অনাগত সন্তানকে পিতা

লিখেছেন লিখেছেন অয়েজ কুরুনী আল বিরুনী ১০ অক্টোবর, ২০১৪, ০৫:৪৭:৫৭ বিকাল

আমার দেহের রক্তে সৃষ্ট হে প্রিয়!

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ!

তোমার সাথে রুহ জগতে হয়ত আমার পরিচয় হয়েছিল কিন্তু চেহারাটা কিছুতেই মনে করতে পারছিনা। আশা করি মহান আল্লাহ তায়ালার হেফাজতে আলমে আরওয়াহে খুব ভাল আছ। তোমার সাথে এমন মুহূর্তে কথা বলছি যখন তোমার মায়ের সাথে আমার পরিচয় হয়ে ওঠেনি। তবে আশা করি সে এ পৃথিবীর বুকে বিরাহমাতিল্লাহ ভাল আছে। পর কথা; যে জন্য তোমাকে লিখছি।

তুমি এমন এক পৃথিবীতে আগমনের অপেক্ষায় আছ যেখানে আগমনের রাস্তাটা ও তোমাদের কারো জন্য সুগম নয়। তোমাদের বাবা আর মায়েরা মিলে প্রতিযোগিতায় নেমেছে কিভাবে তোমাদেরকে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই বিষাক্ত পিল অথবা অন্য কোন প্রতিরোধকের মাধ্যমে মেরে ফেলতে পারে। তারা আল্লাহর আযাবের ভয় মাত্র করেনা। তোমাকে বললেও তুমি বুঝবে না এখানের মানুষ গুলি কত খারাপ হতে পারে। কেউ রিযিকের দোহাই, কেউ স্বাস্থ্যের, কেউ সুন্দর ফিগার রক্ষার অযুহাতে তোমাদের প্রস্ফুটিত হওয়ার রাস্তাগুলি বন্ধ করে নিজেরাই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে ধীরে মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে। তুমি যখন আসবে তখন পরিস্থিতি এর চেয়ে ভাল হবে কি না আমি জানিনা। তবে তোমার জন্য আমি একটি সুন্দর পৃথিবী রেখে যেতে চাই। যেখানের নির্মল আলো-বাতাস পেয়ে তুমি নিরাপদে বেড়ে ঊঠবে। চাই বিশ্বকে সুন্দর ফুলের বাগানের মত হিংসা মারামারি ভেজাল মুক্ত করতে।

তোমার জন্য বুকের মধ্যে একটি আদর্শ এবং স্বপ্ন লালন করছি বহুদিন ধরে যেমনটি করেছিল তোমাদের দাদা (আমার বাবা)। সেই আদর্শে ও স্বপ্নে যেমন আমি আজ বড় হওয়ার পথে তেমনি তুমিও বড় হবে আকাশের মত বিশাল আর বাতাসের মত উদার মন নিয়ে। সারা দুনিয়া তোমার পদতলে লুটাবে তবুও তোমার মনে বিন্দুমাত্র লোভ থাকবে না। তুমি হবে মুহাম্মদ সাঃ এর সাহাবীদের সেরা অনুকরণ কারী, ওমরের মত দৃঢ়চেতা। খালিদের মত বীর, কাশিমের মত বিজেতা, আর তারিক, মুসার মত অকুতোভয় দিগ্বিজয়ী। তুমি হবে সুলতান সালাউদ্দীন আইয়ূবীর মত দূরদর্শী বীর, সুলতান নুরুদ্দীন জঙ্গীর মত আত্মত্যাগী বীর, সুলতান ফতেহ আলী টিপুর মত আমরণ সংগ্রাম করা বীর দের মত আদর্শ। তোমার জন্মের পর তোমার জীবনের প্রথম পদার্পণ হবে আল্লাহর ঘর মসজিদে আর ২য় পদার্পন হবে তামাম দুনিয়ার সব বিখ্যাত কিতাবে ভরা লাইব্রেরিতে যা আমি তোমার জন্য তৈরি করছি। তোমার মা বাবা হবেন তোমার সেরা শিক্ষক। আশা করি তুমি আল্লাহর সর্বাধিক অনুগত দাস হবে।

অবশেষে একজন বিপ্লবীর কথা তোমাকে শোনাব বড় হয়ে তুমি পড়বে

চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ

দেহে আছে প্রাণ

প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল

এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাসযোগ্য করে যাব

আমি-

নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ়

অঙ্গীকার।

অয়েজ কুরুনী

১০/১০/২০১৪, সন্ধ্যা ৫.৩৯, আজিমপুর, ঢাকা।

বিষয়: বিবিধ

১৪২৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

272920
১০ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৩
ফেরারী মন লিখেছেন : আপনার কথাগুলো সুন্দর কিন্তু তাই বলে তো বাড়িটাকে সন্তান দিয়ে ভরে ফেলতে পারি না।
১০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:৫৭
217046
অয়েজ কুরুনী আল বিরুনী লিখেছেন : তার মানে কি? আপনি চাইলেই কি সন্তান এসে যাবে? কত সাধনার পরেই না একটি শিশু পৃথিবীতে আসে। কে জানে যে শিশুটির ভ্রূণ সে নষ্ট করে ফেলল সেই শিশুটিই হয়ত সবচেয়ে মেধাবী,সৎ, দিগ্বিজয়ী বীর হত। আমার মা এই কথাটি এখনো প্রায়শ বলেন, আরো বলেন ক্বিয়ামতের দিন যদি তার মেরে ফেলা কোন সন্তান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে তাহলে কি জবাব দিব এই ভয়ে আটটি সন্তানের গর্বিত মা তিনি। আল্লাহর রহমতে সবাই অত্যন্ত মেধাবী এবং উচ্চশিক্ষিত। অথচ আমার মা-বাবা দুজনই স্বাস্থ্যই আল্লাহর রহমতে ভাল এবং বিশ্বাস করার মত নাহলেও একথা সত্য যে আমার বাবা সামান্য ছোটখাট কাজ করে আমাদের সবাইকে যথাসম্ভব লেখা পড়া শিখিয়েছেন বর্তমানে তার ৩ ছেলেমেইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালঅয়ে সহ মোট পাঁচজন অধ্যয়নরত। অতএব নিতান্ত অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার ভয়, অথবা কোলে আরেকটি দুধের বাচ্চা থাকলে অথবা এমন দরিদ্র যাতে পরিবার দিনের পর দিন উপবাস করছে এমন যদি না হয় তাহলে নিস্পাপ ভ্রুণ গুলি নষ্ট করা ঠিক নয়। আর ঘর ভরানো বলতে আসলে আপনি কি বুঝিয়েছেন আমি আসলে বুঝতে পারিনি। আপনি যদি নিয়ম মেনে নিয়ন্ত্রণ করেন তাহলে সর্বোচ্চ ৬/৭ টির বেশি বাচ্চার দুনিয়ার মুখ দেখার কথা না। আর এই কটি সন্তান উপযুক্ত রুপে মানুষ করা অসম্ভব কিছুই নয়রে ভাই.....
272974
১০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১১:৫৫
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..


আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File