অনুশোচনা
লিখেছেন লিখেছেন আফিফা মারজানা ০৪ মে, ২০১৩, ০১:৫৮:২৭ রাত
মেয়েকে মাদরাসা থেকে নিয়ে ফির
বাসায় ।কোলে মুহাম্মাদ ।
আজ ছুটির দিন বলে রাস্তায়
ভিড়টা একটু কম ।মেয়ের সাথে গল্প
করতে করতে ধীরে ধীরে হাটছিলাম
ড্রেন ও ডাস্টবিন সামলিয়ে ।এই
শহরের মানুষ গুলো ইলেকট্রিক
খুঁটির গোড়াকেই
মনে করে ডাস্টবিন ,সেখানে বীন
থাকুক আর না থাকুক ।
দুর থেকেই দেখছিলাম তাকে ।একজন
বৃদ্ধ ।পিঠ
নুয়ে পড়েছে তার ,সামনে চাকা লাগ
কাঠের
বাকসোটাকে আরো নুয়ে ধরে আছে ,চো
বাঁধা চশমা।কৌতুহলী হয়ে
ভালো করে তাকালাম বাকসোর
ভেতরে -কয়েকটা বিভিন্ন
ডিজাইনের হাতুড়ি ,নানা রকম
গামের কয়েকটা কৌটা ,বড় আকারের
কাঁচি ও কয়েকটা টিনের পাত ।
আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম
না ,এগুলো দিয়ে উনি কি করেন !
তাই
জানতে চাইলাম ,চাচা আপনি কি কর
পুরনো ভাঙাফাটা সারাই-অস্পষ্ট
স্বরে
বললেন ,ক্লান্তি আর কষ্টে তার
কন্ঠে কোন জোর নেই ।
চাচা চলে যাচ্ছেন ,তার বাক্সের
হাতল ধরে ঠেলে ঠেলে ।কেউ
তাকে ডাকছেনা ,সারাই কাজের
জন্য ,ডাকবে কি করে !
সে তো ডেকে ডেকে তার
উপস্হিতি জানান দেয়ার
শক্তি রাখেনা । আমি যেন
ঝাঁকি খেয়ে দাড়িয়ে গেলাম ।
পার্সে পড়ে আছে একটা একশোটাকার
নোট ।টুকিটাকি জিনিস ও মোবাইল
ফোনে রিচার্জ করার টাকা ।
আশেপাশে কোনো দোকান নেই
যেখান
থেকে টাকাটা ভাঙিয়ে তাকে কিছু
দেবো ।তাই তার পিছু নিলাম ,কিন্তু
তিনি মোড় ঘুরে অন্যরাস্তায়
চলে গেলেন ।আমি নিরাশ হয়ে তার
চলে যাওয়া দেখলাম ।
এবং সে আমার আয়ত্বের
বাইরে চলে যাওয়া মাত্র
মনে হলো কেন
আমি আস্তো টাকাটা তাকে দিয়ে দি
না !
আমি তো বাসা থেকে টাকা এনে কাজ
করতে পারতাম !অনুশোচনায় তিক্ত
মন নিয়ে আবার হাটা দিলাম
নিজের পথে ।
নিজেকে একটা মায়াদয়াহীন মানুষ
আর জ্ঞান বুদ্ধিহীন গর্দভ
মনে হচ্ছিলো. . . . . . .
বিষয়: বিবিধ
১০৫১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন