পর্দা অবরোধ নয় , মুক্তির পথ ।
লিখেছেন লিখেছেন ৭১এর চেতনা,শেষ স্মৃতি হাসিনা । ০২ মে, ২০১৩, ১১:০৮:৫৪ রাত
মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তা'আলা এই সুন্দর পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন । এই পৃথিবীতে তিনি প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন । আর প্রতিপদের জোড়ায় এক অন্তর্নিহিত আকর্ষণ বিদ্যমান রয়েছে -যা ইলেকট্রন ও প্রোটন থেকে শুরু করে নর নারীর মধ্যেও বিরাজমান ।
প্রকৃতিক ভারসাম্যের জন্য প্রতিপদের নিয়মতান্ত্রিক মিলনও অপরিহার্য । কিন্তু মানুষ জাতির বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ অন্যান্য প্রাণী অপেক্ষা বেশী ও অপরিমেয়-যা কিনা অনেক সময় নির্দিষ্ট সীমারেখার বাইরেও চলে যেতে পারে তাদের আত্ননিয়ন্ত্রণের অভাবে । এ আকর্ষণের অপব্যবহার নৈতিকতাকে ধ্বংস করে সামাজিক অবক্ষয় ও বিপর্যয়কর অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে । এজন্য ইসলাম নারী-পুরুষের আবরণ ও চলাচলের একটি গণ্ডি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে । সেই গণ্ডির নাম হচ্ছে হিজাব বা পর্দা ব্যবস্থা ।
''পর্দা'' শব্দের আরবী প্রতিশব্দ হচ্ছে হিজাব ।' এর শাব্দিক অর্থ - প্রতিহত করা ,বাদা দান করা , গোপন করা , আড়াল করা,ঢেকে রাখা ইত্যাদি । ইসলামের পরিভাষায় বালেগ (প্রাপ্তবয়স্কা) মেয়দের আপাদমস্তক সম্পূর্ণ শরীর গাইরে মাহরাম পুরুষ থেকে লুকিয়ে রাখাকে হিজাব বা পর্দা বলে ।
পর্দার দাবী অনুযায়ী , মেয়েদের চেহারা ও কণ্ঠস্বরকেও বেগানা পুরুষদের থেকে হিফাজতে রাখতে হবে এবং চোখের দৃষ্টি-নজরকেও পরপুরুষ থেকে দূরে রাখতে হবে । তেমনিভাবে মনের চিন্তা ও কল্পনাকে বেগানা পুরুষ থেকে মুক্ত ও পবিত্র রাখতে হবে ।
আইয়্যামে জাহেলিয়াতে সারা পৃথিবী যখন নিমজ্জিত ছিল , তখন ধরার বুকে মানবতা বলতে কিছুই ছিল না । রাহাজানি আর খুন খারাবি ছিল তাদের পেশা .নাচ - গান আর মদ-জুয়া ছিল তাদের নেশা ।এমন কোন অন্যছিলনা যা তারা করতো না ।সে কালে নারীরা ছিল নিছক ভোগ-বিলাসের বস্ত । ছিলনা তাদের কোন ইজ্জত-সম্মান ।তারা ছিল সর্বত্র লন্ঞ্ছিতা , বন্ঞ্ছিতা, অপদস্থা ।
সেই সময় আল্লাহ মনবতার মুক্তির দূত হযরত রাসূলুল্লাহ (সঃ)কে সত্যের ঝাণ্ডা দিয়ে প্রেরণ করেন । সেই পরশমণির স্নিগ্ধ পরশে মানুষের সবধরনের অমানবিকতা ও অন্যায় কর্মকাণ্ড বিদূরিত হয়ে যায় ।তখন নারীরা ফিরে পায় তাদের মৌলিক অধিকার ও ইজ্জত-সম্মান । নারীজাতির এ ইজ্জত-সম্মানের মূলে রয়েছে ইসলামের পর্দা বিধান । রাসূলুল্লাহ (স.) নারীদেরকে পর্দার শিক্ষা দিয়েছেন । এই পর্দার মাধ্যমেই নারীরা জগতে সম্মান ও মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ।
ইসলামধর্মের ফরজ বিধানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পর্দা বা হিজাব , যা প্রতিটি মুহুর্তের জন্য ফরজ ।যার অনুসরণ মানুষকে প্রকৃত মানুষের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে ।পর্দা ব্যবস্থা মহান আল্লাহর এমন এক শাশ্বত বিধান - যা পুরুষকে পাশবিক উচ্ছৃঙ্খলতা থেকে হিফাজত করে এবং মনবিক মর্যাদার উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত করে ,আর অপরদিকে পুরুষের লোলুপ দৃষ্টি ও হিংস্র নির্যাতন থেকে বাঁচাতে পারে ।বস্তুত পর্দা নারীজাতির জন্য কোন অবরোধ নয় ,বরং পর্দা হল নারীর মান-সম্মান ও ইজ্জত -আব্রুর প্রতিরক্ষাব্যুহ ।
নারীজাতির ইজ্জত-আব্রু রক্ষা ও অধঃপতন রোধে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ শান্তিময় পথের নির্দেশনা দিয়ে ইরশাদ করেন-``তোমরা(নারীরা) তোমাদের ঘরের মধ্যে অবস্থান করবে এবং মুর্খতার অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না ।(সূরায়ে আহযাব আয়াত : ৩৩)
have more >
বিষয়: বিবিধ
১২৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন