বিভেদ সৃষ্টি করা উদ্দেশ্য নয়
লিখেছেন লিখেছেন অয়েজ কুরুনী আল বিরুনী ০৯ অক্টোবর, ২০১৪, ০৩:৫৮:০৪ দুপুর
কিছুদিন ধরে ভাবছিলাম দাড়ি (শ্মশ্রু) রাখা বা না রাখা নিয়ে যে বিতর্ক সে বিষয়ে লিখব ।আজ সে বিষয়েই লিখছি। আমাদের সমাজে এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে আমরা দাড়িকে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছি। একই সাথে দুজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি একজনের মুখে দাড়ি আছে আরেকজন শ্মশ্রুবিহীন; বাসে উঠলে একজন স্টুডেন্ট ভাড়া দিলে নেয় আরেকজনকে ছাত্র হিসাবে গণ্যই করতে চায় না। বরং হুজুর, চাচা ইত্যাদি সম্বোধন চলে আসে অথচ শ্মশ্রধারী বয়সে অন্যান্যদের চেয়ে কয়েক বছরের ছোট। যারা এই বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন তারাই ভাল জানেন। টিউশনী করাতে গেলে আরবী হুজুর মনে করে, সব শেষে আসি বিয়ের কথায়। মেয়ের পরিবার ইসলামী মনা কিন্তু ছেলের মুখে একগুচ্ছ কেশ তাঁরা সইতে পারবেন না। মেয়ে তো রাজি নয়ই কোন কোন ক্ষেত্রে মেয়ের মা আগ বাড়িয়ে মেয়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন যে আমার মেয়ের জামাই ওইরকম খ্যাত, আনস্মার্ট হলে হবে না, আর মুখে দাড়ি থাকলে বুড়ো বুড়ো লাগে। এই কারণে অনেক বন্ধু, ভাই ব্রাদারকে অকাতরে দাড়ি বিসর্জন দিতে দেখেছি। তাই এ ব্যাপারে কিছু কথা না বললেই নয় বলে মনে হল
আমাদের ইসলাম পন্থী ভাইদের অনেকের মধ্যে দাড়ি রাখা নিয়ে হীনম্মন্যতা দেখি যা আসলেই খারাপ লাগে, অনেকে এটিকে একেবারেই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে উড়িয়ে দেন। আমার কথা হল আপনি নিজে একটি সুন্নাতের উপর আমল করতে পারছেন না সেটি আপনার দুর্বলতা, কিন্তু সেই সুন্নাতকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? তাওবা করুন কারণ কখন কোন কথাটি আল্লাহ তায়ালার অপছন্দ হয়ে যায় সে ব্যাপারে মানুষের জ্ঞান সীমাবদ্ধ।
এবং বোনদের কাছেও অনুরোধ আপনার ইসলামের জন্য ত্যাগ ও কুরবানী যেন সামান্য কারণে আল্লাহর দরবারে ঝুলে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা উচিৎ।
অনেকে হয়ত বলবেন আরে ভাই আগে ফরজ-ওয়াজিব তারপর দাড়ি রাখা রাখি। হ্যা আমিও একমত তবে যিনি সবকিছুই পালন করেন এবং মাদ্রাসাতে অধ্যয়ন করেন উস্তাদদের চাপের মুখেও দাড়ি কামানো কে আপনি কি বলবেন?
অনেকে হয়ত যুক্তি দেখাবেন দাড়ি রাখার ব্যাপারে কোন হাদীস আছে কি না, আমি বলব দাড়ি রাখার উপর রাসুল সাঃ কিছুই বলেন নি কিন্তু তিনি দাড়িকে না কাটার ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন বহু স্থানে।
ধর্মীয় দৃষ্টি কোণ থেকে না দেখে সামাজিক দিক থেকে দেখা যাক এবার।
একটা সময় ছিল যখন দাড়ি রাখা পৌরুষত্ব এবং বীরত্বের প্রতীক হিসাবে মানুষ মনে করত। পৃথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞানী মনীষীদের অনেকের মুখেই দাড়ি ছিল যার কারণে কখনোই তাকে মুসলিম বলা হত না বা তার কাজের ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করত না। এরকম কিছু বিজ্ঞানীর ছবি আমরা নিচে দেখব
ইনি লিও তলস্তয়, নোবেল
প্লেটো সক্রেটিস আব্রাহাম লিংকন
এরকম হাজারো ছবি চাইলে দেওয়া যাবে। আসল কথা হল মানসিকতা
বিষয়: বিবিধ
১৪১২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দাড়ি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন...মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী লিখিত 'ইসলামে দাড়ির বিধান'। প্রচুর রেফারেন্স দেয়া আছে। জানতে পারবেন বহু কিছু।
পড়লাম, জাযাকাল্লাহ.. দোয়া করি
আমাদের লোকেরাই যখন দাঁড়ি নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে, তাহলে কষ্টটা বেশিই লাগে! রেডিমেইট হুজুরের সংখ্যাই এখন বেশি, মেয়ের বাবা মায়ের পছন্দ তাই। তবে দেখেছি অনেক মেয়েকে, দাঁড়ি নিয়ে গর্ব করতে, এমন মেয়ে ভাগ্যে থাকলে দাড়ি রাখায় উতসাহ জাগবে সন্দেহ। আবার মেয়েও রয়েছে, নিজে ইসলামী আন্দোলন করা সত্ত্বেও স্বামীকে বলে এখন কেন দাড়ী রাখ? দাড়ী রাখার সময় আছে, বয়স আগে ৫০ হোক তারপর। স্বামীর পক্ষে সম্ভব হয়না আদরের বউয়ের কথা ফেলে দিতে!!!
সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
দাড়ি থাকায় বিয়ের প্রস্তাব নাকোচ হওয়ার ঘটনা আমার ক্ষেত্রেও ঘটেছে!! ফরজ না হতে পারে কিন্তু তাই বলে দাড়ি রাখা কে যারা অপছন্দ করছেন তারা কি অপরাধ করছেননা?
মন্তব্য করতে লগইন করুন