ইসলাম ধর্মে মহিলাদের অবস্থান ও মর্যাদা
লিখেছেন লিখেছেন শিহাব আহমদ ১৫ মে, ২০১৩, ১০:০৭:২৬ রাত
মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের সেরা সৃষ্টি হলো মানুষ। নর ও নারী হলো তাঁর সৃষ্টির এক অপূর্ব নিদর্শন। ¯ªষ্টা মানুষকে একক ব্যক্তিসত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি সৃষ্টির প্রথম মানব আদমকে সৃষ্টি করার পর আদমের মধ্য থেকেই প্রথম মানবী হাওয়াকে তাঁর সঙ্গীনী হিসেবে সৃষ্টি করেন। তাঁরা ছিলেন পরস্পর জুড়ি এবং এ আদি যুগলের প্রেম-প্রীতি ও ভালবাসার ফসল হলো পৃথিবীর মানব সমাজ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলেন, Òএবং তাঁর (আল্লাহ্র) নিদর্শন সমূহের মধ্যে এটিও একটি যে, তিনি তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের জন্য সঙ্গীনী সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা তাদের মধ্যে মানসিক সুখ-শান্তি লাভ করতে পার এবং তিনি তোমাদের (উভয়ের) অন্তরে পারস্পরিক ভালবাসা ও সৌহার্দ্যরে বন্ধন সৃষ্টি করেছেন। অবশ্যই চিন্তাশীল লোকদের জন্য এতে রয়েছে নিদর্শনাবলী (৩০:২১)Ó। পৃথিবী জুড়ে মানব প্রজাতির বিস্তার একই উৎস থেকে। নবী করিম (সাঃ) বিদায় হজ্বের ভাষণে বলেন, Ôসকল মানুষ আদমের বংশধর এবং আদম মাটি থেকে তৈরী। অনারবের ওপর আরবের, আরবের ওপর অনারবের, কালোর ওপর সাদার অথবা সাদার ওপর কালোর কোনই শ্রেষ্ঠত্ব নেই শুধুমাত্র পরহেজগারী ছাড়া।’ আজকের জাতিসংঘ বিশ্বের সকল রাষ্ট্রকে একই প্ল্যাটফরমের আওতায় এনে প্রমাণ করেছে মানবাধিকার রক্ষায় এবং পারস্পরিক সহমর্মীতায় ও সহযোগিতায় সমগ্র মানব জাতি এক এবং অভিন্ন।
প্রকৃতিগত কারণে নারী শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল হওয়ার সুযোগে যুগে যুগে তাদের অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে এবং তাদের ওপর চলেছে নির্যাতন-নিপীড়ন। এক সময় ছিল যখন নারীকে মানুষ বলেই স্বীকার করা হত না। ইসলামপূর্ব জাহেলিয়াত যুগের আরব সমাজে কন্যা শিশুর জন্ম ছিল অপমানজনক অভিশাপ, তাদেরকে জীবন্ত কবর দেয়ার প্রথা প্রচলিত ছিল। পুরুষেরা নারীকে সেখানে গৃহের সাধারণ আসবাবপত্রের মতই নিজস্ব সম্পত্তি মনে করত। বিয়ে-শাদীতে তাদের মতামতের অধিকার ছিল না এবং তারা পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়ের সম্পদে উত্তরাধিকারী হতে পারত না। ধর্ম-কর্মেও মেয়েদের কোন অংশগ্রহণ স্বীকৃত ছিল না। ভারতীয় হিন্দু সমাজে কন্যা সন্তানের জন্মকে অভিশাপ বলে অনেকে মনে করে এবং সম্পদের উত্তরাধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চিত রাখা হয়। একসময় ছিল যখন এ সমাজে বিধবা বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল, এমন কি বিধবা স্ত্রীকে মৃত স্বামীর চিতায় জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা হত। ইউরোপীয় সমাজে নারীর মানব সত্ত্বাকে অস্বীকার করা হত, নারীকে ডাইনী হিসেবে চিহ্নিত করে পুড়িয়ে মারা হত, বিয়ের পর নারীর সকল সম্পদের মালিক হত তার স্বামী।
বর্তমান সভ্যতা প্রাকৃতিক নিয়মকে উল্টে দিতে চাইছে। মানব জীবনের উদ্দেশ্য শুধু ভোগবাদী সমাজ গঠন ও বস্তুবাদী সমৃদ্ধি অর্জন নয়, বরং মানুষ তার জৈবিক ও আত্মিক চাহিদার মধ্যে সমন্বয় সাধন করে একটি মধ্যপন্থী জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলবে এটাই জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত। আধ্যাত্মিকতাকে বিসর্জন দিয়ে কখনোই মানবিক কল্যাণ অর্জন করা সম্ভব নয়, এটাকে বাদ দিলে মানুষ আর পশুতে কোন প্রভেদ থাকে না। আল্লাহ্ মানুষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, Òহে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে একই ব্যক্তিসত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের যুগল থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। আর আল্লাহ্কে ভয় কর, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট অধিকার দাবী করে থাক এবং আত্মীয়-স্বজনদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন (৪:১)Ó। উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন পুরুষ ও নারীর পারস্পরিক সম্পর্ক, অধিকার ও দায়িত্বের ব্যাপারে খোদা-ভীতিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মানব জাতিকে সতর্ক করেছেন। কারণ খোদা-ভীতি ব্যতীত শুধুমাত্র আইন দ্বারা নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। নারী অধিকার সুরক্ষা বিষয়ে এত গভীর, সুস্পষ্ট ও অর্থবহ বাণী আর কোথাও আছে কি না তাতে সন্দেহ রয়েছে। ইসলাম সপ্তম শতাব্দীতে নারীকে যেভাবে মূল্যায়ন করেছে এবং তার অধিকার সুরক্ষিত করেছে তা আজকের বিশ্বেও এক বিস্ময়কর ব্যাপার।
মহান আল্লাহ্ স্বয়ং ইসলামকে একটি মধ্যপন্থী ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, Òএমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী সম্প্রদায় করেছি ......Ó (২.১৪৩)। এ মধ্যমপন্থী নীতি অনুযায়ী ইসলামে নারী ও পুরুষের সম্পর্কের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে। ইসলামে নারী ও পুরুষ পরস্পরের প্রতিদ্বন্দী নয়, বরং একে অপরের সহায়ক ও বন্ধু। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ বলেন, Òবিশ্বাসী পুরুষ ও বিশ্বাসী নারীরা হচ্ছে একে অপরের বন্ধু। তারা (লোকজনকে) সৎ কাজের তাগিদ দেয়, অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। তারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত আদায় করে, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে, এরাই হচ্ছে সে সব মানুষ যাদের ওপর আল্লাহ্র দয়া বর্ষিত হবে; অবশ্যই আল্লাহ্ তায়ালা পরাক্রমশালী ও কুশলী” (৯:৭১)। এসব নর-নারী যে এ দুনিয়ায়ই পুরস্কৃত হবে তা নয়, পরকালেও তাদের জন্য আল্লাহ্ রেখেছেন অনন্ত সুখ ও শান্তি। তাদের জন্য আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি হচ্ছে, Ò(আর এসব) ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে আল্লাহ্ তায়ালা এমন এক সুরম্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান থাকবে, সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে, (চিরস্থায়ী) জান্নাতে তাদের জন্য মনোরম বাসস্থানের ব্যবস্থা থাকবে; (সেদিনের) সব চাইতে বড় নেয়ামত হবে (তাদের প্রতি) আল্লাহ্ তায়ালার সন্তুষ্টি; এটাই হবে (সেদিনের) সবচেয়ে বড় সাফল্য” (৯:৭২)।
পরিবারকে একটি শান্তিময় আবাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন নিত্যদিনের যে প্রার্থনা শিক্ষা দিয়েছেন তা হলো: Òহে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রী এবং আমাদের সন্তান-সন্ততির পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা (নয়ন-প্রীতিকর শান্তি) দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের (খোদাভীরু) জন্যে আদর্শস্বরূপ কর” (২৫:৭৪)। উপরে আলোচিত ইসলামী সমাজ দর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলাম নারীদেরকে যেসব যৌক্তিক অধিকার দিয়েছে তা নি‡¤œ তুলে ধরা হলো:
১. পবিত্র কুরআনের ভাষায় Òপিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষদের অংশ আছে এবং পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীদেরও অংশ আছে; তা অল্প হোক কিংবা বেশী। এ অংশ নির্ধারিত (৪:৭)Ó। এ বন্টনের ক্ষেত্রে পুরুষের অংশ নারীর চেয়ে দ্বিগুণ রাখা হয়েছে, কারণ সাংসারিক ব্যয়ের দায়িত্ব পুরোপুরিভাবে পুরুষের ওপর ন্যস্ত, নারীকে এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। নারীর উপার্জিত আয় তাকে স্বাধীনভাবে খরচ করার অধিকার দান করা হয়েছে। মহান আল্লাহ্ সবাইকে লোভ সংবরণ করতে এবং সংযমী হতে নির্দেশ দিয়ে বলেন, Òআর তোমরা আকাঙ্খা করোনা এমন সব বিষয়ে যাতে আল্লাহ্ তোমাদের একজনের ওপর অন্যজনের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে তা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে তা তার অংশ। আর আল্লাহ্ তায়ালার কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত (৪:৩২)Ó। এভাবে নারী পেয়েছে সম্পদ অর্জন ও তা স্বাধীনভাবে ভোগ ও ব্যয় করার অধিকার। উত্তরাধিকার ছাড়াও অন্য যে কোন বৈধ উৎস থেকে সম্পদ অর্জন করার অধিকার ইসলাম নারীকে দিয়েছে।
২. ইসলাম বিয়ে-শাদীতে নারীর পছন্দ ও মতামত প্রদানের অধিকার নিশ্চিত করেছে; নারী ও পুরুষকে পরস্পরের সম্মতির ভিত্তিতে বিয়ে করার অধিকার দিয়েছে এবং নারীর অসম্মতিতে তাকে বল প্রয়োগে বিয়ে দেওয়া নিষিদ্ধ করেছে। নারীর ওপর বলপ্রয়োগে ও তাদের সাথে অসদাচরণের ব্যাপারে সতর্ক করে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, Òহে ঈমানদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে গ্রহন করা তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ এবং (মোহরানা হিসেবে) তাদেরকে যা দেওয়া হয়েছে তার কিয়দংশ ফেরত নেয়ার জন্যে তাদেরকে আটক রেখোনা যদি না তারা কোনরূপ প্রকাশ্য অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকেই অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ্ অনেক কল্যাণ নিহিত রেখেছেন (৪:১৯)Ó। খোদা-ভীতি, পরকালের জবাবদিহিতা এবং সেই সাথে খোদায়ী আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে ইসলাম নারীর অধিকার ও নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করেছে।
৩. সহীহ মুসলিম ও বোখারী শরীফে বর্ণিত হাদীস অনুযায়ী আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের পর সন্তানের নিকট সবচেয়ে বেশী শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি হিসেবে গণ্য হওয়ার অধিকারী হলেন মাতা। মায়ের মর্যাদা প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান জুড়ে এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছেন পিতা। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্ বলেন, Òআর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো হয় দু বছর বয়সে। আমি নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে (৩১:১৪)Ó। ইবনে মাজাহ ও মুসনাদে আহমদে বর্ণিত হাদীসে রাসুল্লাহ্ (সাঃ) এর সেই বিশেষ উক্তি: Òমায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত” প্রমাণ করে ইসলাম নারীর মাতৃত্বকে কত মহান ও সম্মানিত করেছে। মাতৃত্বের মর্যাদার এমন বহু উদাহরণ রাসুল্লাহ্ (সাঃ) উম্মতের নিকট পেশ করেছেন।
৪. ইসলামে পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় করা হয়েছে। নারী ও পুরুষ উভয়ই পরিবার প্রতিপালনের দায়িত্বে নিয়োজিত। এ ক্ষেত্রে নারীর প্রাথমিক দায়িত্ব হলো সন্তান প্রতিপালন এবং গৃহকর্মের তত্ত্বাবধান। পুরুষের প্রাথমিক ও বাধ্যতামূলক দায়িত্ব হলো পরিবার পরিজনের ভরণ-পোষণ। নারী-পুরুষের পারস্পরিক অধিকার সম্পর্কে আল্লাহ্ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, Ò.........আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের ওপর অধিকার রয়েছে, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও রয়েছে পুরুষদের ওপর ন্যায় সঙ্গত অধিকার। আর নারীদের ওপর পুরুষদের একমাত্রা শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ (২:২২৮)Ó। পরিবারের কর্তা হিসেবে পুরুষের মর্যাদা একমাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কারণ পুরুষ বাধ্যতামূলকভাবে পরিবারের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পালন করেন এবং সৃষ্টিগতভাবে সবল হওয়ায় পরিবারের ইজ্জত ও নিরাপত্তা রক্ষা করেন। এভাবে দায়িত্ব বিভাজনের ফলে মুসলিম পরিবারে একটি ভারসাম্য অবস্থা বিরাজ করে এবং স্বামী ও স্ত্রীর পরস্পর ভালবাসা ও সমঝোতার মাধ্যমে পরিবারের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় থাকে। সন্তানেরা পারিবারিক পরিবেশে পিতামাতার †¯œহ স্পর্শে লালিত পালিত হওয়ার সুযোগ পায়। ইসলামে নারী ও পুরুষ পরস্পরের প্রতিপক্ষ বা প্রতিদ্বন্দী নয়, বরং একজন আরেক জনের বন্ধু ও সহায়ক শক্তি এবং একটি সুস্থ সমাজ গঠনের অন্যতম নিয়ামক।
৫. স্বামী-স্ত্রীর মতদ্বৈততার কারণে কখনো যদি তালাক অপরিহার্য হয়ে ওঠে সে ক্ষেত্রে উভয়কেই তালাকের অধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে নারীর ওপর কোনরূপ যুলুম না করার নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ্ বলেন, Òআর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও, অতঃপর তারা নির্ধারিত ‘ইদ্দত’ সমাপ্ত করে নেয়, তখন তোমরা নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে রেখে দাও অথবা সহানুভুতির সাথে তাদেরকে মুক্ত করে দাও। আর তোমরা তাদেরকে জ্বালাতন ও বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্যে আটকে রেখো না। আর যারা এমন করবে, নিশ্চয়ই তারা নিজেদেরই ক্ষতি করবে। আর আল্লাহ্র নির্দেশকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করো না। আল্লাহ্র সে অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর, যা তোমাদের উপর রয়েছে এবং তাও স্মরণ কর, যে কিতাব ও জ্ঞানের কথা তোমাদের উপর নাযিল করা হয়েছে যার দ্বারা তোমাদেরকে উপদেশ দান করা হয়। আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ্ সর্ববিষয়েই জ্ঞানময় (২:২৩১)Ó । ইসলামে তালাক একটি বৈধ বিষয় হলেও এর অবস্থান সর্ব নি¤œ পর্যায়ে। তাই এ ক্ষেত্রে সতর্কতা ও আল্লাহকে ভয় করার ওপর গুরুত্ত্বারোপ করা হয়েছে।
৬. ইসলামপূর্ব যুগে অশ্লীলতা, ধর্ষণ, যৌন-ব্যবসা, বলপূর্বক নারীকে বিবাহ ও তার সম্পদ হরণ, নারীর ওপর মিথ্যা অপবাদ রটানো, বিধবা ও এতীমদেরকে শোষণ ও নির্যাতন, মদ-জyয়া (যা নারী নির্যাতনের সাথে সংশ্লিষ্ট), কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেয়া, প্রভৃতি কুপ্রথার ব্যাপক প্রচলন ছিল। ইসলাম এসব কুপ্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং সমাজ থেকে নির্মূল করেছে। কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেয়ার মত কুপ্রথার বিরূদ্ধে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, Òযখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তাদের মুখ কালো হয়ে যায় এবং তারা অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে, না তাকে মাটির নীচে পুতে ফেলবে। শুনে রাখ, তাদের পরিণাম খুবই নিকৃষ্ট (১৬:৫৮-৫৯)Ó। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনের আরেকটি নির্দেশ এখানে উদ্ধৃত করা হলো: Òযারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতঃপর স্বপক্ষে চার জন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই নাফরমান (২৪:৪)Ó।
৭. অনাথ কন্যা শিশুদের ব্যাপারে ইসলাম ঘনিষ্ট আত্মীয়ের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেছে। এসব অভিবাবক আত্মীয়দেরকে লক্ষ্য করে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, Òআর এতীমদের প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখবে, যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে। যদি তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ আঁচ করতে পার, তবে তাদের সম্পদ তাদের হাতে অর্পণ করতে পার। এতীমের মাল প্রয়োজনাতিরিক্ত খরচ করো না বা তারা বড় হয়ে যাবে মনে করে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না। যারা স্বচ্ছল তারা অবশ্যই এতীমের মাল খরচ করা থেকে বিরত থাকবে। আর যে অভাবগ্রস্ত সে সঙ্গত পরিমাণ খেতে পারে। যখন তাদের হাতে তাদের সম্পদ প্রত্যার্পণ কর, তখন সাক্ষী রাখবে। অবশ্য আল্লাহ্ই হিসাব নেয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট” (৪:৬)। Òযারা এতীমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করেছে এবং সত্ত্বরই তারা অগ্নিতে প্রবেশ করবে” (৪:১০)।
৮. ইসলাম নারীকে দিয়েছে জ্ঞানার্জনের অধিকার এবং শরীয়তের জ্ঞান শিক্ষাকে করেছে বাধ্যতামূলক। Òপ্রত্যেক ঈমানদার নর ও নারীর জন্য জ্ঞানার্জন ফরজ” (বায়হাকী) - এ প্রসিদ্ধ হাদীসটি প্রমাণ করে মুসলিম নারীদের জন্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক। এ প্রসঙ্গে রাসুল্লাহ্ (সাঃ) দু’টি হাদীস প্রণিধানযোগ্য: Òযে ব্যক্তির একটি কন্যা সন্তান আছে সে যদি তাকে জীবন্ত কবর না দেয়, তাকে অপমান না করে, তার চেয়ে পুত্র সন্তানকে বেশী প্রাধান্য না দেয়, আল্লাহ্ তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন (ইবনে হাম্বল নং ১৯৫৭)Ó। একের অধিক কন্যা সন্তানের বেলায়ও একই পুরস্কার প্রদানের কথা রাসুল (সাঃ) উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে অন্য একটি হাদীসটি হলো: Òযে তার দুটি কন্যা সন্তানকে বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত লালন পালন করবে, সুশিক্ষা দিবে এবং সুপাত্রে বিয়ে দেবে, বিচার দিবসে আমি ও ওই ব্যক্তি এভাবে পাশাপাশি অবস্থান করব (এ কথা বলে তিনি তাঁর দুটি আঙুল পাশাপাশি রাখলেন)Ó। কন্যা সন্তানের অধিকার ও মর্যাদাকে সমুন্নত করার জন্যই তিনি এসব উক্তি করেছেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর পবিত্রা স্ত্রীগণ তাঁর সাহচর্যে থেকে যে শিক্ষা লাভ করেছিলেন পরবর্তীতে তাঁরা বিশেষ করে হযরত আয়েশা (রাঃ) মুসলিম সমাজে ইসলামী জ্ঞান বিতরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
৯. নারী সকল যুগেই নানা ধরনের সামাজিক কুসংস্কারের শিকার হয়েছে। তার মধ্যে একটি ছিল যে, কন্যা সন্তান জন্মদানের জন্য নারীকে অভিযুক্ত করা হত। অথচ এ ব্যাপারটি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ তায়ালার ইখতিয়ারভুক্ত। ইসলাম এ কুসংস্কার থেকে সমাজকে মুক্ত করেছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেন, Òনভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ্ তায়ালারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল” (৪২:৪৯-৫০)।
১০. পূণ্যার্জনে ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যে কোন বৈষম্য করে না। আল্লাহ্র নিকট লিঙ্গভেদ বা কোন কৃত্রিম কৌলীন্য প্রথা নয় বরং খোদাভীতিই হচ্ছে মানুষের মর্যাদা নির্ণয়ের মানদন্ড। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, Òহে মানুষ, আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন মানব ও একজন মানবী থেকে এবং গোত্র ও জাতিতে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পার। নিশ্চয় আল্লাহ্র দৃষ্টিতে তোমাদের মধ্যে সে-ই সবচেয়ে মর্যাদবান যে সবচেয়ে বেশী খোদা-ভীরু (৪৯:১৩)Ó। আল্লাহ্ তায়ালা তাই সৎ কাজে সবাইকে প্রতিযোগিতা করতে বলেছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেন, Òযে লোক পুরুষ হোক কিংবা নারী, কোন সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রাপ্য তিল পরিমাণও বিনষ্ট হবে না (৪:১২৪)Ó।
১১. সৃষ্টির ধারাকে অব্যাহত রাখতে নারীর প্রজনন ভূমিকাকে ইসলাম গুরুত্বের সাথে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্ বলেন, Òআমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস (৪৬:১৫)Ó। নারী সন্তান প্রজনন ও প্রতিপালনের যে গুরুদায়িত্ব বহন করে সে কারণে ইসলাম তাদের ধর্ম-কর্মের দায়িত্বকে কিছুটা লঘু করে দিয়েছে, যেমন, মাসিক ঋতুকালীন সময়ে, গর্ভাবস্থায়, সন্তান প্রসবের পর চল্লিশ দিন তাদেরকে ফরজ ইবাদত থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে মসজিদে গমণাগমণ তাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়নি। সন্তানকে দুগ্ধ পান করানোর ব্যাপারেও তাকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে অপারগ হলে দুগ্ধদানের ব্যাপারে তাকে বাধ্য করানো যাবে না।
১২. ধর্ষণ, ব্যভিচার ও অশ্লীলতা সর্ব যুগেই নারীর মর্যাদাকে ভূলুন্ঠিত করেছে। ধর্ষণ ও ব্যভিচারের অপরাধ প্রমাণিত হলে এর শাস্তি হিসেবে বিবাহিতদের ক্ষেত্রে প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদন্ড এবং অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে একশটি বেত্রঘাত কার্যকর করতে ইসলাম নির্দেশ দিয়েছে। এ ধরনের কঠোর দন্ডকে প্রকাশ্যে জনসমক্ষে কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পাপাচারীদের মনে ভীতি সৃষ্টি করে। নারীর নিরাপত্তাকে সুসংহত করার উদ্দেশ্যেই ইসলামের এ কঠোর অবস্থান। পবিত্র কুরআনে নারীর শ্লীলতা হরণকারী ও তার ওপর নির্যাতনকারীকে ঘৃণিত অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এসব অপরাধ থেকে বিরত থাকতে মুসলমানদেরকে কঠোরভাবে আল্লাহ্ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ্ বলেন, Òআর তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তীও হয়ো না, নিশ্চয়ই এটি অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট আচরণÓ (১৭:৩২)। তিরমিজি শরীফে সংকলিত হাদীসে বর্ণিত আছে নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, Òনিশ্চয়ই আল্লাহ্ অশালীন ও চরিত্রহীন ব্যক্তিকে ঘৃণা করেনÓ। অন্য এক হাদীসে উল্লেখ আছে তিনি বলেছেন, Òআল্লাহ্র নিকট ওই ব্যক্তি সবচেয়ে খারাপ, যার অশ্লীলতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লোকজন তাকে পরিত্যাগ করেÓ (বুখারি শরীফ)।
১৩. সমাজকে অশ্লীলতার অভিশাপ থেকে মুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে ইসলাম পুরুষ ও নারী উভয়কেই তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখতে বলেছে এবং তাদের নির্দেশিত গোপন অঙ্গসমূহ ঢেকে রাখার বিধান করেছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর রাসুল (সাঃ) কে লক্ষ্য করে বলেছেন, Òমুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য অনেক পবিত্রতা রয়েছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ্ তা অবহিত আছেন। ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, সেটুকু ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে ..... (২৪:৩১)Ó। অসৎ চরিত্র পুরুষের যৌন লালসার দ্বারা নারীর শ্লীলতা হানির আশঙ্কা ও হুমকি প্রবল হওয়ার কারণে নারীর পর্দার ওপর কড়াকড়ি বিধান আরোপ করা হয়েছে। পর্দা নারীর আত্মরক্ষামূলক একটি ব্যবস্থা যা তাকে তার ইজ্জত, সম্ভ্রম ও শ্লীলতাকে রক্ষা করতে একটি সর্বাধিক কার্যকর পন্থা।
১৪. স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে শারীরিক বা মানসিকভাবে কোন প্রকার নির্যাতন করা ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। স্ত্রীকে দাস-দাসীর মত অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও প্রহার করে রাতের বেলায় তাকে নিয়ে একই বিছানায় শোয়াকে নবী করিম (সাঃ) একটি ঘৃণিত কাজ বলে উল্লেখ করেছেন। স্ত্রী কোন গর্হিত কাজ করলে কিংবা কোন ন্যায্য ব্যাপারে কর্ণপাত না করলে তাকে সদুপদেশ দ্বারা সংশোধনের চেষ্টা করতে স্বামীর প্রতি তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। স্ত্রীর ওপর কোন কঠোর শাস্তি আরোপ করার ব্যাপারে তিনি মানুষকে হুশিয়ার করে আরো বলেছেন, Ôতুমি (স্ত্রীর) মুখমন্ডলের ওপর আঘাত করো না, তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করো না এবং গৃহ ব্যতীত অন্য কোথাও তাকে পৃথক করে রেখো না’ (সুনান আবু দাউদ)।
১৫. সততার সাথে জীবন যাপন এবং সৎ কর্ম সম্পাদনে নারী ও পুরুষ উভয়ের দায়িত্ব ও কর্তব্য সমান। কর্ম অনুযায়ী প্রতিফল তাদের উভয়কেই আল্লাহ্ তায়ালা এ দুনিয়া ও আখিরাতে দান করবেন। আল্লাহ্ বলেন, Òযে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে হোক ঈমানদার পুরুষ কিংবা নারী, আমি তাদেরকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব যা তারা করত (১৬:৯৭)Ó। Òনিশ্চয় মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ, অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ, সত্যবাদী নারী, ধৈর্য্যশীল পুরুষ, ধৈর্য্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ, বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ, দানশীল নারী, রোযা পালনকারী পুরুষ, রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী নারী, আল্লাহ্র অধিক যিকরকারী পুরুষ ও যিকরকারী নারী-তাদের জন্য আল্লাহ্ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার (৩৩:৩৫)Ó।
পরিশেষে এ কথাটি বলতে চাই, ইসলাম কোন মানুষের মনগড়া ধর্ম নয়, বরং তা মানব জাতির স্রষ্টা মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের মনোনীত দ্বীন বা ধর্ম। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে: Òনিঃসন্দেহে আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম (৩:১১৯)Ó। Òযে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম সন্ধান করে, কখনো তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখিরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্ত (৩:৮৫)Ó। মুসলিম নর-নারীদের উচিত সকল দোদুল্যমানতা পরিহার করে পবিত্র কুরআন ও হাদীসের আলোকে নিজেদেরকে আলোকিত করে তোলা। প্রতিটি মানুষের অন্তরে যখন হেদায়েতের নূর প্রজ্জ্বলিত হবে তখনই সমাজে শান্তি ও সাম্যের সুবাতাস বইবে। আর এভাবে ইসলামী পূণর্জাগরণের মধ্য দিয়েই আসবে নারী সমাজ তথা মুসলিম উম্মাহর প্রকৃত কল্যাণ।
বিষয়: বিবিধ
১৬১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন