বঙ্গদেশে পরীক্ষার বিবর্তনঃ

লিখেছেন লিখেছেন মুক্তির মিছিল ০৪ অক্টোবর, ২০১৪, ০৪:৪২:৫৮ রাত

(১৯৬০)-

বাবা- করিম উল্লাহ কোই?

মা- পোলার মেট্রিক পরীক্ষা; কোপাচ্ছে সারাদিন। বেড়ার ফোকর দিয়ে দেখছি- বই খাতাসব ভাজা ভাজা করে ফেলতেছে। সন্ধ্যায় হারিকেন মুইছা দিছি। সারারাত পড়বে। কিছুক্ষণ পর পর লাল চা বানাইদিতাছি। তুমি বাজার থেকে মাছ নিয়া আইসো। আবার আণ্ডা আইনো না। আণ্ডা খাইলে পরীক্ষা খারাপ হয়।

(২০০০)-

১ম বন্ধু- প্রস্তুতির কি অবস্থা?

২য় বন্ধু- পপি গাইডের বোর্ডের সব পড়ে ফেলেছি। পাঞ্জেরীগাইডের ফাইভ স্টার পাঁচবার পড়ছি; ফোর স্টার চারবার শেষ। দিগন্তের অবজেক্টিভ শেষ করলাম। টেস্টপেপারের বাইরে যাই নাই।

(২০১৪)-

বাবা- বাবুর পরীক্ষা, কি করতাছে?

মা- ফেইসবুকে প্রশ্ন খুজতাছে। ৫ এর ক পায়নাই। তুমি ল্যাপটপ নিয়ে বসো। মাস্টারকে বলছি ৬ আর ৭ খুঁজে দিতে। এখনো খুঁজে পায় নাই। আগামীমাসে বেতন কিভাবে নেয় দেখুম। আমার ঘুম নাই।

(২০২৪)-

বাবা- কালকে পরীক্ষা। তোর দেখি কোন টেনশন নাই !!

-আব্বা প্রস্তুতি শেষ। প্রশ্ন, উত্তর সবই ইন্টারনেটে দেয়া আছে; খালি প্রিন্ট করে জমা দিলে হবে।

(২০৩৪)-

বাবা- কালকে পরীক্ষা; প্রবেশপত্র পাইছস?

- না বাবা; এবার প্রবেশপত্র নিতে হবে না। ডাইরেক্ট সার্টিফিকেট দিয়ে দিছে। লুজ মোশানের বেগে সবাইরে এ+ প্লাস দিয়া দিছে সরকার।

(২০৫০)-

বাবা- আমার পোলার জন্ম হইছে। জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট দেন।

-এই নিন সকল কাগজ।

বাবা- এত্তোগুলা ক্যান?

- একটা জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট। বাকি দুইটা ম্যাট্রিক, ইন্টার সার্টিফিকেট।

টিকা দেওনের সময় অনার্স-মাস্টার্সের দুইটা নিয়া যাইয়েন।

(২০৭০)-

(কাজী অফিসে বরকনে)

বর- ভাই, মেরিজ সার্টিফিকেট এত্তগুলা ক্যান? কোন ঝামেলা করলাম! ইন্ডিয়ার ভিসার জন্য আপ্লাই করতেওতো এতো কাগজ ফিলাপ করতে হয় না !!

- একটা মেরিজ সার্টিফিকেট; বাকিগুলা আপনাদের অনাগত সন্তানের জন্য একাডেমিক সার্টিফিকেট। ডিফল্ট এ+ দেয়া আছে। জাস্ট সন্তানের নাম বসাই দিয়েন।।

... যাই হোক, খতম করছি...

খতম করার আগে ডিয়ার রাষ্ট্রের কর্তামশাই...

বাচ্চাদের জানতে- বুঝতে- শিখতে দিন, সার্টিফিকেট দেবেন না ভিক্ষা।

সামান্য কিছু ভোটের জন্য, নষ্ট করবেন না গোটাজাতির জ্ঞান, বুদ্ধি, শিক্ষা ।।

সুত্র: ফেইসবুক থেকে নেয়া!

বিষয়: বিবিধ

১৩১১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

271284
০৪ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৮:০৫
বুড়া মিয়া লিখেছেন : জানতে বুঝতে দিলেই তো বেশী বুইঝা পরে গ্যাঞ্জাম সৃষ্টি করবে ...
০৫ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৪০
215770
মুক্তির মিছিল লিখেছেন : কথা হাছা!
এবার একটা গল্প শোনেন,
বাংলার কোন এল এলাকার এমপি'র কথা, সে তার এলাকার সবাইকে চাওয়া মাত্র আর্থিক সাহায্য করত। তাই সাধারন জনগন তাকে খুবই পছন্দ করত। সবাই তাকে ভোট দিয়া নির্বাচিত করত, কারন ঐ এলাকায় তার পরিবার ছাড়া কোন উচ্চ শিক্ষিত পরিবার ছিল না, যারা তার সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারে। আর এমপি সাহেবও তার এলাকার স্কুলে কোন ভাল শিক্ষক থাকতে দিতেন না। এমন শিক্ষক রাখতেন যাতে করে ১০০% ছাত্র কোন ধরনের প্রতিযোগিতা ছাড়াই পাশ করে। যারা ঐ এলাকা থেকে এসএসসি পাশ করে, তারা কেউই কলেজের পড়ার সাথে তাল মিলাতে পারে না, তাই টেনে টুনে B+ পেয়েই পড়াশুনার ইতি টানেন। আর এমপি সাহেবেকেও কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। মাঠে উনি একাই খেলোয়ার, গোল পোষ্ট পুরাই ফাঁকা, যত খুশি গোল দাও........গোল!গোল!গো.........
271292
০৪ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৯:২৯
বুসিফেলাস লিখেছেন : Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up

Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming
০৫ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৩
215774
মুক্তির মিছিল লিখেছেন : একটা দেশকে ধংস করার সব আয়োজনের শেষ প্রান্তে আমরা দাড়িয়ে...........
271315
০৪ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
কাহাফ লিখেছেন :
বিনোদনের উপর বিনোদন........
হা....হা......হা.....হা......!!!!
Whew! Whew! Whew! Whew!
০৫ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৪
215777
মুক্তির মিছিল লিখেছেন : এই বিনোদন আর বেশি দিন থাকবে না.....
এটা চেতনার বাস্তবায়ন!!
271320
০৪ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:২৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : কাম সারছে!!!
আমারে কয়েকটা সার্টিফিকেট দেওন যায়না???
০৫ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৫
215780
মুক্তির মিছিল লিখেছেন : একটু সবুর করেন, তারপর যত ইচ্ছা নিয়া যাইয়েন....
271333
০৪ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:৫৫
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভালো লাগলো
০৫ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৫১
215784
মুক্তির মিছিল লিখেছেন : এত ভাল লাগলে তো হবে না....
যারা এসবের আযোজন করতেছে, তাদের সন্তানেরা কিন্তু ঠিকই কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়াশুনা করতেছে। আইটি বিশেষজ্ঞ, ব্যারিষ্টার, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার..... সবই হচ্ছে। শুধু ৯৯% সাধারনেরা কিছুই হচ্ছে না...তারা আটো পাশ করে কোন কিছুই হতে পারবে না। তারা তারা তো তেমন কিছু জানেই না, বিশেষজ্ঞ হবে কি ভাবে?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File