রেশমী বেগমের ফিরে আসা : দাঁত ভাঙ্গা জবাব
লিখেছেন লিখেছেন সূর্য চৌধুরী ১১ মে, ২০১৩, ১১:১৪:৪৩ সকাল
আজকের প্রসঙ্গ রেশমী বেগম, খুব সেনসিটিভ লজিক, নিজ দায়িত্বে পড়ুন
১৭ দিনের মাথায় অবশেষে সাভারের ধসে যাওয়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেক জীবিত পাওয়া গেল রেশমী বেগমকে। এই সতের দিন বেঁচে থাকাটা অস্বাভাবিক মনে হলেও চিলিতে আটকা পড়া শ্রমিকদের বের করার ঘটনা মনে পড়তেই স্বাভাবিকতা ফিরে আসে। মাশাআল্লাহ তার ফিরে আসাতে আমরা খুশি।
কিন্তু যুক্তি কি অনুভূতি মানে???
কৌতূহল মন আরোও জানতে চায়, দেখতে চায়... রেশমী বেগমের বেঁচে থাকার সাথে কি অন্য কিছু জড়িয়ে আছে??
প্যারাসাইকোলজির ক্ষুদ্র একজন ছাত্র হিসেবে আমি মিরাকলে বিশ্বাস করি। আর সাথে বিশ্বাস করি Near Death Experience, Lone Effects, Abnormality Disorder সহ আরও আলোচ্য বিষয়কে।
মজার ব্যাপার হলো আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে সবই করতে পারেন। কিন্তু রেশমী বেগমের বেঁচে থাকার পেছনে কি কারন সেটাই জানবো এখানে।
রেশমী বেগমের বেঁচে থাকার সম্ভাব্য পথ ও ব্যাখ্যা।
১। চিলিতে দুর্ঘটনায় মাটি ধসে পড়ে খনির নিচে আটকা পড়েছিলো, সবাইকেই বের করা গেছে ২ মাস পরেও, তাই রেশমীকেও বের করাটা স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা হলো চিলি শ্রমিকদের খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করা গেছে এবং খনিতে যথেষ্ট পরিমানে অক্সিজেন থাকায় তা সম্ভব হয়েছে। সুতরাং খাবার এবং অক্সিজেন ছাড়াই ১৭ দিন একটি ধসে পড়া ভবনের ভেতরে জীবিত আটকে থাকাটি স্বাভাবিক ধরা যাচ্ছেনা।
২। নভোচারীদের জন্ত্য ব্যবহৃত এক ধরনের ঔষধ আছে যা সেবন করলে টানা ছয়মাস শুকনো খাবার ছাড়াই বেঁচে থাকা সম্ভব। ধরেই নিলাম এই পদ্ধতিতে রেশমী বেঁচে ছিল। কিন্তু তা অসম্ভব কারন একজন গারমেন্টস কর্মীর কাছে এতো ব্য্যবহুল একটা ঔষধ থাকা সম্ভব না।
৩। ধরেই নিলাম রেশমী বেগম স্বাভাবিকভাবে না খেয়েই ১৭ বেঁচে ছিলো। এটা একেবারেই স্বাভাবিক কারন মেডিক্যাল সাইন্স বলছে একজন মানুষ খাবার ছাড়া ২১ দিন বাচতে পারে। (ফেসবুকে যারা ৭২ ঘণ্টা ৭২ ঘণ্টা করে অপপ্রচার চালাচ্ছে আমি তাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।) তো যাই হোক মেনেই নিলাম তিনি খাবার ছাড়াই বেঁচে ছিলেন কিন্তু সাইন্স তো এটাও বলছে যে অক্সিজেন ছাড়া ৩ মিনিট এবং পানি ছাড়া ৩ দিন বেঁচে থাকা যায় সর্বোচ্চ। আমার প্রশ্ন, সেখানে কি পানি ছিল?
যদি নাই থাকে তবে তিনি বাঁচলেন কিভাবে? আর যদি পানি থাকে তবে অবশ্যই ওটা নিচু স্থান যার ফলে পানি জমা হয়েছিল। আর যদি ওটা নিচু স্থানই হয়ে থাকে তবে সেখানে অক্সিজেন থাকার কথা না। কারন অক্সিজেন একটি গ্যাস এবং এর ধর্ম হলো ওপরের দিকে ঝুঁকে থাকা বা উড়ে যাওয়া। তাই যেখানে ওপর তলাতেও অক্সিজেন নাই সেখানে নিচে অক্সিজেন থাকার তো কোন যুক্তিই দেখিনা। তাহলে প্রশ্ন, রেশমী বেগম কিভাবে বাঁচলেন???
অনেকেই বলেছেন অক্সিজেন একটি ভারি গ্যাস টাই তা বায়ু মন্ডলের নিচের দিকে থাকে। এক্ষেত্রে আমি বলবো ততা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি কারন অক্সিজেনের চেয়েও ভারি হলো কার্বন ডাইঅক্সাইড আর টাই সেই ধংস্তুপের ভেতরে কার্বন ডাইঅক্সাইড থাকার সম্ভাবনাই বেশি কারন সেখানে অগ্নিকান্ড ঘটেছিল।
৪। সর্বশেষ সম্ভাব্য পথ হলো আল্লাহর কুদরত বা মিরাকল। আগেই বলছি আমি মিরাকল বিশ্বাস করি কারন আমি মুসলিম ছেলে। কিন্তু আওয়ামীলীগে তো অনেক নাস্তিক আছে অথবা নাস্তু পৃষ্ঠপোষকরা তো আল্লাহকেই বিশ্বাস করেনা। তাহলে তাদের কাছে এই ঘটনার ব্যাখ্যা কি??
আমি সূর্য চৌধুরী সকল নাস্তিক ব্লগারদের অনুরোধ করছি আপনারা একটু বলবেন কি এটা কে আপনারাও মিরাকল বলে চালিয়ে দিচ্ছেন???আওয়ামীদের মত??? নাকি এবার সরকারের বিপক্ষে লিখবেন???
আশা করি যুক্তিটা বুঝতে পারলে আপনাদের আজকের ঘটনার মুল বিষয় বুঝতে সমস্যা হবেনা।
কে এই রেশমী বেগম??
দিনাজপুরের এক মেয়ে রেশমী, আমি জানিনা তিনি সত্যিই ঐ কারখানার শ্রমিক কিনা তারপরেও তার ফিরে আসাতে আমি খুশি কিন্তু কিউরিয়াস মাইন্ড ওয়ান্ট টু নো দ্যাট এই রেশমী কি সরকারের সাজানো কেউ??
সম্ভাব্য কারন গুলো তুলে ধরলাম নিচে... কারন মিরাকল কি এতো বার হয়?
১। ১৭ দিন না খেয়ে থাকার পরেও একজন মানুষ সুস্থভাবে কথা বলে
২। তার মুখ চোখের কোথাও কোন ক্ষতের চিহ্ন নেই
৩। তার পোষাক আশাকের মাঝেও কোন চিহ্ন নেই
৪। শোনা যাচ্ছে তিনি আটকা পড়েছিলেন দ্বিতীয় তলাতে সেখানে নাকি মসজিদ ছিল, পানি ছিল, শুকনো খাবার ছিলো। এবং ১৫ দিন পর্যন্ত খাওয়ার পরে ৩ দিন আর কিছু খাননি। তিন দিন না ক্ষেয়ে থাকা মানুষটির চেহারা কি এতটাই প্রফুল্ল থাকে??
৫। অ্যামেরিকান সাইকোলজি বলছে একজন মানুষ দীর্ঘ ১০ দিন একা থাকলে অস্বাভাবিক আচরন করে। রেশমী বেগমের মাঝে তা দেখা যায়নি। (সাইকোলজি বিষয়ে আমার অবদান পুরনো বন্ধুরা জানেন যে এই বিষয়ের উপর আমি উইকিপিডিয়াতেও লিখেছি।)
৬। যখন কোন মানুষ মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ঘুরে আসে তখন সে Near Death Experience লাভ করে। এ সময় তার অর্ধেক চলে যায় স্প্রিচুয়াল লাইফে। রেশমী বেগমের ওপর সেরকম কোন চিহ্নই নেই।
৭। মিরাকল যদি হয় তবে আওয়ামীলীগের নাস্তিকেরা এটাকে কিভাবে দেখবে?? ওরা তো মিরাকলে বিশ্বাস করেনা...
উপরের যুক্তি ও প্রমান সাপেক্ষে আমরা খুব সহজেই বলতে পারি যে, রেশমী বেগমকে পাওয়া একটি রাজনৈতিক চাল মাত্র। দয়া করে আমাকে কেউ ভুল বুঝবেন না, আর কেউ মনে করবেন না যে আমি সবকিছুতেই রাজনীতি টানি। বরং আমি আমার ক্ষুদ্র দৃষ্টিকোণ থেকে সরকারের চালটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
বন্ধুগন আমরা জানলাম যে রেশমী বেগমের উদ্ধারকার্য কতটুকু যুক্তিপুর্ন। এখন আমরা জানবো এই ঘটনা সাজানোর পিছনে সরকারের উদ্দেশ্য কি?
৬ই মে তে মুসলিম গনহত্যার ঘটনাটি নিয়ে ইতিমধ্যেই সারা দেশে এক্রা আলোড়ন তৈরি হয়েছে। তাই এই টপিক বন্ধের জন্য সরকার একটি নতুন চাল খাটিয়েছে যাতে হুজুগের জাত বাঙ্গালী পুরনো টপিক ভুলে গিয়ে এই রেশমী বেগমকে পেয়ে মশগুল থাকে। এবং সরকার তার চালে সফল। বর্তমানে ঐ হাজার লাশের শোকের চেয়েও তীব্র হওয়াতে একজনকে পেয়েই সবাই ভুলে গেছে হাজার মুসলিম কে...
বোঝা না বোঝা আপনার হাতে। আমি এ বিষয়ে কারো সাথে বিতর্কে জড়াতে চাইনা, এটি আমার নিজস্ব মতামত এবং যুক্তি তাই কেউ বিকৃতি করবেন না।
শেয়ার করুন
শেষ অংশে আবারও নাস্তিকদের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি "আপনাদের কাছে এই মিরাকলের ব্যাখ্যাটা কি?"
বিষয়: রাজনীতি
৪৩৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন