এসো হে ভোরের পাখি ….
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধার মেঘমালা ২০ মে, ২০১৩, ১১:২৭:৩২ রাত
‘‘সবর্দাই হুহু করে মন
বিশ্ব যেন মরুর মতন
চারিদিকে ঝালাপালা
উঃ কি জ্বলন্ত জ্বালা
অগ্নিকুণ্ডে পতঙ্গ পতন’’
লাইনগুলো পড়লে মনটা সত্যিই যেন একটু হুহু করে ওঠে !পৃথিবীর প্রতি একটু অভিমান তৈরি হয় ।কি জানি কেন !কবির মনে অসহ্য আবেগ !এই আবেগাপ্লুত লাইনগুলো লিখেছিলেন কবি বিহারীলাল চক্রবর্তী । বাংলা ভাষার আধুনিক গীতিকবিতা আসে তার হাত ধরেই ।বাংলা কবিতা ডানা মেলে নতুন দিগন্তে ।কবিমনের দারুণ আবেগ ঝরে পরে কবিতার বর্ণমালায় ।ব্যক্তিগত অনুভূতির এমন প্রকাশ কবিতায় এর আগে দেখা যায়নি ।তিনি প্রথম কবিতায় নিজের মনের কথা বলেন ,আবেগ কাতরতায় বিহ্বল হয়ে পরেন ।তিনি স্বপ্নলোকের অধিবাসী ।পরবর্তীতে তাকে অনুসরণ করে এমন সপ্নে বিভোর হয়েছিলেন অনেকে ।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাদের মধ্যে অন্যতম ।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে বলেছিলেন ‘ভোরের পাখি’ ।ভোরের পাখি ভোরের বেলায় একাকী জাগে ,মনের আনন্দে গান গায় । বিহারীলাল চক্রবর্তী ছিলেন তেমনই, আবেগে বিভোর নিরব কবি ।হুমায়ুন আযাদ বলেছেন- ‘তিনি বাংলা ভাষার প্রথম খাঁটি আধুনিক কবি, প্রথম রোমান্টিক কবি’ ।
প্রথাগত ধারার বাইরে কোন কাজ করলে শুরুতে সমাজে তার গ্রহনযোগ্যতা থাকেনা।এটাই সমাজের নিয়ম ।এই বিশুদ্ধ কবিও পরেছিলেন এমনই বিপাকে ।তার রচিত সারদামঙ্গল, প্রেমপ্রবাহিণী, বঙ্গসুন্দরী প্রভৃতি কবিতার বই বাংলা কবিতাকে নতুন ধারায় প্রবাহিত করে ।তার আবেগের ঘনমেঘে আচ্ছন্ন হয় পাঠকও ।এগুলো প্রথাগত ধারার সঙ্গে যায় না ।তিনি হয়ে ওঠেন বাংলা ভাষার প্রথম খাপ-না-খাওয়া কবি ।নিজের অজান্তেই তিনি শুরু করেছিলেন আধুনিক গীতিকবিতার নবযুগ ।
১৮৩৫ সালের ২১শে মে কবির জন্ম কলকাতায় ।
বিষয়: বিবিধ
২৪৪৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন