বাংলাদেশের ক্রিকেটের পাক-ভারত বধ কাব্য
লিখেছেন লিখেছেন শিহাব আহমদ ২২ জুন, ২০১৫, ০৫:১৬:২০ সকাল
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথমে পাকিস্তানকে এবং এখন শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে পাক-ভারত বধ কাব্য রচনা করল। এ উভয় দেশই বিশ্ব-কাপ চ্যাম্পিয়ন, পাকিস্তান একবার ও ভারত দু'বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল। একের পর এক এ দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অঙ্গনে বিজয়ের এক অনুপম কাব্য-গাঁথার জন্ম দিল। গত বিশ্ব-কাপ প্রতিযোগিতা থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের দিগন্তে সোনালী সম্ভাবনার দ্বার খুলতে শুরু করে। এ অগ্রগতির ধারা পরবর্তীতে পাকিস্তানকে বাংলা-ওয়াশ করার মধ্য দিয়ে আরও উজ্জ্বল হয়েছে। বাংলাদেশ দল বর্তমানে সফররত ভারতকে প্রথম ওয়ানডেতে ৭৯ রানে এবং দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে হারিয়ে বিজয়ের ধারাবাহিকতাকে আরও সুসংহত করল। দু’বারের বিশ্ব-কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারতকে বিরাট ব্যবধানে হারিয়ে বাংলাদেশ দল শুধু ওয়ানডে সিরিজই জয় করেনি, বিশ্ব ক্রিকেটের র্যাঙ্কিংয়েও সপ্তম স্থান দখল করে নিজের ভাবমূর্তিকেও সমুজ্জ্বল করেছে। এতদিন পাক-ভারত ক্রিকেট খেলা যেমন বিশ্ব ব্যাপী উত্তেজনা ও উত্তাপ ছড়াত, এখন বাংলাদেশও এ উত্তাপ ছড়ানোর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশ দল সত্যিকার বাঘের রূপ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে, ভবিষ্যতের লড়াইটা হবে সমানে সমানে।
এর আগে বাংলাদেশ দল আচমকা কোন বড় দলকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করত, তবে পরবর্তী ম্যাচেই গো-হারা হেরে একেবারে নাস্তানাবুদ হত। এখন মনে হচ্ছে সেসব বিপর্যয় কাটিয়ে ধীরে ধীরে সাফল্যের পথ বেয়ে এগিয়ে যাবার সোপান তৈরী হচ্ছে। পূর্বের নড়বড়ে মনোবল কাটিয়ে প্রতিটি খেলোয়াড় আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে উঠেছে, ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে তারা সমন্বিত ও ধারাবাহিক উন্নতি বজায় রাখছে, খেলোয়াড়দের নিয়মানুবর্তীতা ও শৃঙ্খলাবোধ বেড়েছে, আক্রমণাত্মক খেলায় মনযোগী হয়ে উঠেছে এবং আরো বেশী কৌশলী হতে পেরেছে। সর্বোপরি, দলের ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা দলের পারফন্সের ক্রমোন্নতিতে অবদান রাখতে পারছে। ফলে বাংলাদেশ দলের আনকোরা খেলোয়াড়গণও সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছেন। যদিও বাংলাদেশের দলে বেশ কয়েকজন বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে, তবে বাকীরা সবাই বয়সে ও অভিজ্ঞতায় তরুণ। অভিজ্ঞতার দৌড়ে তাদেরকে এখনও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।
এটা খুবই আশাপ্রদ ব্যাপার যে বাংলাদেশের ক্রিকেট টীমের একটি গুণগত পরিবর্তন এসেছে। তারা মন-মাসনিকতা ও কৌশলে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। খেলোয়াড়গণ তাদের ব্যক্তিগত দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করে সংশোধন করার চেষ্টা করছেন, কঠোর অনুশীলন ও নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলছেন, ঠান্ডা মাথায় খেলার অভ্যাস রপ্ত করছেন এবং ক্রমশই বিদেশী শক্তিশালী দলগুলোর সাথে খেলার নৈপুণ্য ও সাহসিকতা অর্জনে সক্ষম হচ্ছেন, এসবই আশাব্যঞ্জক। নিষ্ঠার সাথে এর ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। জ্বলে উঠে নিবে যাওয়ার প্রবণতাকে রুখতে হবে। সকল দুর্বলতা কাটিয়ে আত্ম-বিশ্বাসী হয়ে উঠতে হবে। তবেই সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে আমাদের দল পৌঁছুতে সক্ষম হবে। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দল তাদের নৈপুণ্য ও আক্রমণাত্মক খেলার ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এটাই জাতির আশা।
বিষয়: বিবিধ
১০১৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এ জয়ের ফলে অনেক কিছু অর্জন হয়েছে।
প্রথমেই ভারতের নাকঁ উঁচু ভাবকে শেপে আনা গেছে । যে ভারত বাংলাদেশের আতিতেয়তা নিতেই গড়িমসি করেছে , নিজেদের দেশে কখনই ডাকে নি - সে এবার ভালই বাঁশ পেল । বাংলাদেশকে দেখে নিতে হলে তাদের মাঠে বাংলাদেশকে আনতে হবে যেটা তারা স্পন্সর পাবে না বলে রাজি হচ্ছিল না। অথচ অন্য সব দেশেই বাংলাদেশ গিয়ে খেলে এসেছে ।
২য় , চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে মোড়লেরা বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে মুক্ত রাখতে চেয়েছিল । মোড়লেরা কি সাম্প্রতি পারফরমেন্সগুলোকে একটুও আমলে নেন না. অস্ট্রেলিয়া , সাউথ আফ্রিকা এরা না হয় ভাল ফর্মে আছে । ভারত মোড়লের অংশ হেতু তাদেরকে কোন টাচ করা যাবে না । নিউজিল্যান্ডও ভাল খেলছে ইদানিং । তবে আরেক মোড়ল ইংল্যান্ডের সাথে তাদের ওয়ানডে সিরিজ কেমন জানি ফিশি ফিশি লেগেছে ।মাহেলা , সাঙ্গাকারা চলে যাবার পর শ্রী লংকা অনেক দমে আসবে নিশ্চিত ।
তবে সাম্প্রতিক পারফরমেন্সে বাংলাদেশ , পাকিস্তান , ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে প্রায় একই কাতারে ।
উপরের ছয় দল বাদে বাকি দুই দলের পজিশনের জন্য লড়াইয়ে বাংলাদেশকে মনে করতাম মিনিমাম ২য় হবেই। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়েকে বাংলাওয়াশ দেওয়া হয়েছে । ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও ওয়ানডেতে ব্যাপক হারানো গেছে। গেইলরা না থাকাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সামনে বার নেপাল , হংকং , নামিবিয়া , পিএন্ডজিএদের সাথে খেলতে হবে ।
সুতরাং বাংলাদেশের সামনে ভালই সুযোগ ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার।
তবে ... বাংলাদেশের জন্য বড় সমস্যা হল এরা পঁচা শামুকে বার বার পা কাটে । বিশ্বকাপ , পাক-ভারতের বিপক্ষে সাফল্য এক ফুতকারেই বিশ্বনিন্দুকেরা উড়িয়ে দেবে যদি আফগানিস্তান , আয়ারল্যান্ডের মত দলে কাছে হারে ।
বাংলাদেশ তার আত্মবিশ্বাস বজায় রাখবে এই আশা করছি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন