রমযান মাসের মাহাত্ম্য

লিখেছেন লিখেছেন শিহাব আহমদ ৩০ জুলাই, ২০১৩, ০২:৩১:২০ রাত

ইসলামের প্রতিটি ইবাদতের গুরুত্বই অপরিসীম। প্রতিটি ইবাদতের মধ্যেই রয়েছে মানবজাতির ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ। এরই ধারাবাহিকতায় এসেছে রমযান মাস। মুসলমানদের জীবনে দুটি প্রধান কারণে এ মাসের গুরুত্ব সর্বাধিক। প্রথমত, রমযান সিয়াম সাধনার মাস, দ্বিতীয়ত, এটি ঐশী গ্রন্থ পবিত্র কুরআন নাযিলের মাস। আল্লাহর তরফ থেকে তাঁর প্রিয় বান্দাদের জন্য এ দুটি মহা মূল্যবান উপহার রমযান মাসেই অবতীর্ণ হয়েছে। এ মাসেই মহিমান্বিত একটি রাত বিরাজমান যার ফযিলত হাজার মাস থেকেও উত্তম। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন, "আমি একে (কুরআনকে) নাযিল করেছি ক্বদরের (সম্মানিত) রাতে। আপনি কি জানেন ক্বদরের রাত কি? ক্বদরের রাত হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ”(৯৭:১-৩)। হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে শাবান মাসের শেষ দিবসে আল্লাহর নবী (সাঃ) আসন্ন রমযান মাসের তাৎপর্য তোলে ধরতে গিয়ে বলেন, "হে লোক সকল, একটি মহান মাস তোমাদের সামনে উপস্থিত, এ রহমতের মাসে এমন একটি রাত বিদ্যমান যা হাজার রাতের চেয়েও উত্তম। আল্লাহ্ এ মাসে সিয়াম পালনকে ফরজ করেছেন এবং এর রাতগুলোকে নফল এবাদতের জন্য নির্দ্ধারিত করেছেন”। আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্নিত হাদীসে নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদরে ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদাত করে, তাঁর পিছনের সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমযানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে” (বোখারী)। রমযান মাসের ত্রিশটি দিনকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এর প্রথম দশক রহমতের, দ্বিতীয় দশক মাগফিরাতের, আর তৃতীয় দশক নাজাতের জন্য নির্দ্ধারিত। রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, "রমজানের প্রথম দশদিন দিন রহমতের, দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাতের এবং তৃতীয় দশদিন জাহান্নাম থেকে নাজাত প্রাপ্তির" (মিশকাত)। এক মাস ব্যাপী সিয়াম সাধনার প্রথম ধাপে রোজাদার বান্দারা অর্জন করে আল্লাহর অপার করুণা, দয়া ও রহমত; দ্বিতীয় ধাপে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা তাঁর অসীম ক্ষমার দ্বারা ক্ষমাপ্রার্থী পাপী-তাপী বান্দাদের গুনাহসমূহ মাফ করে দেন; আর তৃতীয় ধাপে তিনি তাঁর অবারিত ক্ষমা ও দয়ার দ্বার বিশেষভাবে উন্মুক্ত করে দেন এবং অনুতপ্ত ও অনুশোচনাগ্রস্ত বান্দাদেরকে জাহন্নামের আগুন ও শাস্তি থেকে মুক্তি প্রদান করেন।

এ মাসে আল্লাহ্ রাব্বুল আলমীন মুসলিম নর-নারীর জন্য রোজা পালন ফরজ করেছেন। ইসলামের পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভের মধ্যে রমযান মাসের রোজা একটি অন্যতম স্তম্ভ। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাাহ ইরশাদ করেন, "হে ঈমানদারগণ, তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান ফরজ করা হলো, যেমনি করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববর্তীদের প্রতি, যাতে তোমরা তাকওয়া (পরহেজগারী ও আল্লাহর নৈকট্য) অর্জন করতে পারো” (২:১৮৩)। অপর অয়াতে রমযান মাসের দ্বিতীয় মাহাত্ম্য সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন, "রমযান হলো সেই মাস, যাতে নাযিল হয়েছে মানুষের জন্য দিশারী, সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্য ও অসত্যের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়কারী আল-কোরআন। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে তারা এতে সিয়াম পালন করবে” (২:১৮৫)। এ মহিমান্বিত মাসের সবচেয়ে বড় নিয়ামত হলো এ মাসে মানবজাতির হেদায়েত স্বরূপ পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ বলেন, "রমযান এমন একটি মাস, যখন মানবজাতির পথ প্রদর্শনের জন্য কুরআন নাযিল করা হয়েছে” (২:১৮৫)। ঐশী গ্রন্থ নাযিলের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ্ বলেন, " ... অতঃপর যখন আমার তরফ থেকে তোমাদের নিকট পথ-নির্দেশনা আসবে, আর এ নির্দেশনা যারা অনুসরণ করবে তাদের জন্য থাকবে না কোন ভয়, আর তাদেরকে সন্তপ্ত হতে হবে না”(২:৩৮)। রমযান মাসে কুরাআন অবতীর্ণ হয়েছে বিধায় এ মাসে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত একটি অতি উত্তম ইবাদত। এ মাসে যত বেশি করে কুরআন তেলাওয়াত করা হবে তত বেশী সওয়াব হাসিল হবে। এ মাসেই নবী করিম (সাঃ) কুরআনের বাণী বাহক জিবরাইল (আঃ) কে কুরআন পাঠ করে শুনাতেন এবং তাঁর কাছ থেকে কুরআন শুনতেন। তিনি (সাঃ) জীবনের শেষ রমযানে কুরআন তেলাওয়াত দুবার খতম করেছেন।

একদিকে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে চারিত্রিক ও আত্মিক পরিশুদ্ধি অর্জন, অপরদিকে পবিত্র কুরআনের আলোকে জীবন গড়ে তোলার যে মহতী প্রচেষ্টা বিদ্যমান তা রমযান মাসকে মহিমান্বিত করেছে। এ মাসের প্রতিদিন ঊষালগ্ন সুবেহ্-সাদেক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব রকম পানাহার ও স্ত্রী-সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে এবং একই সাথে সব ধরনের অশ্লীলতা, মিথ্যাচার, পাপাচার ও কুচিন্তা-ভাবনা থেকে দেহ ও মনকে মুক্ত রেখে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট তাঁর অপার রহমত কামনা করতে হবে, সকল গুনাহের জন্য তাঁর নিকট কায়মনোবাক্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং দোজখের আগুন থেকে নাযাত চাইতে হবে। এটাকে পরিশুদ্ধ জীবন গড়ার মাসব্যাপী সাধনা বলা যেতে পারে। সিয়াম সাধনার গুরুত্ব ও উপকারিতা বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ্ বলেন, "যে ব্যক্তি খুশীর সাথে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি রোজা রাখ, তবে তোমাদের জন্যে তা বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পার” (২:১৮৪)। অসমর্থ অবস্থায় রোজায় উপবাসের কষ্ট লাঘবের নির্দেশনা দিয়ে দয়াময় আল্লাহ্ বলেন, ".... তবে যদি কেহ অসুস্থ হয়ে পড়ে কিংবা সফরে থাকে, (তবে) সে গুনে গুনে সে পরিমাণ দিন পরবর্তী (কোন সময়ে) পূরণ করে নেবে; (এ সুযোগ দিয়ে) আল্লাহ্ তোমাদের (জীবন) সহজ করে দিতে চান, আল্লাহ্ কখনোই তোমাদের (জীবন) কঠোর করে দিতে চান না। আল্লাহর উদ্দেশ্য হচ্ছে, তোমরা যেন গুনে গুনে রোজার সংখ্যাগুলো পূরণ করতে পার, আল্লাহ্ তোমাদেরকে (কুরআনের মাধ্যমে জীবন যাপনের) যে পদ্ধতি শিখিয়েছেন তার জন্য তোমরা তাঁর মহত্ত্ব বর্ণনা করতে পার এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পার”(২:১৮৫)। শারীরিক অসমর্থতার কারণে ক্বাজা রোজা আদায় করা যদি নেহায়েৎ সম্ভব না হয়, সে বিষয়ে আল্লাহর বিধান হলো: "আর এটি যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্যদান করবে” (২:১৮৪)।

রমযানের শুরুতেই আল্লাহ্ রাব্বুল আলমীন তাঁর রহমতের দ্বার বান্দাদের জন্য খুলে দেন। এ প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, "যখন রমযান শরীফের প্রথম রাত্রি উপস্থিত হয়, তখন আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয়। রমজান মাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব দরজা আর বন্ধ করা হয় না। সমগ্র রমযান অবধি আল্লাহ্ তাঁর বান্দার সকল সগীরা গুনাহ মাফ করে দেন এবং প্রত্যেক দিন ফজরের নামাজ হতে মাগরিব পর্যন্ত বান্দার পক্ষে মাগফেরাতের দোয়া করার জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা মোতায়েন করেন”। কোন এক জুমআর খুৎবায় মিম্বরে ওঠতে গিয়ে নবী করিম (সাঃ) তিনবার আমীন উচ্চারণ করলেন। নামায শেষে সাহাবাগণ এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, এ সময় জিব্রাইল (আঃ) তাঁর নিকট এসে তিনটি দোয়া পাঠ করলেন এবং এর উত্তরে তিনি তিনবার আমীন বলেন। এর একটি দোয়া ছিল যেসব হতভাগ্য মানুষ রমযান মাস পেল অথচ তাদের গুনাহ মাফ করাতে পারল না তাদের ওপর আল্লাহর লানত, এর উত্তরে তিনি বললেন আমীন। আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্নিত হাদীসে রসুল (সাঃ) বলেন, "রমযান মাসের আগমণে আল্লাহর রহমতের সাথে সাথে আসমানের সবগুলো দরজা খুলে দেয়া হয়, আর জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। আর মানুষের চির শত্রু শয়তানকে শৃংখলিত করে রাখা হয়” (বোখারী ও মুসলিম)। নবী (সাঃ) বলেন, "অন্যান্য আমলের সওয়াব নির্দিষ্ট আছে, কিন্তু রোজা খাস করে আল্লাহর জন্য, এর সওয়াব আল্লাহ্ নিজ হাতে দান করবেন। নবী করিম (সাঃ) আরো বলেন, যার মুষ্টিতে আমার প্রাণ সে আল্লাহর শপথ, রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশকের সুগন্ধ অপেক্ষাও উৎকৃষ্ট। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশগুন। রোজাদারের জন্য রয়েছে দুটি খুশী যা তাকে খুশী করে। যখন সে ইফতার করে, সে খুশী হয় এবং যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সাওমের বিনিময়ে আনন্দিত হবে” (বোখারী)। রমযানের একটি ফরজ ইবাদত অন্য মাসের দশটি ফরজ ইবাদতের সমতূল্য, আর একটি নফল ইবাদত অন্য সময়ের একটি ফরজ ইবাদতের সমতুল্য হবে।

রমযান মিতাচার ও সংযম সাধনার মাস। সিয়াম সাধনার দ্বারা মানবাত্মার পরিশুদ্ধি অর্জিত হয়। তাই সমাজ সংস্কারে সিয়াম সাধনার গুরুত্ব অপরিসীম। আবু হোরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে নবী করিম(সাঃ) বলেন, "রোজা ঢাল স্বরূপ। রোজা রেখে যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী খারাপ আমল করা বর্জন করেনি, তাঁর এ উপবাস আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই” (বোখারী)। অর্থাৎ সিয়াম সাধনার উদ্দেশ্য হলো যাবতীয় কুপ্রবৃত্তি, হারাম, পাপাচার ও গুনাহ থেকে রোজাদারের দেহ ও মনকে পরিশুদ্ধ করে তার চরিত্র ও আত্মার উন্নয়ন সাধন। রমযান সংযম প্রশিক্ষণের মাস, আত্মিক ও নৈতিকতার উন্নতি সাধনের এবং নফসের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাস। এ মাসে সিয়াম সাধনা দ্বারা পঞ্চ ইন্দ্রিয় ও অন্তরের সকল কুপ্রবৃত্তি ও কুচিন্তা-ভাবনাকে বশীভূত করতে হবে এবং প্রতিটি ব্যাপারে সংযত আচরণ করতে হবে। কিন্তু যে ব্যক্তি রোজা পালন করেও নিজের বদ আমলগুলো পরিত্যাগ করে না, তার রোজা পালনের কোন মানেই হয় না। আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত বোখারী শরীফের অপর হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, "আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন, সাওম ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তাঁর নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেব। সিয়াম ঢাল স্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন সিয়াম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। কেউ যদি তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন রোজাদার”। একজন মানুষ ইচ্ছে করলেই লুকিয়ে পানাহার করতে পারে, কিন্তু খোদা-ভীতি তাকে তা করতে দেয় না। কেননা, সে জানে লোক চক্ষুর অন্তরালে অন্যায় কাজ করতে পারলেও আল্লাহর নিকট কোন কিছুই গোপনীয় থাকে না। সিয়াম সাধনা দ্বারা অর্জিত এ উপলব্ধী মানুষকে সর্ববস্থায় সৎ রাখে এবং যাবতীয় অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।

মানবতার কল্যাণকামী কুরআনকে আল্লাহ্ সত্য দ্বীনসহ নাযিল করেছেন যা মানুষের জীবনকে পরিশুদ্ধ ও পবিত্র করে তোলে। কুরআন মানবজাতির জন্য পথ-প্রদর্শক এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী এক আলোকবর্তিকা স্বরূপ। আলোর আগমণে যেমন আঁধার দূরীভূত হয়ম তেমনি কুরআনরূপী সত্যের আগমণে মিথ্যা দূর হয়ে যায়। আর এর দ্বারা মানুষ সঠিক পথ চিনে নিতে পারে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেন, "বলুন (হে নবী), সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা (মানুষের অন্তরের) রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত স্বরূপ” (১৭:৮১-৮২)। "আমি সত্যসহ এ কোরআন প্রেরণ করেছি এবং সত্যসহ এটা প্রেরিত হয়েছে” (১৭:১০৫)। আল্লাহ্ কুরআনের বাণী যথাযথভাবে উপলব্ধী করার জন্য তা মানুষের জন্য বোধগম্য ও সহজসাধ্য করে দিয়েছেন। কিভাবে তারতীলের সাথে তা পাঠ করতে হবে সে সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন, "আমি কোরআনকে বিরতিসহ পৃথক পৃথকভাবে পাঠের উপযোগী করেছি, যাতে আপনি একে লোকদের কাছে ধীরে ধীরে পাঠ করেন এবং আমি একে যথাযথভাবে অবতীর্ণ করেছি। বলুন, তোমরা কুরআনকে মান্য কর অথবা অমান্য কর; যারা এর পূর্ব থেকে জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছে, যখন তাদের কাছে এর তেলাওয়াত করা হয়, তখন তারা নতমস্তকে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে। এবং বলে, আমাদের পালনকর্তা পবিত্র, মহান। নিঃসন্দেহে আমাদের পালকর্তার ওয়াদা অবশ্যই পূর্ণ হবে। তারা ক্রন্দন করতে করতে নতমস্তকে ভুমিতে লুটিয়ে পড়ে এবং তাদের বিনয়ভাব আরো বৃদ্ধি পায়। বলুন, আল্লাহ্ বলে আহ্বান কর কিংবা রহমান বলে, যে নামেই আহ্বান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই। আপনি নিজের নামায আদায়কালে স্বর উচ্চগ্রামে নিয়ে গিয়ে পড়বেন না এবং নিঃশব্দেও পড়বেন না। এতদুভয়ের মধ্যমপন্থা অবলম্বন করুন” (১৭:১০৬-১১০)।

সিয়াম সাধনার পাশাপাশি পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত রমযান মানের এক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কুরআন নাযিলের কারণে এ মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। কুরআন তেলাওয়াতে অশেষ ফযিলত থাকলেও এর অর্থ ও ব্যাখ্যা হাদীস, ইজমা ও কিয়াসের আলোকে হৃদয়ঙ্গম করার মধ্যেই রয়েছে তেলাওয়াতের পূর্ণ সার্থকতা। প্রতিদিন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মানুষ যখন কুরআনকে সঠিকভাবে বুঝতে পারবে তখন তার অন্তর কোমল ও পরিশুদ্ধ হবে। এর ফলে সে কুরআনের বিধান মোতাবেক আমল করার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠবে। মানুষের অন্তর ও কর্ম যখন কুরআনাভিমুখী হয়ে ওঠবে তখনই সে অর্জন করতে পারবে দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা। ইয়া আল্লাহ্! আপনি আমাদেরকে রমযান মাসের পুরোপুরি ফযিলত দান করুন, আমীন!

বিষয়: বিবিধ

১৩৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File