ঈদের স্বর্গীয় চেতনা

লিখেছেন লিখেছেন শিহাব আহমদ ১৭ জুলাই, ২০১৫, ১০:১৮:৩০ রাত

স্বর্গীয় আনন্দ ও সার্বজনীন উৎসবের চেতনায় ভাস্বর ঈদুল-ফিতর। মুসলিম জাহানের সাথে ঈদের মহা আনন্দে শরীক সারা বিশ্ব। রমযানে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর দেহ-মন ও আত্মা লাভ করে এক স্বর্গীয় প্রশান্তি। সিয়মের ত্যাগ-তিতিক্ষা, ধৈর্য ও সংযমের মধ্য দিয়ে শরীর ও আত্মার যে পরিশুদ্ধি ঘটে তা মানুষের মানবিক মূল্যবোধের উন্নতি ও বিকাশ ঘটায়। দেহ ও মনের কষ্ট ও ত্যাগের পরে আসে ঈদের স্বর্গীয় আনন্দ। ঈদুল ফিতরের এ আনন্দ রোজাদাররা তখনই উপলব্ধী করতে পারেন যখন তারা সত্যিকার অর্থেই সিয়াম সাধনা করেন। কেননা সিয়াম পালনকালে তারা তাদের প্রতিটি নেক আ’মল থেকে সত্তর গুনের অধিক পূণ্য অর্জন করেন। এসব আ’মল ও নেকীর কারণে তারা ঈদের দিনে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন কর্তৃক বিশেষভাবে সম্মানিত ও পুরস্কৃত হন। ঈদের প্রাণখোলা আনন্দের মধ্যেই রোজাদররা আল্লাহর অপার রহমতের স্বাদ কিছুটা উপলব্ধী করতে পারেন। রমযানের উপবাসব্রত শেষে ঈদের দিনের রকমারী সুস্বাদু খাবারের আয়োজন সবার মনে আনন্দের জোয়ার বইয়ে দেয়। পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই মিলে সে খাবারে শরীক হয়, ঘরে ঘরে আথিতেয়তার ধুম পড়ে যায়। এক অনুপম আনন্দময় পরিবেশে চলে ঈদ ঊৎসব উদ্যাপন।

ঈদের এ অনাবিল আনন্দ শুধু রোজাদাররা একাই উপভোগ করেন না। রোজাদারদের পরিমার্জিত আচরণ ও নির্মল চরিত্র সবাইকে বিমুগ্ধ ও আনন্দিত করে। ফিতরা ও দান-খয়রাত পেয়ে গরীব-দুঃখী সবাই ঈদের আনন্দের ভাগীদার হতে পারে। ঈদের এ সর্বজনীনতা সবাইকে এক স্বর্গীয় আনন্দে শরীক করে নেয়। সিয়ামের ক্ষুৎ-পিপাসার কষ্ট ধনীদেরকে গরীবের কষ্টের প্রতি সহমর্মী করে তোলে। গরীবের প্রতি ধনীদের দায়িত্বশীলতা বেড়ে যায়। এভাবে ধনী-গরীবের বৈষম্য কমে আসে। ঈদের জামাতে যখন ধনী-গরীব, রাজা-প্রজা একই কাতারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাযে শামিল হয়, নামায শেষে যখন সব কৃত্রিম ভেদাভেদ ভুলে বুকে বুক মিলিয়ে সাম্য-মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের চেতনায় আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়, তখন এক স্বর্গীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ এক অনন্য স্বর্গীয় আনন্দ - আল্লাহর আরশ সে আনন্দে আলোড়িত হয়।

ইদানীং ঈদের দিনে টিভি চ্যানেলে যে ধরনের ভাঁড়ামীপূর্ণ অশ্লীল ও বিজাতীয় নাচ-গান ও নাটকের অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয় তা খুবই দুঃখজনক। এগুলোর অধিকাংশই ঈদের নির্মল ও স্বর্গীয় আনন্দকে মলিন করারই নামান্তর। আর এসব ভাঁড়ামীপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলোকে আবার বিরক্তিকর বিজ্ঞাপনের দ্বারা ভারাক্রান্ত করে রাখা হয়। ঈদের আনন্দকে নষ্টকারী এসব অনুষ্ঠান বন্ধ করা হোক। সিয়াম ও ঈদের তাৎপর্যকে তোলে ধরে এমন সুরুচিপূর্ণ অনুষ্ঠানমালায় সাজানো হোক টিভি চ্যানেলগুলোকে, এটাই সবার প্রত্যাশা। সবাইকে ঈদ মোবারক।

বিষয়: বিবিধ

১১১১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

330424
১৭ জুলাই ২০১৫ রাত ১০:৪৮
অপি বাইদান লিখেছেন : ঈদের স্বর্গীয় চেতনা মসজিদে জেহাদী বোমাবাজি।
330454
১৮ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:৩৫
অপি বাইদান লিখেছেন : ঈদ মোবারক : ঈদের দিনও বন্ধ হয় না মুমিনের খুন খারাপি .....

নাইজেরিয়ায় ঈদের নামাজে আত্মঘাতী হামলায় নিহত ৬৪,



Click this link
নাইজেরিয়া ঈদের নামাজে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। ফক্স নিউজের খবরে বলা হয়, শুক্রবার (১৭ জুলাই) দেশটির দামাতুরু শহরে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল সানি উসমান বলেন, দুই নারী আত্মঘাতী হামলাকারীর মধ্যে ১০ বছরের এক শিশুও রয়েছে।
330550
১৮ জুলাই ২০১৫ রাত ১১:০৪
শিহাব আহমদ লিখেছেন : লেখাটি না পড়েই মন্তব্য করেছেন বোঝা গেল। "ঈদের জামাতে যখন ধনী-গরীব, রাজা-প্রজা একই কাতারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাযে শামিল হয়, নামায শেষে যখন সব কৃত্রিম ভেদাভেদ ভুলে বুকে বুক মিলিয়ে সাম্য-মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের চেতনায় আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়, তখন এক স্বর্গীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ এক অনন্য স্বর্গীয় আনন্দ - আল্লাহর আরশ সে আনন্দে আলোড়িত হয়।" প্রকৃত ইসলাম হলো তাই। আর আপনি যাদের কথা বলেছেন তারা শুধু মুসলমানের শত্রুই নয় - সমগ্র মানব জাতির শত্রু। এরা ইসলামের নামে ইসলামকে ধ্বংস করার জন্যই কাজেই নিয়োজিত।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File