কি রকম মুসলিম আমরা?
লিখেছেন লিখেছেন বিশ্বাসী ৩০ এপ্রিল, ২০১৩, ০৬:২৯:২২ সন্ধ্যা
আমরা সবসময় কিছু না কিছু খুঁজি নিজেদেরকে বিবক্ত করার জন্য।
যেমনঃ ও আপনি তাবলিগ, জামাত, হানাফি, শাফি, শিয়া, ওহাবি, বিএনপি, আওয়ামীলীগ, আপনিতো পথভ্রষ্ট ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমাদের জন্য একটি পরিচয় ই যথেষ্ট। আর তা হল মুসলিম আর অমুসলিম। আমি মুসলিম। আর মান দণ্ড হবে কোরআন ও হাদিস। আমরা একটা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে করতে দিনের পর দিন রাতের পর রাত চলে যায়। আমরা ঘুমিয়ে ফজর কাটাই। মদ ছাড়ি না। পর্দার ধার ধারি না। শুধু জুমা পড়াকে নিজের জন্য সব গুনার কাফফারা মনে করি, মাফ পাব বলে বসে থাকি। মন চাইলে কিছু মানি, মন না চাইলে মানি না। তা হলে পূর্ণ মুসলিম হলাম কোথায়? অথচ কিছু হইলে বলি আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চরম আস্তিক। ব্লা ব্লা ব্লা । আমরা মনে করি আল্লাহ্ আমাদের উপর খুব খুশী। তাইলে তো আল্লাহ্ অমুসলিম দের উপর ও খুশী। কারন তাঁরা ও তো আপনার মতই আছে, খাচ্ছে, ঘুমাচ্ছে। না আপনি আসলে সন্দেহেরে মধ্যে পড়ে আছেন? নিজের ইচ্ছাকে নিজের প্রভু বানিয়ে নিয়েছেন? দুনিয়াতে আল্লাহ্র রহমত এতই বেশি তাঁর রহমত সব সময় তাঁর ক্রোদের উপর বিজয়ী হয়। তবে সীমা আছে একটা। ঠিক যখন আমরা মারা যাব। তখন তিনি হয়ে জাবেন ন্যায় বিচারক। সব কিছুর হিসাব হবে। তার মধ্যে নামাজ আগে। কি নিয়ে দাঁড়াব তাঁর সামনে। তাই আজকে সময় কাজের, কথা বলার নয়। চলুন পুরনাংজ্ঞ নামাজ পড়ি। যাকাত দিই । মানুষকে সঠিক পথে চলার আদেশ দেই। মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখি। নুন্যতম পক্ষে নিজেকে পরিবর্তন করি। আর এটাই সবচেয়ে প্রধান বিষয়। নিজের দোষগুলো এমনিতে দেখা যায় না। ভাল করে নিজেকে নিয়ে ভাবুন। সবাই আমাকে ভালবাসে। কিন্তু আল্লাহ্ বাসেন না। কি লাভ। সবাই ভালবাসেনা আল্লাহ্ বাসেন। যথেষ্ট। অথচ দুনিয়া ছাড়া আমার আর কিছুই নেই এমন অবস্থা। অথচ এই দুনিয়া আখিরাতের জীবনের তুলনায় খুবই নগণ্য। মনে রাখা উচিত। আপনি আমি ক্ষমা চাইলে আল্লাহ্ এখনি ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু অবহেলা কখনই আল্লাহ্র কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। জীবনের লাগাম না টানলে। সে ক্ষমা কি কাজে দিবে? আপনার বস, শিক্ষক, পিতা মাতা, এমনকি আপনি আমি নিজেও তো অন্যের অবহেলা/অমান্য কে ভালভাবে নেই না। সেখানে আল্লাহ্ কিভাবে নিবেন। আসুননা নিজেকে গড়ি। আমাদের ইতিহাস অনেক মহৎ, আনেক গর্বের, গোরবের। ১৪০০ বছরের ইতিহাস কি একটুও পড়ার সময় হয় না। খালি ফেইসবুকের কিছু পেইজের, শেয়ারের গবেষণা ধরে পড়ে থাকলেই চলবে। চারিপাশে কত কিছুই ঘটছে, মানুষ নিত্য নতুন জিনিস আবিস্কার করছে । আমরা কি করছি। শুধুই শেয়ার। তাও আবার যত্তসব বিভক্তির রাজনীতির, গোমরাহির। আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে তো আরও বিভিন্ন দেশের বন্ধু আছে। তাদের দেশে কি সমস্যা নেই। আছে। কিন্তু তাঁরা বুদ্ধিমান। তাঁরা নিজেকে গড়ছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে। পরে দেশ পরিবর্তন করছে। আরেকজনের কাশি নিয়ে, হাচি নিয়ে পড়ে থাকার সময় কোথায়। নিজেকে গড়ি। দেশ তাহলে কিছুটা পরিবর্তন হবে। ভালকে ভালবাসি, মিথ্যা পরিহার করি। সত্য জরুরী। কি প্রচার করছে যাচাই করে দেখি।
গুগল ম্যাপ দেখুন না । মন ভাল হয়ে যাবে। অনেক রাষ্ট্র । অনেক গুলোতো চিনিই না। শুধু মাত্র একটি ভোগলিক সীমারেখার কারনে আমরা এত রেসিস্ট হয়ে গেলাম! আমিন জোরে বলচে না আস্তে, তাবলীগ ভাল না জামাত ভাল, না চরমনাই, বিএনপি ভাল না আওমিলিগ এতেই এত মারামারি। অথচ নেতারা এক টেবিলে বসে আলোচনা করে। হান্ডসেক করে। চা পাতা গুলিয়ে দেয়। অথচ আমরা মারামারি করি এবং প্রান নেয়ার খেলায় মেতে উঠি। তাঁরা আজ নেই। আমি আপনিও থাকব না। শিক্ষিত হই হল দখলের পাঁয়তারায়। একদল ৫ বছর আরেক দলকে ডুকতে দেয় না। কি সেলুকাস! এতটুকু ভাবি না। ভাবলেও আমার আপনার মধ্যে পরিবর্তন কই? স্ট্যাটাস এই পক্ষের না দিলে তা দেই অন্যের বিপক্ষের। সবসময়। পৃথিবী উল্টে গেলেও। চোখের সামনে অন্যায় করলেও কিছুই বলি না। এত অন্ধ ভাবে পক্ষ অবলম্বন করার মানে কি। সত্যের পক্ষ নিতে হবে। দল বিবেচ্য নয়। শুধুই কুৎসা রটনা, হিংসা, বিভাজন। ন্যায় বিচার চাইলেও এককথা ছিল। কি প্রমানে ব্যাস্ত আমি- আপনি ? আমি বলব সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ, দলবাদ। এর থেকে বের হয়ে আসতে হবে।নিজেকে ভাল করে গড়ে তুলি। বিহৎ কল্যাণে কাজে লেগে পড়ি। ফল পাবই।
আস্তিক নাস্তিক লইয়া মহাবিপদ ! আসলে বিপদ অন্য জায়গায়। ধর্মদ্রোহিতা এবং যাকে তাকে নাস্তিক, মুনাফিক, কাফির বলে ডাকা। ধর্মভীরুতা কোথাও কোন সমস্যা আজ পর্যন্ত করে নাই। কিন্তু ধর্মদ্রোহিতা করছে। আমি যেখানে থাকি সেদেশের ৫০% এর বেশি নাস্তিক। আমি নাস্তিক ধারা পরিবেষ্টিত। কই তাঁরা তো কখনই জেনে বুজে সমস্যা করে নাই, বরঞ্চ রেস্পেক্ট করে। আলোচনা হয়। সমালোচনা হয়। পরে যার যার ধর্ম তাঁর তাঁর। দাওয়াত দেই। না নিলে মন খারাফ করি না। কিন্তু সমস্যা করে তাঁরা যারা অন্যের ধর্মকে নিয়ে কুৎসা রটনা করে অর্থাৎ ধর্মদ্রোহিতা। আমার দেশে এই সমস্যা চরম। এরা আপনার আসেপাশেই আছে। এদেরকে এড়িয়ে চলুন। এর জন্য একটা সুন্দর আইন চাই।
চিন্তা ও কাজের পরিবর্তনই এই পোষ্টের উদ্দেশ্য, সর্বপ্রথম আমাকে দিয়েই। কারন আমরা আংশিক মুসলিম। আসুন মুসলিম হই (আল্লাহ্র সব আদেশ মানি) । অথবা নিচের অন্য কোন পোস্টে গিয়ে আবার হারিয়ে যেতে পারেন। কেউ বাধা দিবে না। বারাকাল্লাহু ফিক (আল্লাহ্র রহমত হোক আপনার উপর)।
বিষয়: বিবিধ
১৩৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন