুচিব জবাব দেবে।”
বিষয়: বিবিধ
১১১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন