হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা’র বিকৃতি অনৈতিক

লিখেছেন লিখেছেন শিব্বির আহমদ ওসমানী ০৬ মে, ২০১৩, ০১:১৪:২৫ দুপুর

শিব্বির আহমদ ওসমানী: হেফাজতে ইসলাম এপ্রিলের ৬ তারিখে ঢাকা শহরের শাপলা চত্ত্বরে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় একটি শান্তিপূর্ণ মহা-সমাবেশ করে প্রশাসনের সঙ্গে ওয়াদা অনুযায়ী শেষ করে ফিরে যায়। বাংলাদেশের মানুষ শাপলা চত্বরে এতো আলেম-ওলামাদের একসাথে কখনো জমায়েত হতে দেখেনি। কত মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন তা নিয়ে সঠিকভাবে কোন পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও সংখ্যাটা তাক লাগিয়ে দেয়ার মতোই ছিল। অনেকে বলেছেন প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ শাপলা চত্ত্বরে জমায়েত হয়েছিল। হেফাজতে ইসলামের এই লংমার্চ যেন না হতে পারে তার জন্য সরকার নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল। হেফাজতে ইসলামের লংমার্চে সারাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের দুটি সম্পূর্ণ পৃথক রূপের প্রকাশ ঘটেছে। ইসলাম ও মুসলমানদের ব্যাপারে ক্ষমতাসীনরা আসলে যে ন্যক্কারজনক প্রতারণাপূর্ণ কৌশল নিয়েছিলেন সে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হয়েছে। মুখে না বললেও সর্বান্তঃকরণে তারা ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকদের পক্ষই নিয়েছিলেন। একদিকে সরকার সমাবেশের অনুমতি দিল আর অপরদিকে তাদের পালিত নাস্তিক ও মিত্রদের দিয়ে হরতাল-অবরোধ ডাকাসহ নিজস্ব উদ্যোগে সব যানবাহন বন্ধের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকাকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে ইসলাম রক্ষার লংমার্চ ও মহাসমাবেশ বানচালের অপচেষ্টা চালাল। কিন্তু তাদের চক্রান্ত সফল হয়নি। মুসলিম জনতা সরকারের সকল কন্টকাকীর্ণ বাধার বৃত্ত, গুলি, কারাশৃঙ্খলের রক্তচক্ষুসহ বহুমূখী ষড়যন্ত্রের জাল চিন্ন করে সারা দেশে ইসলামী চেতনার মহাজাগরন ঘটিয়েছে। তারা প্রমান করেছেন, আল্লাহ এবং রাসুল (সা.)-এ বিশ্বাসী এ মানুষগুলো স্বাধীনতা বিরোধী নয়। তারা শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের এই দেশে যেমন সর্বস্তরে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তেমনি রক্ষা করতে চান অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা। এরই নাম ইসলাম। এরই নাম শান্তি।

হেফাজতের এই কর্মসূচি শেষ করে তারা নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গেছেন। কিন্তু শেষ হয়নি তাদের নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা। তবে টেলিভিশনের টকশোগুলোর ধরন পালটে গেছে। প্রায় প্রতিটি চ্যানেলে একজন হেফাজতের মাওলানা সাহেব আসছেন তাদের ১৩ দফা দাবির ব্যাখ্যা দিতে। কিংবা একই মাওলানা সাহেবকে এক চ্যানেল থেকে অন্য চ্যানেলে দৌড়াতে হচ্ছে অতিথি হয়ে। হেফাজতের ১৩ দফা বোঝা এবং বোঝানোর দরকার আছে। সেদিক থেকে হেফাজতে ইসলামের পক্ষে গণমাধ্যমে মাওলানা সাহেবদের এই উপস্থিতি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। চ্যানেলগুলোর পক্ষ থেকে তাদের ডাকা হচ্ছে শুধু ১৩ দফা বোঝার বা বোঝানোর জন্য ভাবলে ভুল হবে। বরং অধিকাংশ সময় ডাকা হচ্ছে তাদের একটু হেনস্তা বা বেকায়দায় ফেলার জন্য। তারা যে চিন্তা-চেতনায় সমাজের পশ্চাৎপদ মানুষ এটা যে কোনভাবে প্রমাণ করা অনেক গণমাধ্যমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন মাওলানা সাহেবকে ঘায়েল করার জন্য থাকছেন দুই-তিনজন বাম-বুদ্ধিজীবী, নারী নেত্রী এবং রাজনীতিবিদ। দর্শকরা বাম উপস্তাপকদের কুটকৌশল বুঝেন। অনেক বাম-বুদ্ধিজীবী ও কতিপয় নারী নেত্রীরা ঘায়ের জোরে তাদের ভ্রান্ত মতবাদ প্রকাশ করতে চাইলেও যুক্তি দিয়ে হেফাজতের ১৩ দফাকে খন্ডন করতে পারছেন না। কারণ ইসলাম সবসময়ই বিজয়ী। ইসলামের বিধানই সত্য ও শান্তির বিধান। এতে কোনো ভূল বা ভ্রান্তি নেই।

হেফাজতে ইসলামের নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন ১৩ দফা দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে মানতে বাধ্য করা হবে। ১৩ দফার দুটি দফাতেই নারীদের কথা রয়েছে। হেফাজত নারীদের মধ্যযুগে ঠেলে দিচ্ছে বলে অনেকের মধ্যে হায়হায় শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে যারা নিজেদের 'প্রগতিশীল' মনে করেন তারা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। তারা অনেকটা মিথ্যা ও অপব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের অপব্যাখ্যায় সাধারণ মানুষ একটু বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তাই হেফাজতে ইসলাম তাদের সংশ্লিষ্ট দাবির ব্যাখ্যাও প্রকাশ করেছে।

আমি আমার গত ‘‘হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা; বিরোধিতা কাম্য নয়’’ প্রবন্ধে হেফাজতের ১৩ দফা নিয়েই আলোচনা করেছি। আজ শুধু নারী অধিকারের প্রশ্নের সাথে জড়িত দুটি দফা (দফা নং ৪ ও ৫) বিষয়ে কিছু কথা বলা প্রয়োজন মনে করছি। হেফাজতে ইসলামের দাবিগুলোর ঢালাওভাবে বিরোধিতা করার কোনো কারণ আমি খুজে পাই না। ব্যাপারটার বিরোধিতা বা পক্ষে দাঁড়িয়ে যাবার বিষয় নয়। দেশের গণমানুষের বিশাল একটি অংশের ক্ষোভ-বিক্ষোভের জায়গাগুলো আমাদের বুঝতে হবে। তারা তাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভের কথাগুলো জাতিকে জানিয়েছে। এখন দরকার সেগুলো নিয়ে সমাজের অন্যান্য অংশের সাথে একটা ব্যাপক আলোচনার আয়োজন করা। ব্যাপক কথাবার্তা বা আলোচনার জন্য যে সময় প্রয়োজন তা আমরা দিতে চাই কিনা। সরকার এই দাবিগুলোকে দামাছাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। এই দাবিগুলো ধর্মের মোড়কে ইসলামপন্থিদের পক্ষ থেকে তোলা হয়েছে বলেই নারীদের প্রথম প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক হয়ে গেছে। কিন্তু চোখ বন্ধ করে এর বিরোধী হতে হবে এটা কোন যুক্তি হতে পারে না। যে মোড়কেই আসুক মোড়ক খুলে মূল বিষয় নিয়ে আমাদের পরস্পর আলোচনা করতে হবে। এখন সে সময় এসেছে। ধর্ম সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণেই অনেকে আজে-বাজে কথা বলছেন। ইসলাম ধর্ম নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে সেটা অনেকে জেনেই না জানার বান করেন। আজ ইসলামের আদর্শ থেকে মূখ ফেরানোর কারণেই আমাদের সমাজে এত অস্থিরতা। যৌতুক, ইবটিজিং, পাশবিক নির্যাতন’সহ নানাবিদ নিত্যনতুন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন আমাদের নারী সমাজ। যখন এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে নারী মুক্তির নামে দাঁড়াতে গিয়ে আমরা পুরুষতান্ত্রিক অবাধ বাজারব্যবস্থা ও নারীকে পণ্যে রূপান্তরের পক্ষে দাঁড়াচ্ছি। বেহায়াপনার মাধ্যমে নারী সমাজের মান-সম্মান ধূলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। আজ উলঙ্গ নারীর বিজ্ঞাপন ছাড়া বহুজাতিক কোম্পানির পন্য বাজারজাত হয় না। এটা নারী মুক্তির নামে তাদেরকে পন্য হিসেবে ব্যবহার নয় কি?

দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী তেরো দফার ভিতরে তাদের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ প্রত্যক্ষ করেছেন। তারা মনে করছেন তেরো দফার মধ্যমে নারী সমাজের স্বাধীনতা, ইজ্জত-সম্মান রক্ষা পাবে। নারীরা ইভটিজিং ও বখাটে বুদ্ধিজীবীদের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। তেরো দফা বাস্তবায়িত হলে পুজিঁবাদী অবাধ বাজারব্যবস্থা ও নারীকে পণ্যে রূপান্তরের অপচেষ্ঠা থেকে রক্ষা করা হবে। টিবির পর্দা খুললেই উলঙ্গ নারীদের বিজ্ঞাপন দেখতে হবে না। আমরা প্রত্যক্ষ করেছি ইদানিং কিছু নারী সংগঠনও সংবাদ সম্মেলন করে হফাজতের দাকি-দওয়ার সাথে একমত পোষণ করেছে। শাপলা চত্ত্বরের মহাসমাবেশ’সহ বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে হেফাজতের সমাবেশে লাখো মানুষের উপস্তিতি প্রমান করে দেশের নব্বই ভাগ মুসলমানই সমর্থন করেছে। যেখানেই সমাবেশ হচ্ছে সেখানেই বলা হচ্ছে হেফাজতের সমাবেশ স্মরণকালের সব চেয়ে বড় সমাবেশ হয়েছে।

অন্যদিকে ধর্মীয় জায়গা থেকে তোলা দাবি-দাওয়া বলে এর বিরুদ্ধে বিরুপ প্রতিক্রিয়া করতে হবে কেন? ইতিমধ্যে বাম-রাজনৈতিক দল ও কতিপয় নারী সংগঠনের কাছ থেকে অনেক প্রতিক্রিয়া এসেছে। তাদের একটি সাধারণ বক্তব্য হচ্ছে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা মানলে আমরা মধ্যযুগে ফিরে যাবো। এই ১৩ দফা মানলে দেশ ১৩ বছর পিছিয়ে যাবে। কেমন করে পিছিয়ে যাবে? সেটা কিন্তু কেউ পরিষ্কার করে বলতে পারছেন না। আমার ধরণা যারা অতিকথন করছেন তারা আসলে না জেনেই করছেন। যারা বিতর্কীত করার চেষ্টা করেছেন তারা মূলত বিতর্কের জন্যই বিতর্ক করছেন। অনেকটা মিথ্যা ও অপব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। অনেকের ইসলাম ও মধ্যযোগ সম্পর্কে ধারণা নেই।

প্রথমত মধ্যযুগ বর্তমান যুগের চেয়ে মন্দ ছিল কিনা? দ্বিতীয়ত কেউ মধ্যযুগে যেতে চাইলেই কি যেতে পারবেন? তৃতীয়ত আমরা একটি গ্লোবাল বিলেজে’র মধ্যে বসবাস করছি। হেফাজতে ইসলাম বা আমরা কেউই এর বাইরে নই। ফলে হেফাজতে ইসলাম আমাদের কোন এক 'মধ্যযুগে' ফিরিয়ে নেয়র পায়তারা করছে এমন কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

বরং সমাজের গণমানুষের বিশাল একটি অংশ বিদ্যমান ব্যবস্থাকে কিভাবে দেখছে। কিভাবে গ্রহন করছে এবং কিভাবে তার প্রতিকার খুঁজছে সেটা বুঝতে পারাই আমাদের প্রধান কাজ। আমাদের দরকার ধর্মীয় ভাষায় তোলা তাদের মূল বক্তব্যগুলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় কতটুকু বাস্তবায়ন সম্ভব এ বিষয় নিয়ে একটা সুস্থ আলোচনার দিকে নেয়ার চেষ্টা করা। তাদের দাবিগুলো সমর্থন কতটুকু করা যাবে তার তর্ক-বিতর্ক হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারাই একমাত্র দেশের সাধারণ নারী-পুরুষদের কাছে একটি প্লাটফর্ম হিসেবে হাজির হতে পেরেছে। কাজেই একে উপেক্ষা করা আমাদের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এবং তাদেরকে এড়িয়ে যওয়ার চেষ্ঠা করলে হয়তো জাতিকে চরম মূল্য দিতে হবে।

হেফাজতে ইসলাম প্রথমে ১৩ দফা হাজির করার পর সমাজের প্রতিক্রিয়ায় সাড়া দিচ্ছেন। তারা অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি নিরসনে প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ১৩ দফা দাবির ব্যাখ্যা প্রকাশ করেন। সেই ব্যাখ্যা থেকেও আমি দফা ৪ ও ৫ নিয়ে কিছু বিশ্লেষণ করার চেষ্ঠা করব।

৪ নং দফাঃ ‘দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারীজাতির সার্বিক উন্নতির বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে তাদের নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মস্থল, সম্মানজনক জীবিকা এবং কর্মজীবী নারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে নারীদের ইজ্জত-আব্রু, যৌন হয়রানি থেকে বেঁচে থাকার সহায়ক হিসেবে পোশাক ও বেশভূষায় শালীনতা প্রকাশ এবং হিজাব পালনে উদ্বুব্ধকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; এবং একই লক্ষ্যে নারী-পুরুষের সব ধরনের বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে অবাধ ও অশালীন মেলামেশা, নারী নির্যাতন, যৌন হয়রানি, নারীর বিরুদ্ধে সর্বপ্রকার সহিংসতা, যৌতুক প্রথাসহ যাবতীয় নারী নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।’

আমার মনে হয় এই অংশটি হেফাজত বা কোন ইসলামী দলের কাছ থেকে না এসে যদি কোন রাজনৈতিক দল কিংবা নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আসতো তাহলে সবাই একে স্বাগতই জানাত। পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অনেক নারী এই ধরনের সমস্যার শিকার হচ্ছেন, যা নারীকে পণ্য আকারে হাজির করছে। কেউ কেউ হয়তো স্বেচ্ছায় এমন পথ বেছে নিয়েছেন। কিন্তু তাদের কারণে অধিকাংশ নারীর ওপর অপবাদ আসছে। ফলে এই অবস্থা পরিবর্তন করা প্রগতিশীল নারীদেরও দাবি হতে পারে। এর সাথে নারীদের ঘর থেকে বের হবার বা না হবার কোন সম্পর্ক নেই। হেফাজতে ইসলামের এই দাবি থেকে অনেকে ভেবে নিয়েছেন তারা নারীদের ঘর থেকেই বের হতে দিতে চান না। নারীদের কাজ করা বা শিক্ষার সুযোগ একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।

আল্লামা আহমদ শফি এ দফার ব্যাখ্যা দিচ্ছেন: ‘দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারীজাতির সার্বিক উন্নতির বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে তাদের নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মস্থল, সম্মানজনক জীবিকা এবং কর্মজীবী নারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে নারীদের ইজ্জত-আব্রু, যৌন হয়রানি থেকে বেঁচে থাকার সহায়ক হিসেবে পোশাক ও বেশভূষায় শালীনতা প্রকাশ এবং হিজাব পালনে উদ্বুব্ধকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; এবং একই লক্ষ্যে নারী-পুরুষের সব ধরনের বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে অবাধ ও অশালীন মেলামেশা, নারী নির্যাতন, যৌন হয়রানি, নারীর বিরুদ্ধে সর্বপ্রকার সহিংসতা, যৌতুক প্রথাসহ যাবতীয় নারী নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।’

আল্লামা আহমদ শফি আরো বলছেন: ‘তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাস্তিক্যবাদী ব্লগাররা শুধু আল্লাহ, রাসুল, ইসলাম ও মুসলমানদের নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করেই থামেনি; সঙ্গে সঙ্গে আবহমান বাংলার রক্ষণশীল সামাজিক অনুশাসন এবং সংস্কৃতির ওপরও আঘাত করে অনেক কর্মকাণ্ড এরই মধ্যে করে ফেলেছে। বিয়েবহির্ভূত, ঘনিষ্ঠ অনাত্মীয় নারী-পুরুষের দৃষ্টিকটু বিচরণ ও রাস্তায় একঙ্গে, এমনকি একই তাঁবুতে অবস্থান করে রাতযাপনের মতো অনৈসলামিক, অনৈতিক, অসামাজিক এবং এদেশের আবহমান কৃষ্টি-কালচার সংস্কৃতিবিরোধী কাজ প্রকাশ্যে ঘটছে শাহবাগে। ধর্মীয় অনুভূতি ছাড়া যা পারিবারিক, সামাজিক এবং জাতীয় সাংস্কৃতিক দৃষ্টিতেও কখনও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

শাহবাগে যে কালচারের চর্চা চলেছে ও চলছে, তা দেশে চালু হলে নারীদের নিরাপত্তা সব ক্ষেত্রেই বিঘ্ন হবে। দেশের নারী সমাজকে ইভটিজিং, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি থেকে বাঁচিয়ে রেখে, সর্বোপরি নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশেই উপরোক্ত কর্মকাণ্ড বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। ইসলাম নারীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও যৌন হয়রানি থেকে বেঁচে থাকার জন্য হিজাব প্রথা বাধ্যতামূলক করেছে এবং পুরুষদেরও বৈধ সম্পর্কের বাইরে নারীদের সঙ্গে দৃষ্টি অবনত ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করতে বলে চমত্কার ভারসাম্য রক্ষা করেছে। কাজেই হিজাব পালন করে অথবা যৌন উদ্দীপনা তৈরি করে না—এমন শোভনীয় পোশাক পরে নারীদের নিরাপদ কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে বা ঘর থেকে বের হতে তো কোনো বাধা নেই। ইসলাম নারীর নিরাপত্তার দিকটা কঠোরভাবে দেখে। কেবল সুযোগসন্ধানীরাই এটাকে নারী অবদমন বলে অপপ্রচার চালায়। আমাদের কথা পরিষ্কার যে, হিজাব বা শালীনতার সঙ্গে নারীদের নিরাপদ পথ চলাচল, শিক্ষার্জন ও কর্মক্ষেত্রে যেতে কোনো বাধা নেই। উদাহরণস্বরূপ, নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য আলাদা বালিকা বিদ্যালয় বা মহিলা কলেজ থাকতে পারলে আলাদা কর্মক্ষেত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আপত্তি তোলার যুক্তি থাকতে পারে না।’

তাহলে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যাখ্যায় কোন সমস্যাই দেখা যাচ্ছে না। এবং এ দাবিতে নারীদের ঘরে ঢোকানো হচ্ছে না। নারীদের কাজের অধিকার হরণ করা হচ্ছে না। বরং নারীদের সুরক্ষার কথা বলা হচ্ছে। এই প্রস্তাবে ভীত না হয়ে আমাদের দেখতে হবে নারীদের বর্তমান অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখে নারীকে ভোগ্যপণ্য ভেবে যারা নির্যাতন করে। তাদের হাত থেকে আমরা কিভাবে মুক্ত হতে পারি। মূলত হেফাজত সে পথ খূজার কথা বরেছে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে কেউ ধর্মের কথা বললে আমরা বুঝি ধর্মীয় গোঁড়ামির মধ্যে পড়ে গেলাম। 'বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার' কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে প্রতিটি সংস্কৃতি ও সামষ্টিক মূল্যবোধ সামাজিকভাবেই এ সকল বিষয় নির্ধারণ করে। বিশ্বের অনেক দেশেই এখন নারীরা কাজ করছেন। মুসলিম নারীরা হিজাব পরে কিংবা শালীনভাবে কাজে যাচ্ছেন এবং নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করছেন। হেফাজত এতে বাধা দিচ্ছে না। তবে শালীনতা শুধু মেয়েদের বিষয় হতে পারে না। একই সঙ্গে পুরুষদের শালীন ও নৈতিকতাবান হতে হবে।

৫ নং দফাঃ ‘নারীনীতি ও শিক্ষানীতির ইসলামবিরোধী ধারা ও বিষয়গুলো বিলুপ্ত করতে হবে এবং শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলামের মৌলিক শিক্ষা মুসলিম ছাত্রদের জন্য বাধ্যতামূলক করতে হবে।’

প্রথমেই বলে রাখা ভালো যে, বাংলাদেশ সরকার কোন নারী নীতি ঘোষণা করেননি, যেটা আছে সেটা হচ্ছে 'নারী উন্নয়ন নীতি'। নারী উন্নয়ন নীতি নিয়ে ভালো করে বুঝতে হলে আমাদের এর পেছনের কথা জানতে হবে। এই নীতি প্রণয়নের সাথে নারী আধিকার প্রতিষ্ঠার সম্পর্কের চেয়ে নারী উন্নয়নের সম্পর্ক অনেক বেশি। ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর একটি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। ১৯৯৫ সালে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্ব নারী সম্মেলনের ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই নীতি প্রণীত হয়।

তারই আলোকে ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকার নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন করেছে। ২০০৪ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার এই নীতিতে পরিবর্তন ঘটায় এবং নারী উন্নয়ন নীতি ২০০৪ প্রণয়ন করে। আবার ২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংশোধিত আকারে নারী উন্নয়ন নীতি ২০০৮ প্রণয়ন করেন। তবে তারা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। কাজেই নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়নে সব সরকারই সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। কারণ দাতাগোষ্ঠীর কাছে নারী উন্নয়ন নীতি তাদের উন্নয়ন সহযোগিতার একটি অপরিহার্য অংশ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় অঙ্গীকার করলেও নারী উন্নয়ন নীতি ঘোষণা করেছে ২০১১ সালে। প্রায় ৪১টি লক্ষ্য সামনে রেখে প্রণীত এই নীতিতে নারীর সম-অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন সংশোধন ও প্রয়োজনীয় নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম নারী নীতি পুরোটার বিরোধিতার করছেন না। তারা নারী নীতির ইসলামবিরোধী ধারাগুলো বিলুপ্ত করতে বলছেন।

আল্লামা আহমদ শফি এ ব্যাখ্যায় বলেছেন: ‘ত্যাজ্য সম্পত্তিতে সম-অধিকারের আইনসহ নারীনীতির পবিত্র কোরআন-সুন্নাহবিরোধী ধারাগুলোই আমরা সংশোধনের দাবি করছি। এছাড়া জাতিসংঘের বিতর্কিত সিডও সনদ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। এই সিডও সনদের বিরুদ্ধে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় নেতা পোপ ও ভ্যটিকানসহ অনেক মুসলিম ও খ্রিস্টান দেশ আপত্তি জানিয়েছে। এই সিডও সনদ কার্যকর হলে পারিবারিক ব্যবস্থা বলে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। এ বিতর্কিত সনদে বিয়েবহির্ভূত অবাধ যৌনাচারের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে সন্তানের পিতৃপরিচয় বিলীন হয়ে যাবে। আমরা নারীসমাজকে স্পষ্ট করে জানাতে চাই, ইসলাম সর্বোত্তম উপায়েই নারীদের মর্যাদা, অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার পক্ষে। আর বর্তমানের নাস্তিক্যবাদীরা নারীদের কেবল অলঙ্কারিক ও ভোগ্যপণ্য হিসেবেই বিবেচনা করে।’

আমরা দেখেছি, চার দলীয় জোট সরকারের নারী উন্নয়ন নীতি থেকে উত্তরাধিকার সম্পদ কথাটি বাদ দেয়া হয়েছিল। পরে ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নারী উন্নয়ন নীতিতে উত্তরাধিকার শব্দটি না রেখে ‘স্থাবর ও অস্থাবর’ শব্দ যোগ করা হয়। ২০০৮ সালে ওলামা-মাশায়েখদের প্রতিবাদের কারণে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত খতিব মুফতি মুহাম্মদ নুরুদ্দিনকে প্রধান করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন করতে একটি কমিটি করে দেয়া হয়। এ কমিটি ২০০৮ সালের নীতিমালার ১৫টি ধারা কোরআন-সুন্নাহর পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেন। এর মধ্যে ‘সিডও’ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত ধারাটি বাতিলের সুপারিশ করা হয় (কালের কণ্ঠ, ৭ মার্চ, ২০১০)। নারী উন্নয়ন নীতির ব্যাপারে ২০০৮ সাল এবং ২০১১ সালে ওলামা-মাশায়েখরা প্রতিবাদ করেছেন এবং তাদের নিজস্ব মতামত তুলে ধরেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে তাদের কথা দিয়েছেন যে, কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কোন আইন সরকার অতীতেও করেনি ভবিষ্যতেও করবে না। কিন্তু মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ১৯৯৭ সালে নীতিমালা অনুযায়ী উত্তরাধিকার বিষয়টি নতুন নীতিমালায় পুনর্বহাল করেন। দেখা যাচ্ছে, নারী উন্নয়ন নীতিতে উত্তরাধিকারের বিষয়টি সরকার আসলে কতখানি রাখছেন তা তারা নিজেরাই নিশ্চিত নন। সরকার একদিকে নারী সংগঠন, অন্যদিকে ইসলামপন্থিদের এ বিষয়ে অস্পষ্ট রেখে দিয়েছেন। নারী আন্দোলন মাঝখানে বিভ্রান্ত হয়েছে।

হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফায় শুধু বলেছেন নারী নীতি ইসলামবিরোধী। হেফাজতের উচিত হবে এই ব্যাপারে তাদের নারী সংগঠন ও অন্যান্য নারী সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় করা। নারী আন্দোলন যখন দাবি করে নারী নীতি সব নারীর জন্য। সেখানে হেফাজতের পুরুষদের মতামত ছাড়াও হেফাজতের নারীদের মতামত শোনাও সরকারের প্রয়োজন।

নারীরা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেভাবে এগিয়ে এসেছেন সেই বাস্তবতাকে মনে রেখেই আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। যেসব ক্ষেত্রে পশ্চিমা চিন্তার প্রভাবের কারণে আমাদের স্বার্থের প্রতিকূল বলে মনে হচ্ছে অবশ্যই সেগুলোর বিষয়ে সমালোচনা হতে পারে। হেফাজতের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের বিতর্কিত ‘সিডও সনদ’ বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। এটা বাস্তব সম্মত ও যৌক্তিক। আন্তর্জাতিক যে কোন সনদে পশ্চিমা দেশের চিন্তা-চেতনার প্রাধান্য থাকবে এবং এর বিরুদ্ধে খোদ পশ্চিমা দেশের ধর্মীয় নেতারা ছাড়াও আরও অনেকেই প্রতিবাদ করেছেন। বিশেষ করে পোপ ও ভ্যাটিকানরা প্রতিবাদ করেছেন। তার অর্থ হচ্ছে শুধু ইসলামী আলেম-ওলামারাই নন। অন্যান্য ধর্মের পক্ষ থেকেও সিডও সনদ এর প্রতিবাদ করেছেন। ‘সিডও সনদ’ জাতিসংঘের সনদ হিসেবে ধরে নিয়ে নিজ দেশের প্রেক্ষাপটে গ্রহণ করা যায় কি না সে আলোচনা অবশ্যই আমাদের করতে হবে।

আল্লামা আহমদ শফি আরো বলেছেন: ‘সরকার ঘোষিত শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষাকে সঙ্কুচিত করা হয়েছে। এখানে ধর্মশিক্ষা রাখা হলেও ছাত্রছাত্রীদের মন ও মননকে ধর্মহীন করার জন্য কূটকৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। চলতি ২০১৩ সালের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইগুলোতে ইসলামের যে অপব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে, তা চরম অগ্রহণযোগ্য। তাছাড়া কোমলমতি ছেলে-মেয়ে শিশুদের ক্লাসে একসঙ্গে বসিয়ে যেভাবে যৌন শিক্ষা চালু করা হয়েছে, তা এদেশের ভবিষ্যত্ প্রজন্মের নৈতিকতা ও সুস্থ সামাজিক অনুশাসনকে চরম হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। মানুষকে যাবতীয় পশুপ্রবৃত্তি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অন্যায়-অপরাধ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে ধর্মশিক্ষা বা ধর্মীয় অনুভূতির বিকল্প নেই। এ কারণে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের উদ্যোগ থেকেই আমরা দাবি জানিয়ে আসছি যে, শিক্ষার সব স্তরে সঠিক ধর্মশিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ইসলাম সবসময় অন্যায়, অবিচার, ঘুষ-দুর্নীতি, মদ-জুয়া, মিথ্যা, খুন, ধর্ষণ, মারামারি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখে। সুতরাং সুস্থ মানসিকতাপূর্ণ আদর্শ নাগরিক গঠনে ধর্মীয় শিক্ষার বিকল্প কিছু হতে পারে না।’

হেফাজতে ইসলামের এ দাবিটা অত্যান্ত যুক্তিক এবং বিবেচ্য বিষয়। সকলকেই মানতে হবে যে, মানুষকে যাবতীয় পশুপ্রবৃত্তি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অন্যায়-অপরাধ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে ধর্মশিক্ষা বা ধর্মীয় অনুভূতির কোনো বিকল্প নেই। সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ধর্মশিক্ষা অন্তর্ভূক্ত করা খুবই জরুরী।

আমরা হেফাজতের ৪ ও ৫ দফা’সহ সকল দফা পর্যালোচনা করে দেখেছি যে, এখানে মধ্যযোগীয় বর্বরতা’র কোনো আলামত নেই। ইসলাম নারীদেরকে যে অধিকার দিয়েছে তারা সে অধিকার দেয়ার কথাই বলছেন। ইসলামের নীতি সমাজে কার্যকর করলে মূলত সমাজে শান্তি-শৃংখলা ফিরে আসবে। সমাজ থেকে অনাচার-অবিচার রহিত হবে। আমাদের নারী সমাজের মান-সম্মান বৃদ্ধি পাবে। তাদের কেউ অন্যায়ভাবে ব্যবহার করতে পারবে না।

আমরা আশা করতে চাই, সময় থাকতে সরকার তার নীতি ও অবস্থান পরিবর্তন করে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা নিয়ে আলোচনার মধমে একটা সমাধানের পথ খুজে বাহির করবে। তা না হলে সরকার’সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বিরাট মূল্য দিতে হবে।

লেখক: শিক্ষক, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।

E-mail:

বিষয়: বিবিধ

১৪৭১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File