হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কেন সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব: পর্ব - ২
লিখেছেন লিখেছেন শিহাব আহমদ ২৪ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৯:৪২:৪৬ সকাল
“আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসুল” এ বিশ্বজনীন আহ্বানই ছিল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওতী দায়িত্বের (prophetic mission) মূল মন্ত্র। নবীর দায়িত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ বলেন, "তিনিই (আল্লাহ্) নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত। এই রসূল প্রেরিত হয়েছেন অন্য আরও লোকদের জন্যে, যারা এখনও তাদের সাথে মিলিত হয়নি। তিনি (আল্লাহ্) পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। এটা আল্লাহর কৃপা, যাকে ইচ্ছা তিনি তা (নবুওত) দান করেন। আল্লাহ্ পরম করুণাময়” (৬২: ২-৪)। ধীরে ধীরে প্রতিপালক মহান আল্লাহর নিকট থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশ আসতে লাগল, "আপনি বলুন: এস, আমি তোমাদেরকে ঐসব বিষয় পাঠ করে শুনাই, যা তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন। তা এই যে, আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না, পিতা-মাতার সাথে সদয় ব্যবহার করো, স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্রের কারণে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে আহার দেই, নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য, যাকে হত্যা করা আল্লাহ্ হারাম করেছেন, তাকে হত্যা করো না; কিন্তু ন্যায়ভাবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা বোঝতে পার” (৬: ১৫১)।
নবুওত পূর্ববর্তী তাঁর জীবন আপন মহিমায় যেরূপ সমুজ্জ্বল ছিল, নবুওত পরবর্তী জীবন ঐশী মহিমায় আরও মহিমান্বিত ও সমুজ্জ্বল হয়ে ওঠল। মানব জাতির এক মহা সংস্কার ও পরিবর্তনের গুরু দায়িত্বভার তাঁর কাঁধে অর্পিত হল। পরিবেশ ছিল অত্যন্ত প্রতিকূল ও কঠিন, কারণ শত শত বছরের পৌত্তলিকতার পাপ-পঙ্কিলতায় আচ্ছন্ন পাষাণ হৃদয়সমূহ পরম সত্য গ্রহণে বিমুখ ছিল। সত্যের সাথে মিথ্যার দ্বন্দ সে তো চিরন্তন। তিনি জানেন, এ এক কঠিন কঠোর সংগ্রাম, মহা বিপদসঙ্কুল পথে তাঁর যাত্রা। জানমাল বিসর্জন দিয়ে এ পথে এগুতে হবে। স্বয়ং আল্লাহ্ নিয়েছেন তাঁর প্রিয় নবীর নিরাপত্তার দায়িত্বভার। তিনি অকুতোভয়ে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্রতী হলেন। তিনি আল্লাহর বাণী কুরআনের দ্বারা মানুষদেরকে সদুপদেশ দিতে লাগলেন। কিন্তু কোরাইশ নেতৃবর্গ তাঁকে পদে পদে বাধাগ্রস্ত ও হেনেস্তা করতে শুরু করল। কুরআনের বাণী তাদের অন্তরে যেন জ্বালা ধরিয়ে দিত, তারা আল্লাহর নবীকে মিথ্যাবাদী, উন্মাদ, কবি, যাদুকর ইত্যাদি আখ্যা দিল। অথচ নবুওত পূর্ববর্তী জীবনে এ লোকগুলোই তাঁকে সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত আখ্যা দিয়েছিল। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ্ বললেন, “কাফেররা যখন কুরআন শুনে, তখন তারা তাদের দৃষ্টি দিয়ে যেন আপনাকে আছড়ে ফেলে দেবে এবং তারা বলে, সে তো একজন উন্মাদ। অথচ এই কুরআন তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ বৈ অন্য কিছু নয়” (৬৮: ৫১-৫২)। আল্লাহ তাঁর নবীকে আশ্বাস দিয়ে বললেন, "তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ্ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে” (৬১:৮)।
পৌত্তলিকতা, ভ্রান্ত বিশ্বাস, কুসংস্কার ও অপকর্মে লিপ্ত গাফেল কোরাইশ নেতৃবর্গের শত ভয়-ভীতি এবং নিপীড়ন-নির্যাতনেও আল্লাহর নবীকে তাঁর ধর্ম প্রচার থেকে নিবৃত করতে ব্যর্থ হলো। অবশেষে তারা তাঁর পিতৃব্য আবু তালেবের মাধ্যমে তাঁর নিকট প্রস্তাব রাখল, মুহাম্মদ (সাঃ) যদি তাঁর ধর্ম প্রচার বন্ধ করেন তবে তারা তাঁকে আরবের রাজত্ব, ধন-সম্পদ ও সুন্দরী স্ত্রী প্রদান করবে। কিন্তু তিনি তাদের এ প্রস্তাব এ বলে প্রত্যখ্যান করলেন যে, তারা যদি তাঁর এক হাতে সূর্য অন্য হাতে চন্দ্রও এন দেয় তদুপরি তিনি তাঁর ধর্ম প্রচার থেকে নিরস্ত হবেন না। সকল লোভ-লালসা ও বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করার এমনই ছিল তাঁর মনোবল ও প্রত্যয়। তিনি যা করছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত লাভালাভের জন্য নয়, বরং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী বিশ্ব মানবতার শান্তি ও মুক্তিই তাঁর এ ধর্ম প্রচারের একমাত্র উদ্দেশ্য। 'আল্লাহ্ এক এবং অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই’ এ সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য মহান আল্লাহ্ তাঁর নবীকে আহ্বান জানালেন।
ইসলাম ধর্মের মূল স্তম্ভই হলো তৌহিদ অর্থাৎ আল্লাহর একত্ববাদ। মানবজাতি যখন এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর আনুগত্য ছেড়ে বিভিন্ন ধরনের ভ্রান্ত বিশ্বাস, কুসংস্কার এবং পৌত্তলিকতায় লিপ্ত তখনই বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বিশ্ববাসীকে আহ্বান জানালেন আল্লাহর একত্ববাদের দিকে। একাধিক উপাস্যের দাসত্বের শিকল ছিন্ন করে মানব জাতিকে এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর প্রতি আনুগত্যপূর্ণ জীবনের অভিমুখী করা জন্যই ছিল তাঁর এ আহ্বান। সকল ভেদাভেদের উর্দ্ধে ওঠে সত্য, ন্যায়, সততা ও সমতার ভিত্তিতে এক শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলাই ছিল এ আহ্বানের মূল লক্ষ্য। আল্লাহর প্রতি আনুগত্যহীন জীবন দুনিয়া ও আখিরাতে কি ধরনের মহা বিপদ বয়ে আনতে পারে সে বিষয়ে মানুষকে তিনি সতর্ক করলেন। তিনি অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করতেন। তাঁর বক্তৃতা হত নাতিদীর্ঘ - তা এমন সংক্ষিপ্ত হত না যা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়, আবার ধৈর্যচ্যুতি ঘটানোর মত দীর্ঘও নয়। জামাতে তাঁর নামায পড়ানোর রীতিও ছিল তাই। আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী নবী মুহাম্মদ (সাঃ) অত্যন্ত মার্জিত, যুক্তিপূর্ণ ও সাবলীল ভাষায় লোকজনকে ধর্মীয় উপদেশ দিতেন। তাঁর প্রতি নির্দেশ ছিল: "জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে মানুষকে আপনার প্রভুর দিকে আহ্বান করুন এবং তাদের সামনে যুক্তি উত্থাপন করুন সর্বোত্তম পন্থায়” (১৬:১২৫)। মানুষের কোন অকল্যাণ ছিল তাঁর নিকট দুর্বিষহ। নিপীড়িত মানবতার কল্যাণের জন্য হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন মহান আল্লাহর এক পরম অনুগ্রহ, তাঁর আগমণে সৃষ্ট জগত ধন্য হয়েছিল। কারণ আল্লাহর ঘোষণায় তিনি ছিলেন 'সৃষ্টিকুলের জন্য রহমত স্বরূপ’ (২১: ১০৭)।
আল্লাহ্ ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের মর্যাদা দিয়ে সমগ্র মানব জাতির ধর্ম হিসেবে মনোনীত করলেন। ধর্ম জোর করে মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া আল্লাহ্ ও তাঁর নবীর নীতি ছিল না। এ ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে: "ধর্মের ব্যাপারে কোন জোর-জবরদস্তি বা বাধ্যবাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে সত্য সুস্পষ্টভাবে ভ্রান্তি থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা বিপথগামী মূর্খদের পরিহার করবে এবং আল্লাহে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে যেন ধারণ করল এমনই সুদৃঢ় হাতল যা কখনও ভাঙবে না। আর আল্লাহ্ সবই শুনেন এবং জানেন” (২: ২৫৬)। পবিত্র কুরআনকে আল্লাহ্ তায়ালা সহজবোধ্য করে দিয়েছেন যাতে সকলেই সহজভাবে একে অনুসরণ করতে পারে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেন: "আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?" (৫৪: ৩২)। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের পবিত্র বাণী কুরআনের নির্দেশ ও হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ্ হলো ইসলামী শরীয়তের মূল ভিত্তি। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পবিত্র কুরআনের আলোকে মানুষকে 'সিরাতুল মুস্তাক্বীমের’ অর্থাৎ সহজ-সরল পথের সন্ধান দিয়েছেন। তিনি ছিলেন এক জীবন্ত কুরআন, কারণ এর প্রতিটি নির্দেশ তিনি নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করে গেছেন। তাঁর সহচরবৃন্দও তাঁকে একইভাবে অনুসরণ করেছেন। তাঁদের ওপর এটা বোঝাস্বরূপ মনে হয়নি, কারণ: "আল্লাহ্ কখনও মানুষের ওপর তার সাধ্যাতীত কোন দায়িত্বভার চাপিয়ে দেননি” (২:২৮৬)। নবী (সাঃ) কখনও নিজের থেকে কিছু বলতেন না। তিনি যা বলতেন তা সর্বশক্তিমান আল্লাহর অনুমতিক্রমে ও তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী। সুতরাং তাঁর কথা ছিল নির্ভুল এবং দিব্য জ্ঞানসম্পন্ন।
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতায় ছিলেন সম্পূর্ণ অকৃত্রিম। কথায়, কাজে ও বিশ্বাসে তাঁর সামন্যতম পার্থক্য ছিল না। তিনি কখনও তাঁর কোন ওয়াদা ভঙ্গ করেন নি। দয়া, ক্ষমা ও দানশীলতায় তিনি ছিলেন অনন্য। তিনি অত্যন্ত সহজ সরল জীবন যাপন করতেন। ধন-সম্পদ জমিয়ে রাখার কোন প্রবণতাই তাঁকে স্পর্শ করেনি। যা পেতেন গরীব-দুঃখী ও অভাবীদের মধ্যে তৎক্ষণাৎ তা বিলিয়ে দিতেন। তিনি ছিলেন ক্ষমা ও করুণার এক মূর্ত প্রতীক। কোরাইশদের অত্যাচার, নিপীড়ন ও প্রাণ-হুমকির মুখে তিনি ও তাঁর অনুসারীগণ মক্কা ছেড়ে মদীনায় হিজরত করেন। সেখানেও তারা প্রতি বছর আক্রমণ চালাতে থাকল। এত সবের পরেও আল্লাহর নবী এক রক্তপাতহীন অভিযানে মক্কা বিজয় করেন। তিনি কোরাইশদের ওপর কোনরূপ প্রতিশোধ নেননি, সবাইকে তিনি ক্ষমা করে দেন। এটা বিশ্ব ইতিহাসে ক্ষমা ও ধৈর্য ধারণের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তাঁর ব্যবহার ছিল অত্যন্ত মধুর। দাস-দাসীদের প্রতি তিনি ছিলেন খুবই সহানুভূতিশীল। দাস মুক্তির ব্যাপরে তাঁর উৎসাহ ছিল অপরিসীম, একে তিনি অতীব পূণ্যের কাজ বলে ঘোষণা দেন। হযরত আবু বকর (রাঃ) এর মাধ্যমে ক্রীতদাস হযরত বেলাল (রাঃ) কে মুক্ত করেন। হযরত বেলাল (রাঃ) এর ধার্মিকতার কারণে আল্লাহর নবী (সাঃ) তাঁকে ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করেন। কি অপূর্ব মানবিকতা!
বিশ্ব জুড়ে যখন নারী জাতির কোন অধিকার ছিল না, তখন তিনি তাদের অধিকারকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। পিতৃগৃহে তাদের সযত্ন লালন-পালন ও শিক্ষা গ্রহণ, বিবাহে তাদের সম্মতি ও মোহরানার বাধ্যবাধকতা, উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে তাদের একটি নির্দিষ্ট অংশ, নিজস্ব ধন-সম্পদ অর্জন, দান-খয়রাত ও ব্যয়ে তাদের স্বাধীনতা, ইত্যাদি নারী জাতির প্রতি তাঁর প্রচারিত ইসলাম ধর্মের এক মহা অবদান। যে কোন নির্যাতন-নিপীড়নের মত নারী নির্যাতনও ইসলামে নিষিদ্ধ। স্ত্রীকে শারীরিক বা মানসিক কোন ভাবেই নির্যাতন করা ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। স্ত্রীর ওপর কোন কঠোর শাস্তি আরোপ করার ব্যাপারে তিনি মানুষকে হুশিয়ার করে বলেছেন, ‘তুমি (স্ত্রীর) মুখমন্ডলের ওপর আঘাত করো না, তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করো না এবং গৃহ ব্যতীত অন্য কোথাও তাকে পৃথক করে রেখো না’ (সুনান আবু দাউদ)।
তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা এবং সাহসী। এক আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন কিছুকে তিনি ভয় পেতেন না। চরম বিপদেও তিনি ধৈর্যহারা হতেন না, বরং পরম নির্ভরতায় আল্লাহর ওপর ভরসা করতেন। হিজরতের সময় শত্রুর পশ্চাদধাবন কালে ছওর গুহায় আশ্রয়রত অবস্থায়, বদর-ওহুদ-খন্দক-হুনায়েনের যুদ্ধের সঙ্কটকালে, হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় ও বিভিন্ন নাজুক পরিস্থিতিতে তাঁর ধৈর্য ও মহান আল্লাহর প্রতি তাঁর পরম নির্ভরতা মানব জাতির জন্য বিশেষ শিক্ষণীয় বিষয়। ওহুদের যুদ্ধের বিপর্যয়ের সময়, শত্রুর আঘাতে আহত অবস্থায় এবং আপন চাচা বীর হামযা (রাঃ) শহীদ হয়ে গেলে কোরাইশ নেতা আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দা তাঁর মৃতদেহ বিকৃত করে হৃদপিন্ড উপড়ে চিবিয়ে খায়। এসব নারকীয় ঘটনায় মুহাম্মদ (সাঃ) খুবই বেদনাহত হন। এ অবস্থায় আল্লাহ্ তাঁকে সান্তনা দিয়ে ধৈর্য ধারণ করতে এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ না হতে উপদেশ দেন। একই অবস্থা হয়েছিল তায়েফে ধর্ম প্রচার কালে। সেখানে তাঁকে ও তাঁর সহচর যায়েদ (রাঃ) কে উন্মাদ বলে প্রস্তরাঘাতে রক্তাক্ত করে ফেলা হয়। সেই কঠিন পরিস্থিতিতে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) শুধু ধৈর্যই ধারণ করেননি, বরং এসব পাপিষ্ঠদের জন্য অভিশাপের বদলে মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেছেন যাতে তারা হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়। তাঁর চরম শত্রু, বিদ্রুপ ও কটাক্ষকারীদের প্রতিও তিনি ছিলেন ক্ষমার্হ। শত উস্কানিতেও তিনি রাগান্বিত হতেন না। তিনি তাঁর অনুসারীগণকেও রাগ করতে নিষেধ করতেন। কারণ রাগের মাথায় মানুষ কান্ডজ্ঞান হারিয়ে অনেক ক্ষতিকর ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে। মানবতার নবীর এমনই ছিল প্রজ্ঞা ও মহানুভবতা। (চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১২৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন