হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কেন সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব: পর্ব - ১
লিখেছেন লিখেছেন শিহাব আহমদ ২২ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৫:৫০:৫৬ সকাল
সর্ব যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের প্রেরিত নবী ও রাসুল। মানব জাতিকে সরল ও সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য মহান আল্লাহ্ যুগে যুগে যে সব নবী ও রাসুল প্রেরণ করেছেন তাদের মধ্যে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ। তিনি সমগ্র মানব জাতির জন্য প্রেরিত হয়েছেন। আরবের ঊষর মরুর বুকে তিনি তাঁর পূর্ব পুরুষ হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও তাঁর পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) এর স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র মক্কা নগরীতে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ এবং মাতার নাম আমেনা। আরবের বিখ্যাত কোরাইশ বংশে তাঁর জন্ম। তিনি যে যুগে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ইতিহাসের পাতায় তা 'আইয়ামে জাহিলিয়াত’ অর্থাৎ অন্ধকার যুগ নামে পরিচিত। রোমক ও পারসিক তৎকালীন দুটো বিশাল সভ্যতার অতি কাছাকাছি অবস্থান করেও আরব ছিল সম্পূর্ণ স্বাধীন। সেই সব সভ্যতার ছিটেফোঁটা প্রভাবও তাদের ওপর পড়েনি। বহু গোত্রে বিভক্ত আরব জাতি ছিল মরুচারী বেদুঈন। তাদের কোন সরকার ছিল না। একমাত্র নিজ গোত্রের প্রতি আনুগত্য ছাড়া আর অন্য কোন কিছুর পরোয়া তারা করত না। ফলে গোত্রে গোত্রে হানাহানি, রেষারেষি ও কোন্দল এবং প্রতিহিংসার বশে প্রজন্ম থেকে প্রজান্মান্তর অবধি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়াই ছিল এদের রীতি। হত্যা, লুটপাট, দস্যুবৃত্তি, মদ্যপান, জুয়াখেলা, বেশ্যাবৃত্তির মত কোন অপরাধ বা অপকর্ম বাদ ছিল না যা তারা করত না। এমন কি নিজের কন্যা সন্তানকেও জীবন্ত কবর দিতেও তাদের কোন দ্বিধাবোধ ছিল না। বেপরোয়া জীবনের অধিকারী এসব মানুষ ছিল অনেকটা হৃদয়হীন পাষাণতুল্য। রুক্ষ প্রতিকূল পরিবেশে গড়ে ওঠা শত শত বছরের লালিত নির্মম কঠিন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের এসব মানুষ বন্য হিংস্র পশুকেও হার মানায়। পৌত্তলিকতায় তাদের মন-প্রাণ ছিল আচ্ছন্ন। পাথর, গাছ, তারকা, মূর্তি, প্রেতাত্মা, এমন কিছু নেই যার উপাসনা তারা করত না। পবিত্র মক্কা নগরীর কাবা গৃহে অধিষ্ঠিত ৩৬০টি মূর্তির পূজা-অর্চনায় তারা ছিল নিবেদিত। তাদের লক্ষ্যহীন জীবন ধর্মীয় নীতি ও মূল্যবোধ থেকে বহু দূরে সরে গিয়েছিল। যদিও তাদের মাতৃভাষা আরবী তৎকালীন সময়ের এক সমৃদ্ধ সাবলীল ভাষা হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিল এবং আরবদের কাব্য প্রতিভাও ছিল উন্নত, তবুও তাদের চিন্তাধারা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি ছিল বন্ধ্যা ও পশ্চাদমুখী।
এ পরিবেশেই জন্ম গ্রহণ করেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এ সমাজে বড় হয়ে ওঠা এই মহান ব্যক্তিত্বের জীবন ছিল বিস্ময়কর। জন্মের কিছুদিন পূর্বে তিনি পিতৃহারা হন। তাঁর দাদা কোরাইশ সর্দার আব্দুল মুত্তালিব এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবজাত নাতীর নাম রাখেন মুহাম্মদ। উপস্থিত অতিথিবৃন্দ তাঁর এ অনন্য নামকরণের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পৃথিবী ও আকাশের সব জায়গা থেকে আমার নাতীর প্রশংসা করা হবে এ আশায় আমি এ নামকরণ করেছি। আরবের রীতি অনুযায়ী শিশু মুহাম্মদকে দুধ পানের জন সাআদ গোত্র থেকে আগত হালিমাকে ধাত্রীমাতার দায়িত্ব প্রদান করা হয়। হালিমার তত্ত্বাবধানে তিনি পাঁচ বছর সাআদ গোত্রে লালিত পালিত হওয়ার সময়ে আরবের বিশুদ্ধ ও সুললিত আরবী ভাষা জ্ঞান লাভ করেন। এরপর হালিমার গৃহ থেকে মা আমেনার কোলে ফিরে আাসেন। মাত্র ছয় বছর বয়সে তিনি তাঁর মাকেও চিরদিনের মত হারিয়ে ফেলেন। তখন এতীম এ শিশুর অভিবাকত্বের দায়িত্ব পড়ে দাদা আব্দুল মুত্তালিবের ওপর। বিপদ যেন তাঁর পিছু ছাড়তেই চায় না। মাতৃবিয়োগের শোক কাটাতে না কাটাতেই দুবছর পর স্নেহপরায়ণ দাদাও পরপারে চলে যান। এ অবস্থায় চাচা আবু তালিব বালক মুহাম্মদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। জ্ঞানী-গুণী আবু তালেব পিতা আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পর কোরাইশ সর্দারের দায়িত্ব লাভ করেন। কিন্তু আর্থিক দিক দিয়ে তিনি তেমনটা স্বচ্ছল ছিলেন না। তারপরও ভ্রাতষ্পুত্র মুহাম্মদ (সাঃ) এর দায়িত্ব তিনি খুশী মনেই গ্রহণ করেন।
পিতুব্যের অস্বচ্ছলতার কারণে তিনি লেখাপড়ার সুযোগ পাননি। বরং চাচার সংসারে টুকটাক গৃহকর্ম এবং রাখাল হিসেবে মেষ ও বকরী চরানোর দায়িত্ব পালন করেন। লেখাপড়ার সুযোগ না পেলেও উন্মুক্ত প্রকৃতি ছিল তাঁর পাঠশালা। বিশ্ব প্রকৃতি তাঁর চিন্তা চেতনায় সেই ছোট বেলা থেকেই গভীর রেখাপাত করে। তিনি অন্য শিশুদের মত ছিলেন না। তাঁর চলন-বলন ও আচার-আচরণে এক ঐশ্বরিক প্রভাব পরিলক্ষিত হত। বাল্যকাল থেকেই তাঁর চরিত্র ছিল নির্মল। তিনি ছিলেন সদা সত্যবাদী, মিথ্যা কখনও তাঁকে স্পর্শ করেনি। বিশ্বস্ততায় তিনি ছিলেন অনন্য। তিনি ছিলেন ধীর-স্থির ও নম্র প্রকৃতির। আরবের উদ্দাম বুনো পাশবিক সংস্কৃতির লেশ মাত্র প্রভাব তাঁর চরিত্রে ছিল না। স্বভাবগতভাবেই তিনি বড় হয়ে ওঠেছিলেন আপন বলয়ে এক ঐশী পরশে যা তাঁর ব্যক্তিত্ব ও চিন্তা-চেতনায় ছিল দীপ্তিমান। আপন সমাজের দ্বন্দ-সংঘাত, বেহায়া-বেলেল্লেপনা এবং অনৈতিক কর্মকান্ড থেকে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ মুক্ত। সমাজের পদস্খলন তাঁকে বেদনাহত করত ঠিকই, কিন্তু সমাজের এ দুরারোগ্য ব্যাধি উপশমের পথ তিনি খুঁজে পাচ্ছিলেন না। একটি শ্বাশ্বত সত্যের সন্ধানে তাঁর মন সদা উন্মুখ হয়ে থাকত, তিনি শুধু ভাবতেন এ তমসাচ্ছন্ন সমাজ কবে আলোকিত হয়ে ওঠবে। বয়োবৃদ্ধির সাথে সাথে তাঁর চারিত্রিক মাহাত্ম্যে চারদিক প্রতিভাত হয়ে ওঠল। তিনি সমাজে 'সাদেক’ (সত্যবাদী) ও 'আল-আমীন’ (বিশ্বস্ত) নামে পরিচিতি পেলেন। দ্বন্দ-সংঘাতের সময় বিভিন্ন গোত্রের, এমন কি প্রতিপক্ষ গোত্রের লোকজনও তাঁর নিকট তাদের মূল্যবান সামগ্রী আমানত রাখত। সে সময়ে যে কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ চলত। এসব যুদ্ধের বিভিষীকা দূরীকরণ এবং যুদ্ধপীড়িত মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে 'হিলফুল ফুযুল’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন তৈরী হয়েছিল। এ সংগঠনের সাথে কিশোর মুহাম্মদ (সাঃ) সরাসরি যুক্ত থেকে আর্ত-মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন।
যৌবনের প্রারম্ভে পিতৃব্য আবু তালিবের সাথে তিনি ব্যবসায়িক সফরে নিয়োজিত হলেন। ব্যবসায়িক লেনদেনে তিনি সততা ও নিষ্ঠার পরিচয় দেন। তাঁর এ সুখ্যাতি খাদীজা (রাঃ) নাম্নী এক বিধবা ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মহিলার নজরে আসে। তিনি যুবক মুহাম্মদ (সাঃ) কে তাঁর ব্যবসায়িক কাফেলার দায়িত্ব অর্পণ করেন। কাফেলার লোকজনের সাথে তাঁর সহৃদয় ব্যবহার, ব্যবসা পরিচালনায় তাঁর সততা ও দক্ষতা খাদীজা (রাঃ) কে বিমুগ্ধ করে। খাদীজা (রাঃ) এর ইতিপূর্বে দু’বার বিয়ে হয়েছিল এবং তাঁর দুই স্বামীই মৃত্যুবরণ করেন। আরবের দূষিত সমাজে খাদীজা (রাঃ) তাঁর অনুপম চরিত্রের কারণে 'তাহিরা’ বা পবিত্রা নামে ভূষিত হয়েছিলেন। দু'বার বিধবা হওয়ার পর পরবর্তী বিয়েতে তাঁর আর কোন আগ্রহ ছিল না। আরবের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তাঁর নিকট বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়ে প্রত্যাখ্যাত হন। সেই খাদীজা (রাঃ) যুবক মুহাম্মদ (সাঃ) এর গুণাবলীতে মুগ্ধ হয়ে চাচা আবু তালিবের মাধ্যমে তাঁর নিকট বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। এ সময় খাদীজা (রাঃ) এর বয়স তখন চল্লিশ বছর এবং মুহাম্মদ (সাঃ) মাত্র পঁচিশ বছরের যুবক ছিলেন। এ অসম বয়সী বিয়েতে তিনি রাজী হয়েছিলেন খাদীজার (রাঃ) প্রভূত সম্পদের কারণে নয়, বরং তাঁর সুন্দর চরিত্র ও সদাচারের কারণে। বিয়ের পর তিনি তাঁর স্ত্রীর অনুমতিক্রমে এ বিপুল সম্পদ গরীব-দুঃখী ও এতীমদের কল্যাণে বিলিয়ে দেন। তাঁর দাম্পত্য জীবন ছিল অত্যন্ত মধুর। খাদীজা (রাঃ) এর প্রগাঢ় ভালবাসা ও আনুগত্যে তাঁর জীবনে এক গভীর প্রশান্তি নেমে আসে। তিনি যেমন ছিলেন প্রেমময় স্বামী, তেমনি স্নেহশীল পিতা এবং দায়িত্বপূর্ণ গৃহকর্তা। আরব সমাজে কন্যাসন্তানের জন্মদান খুবই অবমাননাকর হলেও খাদীজা (রাঃ) এর গর্ভে তাঁর চারটি কন্যাসন্তান ছিল তাঁর অতি প্রিয়। তাঁদের প্রতি তাঁর মমত্ববোধ ছিল অফুরন্ত। তিনি আত্মীয়তার সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। তাঁর নিকট রক্তের বন্ধন ছিল পবিত্র। প্রতিবেশীদের প্রতি তাঁর সদাচরণ ছিল দৃষ্টান্তমূলক। তাঁর সান্নিধ্যে শিশুরা থাকত প্রীত ও হাস্যময়। এক কথায় সমাজের সর্বস্তরে তিনি ছিলেন একজন গ্রহণযোগ্য ও সমাদৃত ব্যক্তিত্ব।
সহজাত সব গুণাবলীর অধিকারী ছিলেন মুহাম্মদ (সাঃ)। তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নিরক্ষর, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনার সুযোগ পাননি। এছাড়া কোন জ্ঞানী-গুণীর সংস্পর্শেও তিনি জ্ঞানার্জনের চেষ্টা করেননি। সে সময়ে প্রখ্যাত জ্ঞানী সাধক ওয়ারাকা ইবনে নওফেলের মক্কায় অবস্থান সত্ত্বেও তাঁর সান্নিধ্যে লাভের আগ্রহ মুহাম্মদ (সাঃ) এর অন্তরে জাগেনি। ফলে কোন পূর্বতন চিন্তা-চেতনা, জ্ঞান-দর্শন, ভাববাদ, ধর্মীয় অভিজ্ঞা তাঁর অন্তরে পরিপুষ্টি লাভের সুযোগ পায়নি। অথচ তিনি ছিলেন অন্তর্নিহিত জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও চিন্তা শক্তির অধিকারী। নিজ দিব্যজ্ঞানে যেভাবে জীবন পরিচালনা করা উত্তম মনে করতেন তিনি সেভাবেই জীবন যাপন করতেন। তাঁর মধ্যে পৌত্তলিকতার বিষয়টি ছিল নেতিবাচক, তিনি এ থেকে সম্পূর্ণ নিঃস্পৃহ ছিলেন। প্রায়ই তিনি যেতেন হীরা পর্বতের নিভৃত গুহায়, ধ্যান করতেন অনিমেষ এবং পরম সত্যের সন্ধানে ব্যাপৃত রাখতেন নিজেকে। তাঁর মন সর্বদা শ্বাশ্বত সত্যের ধ্যানে আপ্লুত থাকত। এভাবে প্রতি বছর রমযান মাসে তিনি হীরার গুহায় নির্জনবাসে অতিবাহিত করতেন। উপবাসব্রত পালনের মাধ্যমে তিনি আত্মিক উন্নয়নে সচেষ্ট ছিলেন। প্রেমময়ী স্ত্রী খাদীজা (রাঃ) এসময়ে তাঁকে পুরোপুরি সহযোগিতা করতেন। কিছু দিন পরপরই তিনি খাদ্য ও পানীয় নিয়ে প্রিয় স্বামীর সেবায় হীরা গুহায় যেতেন। এ মহিয়সী মহিলা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন তাঁর স্বামী ভবিষ্যতের একজন মহাপুরুষ হিসেবে পরিগণিত হবেন। হীরার গুহায় নিভৃত নির্জন পরিবেশে বহু দিনের সাধনায় তাঁর অন্তর এক মহাসত্যের পরশ লাভের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। পরম সত্যালোকের বারতা লাভের আশায় তিনি অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করছিলেন। সকল পূর্ব ধারণা বর্জিত তাঁর অন্তঃকরণ ছিল সম্পূর্ণ নিখাদ, পূত-পবিত্র, ঐশী জ্ঞান ধারণের জন্য এক উপযুক্ত ক্ষেত্র। পরম করুণাময আল্লাহ্ তায়ালা মানব জাতির পথ প্রদর্শক হিসেবে মনোনীত করার আগে তাঁকে সর্ব গুণে গুণান্বিত করে গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর বয়স চল্লিশ বছর পূর্ণ হলো। অবশেষে রমযান মাসের এক পবিত্র রজনীতে সেই পরম সত্যালোকের ঐশী বাণী নিয়ে হীরা পর্বতের গুহায় হাযির হলেন আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের দূত জিব্রাইল (আঃ)।
আল্লাহর নবী ও রসুল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি প্রথম বাণী নাযিল হলো: "পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন - সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহাদয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না” (৯৬: ১-৫)। 'পাঠ করুন’ ছোট্ট এ আহ্বানের দ্বারা সমস্ত সৃষ্টিলোকের জ্ঞানভান্ডারের দ্বার উন্মুক্ত করে দেওয়া হল তাঁর সম্মুখে। যে আশায় তিনি দিন গুনছিলেন, তাঁর সে স্বপ্ন আজ সত্যে পরিণত হল। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট থেকে ঘোষণা এলো: "আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না” (৩৪: ২৮)। মহান আল্লাহ্ তাঁকে নির্দেশ দিলেন: "ঘোষণা করুন, হে মানবমন্ডলী! তোমাদের সবার প্রতি আমি আল্লাহ্ প্রেরিত রসূল, সমগ্র আসমান ও যমীনে তাঁর রাজত্ব। একমাত্র তাঁকে ছাড়া আর কারো উপাসনা নয়। তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন। সুতরাং তোমরা সবাই বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহর ওপর, তাঁর প্রেরিত নিরক্ষর নবীর উপর - যিনি বিশ্বাস রাখেন আল্লাহ্ এবং তাঁর সকল বাণীর ওপর। তাঁর (নবীর) অনুসরণ কর যাতে সরল পথপ্রাপ্ত হতে পার" (৭:১৫৮)। সমগ্র মানব জাতির প্রতি এ আহ্বানই বলে দেয় যে, তিনি সর্বজনীন নবী ও রসুল। (চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১৫২৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন