মমতাময়ী মা

লিখেছেন লিখেছেন সুপ্ত আত্তাঁ ১৪ জুন, ২০১৩, ১২:১২:১২ দুপুর

ছোট্ট ছেলেটি স্কুলে গিয়ে নতুন শিখেছে, প্রতিটা কাজই

মূল্যবান। কোনো কাজই ফেলনা নয়।সব কাজেরই

একটা অর্থমূল্য আছে। এ ছাড়া কীভাবে বিল

করতে হয়, তা- ও তাকে শেখানো হয়েছে। একদিন

সন্ধ্যায় মা রান্নাঘরে কাজ করছেন। ছেলেটি তাঁর

কাছে গিয়ে একটা বিল জমা দিল। মায়ের হাত ভেজা।

তিনি কাগজটা রেখে দিলেন একটু পরে পড়বেন বলে।

কাজ শেষে তিনি ছেলের

দেওয়া চিরকুটটা হাতে নিলেন। ছেলে লিখেছে:

গাছে পানি দেওয়া: ১০ টাকা। দোকান থেকে এটা-

ওটা কিনে দেওয়া (তিনবার): ১৫ টাকা ছোট

ভাইকে কোলে রাখা: ৪০

টাকা ডাস্টবিনে ময়লা ফেলতে যাওয়া: ২১

টাকা পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা: ৫০

টাকা মশারি টানানো: পাঁচ টাকা মোট: ১৪১

টাকা মাত্র মা বিলটা পড়লেন। মুচকি হাসলেন।

তারপর

তাঁর আট বছরের ছেলের মুখের

দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। তাঁর চোখে জল

চলে আসছে। তিনি এক টুকরো কাগজ হাতে নিলেন।

তারপর তিনি লিখতে লাগলেন: তোমাকে ১০ মাস

পেটে ধারণ করা: বিনা পয়সায় তোমাকে দুগ্ধপান

করানো:

বিনা পয়সায়

তোমার জন্য রাতের পর রাত জেগে থাকা:

বিনা পয়সায়

তোমার অসুখ-বিসুখে তোমার জন্য

প্রার্থনা করা, শুশ্রূষা করা, ডাক্তারের

কাছে ছুটে যাওয়া, তোমার জন্য চোখের

জল ফেলা:

বিনা পয়সায়

তোমাকে গোসল করানো, পরিষ্কার করা:

বিনা পয়সায়

তোমাকে গল্প শোনানো, গান শোনানো,

ছড়া শোনানো:

বিনা পয়সায়

তোমার জন্য খেলনা, কাপড়চোপড়,

প্রসাধনী কেনা:

বিনা পয়সায়

তোমার কাঁথা ধোওয়া, শুকানো,

বদলে দেওয়া:

বিনা পয়সায়

তোমাকে লেখাপড়া শেখানো:

বিনা পয়সায়

এবং তোমাকে আমার নিজের চেয়েও

বেশি ভালোবাসা:

বিনা পয়সায়

ছেলের হাতে মা কাগজটা তুলে দিলেন।

ছেলে পড়তে লাগল মায়ের বিল।

পড়তে পড়তে তার চোখ জলে ভরে উঠল।

সে তখন তার নিজের

লেখা চিরকুটটা হাতে তুলে নিয়ে লিখল:

পুরো বিল পরিশোধিত।

মায়ের কাছে আমাদের যে ঋণ,

তা কি শোধাবার মতোন?

ভালোবাসার প্রতিযোগিতা হয় না।

বিষয়: বিবিধ

১৭২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File