ভূল অতঃপর ফিরে আসা . . . .
লিখেছেন লিখেছেন সুপ্ত আত্তাঁ ০৭ মে, ২০১৩, ১২:৩৬:৩১ রাত
গনজাগরন মঞ্চের শুরুতেই মোটামুটি এক্টিভ ছিলাম। সেই সময় সিলেট এ আমি এবং আমার বন্ধুরা যোগ দিয়েছিলাম। গলা ফাটিয়ে স্লোগান দিতাম, রাতে অনলাইনে পাহারা দিতাম, চেতনা ছড়িয়ে দিতাম লক্ষপ্রানে। সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই, রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ চাই! প্রতিশোধ চাই প্রতিশোধ!
তারপর দেখলাম আস্তে আস্তে ৭১ এর চেতনাবিলুপ্ত হয়ে যেতে লাগলো, ঢুকতে লাগলো আওয়ামী চেতনা, দলীয় শিশ্নচোষার চেতনা,ততদিনে মোহভংগ হইসে আমার, এই বিরিয়ানীখেকো ফার্মের মুর্গী চেতনা ব্যাবসার অন্তরালে শুরু হতে লাগলো আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়ন। আমি স্তম্ভিত হলাম! ফাঁসি দেওয়ার কুনু খবর নাই, সরকার আর মঞ্চ আছে ফোর্থ সাবজেক্ট পড়ার তালে, লাঠি মিছিল আর কোর্মা পোলাও খাওয়ার তালে! শাহবাগের অদূরদর্শী কর্মকাণ্ডের ফলে জন্ম নিলোহেফাজতে ইসলাম। শুশিলতা দেখাইতে গিয়াতাগো বিরুদ্ধে লিখলাম, আল্লাহর ধর্ম আল্লাহই বড় হেফাজতকারী। তাগো হেফাজতেজামায়াত কইলাম।
হেফাজত গত মাসে প্রথম জনসমাবেশ করে, আওয়ামীলীগ ঢোলের এই পিঠেও বাড়ি দেয়, ঐ পিঠেও দেয়। সমাবেশের অনুমতি দিয়া আবার তাগো পালিত শুয়োর দ্বারা হরতাল ডাকাইল। আমি চুপ। হরতাল দেখে আইলাম। আওয়ামীলীগের লোকজন হরতাল করতেছে!
সেই সমাবেশ থেকে ১ মাস পরের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষনা হইলো, সমাবেশ শেষে তারা বাড়ি ফিরে গেলো।
আওয়ামীলীগ এই একমাসে হেফাজতকে ঠেকাইবার জন্য এমন কোন চাল নাই যা তারা চালে নাই। তিন চারজন নাস্তিককে গ্রেফতার করসে (সেই চারজনের মধ্যে একটাই ধর্মান্ধ নাস্তিক, বাকিরা মেক্সিমাম দুধভাত টাইপের নাস্তিক, সো এইটাও সরকারের লোক দেখানো!), ওলামালীগআর আহলে সুন্নাতিদের দাড় করিয়ে দিলো হেফাজতের বিরুদ্ধে, দাবি মানতেসি মানতেসি কইয়া হেফাজতিদের আস্কারা দিলো, হেফাজতের বিপক্ষে গনজাগরন মঞ্চকে দাড় করিয়ে দিল, ততদিনে গনজাগরনমঞ্চ তার চেতনা হারাইয়া দিশেহারা অবস্থা, সামনে পিছনে পুলিশ দিয়া তারা লাঠি মিছিল করে শাহবাগের আশেপাশে, আর ফটু শেসন করে!
যেকোন ধরনের উগ্রপান্থার ঘোর বিরোধী আমি, যেকোন দলের বা হেফাজতের উগ্রপান্থার বিরুদ্ধে। গতরাতে যখন লাইভ টেলিকাস্ট অফ করে দিলো সরকার তখনএকজন বললো, সামথিং রং!
আমিও চুপ করে দেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। রাতের গভীরে র্যাব পুলিশ, বিজিবি সাড়াসি অভিযান চালালো হেফাজতের উপর তখন আমার মোহ ভংগ হলো পুরোপুরি!
ফেসবুকে ঢুকে দেখি অনেকই উল্লাস করছেন! আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম! সেই উল্লাসকারীদের মধ্যে আওয়ামী অন্ধভক্ত ছাড়াও অনেক সাধারন মানুষ আছেন! সবাই আজ অন্ধ হয়ে গেছে!!
নাস্তিক মরুক, আস্তিক মরুক, হিন্দু মরুক, মুসলিম মরুক, শ্রমিক মরুক, এরা সবাই আমার দেশের মানুষ, এরা এই বাংলার আলো বাতাসে বড় হইসে, আমার আপনার যতটুকু অধিকার তাদেরও ঠিক ততটুকুই অধিকার। আজ তারা মারা যাওয়ায় আমরা আনন্দ করতেসি, উল্লাস করতেসি। থু আমাদের মনুষত্বের মুখে। পাকিস্থানীদের ঘৃনা করি, তারা ভীনদেশী হানাদার, আমাদের উপর তাগো মায়া ছিলো না, তারা কুত্তা বিলাইয়ের মতো আমাদের মারছে। কিন্তু আমার দেশের লোকেরা যখন আমাদের দেশের লোকজনের উপর নির্বিচারে হত্যা করে তখন কাকে ঘৃনা করব আমি??
এই ঘটনায় যে রক্ত ঝরেছে তার দাগ আওয়ামীলীগের হাতে লেগেছে, তারা শত ধুইলেও এই দাগ মুছতে পারবে না। যতদিন আওয়ামীলীগ নামের এই রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে থাকবে ততদিন এর প্রায়শ্চিত্ত্ব করে যেতে হবে, জামায়াত ইসলাম যেভাবে করে আসছে 71 থেকে। কিন্তু সে পাপ কোনদিন মুছবে না।প্রতিটি নিরীহ মানুষের রক্তের প্রতিটি ফোটার ঋন পরিশোধ করতে হবে।
গনজাগরন মঞ্চ ভাইংগা দিসে সরকার! এই গনজাগরন মঞ্চ অভিশপ্ত, এই গনজাগরন মঞ্চ থেকে লাভের লাভ কিছুই আসে নাই, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি বরং ভালোমতো ঝুলে গেছে! লাভ যা হৈসে সরকারের। লাভ শেষ, ব্যাবসা শেষ।
ডাক্তার আইজূ ঠিকই বলে গেছেন, 'এই দেশ চুতিয়াদের'।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন