শাহবাগে ফুটেছে দেশপ্রেমের ফুল, কিন্তু এতকাল...

লিখেছেন লিখেছেন শিব্বির আহমদ ওসমানী ২৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:০০:৩০ দুপুর

শিব্বির আহমদ ওসমানী: ‘ঘরে বসে নিরাপদ জীবন, নাকি রাজপথে দেশমার্তৃকার টানে দৃপ্ত স্লোগান-চল চলো শাহবাগে চলো’। ‘একাত্তরের প্রত্যাবর্তন’।

এ ধরনের অসংখ্য স্লোগানে ভরপুর এখন ইণ্টারনেট জগত। সবাইকে উৎসাহিত করা হচ্ছে শাহবাগে রওয়ানা দেয়ার জন্য। অনেকেই ইতিমধ্যে শাহবাগ যাত্রাকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ যাত্রার সঙ্গে তুলনাও করে ফেলেছেন। তাদের মতে দেশপ্রেমের পরীক্ষা দেয়ার উপযুক্ত সময়ই বটে এটা। তাইতো শাহবাগে যেন এখন দেশপ্রেমের ফুল ফুটেছে। সম্ভবত আয়োজকরা এই দেশপ্রেমের ফুল ফোটানোর জন্য শাহবাগের বিকল্প খুঁজে পান নি। কারন শাহবাগের নামে তো আবার একটু বাগান বাগান ভাব আছে তো। শাহ মানে ‘রাজ’ আর বাগ মানে ‘বাগান’। তাই সোজা কথায় শাহবাগের অর্থ হল ‘রাজকীয় বাগান বা শাহী বাগান’। কিন্তু দেশপ্রেমের ফুল শাহবাগে ভাল করে ফুটবে তো?

কেননা শাহবাগ নামে কেমন যানি একটা খাস মুসলমানি ভাব রয়েছে। আর দেশপ্রেমের সাথে ইসলামের সম্পর্কটাই বা কেমন সেটাও একটা দেখার বিষয়। আর ইতিমধ্যেই শাহবাগে যারা জামায়েত হয়েছেন তাদের অনেকেই তাদের মূল ইস্যু বাদ দিয়ে ইসলামকেই লক্ষ বস্তুতে পরিণত করেছেন। অনেক ব্লগার ও কথিত দেশপ্রেমিকদের কথায় তা অনেকটাই স্পষ্ট। তারা এমনটি না করলেও পারতেন। কিন্তু তরুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমের নামে ইসলামের বিরুদ্ধে এমন একটি মহড়ায় নামানোর সুযোগ সম্ভবত তারা খুব একটা পাবেন না যে মহড়ার অন্যতম মধ্যমণি হল স্বঘোষিত নাস্তিক যারা কিনা ইসলাম ও রাসুল (স) কে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে অভ্যস্ত। আর ইতিমধ্যেই কাদের মোল্লার ফাঁসীর দাবীতে জামায়েত হওয়া কথিত মানবতাবাদীরা ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ করারও দাবি তুলে ফেলেছে। আমি যুদ্ধপরাদিদের বিচারের বিরুদ্ধে নই। শুধুমাত্র যুদ্ধপরাধী কেন আমরা চাই সব ধরণের অপরাধীদেরই বিচার চাই। কিন্তু তাই বলে আজ যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে যারা ইসলামকে তাদের টার্গেটে পরিণত করেছে তাদের আমরা সমর্থন দিতে পারি না তো তাদের ইস্যু যাই হোক না কেন।

এই দেশপ্রেম বিষয়টা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বহুল আলোচিত বিষয়। বাংলাদেশের গত ৪০ বছরের রাজনীতির পুরোটাই আবর্তিত হয়েছে এই বিষয়টাকে কেন্দ্র করে। সবাই প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে তারা প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশী মাত্রায় দেশপ্রেমিক। বলা হয়েছে দেশপ্রেমের অভাবেই নাকি আমরা এতো পিছিয়ে আছি। তাই বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে গেলে দেশপ্রেম জাগাতে হবে। আবার অনেকের মতে শুধু দেশপ্রেমই নয় বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশপ্রেম ধারন করতে হবে। অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যে দেশপ্রেম ছিল ঠিক সেই দেশপ্রেম চাই। তাই একাত্তরের ৪২ বছর পরও দেশের মানুষকে স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তিতে বিভাজন করার চেষ্টা চলছে প্রতিনিয়ত।

যাহোক এ বিষয়টা নিয়ে এখন একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর একটা সময় সম্ভবত এখন উপস্থিত। তাই আজ আমরা এই বহুল আলোচিত এই ইস্যুটির দিকে একটু অন্যভাবে নযর দিব। তাই সবার প্রতি অনুরধ খোলা মন নিয়ে আমাদের মতামত পড়বেন।

দেশপ্রেম আসলে কি?

যে দেশপ্রেম নিয়ে এত হুলুস্থুল এত বলাবলি সেই দেশপ্রেমই রয়ে গেছে এখনো অসঙ্গায়িত। দেশপ্রেমের ফেরিওয়ালারা কি এখনও এর কোন সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে পেরেছে? আমরাও যারা এতকাল দেশপ্রেম দেশপ্রেম করে গলা ফাটিয়েছি তারাও কি জানি এর সংজ্ঞা কি বা কিই বা এর বাস্তবতা? কখন আসে এই দেশপ্রেম আর চলেই বা যায় কখন?

কিন্তু আমরা যদি একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করি তাহলে দেখব এই দেশপ্রেম হচ্ছে এক ধরনের আবেগজনিত প্রতিক্রিয়া যা কোন একটি বিশেষ ভূখণ্ডে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর মধ্যে দেখা দেয় যখন ঐ ভূখণ্ডটি বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয়। যেহেতু একটি ভূখণ্ডে বসবাসের কারনে ঐ ভূখণ্ডের সাথে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের একটি স্বার্থ জড়িত থাকে। তাই ঐ ভূখণ্ডটির উন্নতি অগ্রগতি যেমন তার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে অর্থাৎ এর সুফল যেমন সে ভোগ করে ঠিক তেমনি এর ওপর কোন আক্রমণ এলেও সে আতংকিত হয়ে উঠে। কেননা ঐ ভূখণ্ডের সাথে তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টটা রয়েছে। সেখানেই সে থাকে, তার পরিবার পরিজনও সেখানে থাকে। ঐ ভূখণ্ডেই সে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। তাই যখনই বহিঃশত্রুর আক্রমন হয় তখনই মানুষ তার টিকে থাকার প্রবিত্তি থেকেই তার দেশকে রুক্ষার জন্য সচেষ্ট হয়। দেশের মানুষের মধ্যে গড়ে ওঠে একটি বন্ধন আর এই বন্ধনটিই দেশপ্রেম বা দেশাত্মবোধক বন্ধন হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। কিন্তু যখনই শত্রু চলে যায় বা তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয় তখনই এই দেশাত্মবোধক বন্ধনটি আর কোন কাজ করে না। এমনকি মানুষের বাস্তব জীবনে বা কোন সমস্যার সমাধানে এই বন্ধনের কোন ভূমিকা থাকে না। মানুষ আবার যে যার ধান্দায় ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। ঐ অবস্থায় সবাই আমাদের সেই পরিচিত প্রবাদ ‘নিজে বাচলে বাপের নাম’ অনুসরন করে। তাই তখন নিজের ব্যাক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধিটাই হয়ে পড়ে মূল। আর সমাজের কল্যাণ হয়ে পড়ে গৌণ।

মজার ব্যাপার হল, এই দেশপ্রেম কিন্তু পশুপাখির মধ্যেও রয়েছে। তাই দেখবেন যখন এক বাড়ির মুরগী অন্য বাড়ির উঠানে যায় তখন সে বাড়ির মুরগীগুলো সেটাকে তেড়ে আসে এবং বাড়ি থেকে বের করে দেয়। কেননা ঐ মুরগীগুলো আশঙ্কা করে যে বহিরাগত মুরগীটি তাদের খাবারে ভাগ বসাবে। বহিরাগত মুরগী বিতাড়িত হওয়ার পর কিন্তু স্থানীয় মুরগীগুলো খাবারের উচ্ছিষ্ট নিয়ে নিজেদের মধ্যেই মারামারি শুরু করে দেয়। অথচ মাত্র কিছুক্ষণ আগেই তারা একটি বহিরাগত শত্রুকে বিতাড়িত করার মত একটি বিরাট কাজ সম্পাদন করল। তার মানে দেশপ্রেম দিয়ে তারা শত্রু বিতারন কর্মসূচী সম্পাদন করল বটে। কিন্তু তাদের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান কিন্তু এই দেশপ্রেম দিয়ে করতে পারে নি।

তো এটা পরিষ্কার যে-

১) দেশপ্রেমের মূল কারণ বহিরশত্রুর আক্রমণ। শত্রু এলেই এটা জেগে উঠে। এবং স্বাভাবিক অবস্থায় মানব জীবনে এর কোন ভুমিকা নেই। দেশপ্রেম দিয়ে দীর্ঘক্ষণ মানুষকে একতাবদ্ধ অবস্থায় রাখা যায় না।

২) দেশপ্রেম একটি আবেগজনিত পতিক্রিয়া যার উৎস হল মানুষের টিকে থাকার প্রবিত্তি।

৩) এটি একটি পাশবিক বন্ধন কেননা এটি পশুপাখির মধ্যেও পাওয়া যায়।

৪) শুধু দেশপ্রেম মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা সমাধানে সক্ষম নয় কেননা মানুষের জীবন চালানোর জন্য কোন সিস্টেম এই দেশপ্রেম থেকে পাওয়া যায় না।

দেশপ্রেমের নেই বলেই কি আমরা পিছিয়ে আছি?

আশা করি এতক্ষণে আমরা এই দেশপ্রেম নামক বস্তুটি সম্পর্কে একটি ধারনা পেয়েছি। এবার আমরা আরেকটি মারাত্মক ভুল ধারণা সংশোধন করার চেষ্টা করব। প্রায়ই বলা হয়ে থাকে যে দেশপ্রেমের অভাবে আমরা পিছিয়ে আছি। আমাদের উন্নতি হচ্ছে না কারণ আমরা দেশপ্রেমিক নেই।

তাহলে বলতে চাই একাত্তরে তো মানুষের মাঝে অনেক দেশপ্রেম ছিল। তো কেন একাত্তরের পরবর্তী সময়ে আমাদের উন্নতি হল না? দেশ স্বাধীনের পর যারা দেশ পরিচালনা করেছেন তারা তো দেশপ্রেমিক ছিলেন। তাহলে কেন তারা আমাদের অবস্থার পরিবর্তন করতে সক্ষম হলেন না? নাকি তাদের দেশপ্রেম সে সময় হাওয়া হয়ে গিয়েছিল? যদি হাওয়া হয় তো কেন হয়েছিল? নাকি শত্রু উধাও হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে মহামূল্যবান সেই দেশপ্রেমও উধাও হয়ে গিয়েছিল?

আওয়ামীলীগ, বিএনপির প্রায় সমস্ত প্রবীণ রাজনীতিবিদ এমনকি জাতীয় পার্টির অনেক সিনিয়র রাজনৈতিকই তো মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন তাহলে তারা কেন স্বাধীনতার পর দেশের শীর্ষ দুর্নীতিবাজে পরিণত হলেন? এতে কি প্রমাণ হয় না যে শত্রুর আক্রমণ না হলে দেশপ্রেম নামক বস্তুটির অস্তিত্ব কেবলই তত্ত্বকথা বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব আদৌ থাকে না? তাই যারা দেশপ্রেমের সস্তা স্লোগান দেন তারা কি এটা জাগ্রত করার জন্য বহিরশত্রুকে আক্রমণের আমন্ত্রণ জানাবেন যাতে করে মানুষের দেশপ্রেম জেগে উঠে?

উপরের প্রশ্নগুলোর জবাব কোনদিন দেশপ্রেমের ফেরিওয়ালারা দিতে পারবে না।

দেশপ্রেম কি মানুষের সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারে?

মানুষ তার ব্যাক্তিগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রতিনিয়ত হাজারো সমস্যার সম্মুখীন হয়। যেগুলোর একটা সঠিক সমাধান প্রয়োজন। তার থেকে বড় কথা এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রথমে একটা ভিত্তি দরকার যার উপর নির্ভর করে মানুষ তার বাস্তব সমস্যাগুলো সমাধান করবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, দেশপ্রেম কি মানব জীবনের বাস্তব সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারে? এই দেশপ্রেম থেকে কি সমাজ চালানোর কোন সিস্টেম পাওয়া যায়? দেশপ্রেম কি পারবে অপরাধ নির্মূল করতে? দেশপ্রেম দিয়ে কি আইন শৃঙ্খলার উন্নতি ঘটানো সম্ভব? দেশপ্রেম কি বেকারত্ব, দারিদ্রতা, সম্পদের অসম বণ্টনের মত আর হাজারো সমসসার সমাধান দিতে সক্ষম?

যদি সঙ্কীর্ণ চিন্তা বাদ দিয়ে একটু বৃহৎ পরিসরে চিন্তা করি তাহলে দেখা যাবে শুধু দেশপ্রেম ‍মানব জাতির সকল সমস্যা সমাধান করতে পারবে না। কারণ এর সাথে একটি সঠিক আদর্শের প্রয়োজন। আর একমাত্র সঠিক আদর্শই হল ইসলাম।

ইসলাম হচ্ছে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক আকিদাহ বা বিশ্বাস যা মানুষকে গভীর চিন্তা ভাবনা ও বিশ্বজগতে ছড়িয়ে থাকা নিদর্শনসমূহ পর্যবেক্ষণ ও তা অনুধাবনের মাধ্যমে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র অস্তিত্তে ঈমান আনার জন্য আহবান জানায়। মানুষ যখন এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশ্বাসে উপনীত হয় তখন সে একজন চিন্তাশীল ও বিশ্বাসীতে পরিণত হয়। ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ এবং অনুধাবনের ফলে সে বুঝতে পারে আল্লাহ্র অস্তিত্বকে। সে এটাও বুঝতে পারে আল্লাহ্‌ তাকে অনর্থক সৃষ্টি করেননি। বরং তাকে এ পৃথিবীতে একটি মিশন দিয়ে পাঠিয়েছেন এবং পরবর্তী জীবনে অর্থাৎ আখিরাতে এ ব্যাপারে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। এই প্রেরণাই তাকে আল্লাহ্‌র কাছে আত্মসমর্পণ করতে উৎসাহিত করে। সে জীবনের যাবতীয় সমস্যার সমাধানের জন্য আল্লাহ্‌ প্রদত্ত উৎসসমূহের অর্থাৎ কোরআন এবং সুন্নাহর দিকে ফিরে যায় এবং তা থেকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগের জন্য বিধান আহরণে সচেষ্ট হয়। আর এভাবেই ইসলাম মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয় যা তার ব্যাক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবনে পথনির্দেশকের ভূমিকা পালন করে।

তাই ইসলাম আল্লাহ্‌ প্রদত্ত জীবন ব্যাবস্থা যা এই পৃথিবীতে তেরশ বছরেরও বেশী সময় ধরে ইসলামী খিলাফত রাষ্ট্রের মাধ্যমে বাস্তবায়িত ছিল। অবশেষে ১৯২৪ সালে ব্রিটেনের দালাল’দের দ্বারা খিলাফত রাষ্ট্রের বিলুপ্তি ঘটে।

খিলাফত রাষ্ট্র এই পুরো সময় ধরেই ইসলাম বাস্তবায়িত করেছিল এবং সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে ইসলামের আদর্শ পৌঁছে দিয়েছিল। ইসলাম হচ্ছে এমন একটি আদর্শ যা সংকীর্ণ অঞ্চল ও ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের উপরে উঠে সব ভাষা ও বর্ণের মানুষকেই চিন্তা ও মতাদর্শের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম। তাই আমরা অবাক হয়ে দেখি ইসলাম কেমন করে বিশ্বের সাদা, কালো সব বর্ণের মানুষকেই এক কাতারে দাঁড় করাতে সফল হয়েছিল।

ইসলামের দুর্বলতার কারনণ মানুষ ইসলামকে পরিত্যাগ করেনি বা ইসলামের কারণে মুসলিমরা দুর্বল হয়ে যায়নি। ইসলাম আদর্শ হিসেবে রাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত হয়েছে এবং এর কারন ছিল ইসলামের বিরুদ্ধে শত্রুদের চক্রান্ত এবং এক শ্রেণীর মুনাফেকদের বিশ্বাসঘাতকতা।

আর মুসলিমদের দুর্বলতার কারণ ছিল ইসলাম বুঝার ক্ষেত্রে তাদের দুর্বলতা এবং শৈথিল্য প্রদর্শন। অথচ যখন মুসলিমরা ইসলাম বোঝার ক্ষেত্রে নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছিল এবং ইসলামের দাওয়াহ বহন করার ক্ষেত্রে কোন শৈথিল্য প্রদর্শন করে নি। তখন মুসলমানরাই ছিল পৃথিবীর একমাত্র পরাশক্তি। আর কোন সন্দেহ নেই যে ইসলামই ছিল তাদের সেই শক্তির উৎস।

তাই চলুন পুনর্জাগরনের পথে ইসলামী আদর্শের দিকে ফিরে যাই।

আজ আমরা যারা জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাই এবং এক্ষেত্রে যারা সত্যিই আন্তরিক তারা একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবো শুধূ দেশপ্রেমের সস্তা স্লোগান দিয়ে উন্নতি হয় না। আদর্শ ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। কারণ অনেক সময় এই দেশপ্রেমের স্বাদ তিক্ত হয়। জিভে দেয়া যায় না। তাই তো দেখি যখন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে ফেলানির মত শত শত নিরীহ বাংলাদেশী নির্মমভাবে নিহত হয়। তখন কিন্তু দেশপ্রেমী ফেরিওয়ালাদের দেখা মেলে না। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের এতো পিরীতি কি সেই দেশপ্রেমের ফসল? তখন দেশপ্রেম কই যায়?

তাই আসুন সস্তা স্লোগান বাদ দিয়ে একটি আদর্শ ধারণ করার মধ্যমে দেশপ্রেম দিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্জাগরনের পথে এগিয়ে যাই। আর নিঃসন্দেহে মানব জাতির জন্য ইসলামই সর্বোত্তম আদর্শ। এবং একমাত্র ইসলামই পারে সকল সমস্যা সমাধান করতে।

লেখক: শিক্ষক, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।

E-mail:

বিষয়: বিবিধ

২৫১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File