সিরাতুল মুস্তাকীম - ইসলামের পথ

লিখেছেন লিখেছেন শিহাব আহমদ ২১ অক্টোবর, ২০১৬, ০৯:৩২:৪২ রাত

প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর নিত্যকার প্রার্থনা হলো: "(হে প্রভু!) আমরা একমাত্র তোমারই উপাসনা করি এবং শুধুমাত্র তোমার কাছেই সাহায্য কামনা করি। আমাদেরকে প্রদর্শন কর সরল সহজ পথ - তাদের পথ যাদের ওপর বর্ষিত হয়েছে তোমার করুণা ও আশীর্বাদ, তাদের পথে নয় যারা তোমার অভিশাপপ্রাপ্ত এবং তাদের পথেও নয় যারা পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত (১:৪-৭)"। প্রতিদিনের প্রতিটি নামাযের প্রতি রাকাতে পঠিত সুরা ফাতিহার এই অতি গুরুত্বপূর্ণ দোয়ায় যে সহজ সরল পথটির জন্য আকুতি জানানো হয়, কি তার পরিচয়? এর বিপরীতে অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্টদের পথই বা কি যা থেকে নিষ্কৃতি প্রার্থনা করা হয়। সুপথ ও বিপথের পরিচয় জানতে না পারলে পথ হারানোর আশঙ্কাই প্রবল। 'সিরাতুল মুস্তকীম’ অর্থাৎ সহজ সরল পথটির পথিক কারা যাদের ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়েছে সেটা জানা অতীব প্রয়োজনীয়। এই প্রার্থিত অনুগ্রহপুষ্ট আলোকিত সহজ সরল পথটিই হলো সত্যের পথ তথা ইসলামের পথ। "নিসন্দেহে আল্লাহ্ তায়ালার কাছে গ্রহণযোগ্য একমাত্র জীবন বিধান হচ্ছে ইসলাম (৩:১৯)" - পবিত্র কুরআনের এ আয়াতটিই বলে দিচ্ছে ইসলামই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ মনোনীত দ্বীন বা ধর্ম অর্থাৎ জীবন চলার সহজ সরল পথ। মানব জাতির নিকট এটা একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। আরাফার মাঠে বিদায় হজ্বের ভাষণ শেষে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন প্রস্থানোদ্যত হলেন ঠিক তখনই পবিত্র কুরআনের শেষ আয়াত নাযিল হলো: "আজকের এ দিনে আমি তোমাদের দ্বীনকে (জীবন চলার পথ-বিধান হিসেবে) চূড়ান্ত করলাম, তোমাদের ওপর আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে তোমাদের জন্য মনোনীত করলাম..... (৫:৩)"। এই দুনিয়াতে মানুষের তৈরী অনেক মত ও পথ রয়েছে, কিন্তু ইসলাম হলো স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর মনোনীত ও নির্দেশিত সরল সঠিক পথ। হাদীসে বর্ণিত আছে, একবার নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মাটিতে একটি সরল রেখা আঁকলেন এবং এর ডান ও বাম পাশে আরো কয়েকটি রেখা আঁকলেন। তাঁর সাহাবীবৃন্দ এসব রেখা আঁকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, মাঝের সরল রেখাটিই সহজ সরল পথ অর্থাৎ ইসলামের পথ যা আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভে সমর্থ, আর বাকী সবগুলোই বিভ্রান্তিমূলক পথ যা মানুষকে বিপথগামী করে অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য থেকে মানুষকে বঞ্চিত করে।

ইসলামের সরল সঠিক পথটি এমনই এক পথ যা সব ভ্রান্ত পথ থেকে সুস্পষ্টভাবে আলাদা (২:২৫৬)। এ পথ অজ্ঞতা ও কুসংস্কার থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। এ পথ অন্ধকার থেকে আলোর দিকে মানুষকে নিয়ে যায়। এ পথ শুধুমাত্র এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে সকল দাসত্বের নিগড় থেকে মুক্তির দিশা দেখায়। এ পথ মানুষকে ইহকাল ও পরকালের শান্তির সুসংবাদ দেয়। এ পথের পাথেয় হলো পবিত্র কুরআন ও রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ্। নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পবিত্র কুরআনের আলো দিয়ে ইসলামের সহজ সরল পথটির দিকে মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন এবং তাঁর জীবনাচরণ দিয়ে মানুষকে এ পথে চলার দিশা দেখিয়েছেন। তাঁর সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ বলেন, "ইয়া-সীন। জ্ঞানময় কুরআনের শপথ, অবশ্যই আপনি রাসুলদের অন্তর্ভূক্ত, আপনি সরল সুপথের ওপর প্রতিষ্ঠিত। (এ কুরআন) পরম দয়ালু আল্লাহর নিকট থেকে অবতীর্ণ; যাতে আপনি সতর্ক করতে পারেন এমন এক জাতিকে যাদের পিতৃপুরুষদের ইতঃপূর্বে সতর্ক করা হয়নি, ফলে ওরা অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত রয়েছে (৩৬:১-২)"। এ কুরআনে আছে বিপথগামীদের জন্য সতর্কবাণী, আর সুপথের পথিকদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কারের ঘোষণা। নবী করিম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরআনের বিধান অনুসরণ করে স্বীয় জীবনকে পরিচালিত করেছেন এবং জনগণকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিয়েছেন। এটা তাঁর বানানো কোন বিধান নয়, বরং আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন তাঁর ওপর যা নাযিল করেছেন তা তিনি হুবহু বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণী: "(হে নবী) বলুন, আমার প্রতিপালকের কাছ থেকে আমি যে বিষয়ে প্রত্যাদেশ পেয়েছি আমি তো শুধু তাই অনুসরণ করি। এ (কুরআন) তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে প্রেরিত দলিল, পথনির্দেশ ও দয়া বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য (৭:২০৩)"।

মানব সৃষ্টির শুরু থেকেই মানবজাতিকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ্ তায়ালা একদিকে নাযিল করেছেন নবী ও রাসুল, আর জীবন পরিচালনার বিধি-বিধান হিসেবে নাযিল করেছেন ঐশী কিতাবসমূহ। প্রথম মানব আদমকে (আঃ) সৃষ্টি করে তাঁকে দুনিয়ায় পাঠানোর সময়ই আল্লাহ্ বলে দিয়েছেন, সময়ে সময়ে আমার পথনির্দেশ তোমাদের নিকট আসবে। এ পথনির্দেশ মেনে যারা দুনিয়ায় জীবন যাপন করবে তারা ভীত, চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে না (২:৩৮)। এরই ধারাবাহিকতায় হযরত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সর্বশেষ নবী এবং তাঁরই ওপর নাযিলকৃত গ্রন্থ পবিত্র কুরআন হলো মানবজাতির চূড়ান্ত জীবন-বিধান সম্বলিত সর্বশেষ ঐশী গ্রন্থ। এ গ্রন্থ সম্পর্কে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলেন, "এ তো শুধু বিশ্বজগতের জন্য উপদেশবাণী, তোমাদের মধ্যে যে সরল পথে চলতে চায় তার জন্য (৮১:২৭-২৮)"। ইসলাম পূর্ববর্তী যুগে প্রচলিত ধর্মসমূহ ও ঐশী গ্রন্থগুলো একটি নির্দিষ্ট জাতি বা সম্প্রদায়ের প্রতি নাযিল হয়েছিল। পরবর্তীতে এগুলো একে একে বিকৃত ও অচল হয়ে পড়ার কারণে এবং নতুন যুগের প্রয়োজনে মহান আল্লাহ্ পূর্ববর্তী সকল বিধি-বিধান বাতিল করে নব্য বিধান হিসেবে ইসলামকে সমগ্র মানব জাতির জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করেছেন, যা ক্বিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ঐশী গ্রন্থ কুরআন সকল প্রকার সন্দেহ, বিকৃতি, অসংলগ্নতা ও বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ বলেন, "নিশ্চয়ই আমি এ উপদেশবাণী (সম্বলিত কুরআন) অবতীর্ণ করেছি আর আমিই এর (মৌলিকত্বকে) সংরক্ষণ করব (১৫:৯)"।

ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত। প্রথম স্তম্ভ হলো ঈমান অর্থাৎ বিশ্বাস রাখতে হবে এক, অনন্য ও অদ্বিতীয় উপাস্য আল্লাহর ওপর যাঁর কোন শরীক নেই, একই সাথে বিশ্বাস রাখতে হবে তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর নাযিলকৃত ঐশী গ্রন্থসমূহ, তাঁর প্রেরিত নবী-রাসুলগণের ওপর, আখিরাত অর্থাৎ পুণরুত্থান দিবসে আল্লাহর বিচারের সম্মুখীন হয়ে বিশ্বাস ও কর্মফলের ভিত্তিতে জান্নাত অথবা জাহান্নামের অনন্তকালীন জীবনের ওপর, এবং ভাগ্যের ভাল ও মন্দের ওপর। ঈমান রাখতে হবে অন্তরে এবং এর বহিঃপ্রকাশ হিসেবে কথায় এবং কাজে। এর পরের স্তম্ভগুলো হলো নামায, রোযা, হজ্ব ও যাকাৎ। এসব ক্ষেত্রে নামায ও রোযা ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলের জন্য এবং হজ্ব ও যাকাৎ শুধু ধনীদের বেলায় প্রযোজ্য ও অবশ্যপালনীয়। এসবের প্রতি যারা বিশ্বাসী ও আনুগত্যশীল তারাই হলো মুমিন মুসলমান। ইসলামী জীবন ব্যবস্থা ঈমান এবং সৎকর্ম বা নেক আমলসমূহের ওপর প্রতিষ্ঠিত। কুরআন ও সুন্নাহর বিধি-বিধান মোতাবেক জীবন যাপন করার নামই হলো ইসলামী জীবন ব্যবস্থা। পবিত্র কুরআনে বহুবার ঈমান এবং আমল কথা দুইটি একই সাথে উচ্চারিত হয়েছে। ঈমান এবং নেক আমলের সমন্বিত রূপই হলো ইসলাম। এভাবে ঈমান ও ইসলাম যেমন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, ঠিক তেমনই মুমিন ও মুসলমান একটি পরিপূর্ণ সমন্বিত রূপ। মানুষ যখন ঈমানের বলে বলীয়ান হয়ে নেক আমলসমূহকে নিজ জীবনে প্রতিষ্ঠা করে তখনই সে পরিপূর্ণ মুসলিম হিসেবে পরিগণিত হয়। ঈমান ছাড়া আমলের কোন মূল্য নেই, যেমন আল্লাহ্ বলেন, "আর যে ব্যক্তি ঈমান প্রত্যাখ্যান করবে তার সমস্ত আমল বিফলে যাবে এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে (৫: ৫)"। অপর দিকে আমল ছাড়া ঈমান পরিপূর্ণতা লাভ করে না। এ ক্ষেত্রে আল্লাহ্ বলেন, "যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে থাক, তাহলে তাঁর ওপরই ভরসা কর; যদি তোমরা মুসলমান বা আত্মসমর্পনকারী হও (সুরা ইউনুস: ৮৪)"।

ইসলামী জীবন ব্যবস্থা মানব প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং অন্তরে ধর্মীয় ও মানবিক মূল্যবোধের সৃষ্টি করে যাতে সে সরল সঠিক পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারে। বিশ্ব মানবতার ধর্ম ইসলাম মানব জাতির শান্তির পথকে উন্মুক্ত করেছে, মানুষের মধ্যে ঐক্য, সাম্য, মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বিদায় হজ্বের ভাষণে বিশ্ব মানবতার রূপকে তুলে ধরে বলেন, "হে মানবমন্ডলী! আল্লাহ্ বলেছেন, 'হে মানুষ, আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন মানব ও একজন মানবী থেকে এবং গোত্র ও জাতিতে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পার। নিশ্চয় আল্লাহর দৃষ্টিতে তোমাদের মধ্যে সে-ই সবচেয়ে মর্যাদাবান যে সবচেয়ে বেশী খোদা-ভীরু'। সকল মানুষ আদমের বংশধর এবং আদম মাটি থেকে তৈরী। অনারবের ওপর আরবের, আরবের ওপর অনারবের, কালোর ওপর সাদার অথবা সাদার ওপর কালোর কোনই শ্রেষ্ঠত্ব নেই শুধুমাত্র পরহেজগারী ছাড়া”। আর আল্লাহর নিকট মর্যাদাপ্রাপ্তির শর্তই হলো পরহেজগারী, যার ভিত্তি হচ্ছে ঈমান এবং নেক আমল। আর এ বিশ্বাসীগণ হলো তারা - "যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত আদায় করে, (সর্বোপরি) যারা শেষ বিচার দিবসের ওপর নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে, এই লোকগুলিই তাদের মালিকের পক্ষ থেকে (যথার্থ) হেদায়েতের ওপর রয়েছে, (মূলত) এরাই হচ্ছে সফলকাম (৩১:৪-৫)"।

পবিত্র কুরআনে প্রদর্শিত পথই সিরাতুল মুস্তাকীম। এই কুরআন সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়কারী এবং বিশ্বাসীদের জন্য আরোগ্য ও আশীর্বাদস্বরূপ। এ সহজ সরল পথের যারা পথিক ইহকাল ও পরকালে তারাই পরম সৌভাগ্য ও সাফল্যের অধিকারী হবে - এটাই আল্লাহর ওয়াদা। মুমিন মুসলমানকে দেয়া এ ওয়াদা মহান আল্লাহ বহুবার পবিত্র কুরআনে ব্যক্ত করেছেন। সুরা বাকারায় আল্লাহ্ বলেন, "যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তারাই জান্নাতের অধিকারী। তারা জান্নাতে অনন্তকাল বসবাস করবে (২:৮২)"। সুরা মায়েদায় তিনি বলেন, "যারা ঈমান আনে এবং নেক কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার (৫:৯)"। একইভাবে সুরা কাহাফে তিনি বলেন, "নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তাদের অভ্যর্থনার জন্য সাজানো হয়েছে জান্নাতুল ফেরদৌসকে, সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে, এর বিকল্প কোন কিছু তারা চিন্তা করবে না (১৮:১০৭)"। অপর দিকে কিছু মানুষ আছে যারা দ্বিধা-দ্বন্দে থাকে এবং ঈমানের প্রান্ত সীমায় বাস করে। এরা কখনোই সফলকাম হয় না। এসব বিপথগামীদের সম্পর্কে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, "মানুষের মধ্যে এমন আছে যে ব্যক্তি ঈমানের (একান্ত) প্রান্ত সীমায় থেকে এবাদত করে, এতে যদি তার কোন (পার্থিব) উপকার হয় তাহলে সে (ঈমানের) ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে যায়; কিন্তু যদি কোন দুঃখ কষ্ট তাকে পেয়ে বসে তাহলে তার মুখ পুনরায় (কুফরীর দিকেই) ফিরে যায়, (এভাবে) সে দুনিয়াও হারায় এবং আখিরাতও হারায়, আর এটা হচ্ছে আসলেই এক সুস্পষ্ট ক্ষতি (২২:১১)"।

ইসলামী জীবন ব্যবস্থা পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর প্রতি আনুগত্যপূর্ণ এবং ন্যায়নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এর বিধি-বিধান ভারসাম্যপূর্ণ ও মধ্যমপন্থী হওয়ায় মানুষকে বিপথগামীতা থেকে রক্ষা করে এবং সত্য, ন্যায় ও আলোর পথ প্রদর্শন করে। ইসলামে কোন বাড়াবাড়ি নেই। ইসলামী জীবন যেমন বৈরাগ্য বর্জিত, ঠিক তেমনি ভোগ-বিলাসের বাহুল্য থেকেও সংযত। পরিমিত এবং সহজ-সরল জীবনবোধ ইসলামের নবীর শিক্ষা যা তাঁর নিজের এবং সহচরদের জীবনী থেকেও পরিস্ফুট। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী মানুষের প্রতিটি কর্মকান্ড সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট জবাবদিহিমূলক। এ কারণেই তার বিবেকবোধ সদা জাগ্রত থাকে এবং প্রতিটি পদক্ষেপেই সে সতর্ক থাকে, যা তাকে সরল সঠিক পথে পরিচালিত করে। পবিত্র কুরআনের আলোকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ অনুসরণ করলেই পাওয়া যাবে এ সরল সঠিক পথের সন্ধান। বর্তমান মুসলিম বিশ্বে ইসলামের সত্যিকার চর্চা না হওয়ার কারণে সর্বত্রই অশান্ত পরিবেশ বিরাজমান। এ পরিস্থিতিতে একমাত্র ইসলামী জীবন ব্যবস্থাই দুনিয়া ও আখিরাতের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে মানব জাতির ইহলৌকিক ও পরলৌকিক কল্যাণ বিধানে সক্ষম। তাই আমাদের সকলের প্রার্থনা হোক, ইয়া রাব্বুল আলামীন! আমাদেরকে 'সিরাতুল মুস্তাকীম’ অর্থাৎ ইসলামের সহজ সরল পথ প্রদর্শন করুন যাতে আমরা সব ধরনের বিপথগামীতা থেকে রক্ষা পেতে পারি এবং দুনিয়া ও আখিরাতের সাফল্য লাভে সক্ষম হই। আমীন!

বিষয়: বিবিধ

১৬০৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378906
২২ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৫:০৯
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো । অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File