মার্জার সমাচার ১

লিখেছেন লিখেছেন অয়েজ কুরুনী আল বিরুনী ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৬:৫১:২৮ সন্ধ্যা



আমি শুধু প্রকৃতিপ্রেমিকই নই প্রাণীদের সাথেও আমার সম্পর্ক খুব ভাল। আমি শহরে চলে আসার আগ পর্যন্ত আমাদের বাড়িতে ৬/৭ টি বিড়ালের একটি টিম সবসময় মজুদ থাকত মাছ মাংস ইত্যাদি চুরি করার মহান দায়িত্ব পালনে (সুরঞ্জিত বাবু আবার ক্ষেপে না যায়)। বিড়াল নিয়ে অনেক মজার এবং তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে যা নিয়ে আমার ''মার্জার সমাচার'' নামের রম্য গল্পের বইতে ছাপানো হবে। ব্লগে প্রকাশ করব ধারাবাহিকভা

মার্জার সমাচার ১

বিড়ালছানা ও ছোটবোন

এর মধ্যে একটি মজার ঘটনা হল টিমের মধ্যে সর্ব জুনিয়র টিমের (১ টিমে ২জন) ১ টি বিড়ালছানার সাথে আমার খুব ভাব হয়ে যায়। সেকারণে আমি তাকে বন্ধুত্বের দাবীস্বরুপ প্রায়ই বিস্কুট, মুড়ি, থেকে শুরু করে মাছ মাংস পর্যন্ত লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করতাম। এতে টিমের অন্যান্য বিড়াল সদস্যরা তাকে ঈর্ষা করত কিনা জানিনা কারণ ওদের ওই এক Multi -purpose শব্দ ম্যাও/মিউ এর সব গুলি অর্থ আমার জানা ছিলনা। কিন্তু ওকে হিংসা করত আমার সবচেয়ে ছোট বোন তাহেরা। ওর বয়স তখন দেড় দু’বছর হবে আর আমি তখন নাইন টেনের ছাত্র। আমার অগোচরে বিড়াল ছানাটির উপর ওর আক্রোশ কেমন হত তা আমি আমার উপস্থিতিতেই তাহেরার আচরণে বুঝতে পেরে মুখ টিপে হাসতাম। আমাদের পরিবারের রুটিন ছিল ফজরের নামাজের পর বাবা সহ ভাইবোনেরা বারান্দায় শীতল পাটি বিছিয়ে কিছুক্ষণ কোর আন তেলাওয়াত করে তারপর অন্যান্য পড়াশুনা। বিশেষ করে শীতের দিনে তো বারান্দার রোদে বসা নিয়ে মারামারি লেগে যেত। আমার মার্জার দলের রুটিনওয়ার্ক ছিল সকালে কিছুক্ষণ বারান্দার রোদে কুস্তি করা লাফালাফি করে পানির জগ ফেলে দেওয়া। মুরব্বিগুলি রোদে পিঠ দিয়ে শুয়ে থেকে লেজ নাড়াবে আর জুনিয়রগুলো ডাইভ দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে সেই লেজ ধরার চেষ্টা করবে । (আমার মাঝে মধ্যে আফসোস হত গা-গ্রামে জন্ম নেওয়ার কারণে তাদের প্রতিভা বিকশিত হতে পারলনা বলে। শহরে থাকলে তাদেরকে কোন একটি সার্কাস দলে ঢুকিয়ে দেয়া অসম্ভব ছিলনা) এটি তাদের Morning Hunting Training Session. এই ট্রেনিং এর কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা ছিলনা, যতক্ষণ আমরা খাবার ঘরে না ঢুকব ততক্ষণ চলবে। সে বার জুনিয়রদের জোড়ার মধ্যে একটি মারা গেলে ট্রেনিং সেশন বন্ধ হয়ে যায়। তখন সকাল বেলা আমি পড়তে বসলে পাঞ্জাবীর যে অংশ পিছনে বিছিয়ে থাকত আমার বন্ধু ছানাটি একটু পরে ঘুম থেকে উঠেই জামার উপরে আমার পিঠের সাথে ঘেষে বসে পড়ত, আর এ দৃশ্য দেখে আমার অতি আদরের ছোট বোন তাহেরা হিংসায় তেলে বেগুনে জ্বলে উঠত। কাঠের চ্যালা দিয়ে দু’একঘা লাগাতেও কসুর করতনা মাঝে মধ্যে।

(চলবে)

বিষয়: বিবিধ

১১৪৫ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

178558
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৪
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ভালো লাগলো বিড়ালের গল্পের ফাকে আপনার পরিবারের ফজরের নামাজের পর বাবা সহ ভাইবোনেরা বারান্দায় শীতল পাটি বিছিয়ে কিছুক্ষণ কোর আন তেলাওয়াত করা।
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৪১
131725
অয়েজ কুরুনী আল বিরুনী লিখেছেন : ধন্যবাদ
178565
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:১৭
নূর আল আমিন লিখেছেন : বাহ্ ভালোইতো
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৪১
131726
অয়েজ কুরুনী আল বিরুনী লিখেছেন : শুকরিয়া
178572
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৩৯
শিকারিমন লিখেছেন : দারুন লাগলো বিড়ালের গল্প। ধন্যবাদ।
178592
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:১১
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : ভালো লাগলো, চলতে থাকুক...
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৪২
131727
অয়েজ কুরুনী আল বিরুনী লিখেছেন : শুকরিয়া, দোয়া চাই
178594
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:১৬
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : খুব ভালো লাগলো।
178725
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৪২
অয়েজ কুরুনী আল বিরুনী লিখেছেন : শুকরান!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File